চূড়ান্ত হচ্ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে র‍্যাগিং বুলিং প্রতিরোধে নীতিমালা

কালবেলা প্রতিবেদক

ছবি : সংগৃহীত

দেশের সব ধরনের সরকারি-বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে র‌্যাগিং-বুলিং প্রতিরোধে কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এর পাশাপাশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে র‌্যাগিং-বুলিং প্রতিরোধে নীতিমালাও তৈরি করছে মন্ত্রণালয়। এরই মধ্যে খসড়া তৈরি করে সভার আয়োজন করা হয়েছে। আরও কয়েক দফা সভা শেষে নীতিমালা চূড়ান্ত করা হবে।

সূত্র জানিয়েছে, সম্প্রতি সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে র‌্যাগিং-বুলিং প্রতিরোধ সংক্রান্ত নীতিমালা-২০২৩’-এর খসড়া চূড়ান্তকরণে সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান। সভায় খসড়া নীতিমালার বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা হয়। তবে নীতিমালা নিয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।

এ বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (মাধ্যমিক-২) আবদুন নূর মুহম্মদ আল ফিরোজ কালবেলাকে বলেন, আমরা খসড়া নীতিমালা নিয়ে সভা করেছি। আরও কয়েকটি সভা শেষে নীতিমালা চূড়ান্ত করা হবে।

কী আছে নীতিমালায়

নীতিমালায় বলা হয়েছ, বুলিং অথবা র‌্যাগিং প্রতিরোধে প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কমিটি গঠন করতে হবে। প্রতিষ্ঠানে বুলিং অথবা র‌্যাগিং হয় কিনা, নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করবে কমিটি। অভিযোগ বাক্স রাখার ব্যবস্থা এবং বাক্সে আসা অভিযোগের গুরুত্ব অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। নিয়মিত সভায় মিলিত এ-সংক্রান্ত মনিটরিং কার্যক্রম পর্যালোচনা করা হবে। প্রতিবেদন যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে।

এ ক্ষেত্রে র‌্যাগিং-বুলিংকারী শিক্ষক অথবা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারী হলে যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরে পাঠানো হবে। সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তর বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ করবে।

নীতিমালায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ অপরাধ প্রতিরোধ ব্যবস্থাপনা কমিটি, প্রধান শিক্ষক ও কর্মচারীদের করণীয় সম্পর্কেও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে কেউ এ ধরনের অপরাধে যুক্ত হলে তার শাস্তির কথাও উল্লেখ করা হয়েছে।

নির্দেশনায় শাস্তির বিধানে বলা হয়েছে, র‌্যাগিং-বুলিংকারী শিক্ষার্থী হলে এর ধরন ও গুরুত্ব অনুযায়ী সাময়িক বা স্থায়ী বহিষ্কার করা হবে। আর কোনো শিক্ষক অথবা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীর প্রত্যক্ষ অথবা পরোক্ষভাবে সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে ১৯৭৯ সালের সরকারি কর্মচারী আচরণ বিধিমালার পরিপন্থি হবে এবং তা শাস্তিমূলক অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। তার বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে। যাদের ক্ষেত্রে সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা ১৯৭৯ কিংবা সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ প্রযোজ্য নয়, তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি আইনে কিংবা প্রযোজ্য ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট আইনে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে।

র‌্যাগিং-বুলিংয়ের উপযুক্ত কারণ দর্শানো সাপেক্ষে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের ক্ষেত্রে এমপিও স্থায়ী অথবা অস্থায়ীভাবে বাতিল করা যাবে। ক্ষেত্রবিশেষে তাদের স্থায়ী বা অস্থায়ীভাবে অপসারণ ও বরখাস্ত করা যাবে। আর উপযুক্ত কারণ দর্শানো সাপেক্ষে নন-এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের ক্ষেত্রে তাদের স্থায়ী অথবা অস্থায়ীভাবে অপসারণ বরখাস্ত করা যাবে এবং ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনায় দায়ী ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে ফৌজদারি মামলা দায়ের করা যাবে।

গভর্নিং বডি, ম্যানেজিং, অ্যাডহক অথবা বিশেষ কমিটির কোনো সদস্যের প্রত্যক্ষ অথবা পরোক্ষভাবে জড়িত থাকলে বোর্ড কর্তৃক তদন্ত রিপোর্টের পরিপ্রেক্ষিতে ওই কমিটির সদস্য পদ থেকে তাকে অপসারণ করা যাবে অথবা সংশ্লিষ্ট কমিটি বাতিল করা যাবে।

প্রচলিত আইন অনুযায়ী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বরাবর ব্যবস্থা গ্রহণসহ ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনায় দায়ী ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে ফৌজদারি মামলা করা যাবে। বুলিংয়ের ধরন ও গুরুত্ব অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ তাদের বিধিমালা অনুযায়ী বুলিংকারীকে সাময়িক বা স্থায়ী বহিষ্কার করবেন। ঘটনার গুরুত্ব সাপেক্ষে প্রচলিত আইন অনুযায়ী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বরাবর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পাঠাবেন।

প্রতি ছয় মাসে অন্তত একবার প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে এ বিষয় থেকে উত্তরণের উপায় হিসেবে সেমিনার, সিম্পোজিয়াম ও ওয়ার্কশপের আয়োজন করা হবে।

