ডিসেম্বরে স্পেনে বিতর্ক প্রতিযোগিতায় যাওয়ার কথা ছিল ফারদিনের

প্রতিনিধি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

বুয়েটে জানাজার পর ফারদিন নূর পরশের বাবা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। এসময় তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। ইনসেটে ফারদিন। ছবি: সৈয়দ মাহামুদুর রহমান

ফারদিন নূর পরশ পড়ালেখার পাশাপাশি সোশ্যাল ওয়ার্ক এবং ডিবেটিংও করতেন। ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি ডিবেট চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) প্রতিনিধিত্বও করেছেন। আগামী ডিসেম্বরে স্পেনে একটি বিতর্ক প্রতিযোগিতায়ও অংশ নেয়ার কথা ছিল তার। সেজন্য পাসপোর্টও প্রস্তুত করে ফেলেছিলেন। কিন্তু দেশের পতাকা নিয়ে সেখানে আর যাওয়া হলো না তার। শিকার হয়েছেন হত্যাকাণ্ডের। খালি করে গেছেন মা-বাবার বুক।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে বুয়েট কেন্দ্রীয় মসজিদে ফারদিনের প্রথম জানাজা নামাজের পর কাঁদতে কাঁদতে সাংবাদিকদের এসব কথা বলছিলেন তার বাবা কাজী নূরউদ্দিন রানা। তার আহাজারিতে ফারদিনের সহপাঠী-স্বজনরাও যেন কান্না লুকিয়ে রাখতে পারছিলেন না।

ফারদিন নূর পরশ বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়নের নয়ামাটি এলাকায়। থাকতেন ঢাকার ডেমরার কোনাপাড়া শান্তিবাগ এলাকায়। গত শুক্রবার রাজধানীর রামপুরা এলাকা থেকে নিখোঁজ হওয়ার তিন দিন পর গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদীর সিদ্ধিরগঞ্জ বনানী ঘাট এলাকা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে নৌ পুলিশ।

পরে মরদেহ নেয়া হয় নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে। ময়নাতদন্ত শেষে চিকিৎসকরা জানান, ফারদিনকে হত্যা করা হয়েছে। তার মাথায় ও বুকে অনেক আঘাতের চিহ্ন মিলেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, তারা ফারদিন নূর পরশ হত্যার রহস্য উদঘাটনে তদন্ত শুরু করেছে।

বুয়েটে জানাজার পর ফারদিন নূর পরশের বাবা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। এসময় তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। ছবি: সৈয়দ মাহামুদুর রহমান

ময়নাতদন্তের পর ফারদিন নূর পরশের মরদেহ তার ক্যাম্পাসে নেয়া হয়। সেখানে প্রথম জানাজার পর ফারদিনের মরদেহ ডেমরার বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখানে তার দ্বিতীয় জানাজা হবে। এরপর ফারদিনকে দাফন করা হবে।

বুয়েটে জানাজা শেষে ফারদিনের বাবা গণমাধ্যমে কথা বলতে গিয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়ছিলেন। অশ্রুভেজা কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘সর্বশেষ গত শুক্রবার দুপুরে সে বাড়ি থেকে খাওয়া-দাওয়া করে বের হয়েছে। সে তার মাকে বলেছে, আম্মু কাল পরীক্ষা আছে। আমি আজ গ্রুপ স্টাডি করবো। আজকে বাসায় আসবো না। কাল শনিবার দুপুরে পরীক্ষা দিয়ে বাসায় এসে আবার ভাত খাবো।’

‘ওর মা জানালা দিয়ে তাকিয়ে ছিল, আমার ছেলে যায়। কিন্তু সে ছেলে আর এলো না। আমি সবার দোয়া চাই এবং আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই। আমি চাই আর কোনো মায়ের বুক যেন খালি না হয়।’

কাঁদতে কাঁদতে ফারদিনের বাবা বলেন, ‘আমার ছেলে লেখাপড়ার পাশাপাশি গবেষণা, সোশ্যাল ওয়ার্ক এবং ডিবেটিং করতো। ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি ডিবেট চ্যাম্পিয়নশিপে সে বুয়েটকে প্রতিনিধিত্বও করেছে। ডিসেম্বরে স্পেনের মাদ্রিদে আয়োজিত একটি ডিবেটিং অনুষ্ঠানে বুয়েটের প্রতিনিধি হয়ে তার অংশ নেয়ার কথা ছিল। সেখানে যাবে বলে সে পাসপোর্টও রেডি করে ফেলেছে। কিন্তু এর আগেই দুর্বৃত্তরা আমার সন্তানকে পরপারে পাঠিয়ে দিয়েছে।’

