কলাভবনের পাশেই দিনে অর্ধ লাখ টাকার ফটোকপি

মোতাহার হোসেন, ঢাবি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফটোস্ট্যাটের ব্যবসা জমজমাট।ছবি : কালবেলা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নির্ভর করে ফটোকপির ওপর। ফলে ফটোস্ট্যাটের ব্যবসা জমজমাট এখানে। শুধু কলাভবনের পাশের ছাউনির (শ্যাডো) দোকানগুলোতে এক দিনেই প্রায় ৫০ হাজার টাকার ফটোকপি হয়। পরীক্ষার মৌসুমে এটা আরও বাড়ে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানান, গত কয়েক দশকেও সিলেবাস বদলায়নি বিভিন্ন বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের। এগুলোতে চলছে শিট ফটোকপিভিত্তিক পড়াশোনা। শিক্ষক বা শিক্ষার্থীর তৈরি করা এক শিট দিয়েই বছরের পর বছর পরীক্ষা চলছে। বিভিন্ন অনুষদ ও ইনস্টিটিউটের পাশের দোকান, হলের দোকান, নীলক্ষেত, পলাশী, বকশীবাজারের দোকানে এসব শিট ফটোকপি করা হয়। মূলত, বছরের পর বছর সিলেবাস পরিবর্তন না হওয়ার কারণেই এ অবস্থা তৈরি হয়েছে বলে শিক্ষা-সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের শিক্ষার্থী রাকিবুল ইসলাম বলেন, আমাদের বিভাগের বইগুলো অনেক বড় বড়। সেজন্য আমরা শিট আকারে বই পড়ি। আবার পরীক্ষার আগে অনেক প্রশ্নের উত্তরের শিট তৈরি করে একে অন্যকে দিয়ে থাকি। প্রতি সেমিস্টারে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকার ফটোকপি করতে হয়।

ফটোকপি দোকান মালিকরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার অধিকাংশ দোকানে প্রতিদিন ৬ থেকে ৮ হাজার টাকার বই ও শিট ফটোকপি হয়। এর মধ্যে অধিকাংশ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের তৈরি করা শিট। কলাভবনের পাশের ছাউনিতে ছয়টি ফটোকপির দোকান। চাহিদা বেশি হওয়ায় প্রতিটি দোকানে ৩ থেকে ৪ জন কাজ করেন। এ ছয়টি দোকানেই প্রতিদিন অর্ধ লাখ টাকার ফটোকপি হয়। এ ছাড়া, প্রতিটি হলে অন্তত ৩ থেকে ৫ হাজার টাকার শিট ফটোকপি হয় বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে ফটোকপি দোকানের কর্মচারী আরিফ হোসেন বলেন, প্রতিদিন আমাদের দোকানে ৬ থেকে ৮ হাজার টাকার শিট বিক্রি হয়। কলাভবনের নিচের প্রতিটি দোকানে একই অবস্থা। ফটোকপির চাপ আছে হলগুলোতেও।

মাস্টারদা সূর্য সেন হলের ফটোকপি দোকানের কর্মচারী রাকিবুল ইসলাম বলেন, প্রতিদিন বই, শিট ও অন্যান্য কাগজপত্র মিলিয়ে এখানে ৪ থেকে ৬ হাজার টাকার ফটোকপি হয়।

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ কালবেলাকে বলেন, শিক্ষা ব্যবস্থায় সংস্কার আনা প্রয়োজন। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কিছু পরিবর্তন আনা আবশ্যক। একটি একাডেমিক পরিকল্পনা তৈরির জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক ও বিশিষ্ট গবেষক ড. হাসিনা খানকে আহ্বায়ক এবং ড. হাসান বাবুকে সদস্য সচিব করে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছেন।

আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে এই কমিটির রিপোর্ট দেওয়ার কথা। সেখানে সব বিষয়েই যুগোপযোগী পরামর্শ ও সুপারিশ থাকবে বলে আশা রাখি। সে অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব বলে মনে করি।

