টঙ্গীবাড়িতে বানারী স্কুলের মিলনমেলা ২৮ জানুয়ারি, নিবন্ধন চলছে

মো. বাবুল হোসেন
বানারী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়।

টঙ্গীবাড়ি উপজেলার হাসাইলে অবস্থিত বানারী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের প্রথম মিলনমেলা আগামী ২৮ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে দিনব্যাপী এ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানটি হবে। ১২২ বছরের ঐতিহ্যবাহী এই স্কুলের মিলনমেলায় প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা স্বতস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করবেন।

দিনব্যাপী এই পুনর্মিলনী বিদ্যালয়ের মাঠে সকাল থেকে বিভিন্ন আলোচনা ও অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে চলবে। রাতে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শেষ হবে। প্রথম ধাপের নিবন্ধন ১০ জানুয়ারি সম্পন্ন হয়েছে। পরবর্তীতে ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত নিবন্ধনের সময় বাড়ানো হয়েছে। অনুষ্ঠানকে সফল করতে প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা বিরামহীনভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।

অনুষ্ঠানের দিন সকালে আনন্দ শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হবে। অনুষ্ঠান সূচিতে থাকবে প্রাক্তন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের স্মৃতিচারণ বা বক্তৃতা। প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষকদের সম্মাননা পুরস্কার প্রদান, নিবন্ধিত সকল সদস্যের বিভিন্ন খেলাধুলায় একক বা দলীয়ভাবে অংশগ্রহণ, প্রতিটি খেলায় প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অধিকারীর জন্য থাকবে আলাদা আলাদা পুরস্কার। সারাদিন থাকবে বিভিন্ন ধরনের মুখরোচক খাবার। ৱ্যাফেল ড্রতে থাকবে আকর্ষণীয় নানা পুরস্কার এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

বানারী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়।

বিদ্যালয়ের ৮০-ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. মনির ফকির। বাংলাদেশের প্রসিদ্ধ একজন ঘড়ি ব্যবসায়ী। বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সদস্য। বর্তমানে বাংলাদেশ ঘড়ি ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক ও সাবেক সহ-সভাপতি। মিলনমেলা সম্পর্কে তাঁর অনুভূতি জানতে চাইলে বলেন, “পদ্মা নদীর ভাঙ্গণের কারণে আমাদের এলাকার অনেক লোকজন বিভিন্ন জায়গায় চলে গেছেন। তাদের সাথে বছরের পর বছর এমনকি যুগ পেরিয়ে গেলেও কোনো যোগাযোগ নেই। এই মিলনমেলা যোগাযোগের ভালো একটি মাধ্যম হিসেবে কাজ করবে। কে কোথায় আছেন, আমরা জানতে পারব। তাছাড়া আমাদের স্কুলের অনেকেই অনেক ভালো ভালো অবস্থানে আছেন এবং তারা স্কুলের জন্যও কিছু করতে চান। তাদের সাথে যোগাযোগ না থাকার কারণে স্কুলের জন্য তারা অবদান রাখতে পারছেননা। এরফলে তাদের সাথে আমাদের বিদ্যালয়ের বন্ধনটা আরও দৃঢ় হবে।”

তিনি আরও বলেন, “সেদিন আমরা অনেককেই একসাথে পাবো। প্রাক্তনদের অংশগ্রহণে দিনটি অনেক ভালো কাটবে। এই মিলনমেলার সফল আয়োজনের মধ্য দিয়ে সকলের সহযোগিতায় আগামীতে ১২৫ বছর পূর্তিও আমরা সুন্দর ও সফলভাবে করতে পাববো বলে আশা প্রকাশ করছি।”

বিদ্যালয়ের ৯১-ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. মোশাররফ হোসেন। বর্তমানে মাদারীপুরে ‘ইউনাইটেড ইসলামিয়া গভর্মেন্ট হাইস্কুল’-এ ইংরেজি বিষয়ের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন। বিদ্যালয়ের মিলনমেলা সম্পর্কে তাঁর অনুভূতি জানতে চাইলে এই প্রতিবেদকে জানান, “প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে মিলনমেলা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, এটা জেনে বেশ ভালো লাগছে। এই প্রথমবারের মতো এমন আয়োজনে অংশগ্রহণ করে বন্ধুদের সাথে দেখা হবে, সেদিন ছাত্র জীবনের স্মৃতিগুলো সামনে চলে আসবে। সত্যি এক অন্যরকম অনুভূতি কাজ করছে।”

