আমাদের শিল্পচর্চা স্বাধীনতা অর্জনে হাতিয়ার হিসেবে কাজ করেছে : পলক

কালবেলা প্রতিবেদক

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।ছবি : কালবেলা

আমাদের শিল্পচর্চা স্বাধীনতা অর্জনে হাতিয়ার হিসেবে কাজ করেছে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের প্রযোজনায় ও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সহযোগিতায় স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষ চতুর্থ সেমিস্টারের শিক্ষার্থীদের অভিনয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।

ময়মনসিংহ গীতিকা অবলম্বনে অধ্যাপক রহমত আলীর নির্দেশনায় ‘দ্বিজ কানাই’ প্রণীত দেশজ পরিবেশনা ‘মহুয়া’- পালা মঞ্চায়ন হয়েছে।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান মো. আশিকুর রহমানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিকবিজ্ঞান অনুষদ বিভাগের ডিন অধ্যাপক ড. জিয়া রহমান। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট অভিনেতা ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব আসাদুজ্জামান নূর।

জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ‘বাঙালি জাতির বহুমুখী শিক্ষা ও শিল্পচর্চার বীজভূমি হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। এই বিশ্ববিদ্যালয় একটি গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক, মানবিক মূল্যবোধ ও মুক্তচিন্তা চর্চার গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষায়তন। বাঙালির শ্রেষ্ঠ সন্তান ও বীরদের পদচারণায় উর্বর হয়েছে এই ক্যাম্পাস। বহু প্রতিবন্ধকতা ও সীমাবদ্ধতার মধ্য দিয়েও আমাদের শিল্পচর্চা স্বাধীনতা অর্জনে হাতিয়ার হিসেবে কাজ করেছে।‘

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের ইতিহাস নির্মাণের ধারায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা বহুমাত্রিক। এই বহুমাত্রিকতার একটি মৌল অনুষঙ্গ হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক অভিব্যক্তি। প্রাতিষ্ঠানিক ও পদ্ধতিগত পঠন-পাঠনের ধারায় নাট্য ও পরিবেশনা শিল্পকলা অন্তর্ভুক্ত শিক্ষা কার্যক্রম এই সাংস্কৃতিক অভিব্যক্তি গঠনের ক্ষেত্রে আরও দৃঢ় ভূমিকা পালন করছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের তরুণ-তরুণী ও দামাল ছেলে-মেয়েরা অভিনয় জগৎ এবং চলচ্চিত্র অঙ্গনে ভালো করছে। তারা পুরো বাংলাদেশকে বিশ্বমঞ্চে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, যা আমাদের জন্য অত্যন্ত গর্বের বিষয়।’প্রসঙ্গত, মহুয়া পালা প্রযোজনাটি গীত-নৃত্য-বাদ্য সহযোগে আমাদের দেশজ পরিবেশনা শৈলী অনুসৃত এক নব্য সৃষ্টিকর্ম। দীনেশচন্দ্র সেন সম্পাদিত ময়মনসিংহ গীতিকার একটি উল্লেখযোগ্য পালা মহুয়া। পালাটির সংগ্রাহক চন্দ্রকুমার দে, পূর্ণচন্দ্র ভট্টাচার্য এবং ক্ষিতীশচন্দ্র মৌলিক। রচয়িতা হিসেবে দ্বিজ কানাইয়ের নাম পাওয়া যায়। রসের দিক থেকে এটি রোমান্টিক-ট্র্যাজেডি ঘরানার দৃশ্যকাব্য। মহুয়া পালায় অন্ত্যজ শ্রেণি বেদে সমাজের যাযাবর জীবন বর্ণিত হয়েছে।

মহুয়া প্রযোজনার কাহিনি গড়ে উঠেছে একটি অসাম্প্রদায়িক মানবিক প্রণয়কে কেন্দ্র করে। গারো পাহাড়ের জঙ্গলে বাস করা হুমরা বেদে এক দিন কাঞ্চনপুর গ্রামের এক বৃদ্ধ ব্রাহ্মণের ছয় মাসের শিশু কন্যা চুরি করে এবং দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায়। কালে কালে ছয় মাসের সেই শিশুকন্যা ষোলো বছরের অপরূপ সুন্দরী যুবতীতে পরিণত হয়। নাম দেওয়া হয় মহুয়া সুন্দরী।

মহুয়া পরিবেশনায় অভিনয়ে অংশ নেন- আজরিনা শারমিন, অনন্যা দে, বর্ণালী ঘোষ বর্ণ, ফৌজিয়া আফরিন তিলু, জাহেদ আল ফুয়াদ, মারিয়া সুলতানা, মো. ফরহাদ হোসেন ফাহিম, মো. হাবিবুর রহমান কাঞ্চন, মো. মেজবাহুল ইসলাম জিম, মুনিরা মাহজাবিন, মুসাব্বির হুসাইন রিফাত, নীহারিকা নীরা, শান্তা আক্তার, শেখ রাহাতুল ইসলাম, শেখ মুমতারিণ অথৈ, তাহসিন নুর মিত্রিতা, টুম্পা রানী দাস এবং উম্মে হানী।

