উদ্যোগ নেই ৭০,০০০ শিক্ষক নিয়োগে

শরীফুল আলম সুমন

বেসরকারি স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসায় প্রায় ৭০ হাজার শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। প্রায় ১০ মাস আগে শূন্য পদের চাহিদা স্কুল-কলেজের প্রধানরা বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) কাছে পাঠিয়েছেন। কিন্তু এত দিনেও গণবিজ্ঞপ্তি (নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি) প্রকাশ করতে পারেনি এনটিআরসিএ।

সূত্র জানায়, আগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শূন্য পদের চাহিদার ওপর ভিত্তি করে এনটিআরসিএ শিক্ষকদের সুপারিশ করলে অনেকেই দেখতে পান, সেটা সৃষ্ট পদ বা পদই নেই। এতে চাকরি পেয়েও বিপাকে পড়তেন শিক্ষকরা। এমনকি যোগদান করলেও তারা এমপিওভুক্ত হতে পারতেন না। অনেকেই যোগদানই করতেন না। এ জন্য এ বছর প্রতিষ্ঠানের শূন্য পদের চাহিদা যাচাইয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আর এ যাচাই-বাছাই করতে গিয়েই গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে পারছে না এনটিআরসিএ।

জানতে চাইলে মো. এনামুল কাদের খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আমরা দ্রুতই গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে চাই। তবে আমাদের কাছে যে শূন্য পদের চাহিদা এসেছে তা যাচাই এবং পদ অনুমোদনের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। তারা মাউশি অধিদপ্তরের মাধ্যমে যাচাই করবে। মন্ত্রণালয় পদ অনুমোদন করে পাঠালেই আমরা সঙ্গে সঙ্গে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করব।’

মাউশি অধিদপ্তরের পরিচালক (মাধ্যমিক) মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আমাদের কাজ শেষ পর্যায়ে। আমরা জেলা ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারদের মাধ্যমে মাঠপর্যায় থেকে তথ্য এনেছি। এরপর তা ইএমআইএস সেলের মাধ্যমে যাচাই করা হয়েছে। এখন মূলত তথ্যগুলো সমন্বয় করা হচ্ছে। সেটা করছে কলেজ ও প্রশাসন বিভাগ। সে কাজটা শেষ হয়ে গেলেই আমরা তা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দেব।’

জানা যায়, ২০১৬ সালে স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার জন্য প্রথম গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিল এনটিআরসিএ। সর্বশেষ গত বছরের ৩০ মার্চ এনটিআরসিএ ৫৪ হাজার ৩০৪টি শূন্য পদের জন্য তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিল। এবার হবে চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তি। এর আগে এত বড় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেনি এনটিআরসিএ, যা শিক্ষক প্রার্থীদের জন্যও বড় ধরনের সুখবর।  এ বছরের শুরুতে চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তির জন্য স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসায় শূন্য পদের তালিকা চায় এনটিআরসিএ।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, একবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে চাহিদা আনা হয়। এরপর আবার সেই তথ্য সঠিক আছে কি না, তা যাচাই-বাছাই হচ্ছে, সবশেষ মাউশির ইআইএমএস সেলের মাধ্যমে তথ্য নিশ্চিত করা হচ্ছে। এই তিন-চার দপ্তর ও বিভাগের দারস্থ হয়ে এক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের জন্য মাসের পর মাস অপেক্ষা করতে হচ্ছে। সেটা করতে করতেই আবার হাজার হাজার পদ শূন্য হয়ে যাচ্ছে। যদি শুধু মাউশি অধিদপ্তরের মাধ্যমেই শূন্য পদের তালিকা সংগ্রহ করে এনটিআরসিএ, তাহলে এত দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হবে না।

এনটিআরসিএর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সব জটিলতা কাটিয়ে এ বছরেই গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হতে পারে। শুরুতে অক্টোবর মাস টার্গেট করলেও সম্ভব হয়নি। এখন নভেম্বরের শেষে বা ডিসেম্বরে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশের চেষ্টা করা হচ্ছে।

চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদনে জটিলতা কমবে : আগের তিন গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদনের ক্ষেত্রে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছিল চাকরিপ্রার্থীদের। কারণ প্রত্যেক প্রার্থীদে প্রতি পদের জন্য পৃথক আবেদন করতে হয়। আবেদন ফি মাত্র ১০০ টাকা হলেও বেশির ভাগ প্রার্থীই একেকজনেই ৫০০ থেকে ৭০০ আবেদন জমা দেন। এতে অনেক প্রার্থীরই আবেদন ফি বাবদই ৫০ থেকে ৭০ হাজার টাকা পর্যন্ত ব্যয় হয়। আর এত আবেদন করতে দীর্ঘ সময় ব্যয় করতে হয় প্রার্থীদের। এবার এসব ভোগান্তি কমানোর উদ্যোগ নিয়েছে এনটিআরসিএ।

চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে এক আবেদনেই ৪০টি বিদ্যালয় পছন্দ করা যাবে। আর এ জন্য আবেদন ফি দিতে হবে ১ হাজার টাকা। এই ৪০টির বাইরেও যদি কোনো বিদ্যালয়ে সুপারিশপত্র দেওয়া হয় তাতে প্রার্থী রাজি কি না, সে ব্যাপারেও ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ অপশন থাকবে আবেদনপত্রে। ফলে ভোগান্তি অনেকটাই কমে আসবে।

