গ্রেডিং পদ্ধতিতে ভিন্নতা, ইউজিসির নীতিমালা মেনে চলা উচিত

দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় শিক্ষার্থী মূল্যায়নে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) তৈরি করা অভিন্ন গ্রেডিং পদ্ধতি অনুসরণ না করায় বঞ্চিত ও বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।

২০০৬ সালে ইউজিসি একটি অভিন্ন গ্রেডিং পদ্ধতি তৈরি করে সব বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠিয়েছিল। দেশের সব পাবলিক এবং অধিকাংশ প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় সেটি অনুসরণ করলেও কয়েকটি প্রতিষ্ঠান তা মানছে না। যেসব বিশ্ববিদ্যালয় এ বিষয়ে ইউজিসির নীতিমালা অনুসরণ করছে না, সেসব প্রতিষ্ঠানকে ইউজিসির নীতিমালা অনুসরণের তাগিদ দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

ইউজিসির নীতিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে, সর্বোচ্চ সাফল্য হিসাবে বিবেচিত সিজিপিএ-৪ পেতে হলে একজন শিক্ষার্থীকে সর্বনিম্ন ৮০ শতাংশ নম্বর পেতে হবে। বর্তমানে কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে সিজিপিএ-৪ পেতে হলে একজন শিক্ষার্থীকে সর্বনিম্ন ৯০ শতাংশ নম্বর পেতে হয়। কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে এ নম্বরের সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে সর্বনিম্ন ৯৩ শতাংশ; আবার কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ৯৭ শতাংশ। ইউজিসির নির্দেশনায় উল্লেখ রয়েছে, একজন শিক্ষার্থী ৪০ নম্বরের কম পেলে তাকে ‘এফ’ বা অকৃতকার্য হিসাবে বিবেচনা করা হবে। কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইউজিসির এ নির্দেশনাও মানা হচ্ছে না। এক্ষেত্রে অকৃতকার্য হিসাবে নম্বরের সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০, আবার কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে নম্বরের এ সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে ৬০।

একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে এ প্লাসকে বলা হচ্ছে ‘এক্সিলেন্স’ আর লেটার গ্রেডে ‘এ’। কিন্তু কত নম্বর পেলে এ গ্রেড দেওয়া হয় তা অস্পষ্ট। এ প্রতিষ্ঠান ফল তৈরিতে দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সর্বোচ্চসংখ্যক ২১টি স্তর অনুসরণ করে। এর মধ্যে শূন্য গ্রেডেই আছে বিভিন্ন নামে ১০টি স্তর। সর্বনিম্ন সিজিপিএ-১-এর জন্য লেটার গ্রেড হচ্ছে ডি, যেটিকে ব্যাখ্যা করে বলা হয় ‘ডেফিসিয়েন্ট পাসিং’। অপর একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বোচ্চ সাফল্যকে লেটার গ্রেডে এ প্লাস এবং সিজিপিএ ৪ ধরা হলেও তা কত নম্বরে বিবেচনা করা হয়, সেটি জানানো হয় না। আর মূল্যায়ন প্রতিবেদনে এ স্তরকে তারা ‘আউটস্ট্যান্ডিং’ উল্লেখ করে থাকে।

জানা গেছে, বিভিন্ন দেশে বিশেষ করে উন্নত দেশগুলোয় একেকটি বিশ্ববিদ্যালয় একেক ধরনের গ্রেডিং পদ্ধতি ব্যবহার করে, যা কর্তৃপক্ষ নিজেদের মতো তৈরি করে থাকে। এটা তাদের মর্যাদার পরিচায়ক। বস্তুত বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে মূল্যায়নের ক্ষেত্রে অভিন্ন মাপকাঠি নির্ধারণ করা কঠিন। লক্ষ করা যায়, বিশ্বের নামকরা একেকটি বিশ্ববিদ্যালয় স্নাতক, স্নাতকোত্তর বা পিএইচডি পর্যায়ে শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষেত্রেও ভিন্ন ভিন্ন যোগ্যতা নির্ধারণ করে থাকে। আমরা জানি, কেবল গবেষণা বা জানার জন্যই নয়; কর্মক্ষেত্রে নিজেকে প্রতিষ্ঠার জন্যও দেশের বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন এবং শিক্ষা শেষে চাকরির জন্য প্রতিযোগিতামূলক পারীক্ষায় অবতীর্ণ হন। দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শিক্ষার্থী মূল্যায়নে ইউজিসির তৈরি করা অভিন্ন গ্রেডিং পদ্ধতি অনুসরণ না করায় শিক্ষা শেষে চাকরির বাজারে প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। এছাড়া যেসব শিক্ষার্থী উচ্চতর গবেষণার জন্য বিদেশে যেতে চান, তারাও নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী মূল্যায়নে ইউজিসির নির্দেশিত অভিন্ন গ্রেডিং পদ্ধতি অনুসরণ করলে অনেক অনাকাঙ্ক্ষিত জটিলতা এড়ানো সম্ভব। এক্ষেত্রে দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন উদারতার পরিচয় দেবে, এটাই প্রত্যাশা।