চূড়ান্ত হচ্ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে র‍্যাগিং বুলিং প্রতিরোধে নীতিমালা

কালবেলা প্রতিবেদক

ছবি : সংগৃহীত

দেশের সব ধরনের সরকারি-বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে র‌্যাগিং-বুলিং প্রতিরোধে কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এর পাশাপাশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে র‌্যাগিং-বুলিং প্রতিরোধে নীতিমালাও তৈরি করছে মন্ত্রণালয়। এরই মধ্যে খসড়া তৈরি করে সভার আয়োজন করা হয়েছে। আরও কয়েক দফা সভা শেষে নীতিমালা চূড়ান্ত করা হবে।

সূত্র জানিয়েছে, সম্প্রতি সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে র‌্যাগিং-বুলিং প্রতিরোধ সংক্রান্ত নীতিমালা-২০২৩’-এর খসড়া চূড়ান্তকরণে সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান। সভায় খসড়া নীতিমালার বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা হয়। তবে নীতিমালা নিয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।

এ বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (মাধ্যমিক-২) আবদুন নূর মুহম্মদ আল ফিরোজ কালবেলাকে বলেন, আমরা খসড়া নীতিমালা নিয়ে সভা করেছি। আরও কয়েকটি সভা শেষে নীতিমালা চূড়ান্ত করা হবে।

কী আছে নীতিমালায়

নীতিমালায় বলা হয়েছ, বুলিং অথবা র‌্যাগিং প্রতিরোধে প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কমিটি গঠন করতে হবে। প্রতিষ্ঠানে বুলিং অথবা র‌্যাগিং হয় কিনা, নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করবে কমিটি। অভিযোগ বাক্স রাখার ব্যবস্থা এবং বাক্সে আসা অভিযোগের গুরুত্ব অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। নিয়মিত সভায় মিলিত এ-সংক্রান্ত মনিটরিং কার্যক্রম পর্যালোচনা করা হবে। প্রতিবেদন যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে।

এ ক্ষেত্রে র‌্যাগিং-বুলিংকারী শিক্ষক অথবা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারী হলে যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরে পাঠানো হবে। সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তর বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ করবে।

নীতিমালায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ অপরাধ প্রতিরোধ ব্যবস্থাপনা কমিটি, প্রধান শিক্ষক ও কর্মচারীদের করণীয় সম্পর্কেও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে কেউ এ ধরনের অপরাধে যুক্ত হলে তার শাস্তির কথাও উল্লেখ করা হয়েছে।

নির্দেশনায় শাস্তির বিধানে বলা হয়েছে, র‌্যাগিং-বুলিংকারী শিক্ষার্থী হলে এর ধরন ও গুরুত্ব অনুযায়ী সাময়িক বা স্থায়ী বহিষ্কার করা হবে। আর কোনো শিক্ষক অথবা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীর প্রত্যক্ষ অথবা পরোক্ষভাবে সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে ১৯৭৯ সালের সরকারি কর্মচারী আচরণ বিধিমালার পরিপন্থি হবে এবং তা শাস্তিমূলক অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। তার বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে। যাদের ক্ষেত্রে সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা ১৯৭৯ কিংবা সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ প্রযোজ্য নয়, তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি আইনে কিংবা প্রযোজ্য ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট আইনে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে।

র‌্যাগিং-বুলিংয়ের উপযুক্ত কারণ দর্শানো সাপেক্ষে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের ক্ষেত্রে এমপিও স্থায়ী অথবা অস্থায়ীভাবে বাতিল করা যাবে। ক্ষেত্রবিশেষে তাদের স্থায়ী বা অস্থায়ীভাবে অপসারণ ও বরখাস্ত করা যাবে। আর উপযুক্ত কারণ দর্শানো সাপেক্ষে নন-এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের ক্ষেত্রে তাদের স্থায়ী অথবা অস্থায়ীভাবে অপসারণ বরখাস্ত করা যাবে এবং ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনায় দায়ী ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে ফৌজদারি মামলা দায়ের করা যাবে।

গভর্নিং বডি, ম্যানেজিং, অ্যাডহক অথবা বিশেষ কমিটির কোনো সদস্যের প্রত্যক্ষ অথবা পরোক্ষভাবে জড়িত থাকলে বোর্ড কর্তৃক তদন্ত রিপোর্টের পরিপ্রেক্ষিতে ওই কমিটির সদস্য পদ থেকে তাকে অপসারণ করা যাবে অথবা সংশ্লিষ্ট কমিটি বাতিল করা যাবে।

প্রচলিত আইন অনুযায়ী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বরাবর ব্যবস্থা গ্রহণসহ ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনায় দায়ী ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে ফৌজদারি মামলা করা যাবে। বুলিংয়ের ধরন ও গুরুত্ব অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ তাদের বিধিমালা অনুযায়ী বুলিংকারীকে সাময়িক বা স্থায়ী বহিষ্কার করবেন। ঘটনার গুরুত্ব সাপেক্ষে প্রচলিত আইন অনুযায়ী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বরাবর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পাঠাবেন।

প্রতি ছয় মাসে অন্তত একবার প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে এ বিষয় থেকে উত্তরণের উপায় হিসেবে সেমিনার, সিম্পোজিয়াম ও ওয়ার্কশপের আয়োজন করা হবে।