শিক্ষা নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “শিক্ষায় অন্যান্য জেলার তুলনায় মুন্সিগঞ্জ বর্তমানে অনেকটাই পিছিয়ে যাচ্ছে। শিক্ষার ক্ষেত্রে আমাদের অভিভাবকদের আরও সচেতন হতে হবে। সেই সাথে ছেলেমেয়েদের জন্য ভালো পরিবেশ দিতে হবে। শিক্ষাকে বিনিয়োগ হিসেবে দেখা এবং পড়াশোনায় অর্থ ব্যয় করতে হবে। পড়াশোনায় অর্থ ব্যয়ে স্বল্প সময়ে ভালোকিছু না আসলেও, একটা সময় অবশ্যই ভালো ফলাফল আসবে বলে বিশ্বাস করি।”

বর্তমানে মুন্সিগঞ্জের টঙ্গীবাড়ি উপজেলার হাসাইলে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী এই বিদ্যালয়টি। প্রাচীন এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি ১৯০১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। ইতিহাস খ্যাত বিক্রমপুরের প্রমত্তা পদ্মা নদীর একাধিকবার ভাঙ্গনের স্বাক্ষী বিদ্যালয়টি। তিনবার ভাঙা-গড়ার মধ্য দিয়ে আজও বিদ্যালয়টি গৌরব আর স্বমহিমায় টিকে আছে। যুগ যুগ ধরে জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে, এ অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের আলোকিত করে যাচ্ছে। সেই সাথে শতবর্ষ পেরিয়ে ক্লান্তিহীন ১২৩ বছরে পদার্পণ করছে বিদ্যালয়টি।

প্রাক্তন শিক্ষার্থী
বানারী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়

টঙ্গীবাড়িতে বানারী স্কুলের মিলনমেলা ২৮ জানুয়ারি, নিবন্ধন চলছে

মো. বাবুল হোসেন
বানারী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়।

টঙ্গীবাড়ি উপজেলার হাসাইলে অবস্থিত বানারী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের প্রথম মিলনমেলা আগামী ২৮ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে দিনব্যাপী এ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানটি হবে। ১২২ বছরের ঐতিহ্যবাহী এই স্কুলের মিলনমেলায় প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা স্বতস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করবেন।

দিনব্যাপী এই পুনর্মিলনী বিদ্যালয়ের মাঠে সকাল থেকে বিভিন্ন আলোচনা ও অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে চলবে। রাতে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শেষ হবে। প্রথম ধাপের নিবন্ধন ১০ জানুয়ারি সম্পন্ন হয়েছে। পরবর্তীতে ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত নিবন্ধনের সময় বাড়ানো হয়েছে। অনুষ্ঠানকে সফল করতে প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা বিরামহীনভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।

অনুষ্ঠানের দিন সকালে আনন্দ শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হবে। অনুষ্ঠান সূচিতে থাকবে প্রাক্তন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের স্মৃতিচারণ বা বক্তৃতা। প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষকদের সম্মাননা পুরস্কার প্রদান, নিবন্ধিত সকল সদস্যের বিভিন্ন খেলাধুলায় একক বা দলীয়ভাবে অংশগ্রহণ, প্রতিটি খেলায় প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অধিকারীর জন্য থাকবে আলাদা আলাদা পুরস্কার। সারাদিন থাকবে বিভিন্ন ধরনের মুখরোচক খাবার। ৱ্যাফেল ড্রতে থাকবে আকর্ষণীয় নানা পুরস্কার এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

