ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়

কর্মকর্তা সমিতির সভাপতিকে লাঞ্ছিত করল ছাত্রলীগ নেতা 

ফরহাদ খাদেম

ইবি কর্মকর্তা সমিতির সভাপতিকে লাঞ্ছিত করল ছাত্রলীগ নেতা।

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি এটিএম এমদাদুল আলমকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয় ও কয়েকজন নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুর আড়াইটায় প্রশাসন ভবনের নিচতলায় হিসাব শাখায় এক কর্মকর্তার কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।

কর্মকর্তাদের দাবি আদায়ের আন্দোলনে বাধা প্রদান করতে তারা কয়েকজন কর্মকর্তার ইন্ধনে এই হামলা করেছে বলে দাবি কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি এটিএম এমদাদুল আলমের। বিকেল ৪টার দিকে অনুষ্ঠিত সমিতির সভাপতির কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন তিনি। সংবাদ সম্মেলন শেষে প্রশাসন ভবনের পিছনে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ সমাবেশ করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে এটিএম এমদাদুল আলম বলেন, ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের উপস্থিতিতে ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক হোসাইন মজুমদার, সাবেক নেতা বিপুল হোসেন খান, কর্মী বাধন ও শাহীন আলমসহ অনেকে উদ্ধত হয়ে অকথ্য ভাষায় লাঞ্চিত করে। তারা আমাকে আটকে রাখে। ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয়ের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের একাংশের সিদ্ধান্তে এ ঘটনা ঘটেছে।

তিনি আরও বলেন, এরা বঙ্গবন্ধুর ছাত্রলীগ করে বলে আমি বিশ্বাস করি না। কারণ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্যাতিত নিষ্পেষিত কর্মকর্তা কর্মচারীদের পক্ষ নিয়ে বঙ্গবন্ধুর ছাত্রত্ব চলে গিয়েছিল। আর বঙ্গবন্ধুর তৈরি করা ছাত্রলীগের ছাত্ররা এটা করতে পারে না। প্রশাসন ব্যক্তিগত স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য প্রলোভন দিয়ে তাদের ব্যবহার করেছে। বিবেক বর্জিত না হয়ে আমাদের সহযোগিতা করতে আমি তাদের আহ্বান জানাই।

এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মকর্তা সমিতির নেতৃত্বে ন্যায্য অধিকার বাস্তবায়ন কমিটির ব্যানারে আন্দোলন করছিলেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। চাকুরী হতে অবসরের বয়সসীমা বৃদ্ধি, পোষ্যকোটার ভর্তিতে শর্ত শিথিল করা ও কর্মকর্তা কর্মচারীদের সেশন বেনিফিট বহাল রাখাসহ ১৬ দফা দাবি আদায়ে আন্দোলন করছেন কর্মকর্তারা।

গত ২৬ জুলাই থেকে ২ আগস্ট পর্যন্ত দাবি আদায়ে ২ঘন্টা করে কর্মবিরতি করেন কর্মকর্তারা। পরে ০৫ আগস্ট থেকে ৩০ আগস্ট পর্যন্ত সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত পাঁচ ঘন্টা কর্মবিরতি অব্যাহত রাখেন তারা। ঐসময় দাবি মানা না হলে আগস্ট মাস শেষে কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারিও প্রদান করা হয়। এর পরেও তাদের দাবি মেনে নেওয়ায় গত ২ সেপ্টেম্বর থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য লাগাতার কর্মবিরতি পালন করে আসছেন তারা।

কর্মসূচি বাস্তবায়নে প্রশাসনিক কাজে কর্মকর্তা কর্মচারীদের অংশগ্রহণ না করার নির্দেশনা প্রদান করা হয়। এর অংশ হিসেবে গত ৩ সেপ্টেম্বর রেজিস্ট্রারকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৬১ তম সিন্ডিকেটে অংশ নিতে দেননি আন্দোলনকারীরা। ওইদিন বিকাল সাড়ে তিনটা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত রেজিস্ট্রারের অফিস ঘেরাও করে সেখানে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন কর্মকর্তারা। পরে ১৬ সেপ্টেম্বর দাবিসমূহ নিয়ে উপাচার্যের সাথে আলোচনায় বসেন তারা। এসময় দাবি আদায়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে সাত দিনের আল্টিমেটাম দেন আন্দোলনকারীরা। পরে ১৮ সেপ্টেম্বর প্রশাসন ভবনের সামনে তাদের দাবি আদায়ে সাধারণ সভা ও পাঁচ ঘন্টা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন কর্মকর্তারা।

এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয় বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ভিত্তিহীন। প্রশাসনিক ভবনে বিশৃঙ্খলা দেখে আমরা সেখানে গিয়েছিলাম। পরে সেখানে উত্তেজিত ছাত্রদের বের করে নিয়ে এসেছি।

