একসঙ্গে এসএসসি পাস করে প্রশংসায় ভাসছেন বাবা-ছেলে

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি

ছেলে রাকিবুল হাসান রায়হান ও বাবা এখলাস উদ্দিন নয়ন।ছবি : কালবেলা

ময়মনসিংহের গৌরীপুরে একসঙ্গে এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে পাস করেছেন এখলাস উদ্দিন নয়ন (৪৫) ও তার ছেলে রাকিবুল হাসান রায়হান। পরীক্ষায় ছেলের থেকে বাবা ভালো ফলাফল পেয়েছেন।

গতকাল সোমবার দুপুরে প্রকাশিত ফলাফলে বাবা জিপিএ ৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন আর ছেলে পেয়েছে ৪.৮৬।

এখলাস উদ্দিন নয়ন নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার মগরাইল আদর্শ কারিগরি ইনস্টিটিউট থেকে কম্পিউটার অ্যান্ড ইনফরমেশন টেকনোলজি বিভাগ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন। অপর দিকে রাকিবুল হাসান নয়ন গৌরীপুর সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের বিল্ডিং মেইনটেন্স বিভাগ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়।

এদিকে বাবা-ছেলের পাসের ঘটনায় পরিবারসহ স্বজনদের মধ্যে আনন্দের জোয়ার বইছে। পাশাপাশি বাবা-ছেলে প্রশংসায় ভাসছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও। এছাড়া এসএসসি পাসের খবর পেয়ে রাতে পৌর শহরের স্বজন সমাবেশ কার্যালয়ে এসে তাদের দেখা করে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা নাজিম উদ্দিন আহমেদ।

নাজিম উদ্দিন আহমেদ বলেন, বাবা-ছেলের একসঙ্গে এসএসসি পাসের খবর শুনে আমি আনন্দিত হয়েছি। তাদের সঙ্গে দেখা করে সার্বিক খোঁজখবর নিয়েছি। শিক্ষার যে আসলে কোনো বয়স নেই এটি প্রমাণ করেছে নয়ন। বাবা-ছেলের জন্য শুভকামনা।

জানা গেছে, এখলাস উদ্দিন নয়নের বাড়ি উপজেলা গৌরীপুর ইউনিয়নের বায়রাউড়া গ্রামে। তিনি ওই ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য। বায়রাউড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে সমাপনী পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে নয়ন ভর্তি হন রাজেন্দ্র কিশোর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে। ১৯৯৬ সালে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার কথা থাকলেও হাতের অসুস্থতার কারণে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারেননি। পরবর্তীতে স্ত্রী সমলা খাতুনের উৎসাহে ২০২০ সালে পার্শ্ববর্তী কেন্দুয়া উপজেলার মগরাইল আদর্শ কারিগরি ইনস্টিটিউটে ভর্তি হন। তারপর থেকে ছেলের সঙ্গে পড়াশোনা করে এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন নয়ন।

এখলাস উদ্দিন নয়ন বলেন, ‘১৯৯৬ সালে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। কিন্তু অসুস্থতার কারণে সে বছর পরীক্ষা দিতে পারিনি। পরে আর পড়াশোনাও হয়নি। ২০২০ সালে স্ত্রীর উৎসাহে স্কুলে ভর্তি হই। এই বয়সে এসে পড়াশোনা করে যে ফলাফল পেয়েছি তাতে আমি সন্তুষ্ট। এখন ছেলের সঙ্গে উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তি হবো।’

ছেলে রাকিবুল হাসান রায়হান বলেন, ‘বাবা সবসময় আমার পড়াশোনার দিকে খেয়াল রাখতেন। একসঙ্গে পাস করার পাশাপাশি বাবার ভালো ফলাফলে আমি খুশি। আমি পড়াশোনা করে ইঞ্জিনিয়ার হতে চাই। পাশাপাশি বাবাও পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।’

গৌরিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হাসান মারুফ বলেন, ‘বাবা-ছেলের একসঙ্গে এসএসসি পাসের বিষয়টি শুনেছি। আসলে শিক্ষার কোনো বয়স নেই। তাদের জন্য শুভকামনা। এই ঘটনা অন্যদেরও অনুপ্রাণিত করবে।’