বুয়েটে জানাজার পর ফারদিন নূর পরশের সহপাঠীরা হত্যাকাণ্ডের বিচার চেয়ে মানববন্ধন করেন। ছবি: সৈয়দ মাহামুদুর রহমান

এসময় কান্নায় ভেঙে পড়েন নূরউদ্দিন রানা। তিনি সন্তান হত্যাকাণ্ডের বিচার চেয়ে বলেন, ‘আমি জানি, সন্তানকে ফিরে পাবো না। কিন্তু আমি এই ঘটনার বিচার চাই। এটি কারা করেছে সেটি আমরা ধারণা করতে পারছি না। আমার কোনো শত্রু আছে বলে আমি মনে করি না। আমি কারও কোনো ক্ষতি করিনি। আমি সাংবাদিকতা করেছি, কিন্তু এমন কোনো রিপোর্ট করিনি যেটাতে কেউ আহত হতে পারে।’

তিনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, ‘দেশ অনেক ডিজিটাল হয়েছে। কেমন ডিজিটাল হলো সেটা আমি দেখতে চাই। ট্র্যাকিং সিস্টেমটা ডেভেলপ করতে হবে। সেটা করতে পারলে তার সঙ্গে কার যোগাযোগ হয়েছিল, বিস্তারিত সব বের হয়ে আসবে। আমি কাউকে ইঙ্গিত করতে চাচ্ছি না।’

বিচার চাইলেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা
এদিকে ফারদিনের জানাজা শেষে তার সহপাঠীরা মানববন্ধন করেন। ফারদিনকে হত্যা করা হয়েছে দাবি করে এই ঘটনার দ্রুত তদন্ত ও জড়িতদের বিচার দাবি করেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে তিনজন লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন।

লিখিত বক্তব্য শেষে সংবাদকর্মীরা বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন করলেও সেসবের কোনো উত্তর দেননি তারা। একজন শিক্ষার্থী বলেন, লিখিত বক্তব্যের বাইরে তাদের কেউই আর কোনো কথা বলবেন না।

বুয়েটে জানাজার পর ফারদিন নূর পরশের সহপাঠীরা হত্যাকাণ্ডের বিচার চেয়ে মানববন্ধন করেন। ছবি: সৈয়দ মাহামুদুর রহমান

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘আমাদের বন্ধু ফারদিন নূর পরশ গত ৪ নভেম্বর শুক্রবার আনুমানিক রাত সাড়ে ১১টার দিকে নিখোঁজ হয়। পরদিন শনিবার ফারদিনের সেশনাল কুইজ পরীক্ষায় অংশ নেয়ার কথা থাকলেও সে অনুপস্থিত থাকে এবং আমরা তার ক্লাসমেটরা ফারদিনের ব্যাপারে পরিবারকে অবহিত করি। পাশাপাশি বুয়েট প্রশাসনকেও এ ব্যাপারে জানানো হয়। ওইদিনই পরিবারের পক্ষ থেকে রামপুরা থানায় জিডি করা হয়। সর্বশেষ গতকাল সোমবার (৭ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ফারদিনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আমরা বুয়েট শিক্ষার্থীরা এই ঘটনায় গভীরভাবে শোকাহত।’

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকের ভাষ্য হতে স্পষ্ট যে, এটা একটা হত্যাকাণ্ড। আমরা এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত অপরাধীদের চিহ্নিত করে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দ্রুত বিচারের দাবি জানাচ্ছি। এ ব্যাপারে প্রশাসন এবং মিডিয়াসহ সবার সার্বিক সহযোগিতা কামনা করছি।’

লিখিত বক্তব্যে সহপাঠীরা বলেন, ‘ফারদিন ব্যক্তিজীবনে অত্যন্ত মেধাবী এবং নির্ঝঞ্ঝাট একজন মানুষ ছিল। এরই মধ্যে আমরা কয়েকটি প্রিন্ট ও সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছু মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্যবিশিষ্ট সংবাদ দেখেছি, যা অপ্রত্যাশিত। চলমান তদন্তের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে আমরা সবাইকে অনুরোধ করছি, এ ধরনের ভুল তথ্য প্রচার থেকে বিরত থাকতে।’