বানারী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়।

বিদ্যালয়ের ৮০-ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. মনির ফকির। বাংলাদেশের প্রসিদ্ধ একজন ঘড়ি ব্যবসায়ী। বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সদস্য। বর্তমানে বাংলাদেশ ঘড়ি ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক ও সাবেক সহ-সভাপতি। মিলনমেলা সম্পর্কে তাঁর অনুভূতি জানতে চাইলে বলেন, “পদ্মা নদীর ভাঙ্গণের কারণে আমাদের এলাকার অনেক লোকজন বিভিন্ন জায়গায় চলে গেছেন। তাদের সাথে বছরের পর বছর এমনকি যুগ পেরিয়ে গেলেও কোনো যোগাযোগ নেই। এই মিলনমেলা যোগাযোগের ভালো একটি মাধ্যম হিসেবে কাজ করবে। কে কোথায় আছেন, আমরা জানতে পারব। তাছাড়া আমাদের স্কুলের অনেকেই অনেক ভালো ভালো অবস্থানে আছেন এবং তারা স্কুলের জন্যও কিছু করতে চান। তাদের সাথে যোগাযোগ না থাকার কারণে স্কুলের জন্য তারা অবদান রাখতে পারছেননা। এরফলে তাদের সাথে আমাদের বিদ্যালয়ের বন্ধনটা আরও দৃঢ় হবে।”

তিনি আরও বলেন, “সেদিন আমরা অনেককেই একসাথে পাবো। প্রাক্তনদের অংশগ্রহণে দিনটি অনেক ভালো কাটবে। এই মিলনমেলার সফল আয়োজনের মধ্য দিয়ে সকলের সহযোগিতায় আগামীতে ১২৫ বছর পূর্তিও আমরা সুন্দর ও সফলভাবে করতে পাববো বলে আশা প্রকাশ করছি।”

বিদ্যালয়ের ৯১-ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. মোশাররফ হোসেন। বর্তমানে মাদারীপুরে ‘ইউনাইটেড ইসলামিয়া গভর্মেন্ট হাইস্কুল’-এ ইংরেজি বিষয়ের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন। বিদ্যালয়ের মিলনমেলা সম্পর্কে তাঁর অনুভূতি জানতে চাইলে এই প্রতিবেদকে জানান, “প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে মিলনমেলা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, এটা জেনে বেশ ভালো লাগছে। এই প্রথমবারের মতো এমন আয়োজনে অংশগ্রহণ করে বন্ধুদের সাথে দেখা হবে, সেদিন ছাত্র জীবনের স্মৃতিগুলো সামনে চলে আসবে। সত্যি এক অন্যরকম অনুভূতি কাজ করছে।”

শিক্ষা নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “শিক্ষায় অন্যান্য জেলার তুলনায় মুন্সিগঞ্জ বর্তমানে অনেকটাই পিছিয়ে যাচ্ছে। শিক্ষার ক্ষেত্রে আমাদের অভিভাবকদের আরও সচেতন হতে হবে। সেই সাথে ছেলেমেয়েদের জন্য ভালো পরিবেশ দিতে হবে। শিক্ষাকে বিনিয়োগ হিসেবে দেখা এবং পড়াশোনায় অর্থ ব্যয় করতে হবে। পড়াশোনায় অর্থ ব্যয়ে স্বল্প সময়ে ভালোকিছু না আসলেও, একটা সময় অবশ্যই ভালো ফলাফল আসবে বলে বিশ্বাস করি।”

বর্তমানে মুন্সিগঞ্জের টঙ্গীবাড়ি উপজেলার হাসাইলে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী এই বিদ্যালয়টি। প্রাচীন এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি ১৯০১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। ইতিহাস খ্যাত বিক্রমপুরের প্রমত্তা পদ্মা নদীর একাধিকবার ভাঙ্গনের স্বাক্ষী বিদ্যালয়টি। তিনবার ভাঙা-গড়ার মধ্য দিয়ে আজও বিদ্যালয়টি গৌরব আর স্বমহিমায় টিকে আছে। যুগ যুগ ধরে জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে, এ অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের আলোকিত করে যাচ্ছে। সেই সাথে শতবর্ষ পেরিয়ে ক্লান্তিহীন ১২৩ বছরে পদার্পণ করছে বিদ্যালয়টি।

প্রাক্তন শিক্ষার্থী
বানারী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়