আমেরিকায় উচ্চশিক্ষার জন্য প্রস্তুতি

হাবিবুর রহমান রাব্বি

হাবিবুর রহমান রাব্বি

আমেরিকায় উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন প্রায় সব শিক্ষার্থীরই থাকে। তবে কোথা থেকে শুরু করবেন, সেটা নিয়েই দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভোগেন অনেকেই। আজকে আমেরিকায় স্নাতক অথবা মাস্টার্স প্রোগ্রামে সেলফ ফান্ডে স্টুডেন্ট ভিসার আবেদনপদ্ধতির প্রথম ৪টি ধাপ আলোচনা করব। আশা করি আমেরিকায় পড়তে আগ্রহী শিক্ষার্থীর সঠিক গাইডলাইন হিসেবে কাজে লাগবে।

ডকুমেন্টস প্রস্তুত করা
সবার আগে প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র প্রস্তুত এবং সেগুলো স্ক্যান করে রাখা খুবই জরুরি।  সর্বশেষ শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ ও ট্রান্স ক্রিপ্ট, ইংরেজি ভাষা মূল্যায়ন পরীক্ষার ফলাফল, স্টেটমেন্ট অব পারপাস, লেটার অব রিকমেন্ডেশন, ব্যাংক স্টেটমেন্ট। এই কাগজপত্রগুলোর স্ক্যান কপি পরবর্তী স্টেপের জন্য লাগবে। কাগজপত্রগুলোর বিস্তারিত নিচে বর্ণনা করা হয়েছে।

ইংরেজি ভাষা মূল্যায়ন পরীক্ষা
সবার মধ্যে একটা ভুল ধারণা হচ্ছে, ইংরেজি ভাষা মূল্যায়ন পরীক্ষার (আইইএলটিএস, ডুওলিংগোর মতো টেস্টগুলো) স্কোর কম থাকলে ভিসা হয় না। অথচ ভিসা ইন্টারভিউয়ের জন্য আইইএলটিএস অথবা অন্যান্য ইংরেজি ভাষার দক্ষতা মূল্যায়নের সনদ প্রদর্শন বা জমা দেওয়ার কোনো প্রয়োজনীয়তা নেই। ইংরেজি ভাষা মূল্যায়ন পরীক্ষার স্কোর হচ্ছে ইউনিভার্সিটির রিকোয়ারমেন্টের মধ্যে একটা। আপনি যে ইউনিভার্সিটিতে আবেদন করবেন, সেই ইউনিভার্সিটির ইংরেজি ভাষার দক্ষতার স্কোর মিললেই হলো। ভিসা হওয়া নির্ভর করবে আপনার আত্মবিশ্বাস, সাবলীলভাবে উত্তর দিয়ে ভিসা অফিসারকে প্রভাবিত করতে পারার সক্ষমতার ওপর। যদি আপনার ইউনিভার্সিটি ডুলিংগ গ্রহণ করে, তাহলে ডুলিংগ দিয়েই অফার লেটার পেতে পারেন ইউনিভার্সিটি থেকে। এমনকি আপনার ইউনিভার্সিটি মিডিয়াম অব নির্দেশনা সার্টিফিকেট দিয়ে আপনাকে অফার লেটার দিয়ে থাকে, তাহলে সেটাই যথেষ্ট। তবে আইইএলটিএস পরীক্ষা দেওয়া হচ্ছে আমার সাজেশন, কারণ আইইএলটিএস করলে আপনার জন্য অনেক বেশি ইউনিভার্সিটির দরজা খোলা থাকবে, যেহেতু বেশির ভাগ ইউনিভার্সিটি আইইএলটিএস গ্রহণ করে। এটা শুধু আপনাকে ইউনিভার্সিটির অ্যাডমিশন পাওয়ার জন্য সাহায্য করবে না, বরং ইংরেজি ভাষাভাষীর একটি দেশে বসবাস করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়।

