অবৈধ দোকান ব্যবসায় ঢাবির কর্মচারীরা

যোবায়ের আহমদ, ঢাবি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের ভেতরে গড়ে ওঠা কর্মচারীদের অবৈধ দোকানপাট-সমকাল

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিববাড়ি আবাসিক এলাকায় অবৈধভাবে দোকান করে তা থেকে ভাড়া আদায়ের অভিযোগ উঠেছে কর্মচারীদের বিরুদ্ধে। কর্মচারীদের সংগঠন ‘শিববাড়ি আবাসিক এলাকা কল্যাণ সমিতি’র নামে এসব ভাড়া আদায় করা হয়। দোকান থেকে বছরে প্রায় ৫ লাখ টাকা আদায় ছাড়াও মালিকানা পরিবর্তনের নামে প্রায়ই বড় অঙ্কের এককালীন অর্থ নেওয়া হয়। এ ছাড়া পার্শ্ববর্তী শেখ রাসেল টাওয়ার নির্মাণ শেষ হলে তাদের এরিয়া অফিস দখল করে সমিতির কার্যালয় বানানোর অভিযোগ রয়েছে।

এ বিষয়ে শিববাড়ি কল্যাণ সমিতির সভাপতি মো. মোস্তফা বলেন, ‘এখানে একটি বড় মসজিদ রয়েছে। মসজিদের খরচ মেটাতে দোকানগুলো চালানো হচ্ছে। দোকানগুলোর অনুমতি বিভিন্ন সময় উপাচার্যরা মৌখিকভাবে দিয়েছেন। এখন এগুলো সরাতে হলে মসজিদের ভার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে নিতে হবে। আমরা এত চাপ নিতে পারব না।’ এরিয়া অফিস দখলের অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, ‘কার্যালয়ে সমিতির কার্যক্রম চলছে। অনুমোদনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করেছি। আশা করছি, দ্রুতই পেয়ে যাব।’

সংশ্নিষ্টরা জানান, টিএসসির অদূরে শিববাড়ি আবাসিক এলাকায় ১২টি ভবন এবং বঙ্গবন্ধু টাওয়ারে বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা বসবাস করেন। তাঁদের সুবিধা-অসুবিধা দেখভাল করে শিববাড়ি আবাসিক এলাকা কল্যাণ সমিতি। এলাকায় তিনতলা মসজিদ রয়েছে, যেটির ইমাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বেতনভুক্ত। অথচ এই মসজিদের খরচ তোলার নামে সমিতির নেতারা দুটি মুদি, একটি টেলিকম, একটি সেলুন, একটি লন্ড্রির দোকান ও চারটি ব্যাচেলর কক্ষ বানিয়ে ভাড়া চালাচ্ছেন। অস্থায়ী কিছু ভাজাপোড়া ও চায়ের দোকান বসতে দেওয়া হয়েছে এবং তা থেকে টাকা নেওয়া হয়। মুদি দোকান থেকে ১২ হাজার, টেলিকমে ৪ হাজার, সেলুন ও লন্ড্রির দোকানে ৬ হাজার এবং ব্যাচেলর কক্ষ থেকে প্রতি মাসে ১২ হাজার টাকা আদায় করা হয়।

শিববাড়ি জেনারেল স্টোরের মালিক জনি আহমেদ প্রথমে স্বীকার না করলেও এক পর্যায়ে বলেন, ‘ভাড়া দিয়ে দোকান চালাই। শিববাড়ি কল্যাণ সমিতি ভাড়া নেয়। তাদের নাকি বড় মসজিদ পরিচালনা করতে অনেক টাকা লাগে। এসব টাকা সেখানে খরচ করা হয়।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট অফিস জানিয়েছে, শিববাড়ি এলাকায় অবৈধ দোকান করে ভাড়া চালানোর বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। ভ্রাম্যমাণ দোকান পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুমতি ছাড়া এমন স্থাপনা অনেক হয়েছে। আমরা ধীরে ধীরে সবাইকে একটি কাঠামোর মধ্যে আনার চেষ্টা করছি। শিববাড়ি আবাসিক এলাকার কর্মচারীদের জন্য দুটি মুদি দোকান অস্থায়ী দোকানভুক্ত করে বাকিগুলো ভেঙে দেওয়া হবে।’

এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় অরক্ষিত অঞ্চল হওয়ায় বিভিন্ন সময় নানা স্থাপনা হয়েছে, এখনও হচ্ছে। দীর্ঘ ১০০ বছরের এই বাস্তবতা মেনে নিয়েই আমরা শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছি। অবৈধ স্থাপনা কারা করছেন, তাঁদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