ডিসেম্বরে স্পেনে বিতর্ক প্রতিযোগিতায় যাওয়ার কথা ছিল ফারদিনের

প্রতিনিধি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

বুয়েটে জানাজার পর ফারদিন নূর পরশের বাবা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। এসময় তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। ইনসেটে ফারদিন। ছবি: সৈয়দ মাহামুদুর রহমান

ফারদিন নূর পরশ পড়ালেখার পাশাপাশি সোশ্যাল ওয়ার্ক এবং ডিবেটিংও করতেন। ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি ডিবেট চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) প্রতিনিধিত্বও করেছেন। আগামী ডিসেম্বরে স্পেনে একটি বিতর্ক প্রতিযোগিতায়ও অংশ নেয়ার কথা ছিল তার। সেজন্য পাসপোর্টও প্রস্তুত করে ফেলেছিলেন। কিন্তু দেশের পতাকা নিয়ে সেখানে আর যাওয়া হলো না তার। শিকার হয়েছেন হত্যাকাণ্ডের। খালি করে গেছেন মা-বাবার বুক।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে বুয়েট কেন্দ্রীয় মসজিদে ফারদিনের প্রথম জানাজা নামাজের পর কাঁদতে কাঁদতে সাংবাদিকদের এসব কথা বলছিলেন তার বাবা কাজী নূরউদ্দিন রানা। তার আহাজারিতে ফারদিনের সহপাঠী-স্বজনরাও যেন কান্না লুকিয়ে রাখতে পারছিলেন না।

ফারদিন নূর পরশ বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়নের নয়ামাটি এলাকায়। থাকতেন ঢাকার ডেমরার কোনাপাড়া শান্তিবাগ এলাকায়। গত শুক্রবার রাজধানীর রামপুরা এলাকা থেকে নিখোঁজ হওয়ার তিন দিন পর গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদীর সিদ্ধিরগঞ্জ বনানী ঘাট এলাকা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে নৌ পুলিশ।

পরে মরদেহ নেয়া হয় নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে। ময়নাতদন্ত শেষে চিকিৎসকরা জানান, ফারদিনকে হত্যা করা হয়েছে। তার মাথায় ও বুকে অনেক আঘাতের চিহ্ন মিলেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, তারা ফারদিন নূর পরশ হত্যার রহস্য উদঘাটনে তদন্ত শুরু করেছে।

বুয়েটে জানাজার পর ফারদিন নূর পরশের বাবা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। এসময় তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। ছবি: সৈয়দ মাহামুদুর রহমান

ময়নাতদন্তের পর ফারদিন নূর পরশের মরদেহ তার ক্যাম্পাসে নেয়া হয়। সেখানে প্রথম জানাজার পর ফারদিনের মরদেহ ডেমরার বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখানে তার দ্বিতীয় জানাজা হবে। এরপর ফারদিনকে দাফন করা হবে।

বুয়েটে জানাজা শেষে ফারদিনের বাবা গণমাধ্যমে কথা বলতে গিয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়ছিলেন। অশ্রুভেজা কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘সর্বশেষ গত শুক্রবার দুপুরে সে বাড়ি থেকে খাওয়া-দাওয়া করে বের হয়েছে। সে তার মাকে বলেছে, আম্মু কাল পরীক্ষা আছে। আমি আজ গ্রুপ স্টাডি করবো। আজকে বাসায় আসবো না। কাল শনিবার দুপুরে পরীক্ষা দিয়ে বাসায় এসে আবার ভাত খাবো।’

‘ওর মা জানালা দিয়ে তাকিয়ে ছিল, আমার ছেলে যায়। কিন্তু সে ছেলে আর এলো না। আমি সবার দোয়া চাই এবং আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই। আমি চাই আর কোনো মায়ের বুক যেন খালি না হয়।’

কাঁদতে কাঁদতে ফারদিনের বাবা বলেন, ‘আমার ছেলে লেখাপড়ার পাশাপাশি গবেষণা, সোশ্যাল ওয়ার্ক এবং ডিবেটিং করতো। ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি ডিবেট চ্যাম্পিয়নশিপে সে বুয়েটকে প্রতিনিধিত্বও করেছে। ডিসেম্বরে স্পেনের মাদ্রিদে আয়োজিত একটি ডিবেটিং অনুষ্ঠানে বুয়েটের প্রতিনিধি হয়ে তার অংশ নেয়ার কথা ছিল। সেখানে যাবে বলে সে পাসপোর্টও রেডি করে ফেলেছে। কিন্তু এর আগেই দুর্বৃত্তরা আমার সন্তানকে পরপারে পাঠিয়ে দিয়েছে।’