কলাভবনের পাশেই দিনে অর্ধ লাখ টাকার ফটোকপি

মোতাহার হোসেন, ঢাবি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফটোস্ট্যাটের ব্যবসা জমজমাট।ছবি : কালবেলা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নির্ভর করে ফটোকপির ওপর। ফলে ফটোস্ট্যাটের ব্যবসা জমজমাট এখানে। শুধু কলাভবনের পাশের ছাউনির (শ্যাডো) দোকানগুলোতে এক দিনেই প্রায় ৫০ হাজার টাকার ফটোকপি হয়। পরীক্ষার মৌসুমে এটা আরও বাড়ে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানান, গত কয়েক দশকেও সিলেবাস বদলায়নি বিভিন্ন বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের। এগুলোতে চলছে শিট ফটোকপিভিত্তিক পড়াশোনা। শিক্ষক বা শিক্ষার্থীর তৈরি করা এক শিট দিয়েই বছরের পর বছর পরীক্ষা চলছে। বিভিন্ন অনুষদ ও ইনস্টিটিউটের পাশের দোকান, হলের দোকান, নীলক্ষেত, পলাশী, বকশীবাজারের দোকানে এসব শিট ফটোকপি করা হয়। মূলত, বছরের পর বছর সিলেবাস পরিবর্তন না হওয়ার কারণেই এ অবস্থা তৈরি হয়েছে বলে শিক্ষা-সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের শিক্ষার্থী রাকিবুল ইসলাম বলেন, আমাদের বিভাগের বইগুলো অনেক বড় বড়। সেজন্য আমরা শিট আকারে বই পড়ি। আবার পরীক্ষার আগে অনেক প্রশ্নের উত্তরের শিট তৈরি করে একে অন্যকে দিয়ে থাকি। প্রতি সেমিস্টারে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকার ফটোকপি করতে হয়।

ফটোকপি দোকান মালিকরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার অধিকাংশ দোকানে প্রতিদিন ৬ থেকে ৮ হাজার টাকার বই ও শিট ফটোকপি হয়। এর মধ্যে অধিকাংশ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের তৈরি করা শিট। কলাভবনের পাশের ছাউনিতে ছয়টি ফটোকপির দোকান। চাহিদা বেশি হওয়ায় প্রতিটি দোকানে ৩ থেকে ৪ জন কাজ করেন। এ ছয়টি দোকানেই প্রতিদিন অর্ধ লাখ টাকার ফটোকপি হয়। এ ছাড়া, প্রতিটি হলে অন্তত ৩ থেকে ৫ হাজার টাকার শিট ফটোকপি হয় বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে ফটোকপি দোকানের কর্মচারী আরিফ হোসেন বলেন, প্রতিদিন আমাদের দোকানে ৬ থেকে ৮ হাজার টাকার শিট বিক্রি হয়। কলাভবনের নিচের প্রতিটি দোকানে একই অবস্থা। ফটোকপির চাপ আছে হলগুলোতেও।

মাস্টারদা সূর্য সেন হলের ফটোকপি দোকানের কর্মচারী রাকিবুল ইসলাম বলেন, প্রতিদিন বই, শিট ও অন্যান্য কাগজপত্র মিলিয়ে এখানে ৪ থেকে ৬ হাজার টাকার ফটোকপি হয়।

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ কালবেলাকে বলেন, শিক্ষা ব্যবস্থায় সংস্কার আনা প্রয়োজন। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কিছু পরিবর্তন আনা আবশ্যক। একটি একাডেমিক পরিকল্পনা তৈরির জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক ও বিশিষ্ট গবেষক ড. হাসিনা খানকে আহ্বায়ক এবং ড. হাসান বাবুকে সদস্য সচিব করে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছেন।

আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে এই কমিটির রিপোর্ট দেওয়ার কথা। সেখানে সব বিষয়েই যুগোপযোগী পরামর্শ ও সুপারিশ থাকবে বলে আশা রাখি। সে অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব বলে মনে করি।