একসঙ্গে এসএসসি পাস করে প্রশংসায় ভাসছেন বাবা-ছেলে

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি

ছেলে রাকিবুল হাসান রায়হান ও বাবা এখলাস উদ্দিন নয়ন।ছবি : কালবেলা

ময়মনসিংহের গৌরীপুরে একসঙ্গে এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে পাস করেছেন এখলাস উদ্দিন নয়ন (৪৫) ও তার ছেলে রাকিবুল হাসান রায়হান। পরীক্ষায় ছেলের থেকে বাবা ভালো ফলাফল পেয়েছেন।

গতকাল সোমবার দুপুরে প্রকাশিত ফলাফলে বাবা জিপিএ ৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন আর ছেলে পেয়েছে ৪.৮৬।

এখলাস উদ্দিন নয়ন নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার মগরাইল আদর্শ কারিগরি ইনস্টিটিউট থেকে কম্পিউটার অ্যান্ড ইনফরমেশন টেকনোলজি বিভাগ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন। অপর দিকে রাকিবুল হাসান নয়ন গৌরীপুর সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের বিল্ডিং মেইনটেন্স বিভাগ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়।

এদিকে বাবা-ছেলের পাসের ঘটনায় পরিবারসহ স্বজনদের মধ্যে আনন্দের জোয়ার বইছে। পাশাপাশি বাবা-ছেলে প্রশংসায় ভাসছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও। এছাড়া এসএসসি পাসের খবর পেয়ে রাতে পৌর শহরের স্বজন সমাবেশ কার্যালয়ে এসে তাদের দেখা করে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা নাজিম উদ্দিন আহমেদ।

নাজিম উদ্দিন আহমেদ বলেন, বাবা-ছেলের একসঙ্গে এসএসসি পাসের খবর শুনে আমি আনন্দিত হয়েছি। তাদের সঙ্গে দেখা করে সার্বিক খোঁজখবর নিয়েছি। শিক্ষার যে আসলে কোনো বয়স নেই এটি প্রমাণ করেছে নয়ন। বাবা-ছেলের জন্য শুভকামনা।

জানা গেছে, এখলাস উদ্দিন নয়নের বাড়ি উপজেলা গৌরীপুর ইউনিয়নের বায়রাউড়া গ্রামে। তিনি ওই ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য। বায়রাউড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে সমাপনী পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে নয়ন ভর্তি হন রাজেন্দ্র কিশোর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে। ১৯৯৬ সালে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার কথা থাকলেও হাতের অসুস্থতার কারণে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারেননি। পরবর্তীতে স্ত্রী সমলা খাতুনের উৎসাহে ২০২০ সালে পার্শ্ববর্তী কেন্দুয়া উপজেলার মগরাইল আদর্শ কারিগরি ইনস্টিটিউটে ভর্তি হন। তারপর থেকে ছেলের সঙ্গে পড়াশোনা করে এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন নয়ন।

এখলাস উদ্দিন নয়ন বলেন, ‘১৯৯৬ সালে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। কিন্তু অসুস্থতার কারণে সে বছর পরীক্ষা দিতে পারিনি। পরে আর পড়াশোনাও হয়নি। ২০২০ সালে স্ত্রীর উৎসাহে স্কুলে ভর্তি হই। এই বয়সে এসে পড়াশোনা করে যে ফলাফল পেয়েছি তাতে আমি সন্তুষ্ট। এখন ছেলের সঙ্গে উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তি হবো।’

ছেলে রাকিবুল হাসান রায়হান বলেন, ‘বাবা সবসময় আমার পড়াশোনার দিকে খেয়াল রাখতেন। একসঙ্গে পাস করার পাশাপাশি বাবার ভালো ফলাফলে আমি খুশি। আমি পড়াশোনা করে ইঞ্জিনিয়ার হতে চাই। পাশাপাশি বাবাও পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।’

গৌরিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হাসান মারুফ বলেন, ‘বাবা-ছেলের একসঙ্গে এসএসসি পাসের বিষয়টি শুনেছি। আসলে শিক্ষার কোনো বয়স নেই। তাদের জন্য শুভকামনা। এই ঘটনা অন্যদেরও অনুপ্রাণিত করবে।’