আমাদের শিল্পচর্চা স্বাধীনতা অর্জনে হাতিয়ার হিসেবে কাজ করেছে : পলক

কালবেলা প্রতিবেদক

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।ছবি : কালবেলা

আমাদের শিল্পচর্চা স্বাধীনতা অর্জনে হাতিয়ার হিসেবে কাজ করেছে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের প্রযোজনায় ও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সহযোগিতায় স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষ চতুর্থ সেমিস্টারের শিক্ষার্থীদের অভিনয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।

ময়মনসিংহ গীতিকা অবলম্বনে অধ্যাপক রহমত আলীর নির্দেশনায় ‘দ্বিজ কানাই’ প্রণীত দেশজ পরিবেশনা ‘মহুয়া’- পালা মঞ্চায়ন হয়েছে।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান মো. আশিকুর রহমানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিকবিজ্ঞান অনুষদ বিভাগের ডিন অধ্যাপক ড. জিয়া রহমান। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট অভিনেতা ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব আসাদুজ্জামান নূর।

জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ‘বাঙালি জাতির বহুমুখী শিক্ষা ও শিল্পচর্চার বীজভূমি হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। এই বিশ্ববিদ্যালয় একটি গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক, মানবিক মূল্যবোধ ও মুক্তচিন্তা চর্চার গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষায়তন। বাঙালির শ্রেষ্ঠ সন্তান ও বীরদের পদচারণায় উর্বর হয়েছে এই ক্যাম্পাস। বহু প্রতিবন্ধকতা ও সীমাবদ্ধতার মধ্য দিয়েও আমাদের শিল্পচর্চা স্বাধীনতা অর্জনে হাতিয়ার হিসেবে কাজ করেছে।‘

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের ইতিহাস নির্মাণের ধারায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা বহুমাত্রিক। এই বহুমাত্রিকতার একটি মৌল অনুষঙ্গ হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক অভিব্যক্তি। প্রাতিষ্ঠানিক ও পদ্ধতিগত পঠন-পাঠনের ধারায় নাট্য ও পরিবেশনা শিল্পকলা অন্তর্ভুক্ত শিক্ষা কার্যক্রম এই সাংস্কৃতিক অভিব্যক্তি গঠনের ক্ষেত্রে আরও দৃঢ় ভূমিকা পালন করছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের তরুণ-তরুণী ও দামাল ছেলে-মেয়েরা অভিনয় জগৎ এবং চলচ্চিত্র অঙ্গনে ভালো করছে। তারা পুরো বাংলাদেশকে বিশ্বমঞ্চে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, যা আমাদের জন্য অত্যন্ত গর্বের বিষয়।’প্রসঙ্গত, মহুয়া পালা প্রযোজনাটি গীত-নৃত্য-বাদ্য সহযোগে আমাদের দেশজ পরিবেশনা শৈলী অনুসৃত এক নব্য সৃষ্টিকর্ম। দীনেশচন্দ্র সেন সম্পাদিত ময়মনসিংহ গীতিকার একটি উল্লেখযোগ্য পালা মহুয়া। পালাটির সংগ্রাহক চন্দ্রকুমার দে, পূর্ণচন্দ্র ভট্টাচার্য এবং ক্ষিতীশচন্দ্র মৌলিক। রচয়িতা হিসেবে দ্বিজ কানাইয়ের নাম পাওয়া যায়। রসের দিক থেকে এটি রোমান্টিক-ট্র্যাজেডি ঘরানার দৃশ্যকাব্য। মহুয়া পালায় অন্ত্যজ শ্রেণি বেদে সমাজের যাযাবর জীবন বর্ণিত হয়েছে।

মহুয়া প্রযোজনার কাহিনি গড়ে উঠেছে একটি অসাম্প্রদায়িক মানবিক প্রণয়কে কেন্দ্র করে। গারো পাহাড়ের জঙ্গলে বাস করা হুমরা বেদে এক দিন কাঞ্চনপুর গ্রামের এক বৃদ্ধ ব্রাহ্মণের ছয় মাসের শিশু কন্যা চুরি করে এবং দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায়। কালে কালে ছয় মাসের সেই শিশুকন্যা ষোলো বছরের অপরূপ সুন্দরী যুবতীতে পরিণত হয়। নাম দেওয়া হয় মহুয়া সুন্দরী।

মহুয়া পরিবেশনায় অভিনয়ে অংশ নেন- আজরিনা শারমিন, অনন্যা দে, বর্ণালী ঘোষ বর্ণ, ফৌজিয়া আফরিন তিলু, জাহেদ আল ফুয়াদ, মারিয়া সুলতানা, মো. ফরহাদ হোসেন ফাহিম, মো. হাবিবুর রহমান কাঞ্চন, মো. মেজবাহুল ইসলাম জিম, মুনিরা মাহজাবিন, মুসাব্বির হুসাইন রিফাত, নীহারিকা নীরা, শান্তা আক্তার, শেখ রাহাতুল ইসলাম, শেখ মুমতারিণ অথৈ, তাহসিন নুর মিত্রিতা, টুম্পা রানী দাস এবং উম্মে হানী।