উদ্যোগ নেই ৭০,০০০ শিক্ষক নিয়োগে

শরীফুল আলম সুমন

বেসরকারি স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসায় প্রায় ৭০ হাজার শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। প্রায় ১০ মাস আগে শূন্য পদের চাহিদা স্কুল-কলেজের প্রধানরা বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) কাছে পাঠিয়েছেন। কিন্তু এত দিনেও গণবিজ্ঞপ্তি (নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি) প্রকাশ করতে পারেনি এনটিআরসিএ।

সূত্র জানায়, আগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শূন্য পদের চাহিদার ওপর ভিত্তি করে এনটিআরসিএ শিক্ষকদের সুপারিশ করলে অনেকেই দেখতে পান, সেটা সৃষ্ট পদ বা পদই নেই। এতে চাকরি পেয়েও বিপাকে পড়তেন শিক্ষকরা। এমনকি যোগদান করলেও তারা এমপিওভুক্ত হতে পারতেন না। অনেকেই যোগদানই করতেন না। এ জন্য এ বছর প্রতিষ্ঠানের শূন্য পদের চাহিদা যাচাইয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আর এ যাচাই-বাছাই করতে গিয়েই গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে পারছে না এনটিআরসিএ।

জানতে চাইলে মো. এনামুল কাদের খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আমরা দ্রুতই গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে চাই। তবে আমাদের কাছে যে শূন্য পদের চাহিদা এসেছে তা যাচাই এবং পদ অনুমোদনের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। তারা মাউশি অধিদপ্তরের মাধ্যমে যাচাই করবে। মন্ত্রণালয় পদ অনুমোদন করে পাঠালেই আমরা সঙ্গে সঙ্গে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করব।’

মাউশি অধিদপ্তরের পরিচালক (মাধ্যমিক) মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আমাদের কাজ শেষ পর্যায়ে। আমরা জেলা ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারদের মাধ্যমে মাঠপর্যায় থেকে তথ্য এনেছি। এরপর তা ইএমআইএস সেলের মাধ্যমে যাচাই করা হয়েছে। এখন মূলত তথ্যগুলো সমন্বয় করা হচ্ছে। সেটা করছে কলেজ ও প্রশাসন বিভাগ। সে কাজটা শেষ হয়ে গেলেই আমরা তা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দেব।’

জানা যায়, ২০১৬ সালে স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার জন্য প্রথম গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিল এনটিআরসিএ। সর্বশেষ গত বছরের ৩০ মার্চ এনটিআরসিএ ৫৪ হাজার ৩০৪টি শূন্য পদের জন্য তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিল। এবার হবে চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তি। এর আগে এত বড় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেনি এনটিআরসিএ, যা শিক্ষক প্রার্থীদের জন্যও বড় ধরনের সুখবর।  এ বছরের শুরুতে চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তির জন্য স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসায় শূন্য পদের তালিকা চায় এনটিআরসিএ।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, একবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে চাহিদা আনা হয়। এরপর আবার সেই তথ্য সঠিক আছে কি না, তা যাচাই-বাছাই হচ্ছে, সবশেষ মাউশির ইআইএমএস সেলের মাধ্যমে তথ্য নিশ্চিত করা হচ্ছে। এই তিন-চার দপ্তর ও বিভাগের দারস্থ হয়ে এক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের জন্য মাসের পর মাস অপেক্ষা করতে হচ্ছে। সেটা করতে করতেই আবার হাজার হাজার পদ শূন্য হয়ে যাচ্ছে। যদি শুধু মাউশি অধিদপ্তরের মাধ্যমেই শূন্য পদের তালিকা সংগ্রহ করে এনটিআরসিএ, তাহলে এত দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হবে না।

এনটিআরসিএর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সব জটিলতা কাটিয়ে এ বছরেই গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হতে পারে। শুরুতে অক্টোবর মাস টার্গেট করলেও সম্ভব হয়নি। এখন নভেম্বরের শেষে বা ডিসেম্বরে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশের চেষ্টা করা হচ্ছে।

চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদনে জটিলতা কমবে : আগের তিন গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদনের ক্ষেত্রে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছিল চাকরিপ্রার্থীদের। কারণ প্রত্যেক প্রার্থীদে প্রতি পদের জন্য পৃথক আবেদন করতে হয়। আবেদন ফি মাত্র ১০০ টাকা হলেও বেশির ভাগ প্রার্থীই একেকজনেই ৫০০ থেকে ৭০০ আবেদন জমা দেন। এতে অনেক প্রার্থীরই আবেদন ফি বাবদই ৫০ থেকে ৭০ হাজার টাকা পর্যন্ত ব্যয় হয়। আর এত আবেদন করতে দীর্ঘ সময় ব্যয় করতে হয় প্রার্থীদের। এবার এসব ভোগান্তি কমানোর উদ্যোগ নিয়েছে এনটিআরসিএ।

চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে এক আবেদনেই ৪০টি বিদ্যালয় পছন্দ করা যাবে। আর এ জন্য আবেদন ফি দিতে হবে ১ হাজার টাকা। এই ৪০টির বাইরেও যদি কোনো বিদ্যালয়ে সুপারিশপত্র দেওয়া হয় তাতে প্রার্থী রাজি কি না, সে ব্যাপারেও ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ অপশন থাকবে আবেদনপত্রে। ফলে ভোগান্তি অনেকটাই কমে আসবে।