ইবিহো/এসএস

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়

কর্মকর্তা সমিতির সভাপতিকে লাঞ্ছিত করল ছাত্রলীগ নেতা 

ফরহাদ খাদেম

ইবি কর্মকর্তা সমিতির সভাপতিকে লাঞ্ছিত করল ছাত্রলীগ নেতা।

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি এটিএম এমদাদুল আলমকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয় ও কয়েকজন নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুর আড়াইটায় প্রশাসন ভবনের নিচতলায় হিসাব শাখায় এক কর্মকর্তার কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।

কর্মকর্তাদের দাবি আদায়ের আন্দোলনে বাধা প্রদান করতে তারা কয়েকজন কর্মকর্তার ইন্ধনে এই হামলা করেছে বলে দাবি কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি এটিএম এমদাদুল আলমের। বিকেল ৪টার দিকে অনুষ্ঠিত সমিতির সভাপতির কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন তিনি। সংবাদ সম্মেলন শেষে প্রশাসন ভবনের পিছনে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ সমাবেশ করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে এটিএম এমদাদুল আলম বলেন, ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের উপস্থিতিতে ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক হোসাইন মজুমদার, সাবেক নেতা বিপুল হোসেন খান, কর্মী বাধন ও শাহীন আলমসহ অনেকে উদ্ধত হয়ে অকথ্য ভাষায় লাঞ্চিত করে। তারা আমাকে আটকে রাখে। ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয়ের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের একাংশের সিদ্ধান্তে এ ঘটনা ঘটেছে।

তিনি আরও বলেন, এরা বঙ্গবন্ধুর ছাত্রলীগ করে বলে আমি বিশ্বাস করি না। কারণ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্যাতিত নিষ্পেষিত কর্মকর্তা কর্মচারীদের পক্ষ নিয়ে বঙ্গবন্ধুর ছাত্রত্ব চলে গিয়েছিল। আর বঙ্গবন্ধুর তৈরি করা ছাত্রলীগের ছাত্ররা এটা করতে পারে না। প্রশাসন ব্যক্তিগত স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য প্রলোভন দিয়ে তাদের ব্যবহার করেছে। বিবেক বর্জিত না হয়ে আমাদের সহযোগিতা করতে আমি তাদের আহ্বান জানাই।

এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মকর্তা সমিতির নেতৃত্বে ন্যায্য অধিকার বাস্তবায়ন কমিটির ব্যানারে আন্দোলন করছিলেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। চাকুরী হতে অবসরের বয়সসীমা বৃদ্ধি, পোষ্যকোটার ভর্তিতে শর্ত শিথিল করা ও কর্মকর্তা কর্মচারীদের সেশন বেনিফিট বহাল রাখাসহ ১৬ দফা দাবি আদায়ে আন্দোলন করছেন কর্মকর্তারা।

গত ২৬ জুলাই থেকে ২ আগস্ট পর্যন্ত দাবি আদায়ে ২ঘন্টা করে কর্মবিরতি করেন কর্মকর্তারা। পরে ০৫ আগস্ট থেকে ৩০ আগস্ট পর্যন্ত সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত পাঁচ ঘন্টা কর্মবিরতি অব্যাহত রাখেন তারা। ঐসময় দাবি মানা না হলে আগস্ট মাস শেষে কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারিও প্রদান করা হয়। এর পরেও তাদের দাবি মেনে নেওয়ায় গত ২ সেপ্টেম্বর থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য লাগাতার কর্মবিরতি পালন করে আসছেন তারা।

কর্মসূচি বাস্তবায়নে প্রশাসনিক কাজে কর্মকর্তা কর্মচারীদের অংশগ্রহণ না করার নির্দেশনা প্রদান করা হয়। এর অংশ হিসেবে গত ৩ সেপ্টেম্বর রেজিস্ট্রারকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৬১ তম সিন্ডিকেটে অংশ নিতে দেননি আন্দোলনকারীরা। ওইদিন বিকাল সাড়ে তিনটা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত রেজিস্ট্রারের অফিস ঘেরাও করে সেখানে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন কর্মকর্তারা। পরে ১৬ সেপ্টেম্বর দাবিসমূহ নিয়ে উপাচার্যের সাথে আলোচনায় বসেন তারা। এসময় দাবি আদায়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে সাত দিনের আল্টিমেটাম দেন আন্দোলনকারীরা। পরে ১৮ সেপ্টেম্বর প্রশাসন ভবনের সামনে তাদের দাবি আদায়ে সাধারণ সভা ও পাঁচ ঘন্টা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন কর্মকর্তারা।

এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয় বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ভিত্তিহীন। প্রশাসনিক ভবনে বিশৃঙ্খলা দেখে আমরা সেখানে গিয়েছিলাম। পরে সেখানে উত্তেজিত ছাত্রদের বের করে নিয়ে এসেছি।

ইবিহো/এসএস