বুয়েটে জানাজার পর ফারদিন নূর পরশের সহপাঠীরা হত্যাকাণ্ডের বিচার চেয়ে মানববন্ধন করেন। ছবি: সৈয়দ মাহামুদুর রহমান

এসময় কান্নায় ভেঙে পড়েন নূরউদ্দিন রানা। তিনি সন্তান হত্যাকাণ্ডের বিচার চেয়ে বলেন, ‘আমি জানি, সন্তানকে ফিরে পাবো না। কিন্তু আমি এই ঘটনার বিচার চাই। এটি কারা করেছে সেটি আমরা ধারণা করতে পারছি না। আমার কোনো শত্রু আছে বলে আমি মনে করি না। আমি কারও কোনো ক্ষতি করিনি। আমি সাংবাদিকতা করেছি, কিন্তু এমন কোনো রিপোর্ট করিনি যেটাতে কেউ আহত হতে পারে।’

তিনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, ‘দেশ অনেক ডিজিটাল হয়েছে। কেমন ডিজিটাল হলো সেটা আমি দেখতে চাই। ট্র্যাকিং সিস্টেমটা ডেভেলপ করতে হবে। সেটা করতে পারলে তার সঙ্গে কার যোগাযোগ হয়েছিল, বিস্তারিত সব বের হয়ে আসবে। আমি কাউকে ইঙ্গিত করতে চাচ্ছি না।’

বিচার চাইলেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা
এদিকে ফারদিনের জানাজা শেষে তার সহপাঠীরা মানববন্ধন করেন। ফারদিনকে হত্যা করা হয়েছে দাবি করে এই ঘটনার দ্রুত তদন্ত ও জড়িতদের বিচার দাবি করেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে তিনজন লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন।

লিখিত বক্তব্য শেষে সংবাদকর্মীরা বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন করলেও সেসবের কোনো উত্তর দেননি তারা। একজন শিক্ষার্থী বলেন, লিখিত বক্তব্যের বাইরে তাদের কেউই আর কোনো কথা বলবেন না।

বুয়েটে জানাজার পর ফারদিন নূর পরশের সহপাঠীরা হত্যাকাণ্ডের বিচার চেয়ে মানববন্ধন করেন। ছবি: সৈয়দ মাহামুদুর রহমান

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘আমাদের বন্ধু ফারদিন নূর পরশ গত ৪ নভেম্বর শুক্রবার আনুমানিক রাত সাড়ে ১১টার দিকে নিখোঁজ হয়। পরদিন শনিবার ফারদিনের সেশনাল কুইজ পরীক্ষায় অংশ নেয়ার কথা থাকলেও সে অনুপস্থিত থাকে এবং আমরা তার ক্লাসমেটরা ফারদিনের ব্যাপারে পরিবারকে অবহিত করি। পাশাপাশি বুয়েট প্রশাসনকেও এ ব্যাপারে জানানো হয়। ওইদিনই পরিবারের পক্ষ থেকে রামপুরা থানায় জিডি করা হয়। সর্বশেষ গতকাল সোমবার (৭ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ফারদিনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আমরা বুয়েট শিক্ষার্থীরা এই ঘটনায় গভীরভাবে শোকাহত।’

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকের ভাষ্য হতে স্পষ্ট যে, এটা একটা হত্যাকাণ্ড। আমরা এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত অপরাধীদের চিহ্নিত করে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দ্রুত বিচারের দাবি জানাচ্ছি। এ ব্যাপারে প্রশাসন এবং মিডিয়াসহ সবার সার্বিক সহযোগিতা কামনা করছি।’

লিখিত বক্তব্যে সহপাঠীরা বলেন, ‘ফারদিন ব্যক্তিজীবনে অত্যন্ত মেধাবী এবং নির্ঝঞ্ঝাট একজন মানুষ ছিল। এরই মধ্যে আমরা কয়েকটি প্রিন্ট ও সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছু মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্যবিশিষ্ট সংবাদ দেখেছি, যা অপ্রত্যাশিত। চলমান তদন্তের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে আমরা সবাইকে অনুরোধ করছি, এ ধরনের ভুল তথ্য প্রচার থেকে বিরত থাকতে।’