গ্রেডিং পদ্ধতিতে ভিন্নতা, ইউজিসির নীতিমালা মেনে চলা উচিত

দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় শিক্ষার্থী মূল্যায়নে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) তৈরি করা অভিন্ন গ্রেডিং পদ্ধতি অনুসরণ না করায় বঞ্চিত ও বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।

২০০৬ সালে ইউজিসি একটি অভিন্ন গ্রেডিং পদ্ধতি তৈরি করে সব বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠিয়েছিল। দেশের সব পাবলিক এবং অধিকাংশ প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় সেটি অনুসরণ করলেও কয়েকটি প্রতিষ্ঠান তা মানছে না। যেসব বিশ্ববিদ্যালয় এ বিষয়ে ইউজিসির নীতিমালা অনুসরণ করছে না, সেসব প্রতিষ্ঠানকে ইউজিসির নীতিমালা অনুসরণের তাগিদ দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

ইউজিসির নীতিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে, সর্বোচ্চ সাফল্য হিসাবে বিবেচিত সিজিপিএ-৪ পেতে হলে একজন শিক্ষার্থীকে সর্বনিম্ন ৮০ শতাংশ নম্বর পেতে হবে। বর্তমানে কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে সিজিপিএ-৪ পেতে হলে একজন শিক্ষার্থীকে সর্বনিম্ন ৯০ শতাংশ নম্বর পেতে হয়। কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে এ নম্বরের সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে সর্বনিম্ন ৯৩ শতাংশ; আবার কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ৯৭ শতাংশ। ইউজিসির নির্দেশনায় উল্লেখ রয়েছে, একজন শিক্ষার্থী ৪০ নম্বরের কম পেলে তাকে ‘এফ’ বা অকৃতকার্য হিসাবে বিবেচনা করা হবে। কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইউজিসির এ নির্দেশনাও মানা হচ্ছে না। এক্ষেত্রে অকৃতকার্য হিসাবে নম্বরের সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০, আবার কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে নম্বরের এ সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে ৬০।

একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে এ প্লাসকে বলা হচ্ছে ‘এক্সিলেন্স’ আর লেটার গ্রেডে ‘এ’। কিন্তু কত নম্বর পেলে এ গ্রেড দেওয়া হয় তা অস্পষ্ট। এ প্রতিষ্ঠান ফল তৈরিতে দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সর্বোচ্চসংখ্যক ২১টি স্তর অনুসরণ করে। এর মধ্যে শূন্য গ্রেডেই আছে বিভিন্ন নামে ১০টি স্তর। সর্বনিম্ন সিজিপিএ-১-এর জন্য লেটার গ্রেড হচ্ছে ডি, যেটিকে ব্যাখ্যা করে বলা হয় ‘ডেফিসিয়েন্ট পাসিং’। অপর একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বোচ্চ সাফল্যকে লেটার গ্রেডে এ প্লাস এবং সিজিপিএ ৪ ধরা হলেও তা কত নম্বরে বিবেচনা করা হয়, সেটি জানানো হয় না। আর মূল্যায়ন প্রতিবেদনে এ স্তরকে তারা ‘আউটস্ট্যান্ডিং’ উল্লেখ করে থাকে।

জানা গেছে, বিভিন্ন দেশে বিশেষ করে উন্নত দেশগুলোয় একেকটি বিশ্ববিদ্যালয় একেক ধরনের গ্রেডিং পদ্ধতি ব্যবহার করে, যা কর্তৃপক্ষ নিজেদের মতো তৈরি করে থাকে। এটা তাদের মর্যাদার পরিচায়ক। বস্তুত বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে মূল্যায়নের ক্ষেত্রে অভিন্ন মাপকাঠি নির্ধারণ করা কঠিন। লক্ষ করা যায়, বিশ্বের নামকরা একেকটি বিশ্ববিদ্যালয় স্নাতক, স্নাতকোত্তর বা পিএইচডি পর্যায়ে শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষেত্রেও ভিন্ন ভিন্ন যোগ্যতা নির্ধারণ করে থাকে। আমরা জানি, কেবল গবেষণা বা জানার জন্যই নয়; কর্মক্ষেত্রে নিজেকে প্রতিষ্ঠার জন্যও দেশের বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন এবং শিক্ষা শেষে চাকরির জন্য প্রতিযোগিতামূলক পারীক্ষায় অবতীর্ণ হন। দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শিক্ষার্থী মূল্যায়নে ইউজিসির তৈরি করা অভিন্ন গ্রেডিং পদ্ধতি অনুসরণ না করায় শিক্ষা শেষে চাকরির বাজারে প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। এছাড়া যেসব শিক্ষার্থী উচ্চতর গবেষণার জন্য বিদেশে যেতে চান, তারাও নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী মূল্যায়নে ইউজিসির নির্দেশিত অভিন্ন গ্রেডিং পদ্ধতি অনুসরণ করলে অনেক অনাকাঙ্ক্ষিত জটিলতা এড়ানো সম্ভব। এক্ষেত্রে দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন উদারতার পরিচয় দেবে, এটাই প্রত্যাশা।