স্টেটমেন্ট অব পারপাস
আমেরিকায় পড়তে যাওয়ার কারণ, আপনার একাডেমিক এক্সিলেন্সি, এক্সট্রা কারিকুলার অ্যাকটিভিটি, কেন ওই ইউনিভার্সিটি পছন্দ করলেন, কেন ওই প্রোগ্রাম পছন্দ করলেন, ডিগ্রি শেষে কী করবেন। এসব বিষয় সুন্দরভাবে তুলে ধরে স্টেটমেন্ট অব পারপাস লিখবেন ১.৫ /২ পেজের। ১ পেজের মধ্যে লিখতে পারলে ভালো যদিও, তবে ইনফরমেশন বেশি হলে ১ পেজে লেখা সম্ভব হয় না। বিস্তারিত জানতে এ বিষয়ে একটু গুগলে ঘাঁটাঘাঁটি করলে বুঝবেন। আবার অনেক সময় ইউনিভার্সিটি থেকে বলে দেওয়া থাকে কী কী বিষয় এসওপিতে উল্লেখ করতে হবে সেটা।

লেটার অব রিকমেন্ডেশন
আগের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক (লেকচারার/প্রফেসর) থেকে দুই-তিনটি রিকমেন্ডেশন লেটার নিয়ে রাখতে হবে। এই লেটারগুলোতে শিক্ষক আপনাকে নিয়ে পজিটিভ কথা বলবেন এবং আপনাকে ওই ইউনিভার্সিটিতে অ্যাডমিশন দেওয়ার জন্য সুপারিশ করবে। একেকটা ইউনিভার্সিটি একেকভাবে রিকমেন্ডেশন চায়। অনেক ইউনিভার্সিটি সরাসরি টিচারকে মেইল করতে বলে, অনেকে আবার রিকমেন্ডেশন লেটার স্ক্যান করে পাঠানোর পর সেই টিচারদের মেইলে প্রশ্ন করে আপনার সম্পর্কে। তাই টিচারদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখবেন যেন USA-এর ভার্সিটি থেকে মেইল দিলে একটু রিপ্লাই করেন মেইলের। দুই-তিনটি রিকমেন্ডেশন লেটার নিয়ে রাখতে বললাম; কারণ কিছু ভার্সিটি একটি চায়, অনেকে আবার দুইটা, অনেক ইউনিভার্সিটি তিনটিও চাইতে পারে।

হাবিবুর রহমান রাব্বি, স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী, ক্যাম্পবেলসভিল ইউনিভার্সিটি, যুক্তরাষ্ট্র

অনুলিখন: জুবায়ের আহম্মেদ

আমেরিকায় উচ্চশিক্ষার জন্য প্রস্তুতি

হাবিবুর রহমান রাব্বি

হাবিবুর রহমান রাব্বি

আমেরিকায় উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন প্রায় সব শিক্ষার্থীরই থাকে। তবে কোথা থেকে শুরু করবেন, সেটা নিয়েই দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভোগেন অনেকেই। আজকে আমেরিকায় স্নাতক অথবা মাস্টার্স প্রোগ্রামে সেলফ ফান্ডে স্টুডেন্ট ভিসার আবেদনপদ্ধতির প্রথম ৪টি ধাপ আলোচনা করব। আশা করি আমেরিকায় পড়তে আগ্রহী শিক্ষার্থীর সঠিক গাইডলাইন হিসেবে কাজে লাগবে।

ডকুমেন্টস প্রস্তুত করা
সবার আগে প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র প্রস্তুত এবং সেগুলো স্ক্যান করে রাখা খুবই জরুরি।  সর্বশেষ শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ ও ট্রান্স ক্রিপ্ট, ইংরেজি ভাষা মূল্যায়ন পরীক্ষার ফলাফল, স্টেটমেন্ট অব পারপাস, লেটার অব রিকমেন্ডেশন, ব্যাংক স্টেটমেন্ট। এই কাগজপত্রগুলোর স্ক্যান কপি পরবর্তী স্টেপের জন্য লাগবে। কাগজপত্রগুলোর বিস্তারিত নিচে বর্ণনা করা হয়েছে।