অবৈধ দোকান ব্যবসায় ঢাবির কর্মচারীরা

যোবায়ের আহমদ, ঢাবি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের ভেতরে গড়ে ওঠা কর্মচারীদের অবৈধ দোকানপাট-সমকাল

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিববাড়ি আবাসিক এলাকায় অবৈধভাবে দোকান করে তা থেকে ভাড়া আদায়ের অভিযোগ উঠেছে কর্মচারীদের বিরুদ্ধে। কর্মচারীদের সংগঠন ‘শিববাড়ি আবাসিক এলাকা কল্যাণ সমিতি’র নামে এসব ভাড়া আদায় করা হয়। দোকান থেকে বছরে প্রায় ৫ লাখ টাকা আদায় ছাড়াও মালিকানা পরিবর্তনের নামে প্রায়ই বড় অঙ্কের এককালীন অর্থ নেওয়া হয়। এ ছাড়া পার্শ্ববর্তী শেখ রাসেল টাওয়ার নির্মাণ শেষ হলে তাদের এরিয়া অফিস দখল করে সমিতির কার্যালয় বানানোর অভিযোগ রয়েছে।

এ বিষয়ে শিববাড়ি কল্যাণ সমিতির সভাপতি মো. মোস্তফা বলেন, ‘এখানে একটি বড় মসজিদ রয়েছে। মসজিদের খরচ মেটাতে দোকানগুলো চালানো হচ্ছে। দোকানগুলোর অনুমতি বিভিন্ন সময় উপাচার্যরা মৌখিকভাবে দিয়েছেন। এখন এগুলো সরাতে হলে মসজিদের ভার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে নিতে হবে। আমরা এত চাপ নিতে পারব না।’ এরিয়া অফিস দখলের অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, ‘কার্যালয়ে সমিতির কার্যক্রম চলছে। অনুমোদনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করেছি। আশা করছি, দ্রুতই পেয়ে যাব।’

সংশ্নিষ্টরা জানান, টিএসসির অদূরে শিববাড়ি আবাসিক এলাকায় ১২টি ভবন এবং বঙ্গবন্ধু টাওয়ারে বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা বসবাস করেন। তাঁদের সুবিধা-অসুবিধা দেখভাল করে শিববাড়ি আবাসিক এলাকা কল্যাণ সমিতি। এলাকায় তিনতলা মসজিদ রয়েছে, যেটির ইমাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বেতনভুক্ত। অথচ এই মসজিদের খরচ তোলার নামে সমিতির নেতারা দুটি মুদি, একটি টেলিকম, একটি সেলুন, একটি লন্ড্রির দোকান ও চারটি ব্যাচেলর কক্ষ বানিয়ে ভাড়া চালাচ্ছেন। অস্থায়ী কিছু ভাজাপোড়া ও চায়ের দোকান বসতে দেওয়া হয়েছে এবং তা থেকে টাকা নেওয়া হয়। মুদি দোকান থেকে ১২ হাজার, টেলিকমে ৪ হাজার, সেলুন ও লন্ড্রির দোকানে ৬ হাজার এবং ব্যাচেলর কক্ষ থেকে প্রতি মাসে ১২ হাজার টাকা আদায় করা হয়।

শিববাড়ি জেনারেল স্টোরের মালিক জনি আহমেদ প্রথমে স্বীকার না করলেও এক পর্যায়ে বলেন, ‘ভাড়া দিয়ে দোকান চালাই। শিববাড়ি কল্যাণ সমিতি ভাড়া নেয়। তাদের নাকি বড় মসজিদ পরিচালনা করতে অনেক টাকা লাগে। এসব টাকা সেখানে খরচ করা হয়।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট অফিস জানিয়েছে, শিববাড়ি এলাকায় অবৈধ দোকান করে ভাড়া চালানোর বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। ভ্রাম্যমাণ দোকান পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুমতি ছাড়া এমন স্থাপনা অনেক হয়েছে। আমরা ধীরে ধীরে সবাইকে একটি কাঠামোর মধ্যে আনার চেষ্টা করছি। শিববাড়ি আবাসিক এলাকার কর্মচারীদের জন্য দুটি মুদি দোকান অস্থায়ী দোকানভুক্ত করে বাকিগুলো ভেঙে দেওয়া হবে।’

এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় অরক্ষিত অঞ্চল হওয়ায় বিভিন্ন সময় নানা স্থাপনা হয়েছে, এখনও হচ্ছে। দীর্ঘ ১০০ বছরের এই বাস্তবতা মেনে নিয়েই আমরা শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছি। অবৈধ স্থাপনা কারা করছেন, তাঁদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’