মধ্যপ্রাচ্য

ইরানে এবার স্কুলছাত্রীকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ

কো-অর্ডিনেটিং কাউন্সিল অব টিচার্স সিন্ডিকেটস নামক শিক্ষক সংগঠন বলেছে, আসরা পানাহি ১৩ অক্টোবর মারা গেছে।ছবি: এএফপি

ইরানের একটি স্কুলে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযান চলার সময় পিটুনিতে ১৫ বছর বয়সী এক শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শিক্ষকদের একটি সংগঠন বলছে, গত সপ্তাহে আসরা পানাহি নামের ওই কিশোরী মারা গেছে। ‘নির্দোষ’ বিক্ষোভকারী ব্যক্তিদের হত্যা বন্ধ করতে কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি। খবর এএফপির।

গত সোমবার কো-অর্ডিনেটিং কাউন্সিল অব টিচার্স সিন্ডিকেটস নামক শিক্ষক সংগঠনের বিবৃতিতে বলা হয়, উত্তর–পশ্চিমাঞ্চলীয় আরদাবিল শহরের শাহেদ হাইস্কুলে ‘সাদা পোশাকের কর্মকর্তাদের’ অভিযানের পর আসরা পানাহি ১৩ অক্টোবর মারা গেছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে শিক্ষার্থীদের আরদাবিল শহরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। জায়গাটি সম্প্রতি পুলিশি হেফাজতে মারা যাওয়া ইরানি তরুণী মাসা আমিনির মৃত্যুর প্রতিবাদে চলমান বিক্ষোভের কেন্দ্রস্থল হিসেবে পরিচিত।
শিক্ষক সংগঠনটি বলছে, ওই অনুষ্ঠানে কিছুসংখ্যক শিক্ষার্থী ‘বৈষম্য ও অসমতার বিরুদ্ধে’ স্লোগান দেওয়া শুরু করেছিল। সাদা পোশাকধারী এবং হিজাব পরিহিত নারীরা তাদের ওপর সহিংসতা চালিয়েছে এবং অপমান করেছে। স্কুলে ফেরার পর ওই শিক্ষার্থীদের আবার পেটানো হয়। তাদের মধ্যে আসরা পানাহি নামের একজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে। বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পিটুনির শিকার আরও এক শিক্ষার্থী কোমায় আছে।

পরে ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে আসরার চাচার একটি সাক্ষাৎকার প্রচারিত হয়। সেখানে তার চাচা বলেছেন, হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে তাঁর ভাতিজির মৃত্যু হয়েছে।
দিদবান ইরান নামক ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে আরদাবিলের জনপ্রতিনিধি কাজেম মুসাভির বরাতে বলা হয়েছে, আসরা ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যা করেছে।

এ নিয়ে ইরানের সাবেক ফুটবল তারকা আলি দাইয়ি ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। আলি দাইয়ি আরদাবিল শহরের বাসিন্দা। মাসা আমিনির মৃত্যুর প্রতিবাদে চলমান বিক্ষোভকে সমর্থন জানানোর কারণে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তাঁর বিরোধ চলছে।
ইনস্টাগ্রামে দেওয়া এক পোস্টে দাইয়ি লিখেছেন, আসরা পানাহি হৃৎপিণ্ডের জটিলতা নিয়ে মারা যায়নি। আসরা আত্মহত্যা করেছে বলে কাজেম মুসাভি যে দাবি করেছেন, তাকে ‘গুজব’ বলে উল্লেখ করেছেন এ তারকা।

গত মঙ্গলবার শিক্ষক সংগঠনের এক বিবৃতিতে, মা-বাবার সম্মতি ছাড়াই শিক্ষার্থীদের ওই অনুষ্ঠানে পাঠানোর কারণে স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে নিন্দা জানানো হয়েছে। পাশাপাশি স্কুলগুলোকে এ ধরনের অভিযানের আওতামুক্ত রাখতে সেনাবাহিনী ও নিরাপত্তা বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।

ইরানের বিচার বিভাগের ওয়েবসাইট মিজান অনলাইনে দেওয়া বিবৃতিতে আলি দাইয়ির এ বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, ‘আরদাবিলে ওই নারী শিক্ষার্থীর মৃত্যু নিয়ে দাইয়ি যে দাবি করেছেন, তার পক্ষে যদি কোনো প্রমাণ থাকে তাহলে আশা করব তিনি যত দ্রুত সম্ভব এগুলো সংশ্লিষ্ট কার্যালয়ে উপস্থাপন করবেন। এসব তথ্য হালনাগাদ করবেন।’

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ মানবাধিকার সংগঠনগুলোর একটি জোট বলেছে, সোমবার বিক্ষোভকারী ব্যক্তিদের ওপর নিরাপত্তা বাহিনীর ধরপাকড় অভিযানে কমপক্ষে ২৩টি শিশু নিহত হয়েছে।