ইংরেজি ভাষা মূল্যায়ন পরীক্ষা
সবার মধ্যে একটা ভুল ধারণা হচ্ছে, ইংরেজি ভাষা মূল্যায়ন পরীক্ষার (আইইএলটিএস, ডুওলিংগোর মতো টেস্টগুলো) স্কোর কম থাকলে ভিসা হয় না। অথচ ভিসা ইন্টারভিউয়ের জন্য আইইএলটিএস অথবা অন্যান্য ইংরেজি ভাষার দক্ষতা মূল্যায়নের সনদ প্রদর্শন বা জমা দেওয়ার কোনো প্রয়োজনীয়তা নেই। ইংরেজি ভাষা মূল্যায়ন পরীক্ষার স্কোর হচ্ছে ইউনিভার্সিটির রিকোয়ারমেন্টের মধ্যে একটা। আপনি যে ইউনিভার্সিটিতে আবেদন করবেন, সেই ইউনিভার্সিটির ইংরেজি ভাষার দক্ষতার স্কোর মিললেই হলো। ভিসা হওয়া নির্ভর করবে আপনার আত্মবিশ্বাস, সাবলীলভাবে উত্তর দিয়ে ভিসা অফিসারকে প্রভাবিত করতে পারার সক্ষমতার ওপর। যদি আপনার ইউনিভার্সিটি ডুলিংগ গ্রহণ করে, তাহলে ডুলিংগ দিয়েই অফার লেটার পেতে পারেন ইউনিভার্সিটি থেকে। এমনকি আপনার ইউনিভার্সিটি মিডিয়াম অব নির্দেশনা সার্টিফিকেট দিয়ে আপনাকে অফার লেটার দিয়ে থাকে, তাহলে সেটাই যথেষ্ট। তবে আইইএলটিএস পরীক্ষা দেওয়া হচ্ছে আমার সাজেশন, কারণ আইইএলটিএস করলে আপনার জন্য অনেক বেশি ইউনিভার্সিটির দরজা খোলা থাকবে, যেহেতু বেশির ভাগ ইউনিভার্সিটি আইইএলটিএস গ্রহণ করে। এটা শুধু আপনাকে ইউনিভার্সিটির অ্যাডমিশন পাওয়ার জন্য সাহায্য করবে না, বরং ইংরেজি ভাষাভাষীর একটি দেশে বসবাস করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়।

স্টেটমেন্ট অব পারপাস
আমেরিকায় পড়তে যাওয়ার কারণ, আপনার একাডেমিক এক্সিলেন্সি, এক্সট্রা কারিকুলার অ্যাকটিভিটি, কেন ওই ইউনিভার্সিটি পছন্দ করলেন, কেন ওই প্রোগ্রাম পছন্দ করলেন, ডিগ্রি শেষে কী করবেন। এসব বিষয় সুন্দরভাবে তুলে ধরে স্টেটমেন্ট অব পারপাস লিখবেন ১.৫ /২ পেজের। ১ পেজের মধ্যে লিখতে পারলে ভালো যদিও, তবে ইনফরমেশন বেশি হলে ১ পেজে লেখা সম্ভব হয় না। বিস্তারিত জানতে এ বিষয়ে একটু গুগলে ঘাঁটাঘাঁটি করলে বুঝবেন। আবার অনেক সময় ইউনিভার্সিটি থেকে বলে দেওয়া থাকে কী কী বিষয় এসওপিতে উল্লেখ করতে হবে সেটা।

লেটার অব রিকমেন্ডেশন
আগের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক (লেকচারার/প্রফেসর) থেকে দুই-তিনটি রিকমেন্ডেশন লেটার নিয়ে রাখতে হবে। এই লেটারগুলোতে শিক্ষক আপনাকে নিয়ে পজিটিভ কথা বলবেন এবং আপনাকে ওই ইউনিভার্সিটিতে অ্যাডমিশন দেওয়ার জন্য সুপারিশ করবে। একেকটা ইউনিভার্সিটি একেকভাবে রিকমেন্ডেশন চায়। অনেক ইউনিভার্সিটি সরাসরি টিচারকে মেইল করতে বলে, অনেকে আবার রিকমেন্ডেশন লেটার স্ক্যান করে পাঠানোর পর সেই টিচারদের মেইলে প্রশ্ন করে আপনার সম্পর্কে। তাই টিচারদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখবেন যেন USA-এর ভার্সিটি থেকে মেইল দিলে একটু রিপ্লাই করেন মেইলের। দুই-তিনটি রিকমেন্ডেশন লেটার নিয়ে রাখতে বললাম; কারণ কিছু ভার্সিটি একটি চায়, অনেকে আবার দুইটা, অনেক ইউনিভার্সিটি তিনটিও চাইতে পারে।

হাবিবুর রহমান রাব্বি, স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী, ক্যাম্পবেলসভিল ইউনিভার্সিটি, যুক্তরাষ্ট্র

অনুলিখন: জুবায়ের আহম্মেদ