ইবিতে শোকদিবসের আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে মারামারি, ছুরিকাঘাতের অভিযোগ

ফরহাদ খাদেম

ইবিতে শোকদিবসের আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে মারামারি হয়েছে।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ‘মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব’ শীর্ষক আলোচনা সভা শেষে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগকর্মীদের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এতে একজনকে ছুরিকাঘাতের অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া আরো ৪ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। রোববার (২০ আগস্ট) দুপুর আড়াইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

প্রতক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, জাতীয় শোকদিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা চলাকালীন সময়ে মিলনায়তনে ঢুকতে গিয়ে আইন বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও শহীদ জিয়াউর রহমান হলের শামীম ও হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও শেখ রাসেল হলের আশিক কোরাইশির মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরে এ ঘটনার জেরে আলোচনা সভা শেষে মিলনায়তনের বাহিরে এসে আবারও উভয়ের মাঝে কথা কাটাকাটি হয় | একপর্যায়ে জিয়া হল ও রাসেল হলের ছাত্রলীগ কর্মীদের মধ্যে মারামারির সূত্রপাত হয়।

এসময় ব্যবস্থাপনা বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আকিব ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের একই বর্ষের শিক্ষার্থী মুফতাঈন আহমেদ সাবিককে ছুরিকাঘাত করেন বলে জানা যায়। পরে আহত সাবিককে ইবি চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়।

এদিকে ছাত্রলীগ নেতাদের চাপে ছুরিকাঘাতের বিষয়টি এড়িয়ে গাছের ডাল লেগে হাত কেটে গিয়েছে বলে জানিয়েছেন সাবিক। তবে একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী ছুরিকাঘাতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এবিষয়ে সাবিক বলেন, কিছু সংখ্যক ছেলেরা মারামারি করতেছিলো। এসময় আমি তাদেরকে ঠেকাতে গিয়ে আম গাছের ডাল লেগে কেটে গেছে। আমি এর বেশি আর বলতে চাচ্ছি না।

অভিযুক্ত আকিব ছুরিকাঘাতের বিষয়টি ভিত্তিহীন দাবি করে নিজেও মার পেয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেন, আলোচনা সভা শেষে বাহিরে দেখি হুলুস্থুল অবস্থা বিরাজ করছে। পরে রাসেল হলের ছেলেরা আমাকে মারদর করে। আমার হাতে এখনও আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

ঘটনার সূত্রপাতে জড়িত থাকা আশিক কোরাইশি বলেন, অডিটোরিয়ামে ঢোকার সময় শামীমের সাথে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে শামীম আমাকে চোখ তুলে নেওয়ার হুমকি দেয়। এদিকে শামীমের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত বলেন, আলোচনা সভা সুষ্ঠু ও সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। তবে এর পরে যে ঘটনাটি ঘটেছে তা অনাকাঙ্ক্ষিত। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, ঘটনাটি ঘটার পর জানতে পেরে প্রক্টরিয়াল বডিকে ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছি। পরে তারা চিকিৎসা কেন্দ্রে গিয়ে সকল তথ্য সংগ্রহ করেছে। দ্রুতই ব্যবস্থা নেওয় হবে।

এর আগে, বেলা সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কুষ্টিয়া-৩ এর সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঝিনাইদহ-১ এর সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ঝিনাইদহ জেলার সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই। আরও অতিথি হিসেবে ছিলেন কুষ্টিয়া-১ আসনের সংসদ সদস্য আ ক ম সরওয়ার জাহান বাদশা।

অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম। সম্মানিত অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আলমগীর হোসেন ভুঁইয়া।

এছাড়া বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মাহবুবুল আরফিনের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন বঙ্গবন্ধু পরিষদের জাতীয় শোক দিবস উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান।

ইবিহো/এসএস

ইবিতে শোকদিবসের আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে মারামারি, ছুরিকাঘাতের অভিযোগ

ফরহাদ খাদেম

ইবিতে শোকদিবসের আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে মারামারি হয়েছে।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ‘মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব’ শীর্ষক আলোচনা সভা শেষে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগকর্মীদের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এতে একজনকে ছুরিকাঘাতের অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া আরো ৪ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। রোববার (২০ আগস্ট) দুপুর আড়াইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

প্রতক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, জাতীয় শোকদিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা চলাকালীন সময়ে মিলনায়তনে ঢুকতে গিয়ে আইন বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও শহীদ জিয়াউর রহমান হলের শামীম ও হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও শেখ রাসেল হলের আশিক কোরাইশির মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরে এ ঘটনার জেরে আলোচনা সভা শেষে মিলনায়তনের বাহিরে এসে আবারও উভয়ের মাঝে কথা কাটাকাটি হয় | একপর্যায়ে জিয়া হল ও রাসেল হলের ছাত্রলীগ কর্মীদের মধ্যে মারামারির সূত্রপাত হয়।

এসময় ব্যবস্থাপনা বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আকিব ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের একই বর্ষের শিক্ষার্থী মুফতাঈন আহমেদ সাবিককে ছুরিকাঘাত করেন বলে জানা যায়। পরে আহত সাবিককে ইবি চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়।

এদিকে ছাত্রলীগ নেতাদের চাপে ছুরিকাঘাতের বিষয়টি এড়িয়ে গাছের ডাল লেগে হাত কেটে গিয়েছে বলে জানিয়েছেন সাবিক। তবে একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী ছুরিকাঘাতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এবিষয়ে সাবিক বলেন, কিছু সংখ্যক ছেলেরা মারামারি করতেছিলো। এসময় আমি তাদেরকে ঠেকাতে গিয়ে আম গাছের ডাল লেগে কেটে গেছে। আমি এর বেশি আর বলতে চাচ্ছি না।

অভিযুক্ত আকিব ছুরিকাঘাতের বিষয়টি ভিত্তিহীন দাবি করে নিজেও মার পেয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেন, আলোচনা সভা শেষে বাহিরে দেখি হুলুস্থুল অবস্থা বিরাজ করছে। পরে রাসেল হলের ছেলেরা আমাকে মারদর করে। আমার হাতে এখনও আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

ঘটনার সূত্রপাতে জড়িত থাকা আশিক কোরাইশি বলেন, অডিটোরিয়ামে ঢোকার সময় শামীমের সাথে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে শামীম আমাকে চোখ তুলে নেওয়ার হুমকি দেয়। এদিকে শামীমের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত বলেন, আলোচনা সভা সুষ্ঠু ও সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। তবে এর পরে যে ঘটনাটি ঘটেছে তা অনাকাঙ্ক্ষিত। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, ঘটনাটি ঘটার পর জানতে পেরে প্রক্টরিয়াল বডিকে ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছি। পরে তারা চিকিৎসা কেন্দ্রে গিয়ে সকল তথ্য সংগ্রহ করেছে। দ্রুতই ব্যবস্থা নেওয় হবে।

এর আগে, বেলা সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কুষ্টিয়া-৩ এর সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঝিনাইদহ-১ এর সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ঝিনাইদহ জেলার সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই। আরও অতিথি হিসেবে ছিলেন কুষ্টিয়া-১ আসনের সংসদ সদস্য আ ক ম সরওয়ার জাহান বাদশা।

অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম। সম্মানিত অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আলমগীর হোসেন ভুঁইয়া।

এছাড়া বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মাহবুবুল আরফিনের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন বঙ্গবন্ধু পরিষদের জাতীয় শোক দিবস উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান।

ইবিহো/এসএস