মধ্যপ্রাচ্য

ইরানে এবার স্কুলছাত্রীকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ

কো-অর্ডিনেটিং কাউন্সিল অব টিচার্স সিন্ডিকেটস নামক শিক্ষক সংগঠন বলেছে, আসরা পানাহি ১৩ অক্টোবর মারা গেছে।ছবি: এএফপি

ইরানের একটি স্কুলে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযান চলার সময় পিটুনিতে ১৫ বছর বয়সী এক শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শিক্ষকদের একটি সংগঠন বলছে, গত সপ্তাহে আসরা পানাহি নামের ওই কিশোরী মারা গেছে। ‘নির্দোষ’ বিক্ষোভকারী ব্যক্তিদের হত্যা বন্ধ করতে কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি। খবর এএফপির।

গত সোমবার কো-অর্ডিনেটিং কাউন্সিল অব টিচার্স সিন্ডিকেটস নামক শিক্ষক সংগঠনের বিবৃতিতে বলা হয়, উত্তর–পশ্চিমাঞ্চলীয় আরদাবিল শহরের শাহেদ হাইস্কুলে ‘সাদা পোশাকের কর্মকর্তাদের’ অভিযানের পর আসরা পানাহি ১৩ অক্টোবর মারা গেছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে শিক্ষার্থীদের আরদাবিল শহরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। জায়গাটি সম্প্রতি পুলিশি হেফাজতে মারা যাওয়া ইরানি তরুণী মাসা আমিনির মৃত্যুর প্রতিবাদে চলমান বিক্ষোভের কেন্দ্রস্থল হিসেবে পরিচিত।
শিক্ষক সংগঠনটি বলছে, ওই অনুষ্ঠানে কিছুসংখ্যক শিক্ষার্থী ‘বৈষম্য ও অসমতার বিরুদ্ধে’ স্লোগান দেওয়া শুরু করেছিল। সাদা পোশাকধারী এবং হিজাব পরিহিত নারীরা তাদের ওপর সহিংসতা চালিয়েছে এবং অপমান করেছে। স্কুলে ফেরার পর ওই শিক্ষার্থীদের আবার পেটানো হয়। তাদের মধ্যে আসরা পানাহি নামের একজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে। বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পিটুনির শিকার আরও এক শিক্ষার্থী কোমায় আছে।

পরে ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে আসরার চাচার একটি সাক্ষাৎকার প্রচারিত হয়। সেখানে তার চাচা বলেছেন, হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে তাঁর ভাতিজির মৃত্যু হয়েছে।
দিদবান ইরান নামক ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে আরদাবিলের জনপ্রতিনিধি কাজেম মুসাভির বরাতে বলা হয়েছে, আসরা ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যা করেছে।

এ নিয়ে ইরানের সাবেক ফুটবল তারকা আলি দাইয়ি ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। আলি দাইয়ি আরদাবিল শহরের বাসিন্দা। মাসা আমিনির মৃত্যুর প্রতিবাদে চলমান বিক্ষোভকে সমর্থন জানানোর কারণে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তাঁর বিরোধ চলছে।
ইনস্টাগ্রামে দেওয়া এক পোস্টে দাইয়ি লিখেছেন, আসরা পানাহি হৃৎপিণ্ডের জটিলতা নিয়ে মারা যায়নি। আসরা আত্মহত্যা করেছে বলে কাজেম মুসাভি যে দাবি করেছেন, তাকে ‘গুজব’ বলে উল্লেখ করেছেন এ তারকা।

গত মঙ্গলবার শিক্ষক সংগঠনের এক বিবৃতিতে, মা-বাবার সম্মতি ছাড়াই শিক্ষার্থীদের ওই অনুষ্ঠানে পাঠানোর কারণে স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে নিন্দা জানানো হয়েছে। পাশাপাশি স্কুলগুলোকে এ ধরনের অভিযানের আওতামুক্ত রাখতে সেনাবাহিনী ও নিরাপত্তা বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।

ইরানের বিচার বিভাগের ওয়েবসাইট মিজান অনলাইনে দেওয়া বিবৃতিতে আলি দাইয়ির এ বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, ‘আরদাবিলে ওই নারী শিক্ষার্থীর মৃত্যু নিয়ে দাইয়ি যে দাবি করেছেন, তার পক্ষে যদি কোনো প্রমাণ থাকে তাহলে আশা করব তিনি যত দ্রুত সম্ভব এগুলো সংশ্লিষ্ট কার্যালয়ে উপস্থাপন করবেন। এসব তথ্য হালনাগাদ করবেন।’

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ মানবাধিকার সংগঠনগুলোর একটি জোট বলেছে, সোমবার বিক্ষোভকারী ব্যক্তিদের ওপর নিরাপত্তা বাহিনীর ধরপাকড় অভিযানে কমপক্ষে ২৩টি শিশু নিহত হয়েছে।