ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চতুর্থ আন্তর্জাতিক ‘মূকাভিনয়’ উৎসব শুরু

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চতুর্থ আন্তর্জাতিক ‘মূকাভিনয়’ উৎসব

‘মূকাভিনয় আমাদের সর্বজনীন ভাষা’-এই স্লোগান নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চতুর্থবারের মতো শুরু হয়েছে আন্তর্জাতিক মূকাভিনয় উৎসব। ঢাকা ইউনিভার্সিটি মাইম অ্যাকশনের (ডুমা) আয়োজনে শুক্রবার (২১ অক্টোবর) তিন দিনব্যাপী এই উৎসবের শুরু হয়। আজ দ্বিতীয় দিনের মতো পালিত হচ্ছে উৎসব।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে শুক্রবার সন্ধ্যায় চতুর্থ আন্তর্জাতিক মূকাভিনয় উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।

kalerkantho

অনুষ্ঠানে বন্য প্রাণী নিধন নিয়ে সাইলেন্ট থিয়েটার মঞ্চস্থ করে ‘প্রলয় নাচন’, থিয়েটার সার্কেল মুন্সীগঞ্জ সাব্বির হোসেনের রচনা ও সঞ্চালনায় মঞ্চস্থ করে ‘দ্য অনেস্ট’, ভারতীয় মাইম লিটল ড্রামা গৌতম সাহার ভাবনায় ও নির্দেশনায় মঞ্চস্থ করে ‘জুম চাষ’, ‘মাইম আর্ট’ নিথর মাহবুবের রচনায় ও নির্দেশনায় চারটি নকশা মূকাভিনয় প্রদর্শন করে, ‘শ্রুতি’ চারণ শিখরে অভিযানের পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় মঞ্চস্থ করে ‘বৃক্ষ লিপি’। ঢাকার ‘গোল্লাছুট নাট্যদল’ ওমর ফারুক সময়ের রচনায় ও শহিদুল্লাহ শহীদের নির্দেশনায় মঞ্চস্থ করে ‘থার্ড পারসন’ ও ‘কাতুকুতু’।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘মূকাভিনয় খুব প্রাচীন একটি শিল্প। যেটি ইতিহাসের আলোকে নানা গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার মধ্য দিয়ে কিভাবে সমাজে পরিবর্তন ঘটায় তার বেশ কিছু উদাহরণ আমাদের সামনে আছে। অষ্টাদশ শতকে যখন ফরাসি বিপ্লব সংঘটিত হয়েছে, তখন খুব কঠিনভাবে কতগুলো সেন্সরশিপ আরোপ করা হয়েছিল। যেমনি লেখনীতে, বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে। তখন প্যারিসের রাজপথে ও পশ্চিম ইউরোপের বিভিন্ন দেশে মূকাভিনয় ছিল প্রতিবাদের শক্তিশালী একটি মাধ্যম। যেটি সমাজে একটি বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটিয়ে দিয়েছিল। তখন দার্শনিকদের বাণী, লেখনী যতটা ভূমিকা রেখেছিল তার চেয়ে বেশি শক্তিশালী ভূমিকা রেখেছিল মূকাভিনয়শিল্পীদের প্রদর্শনী ও তাদের অভিনয়। সমাজকে পরিবর্তন করতে যুগে যুগে শিল্পের এই ঘরানা অনন্যসাধারণ ভূমিকা রেখেছে। ’

kalerkantho

তিনি আরো বলেন, ২০১০ সালে মীর লোকমান নামে যখন আমাদের এক শিক্ষার্থীর মাধ্যমে শুরু হয়, তখনও অনেকে সচেতন ছিল না। তারপর ক্রমান্বয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক উদ্যোগ গ্রহণ এবং সুধী সমাজের অংশগ্রহণের পর এই সংগঠনের সদস্য হওয়ার হিড়িক পড়ে যায়। মাইম এমন একটি শক্তিশালী মাধ্যম, যখন মাইমের মাধ্যমে কোনো বিষয় উপস্থাপন করা হয় তখন বইয়ের কথার চেয়ে বেশি দাগ কাটে, মানুষ দীর্ঘদিন মনে রাখে। এবং এভাবেই একটি সমাজে পরিবর্তন ঘটে।

এ ছাড়া আরো বক্তব্য দেন উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মিহির লাল সাহা, সংস্কৃত বিভাগের অধ্যাপক ড. অসীম সরকার, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ড্রামা অ্যান্ড ড্রামাটিকস বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. ইসরাফিল আহমেদ এবং স্বপ্নদলের প্রতিষ্ঠাতা ও মাইম ফেডারেশনের সাবেক চেয়ারম্যান জাহিদ রিপন। স্বাগত বক্তব্য দেবেন ডুমা মডারেটর ড. তপন ডি রোজারিও।

তিন দিনের এই উৎসবে প্রতিদিন সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা থেকে থাকবে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন দলের মূকাভিনয় প্রদর্শনী। ২৩ অক্টোবর রাত ১০টায় অংশগ্রহণকারী দল এবং প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণের মাধ্যমে সমাপ্ত হবে আন্তর্জাতিক এ মূকাভিনয় উৎসব।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চতুর্থ আন্তর্জাতিক ‘মূকাভিনয়’ উৎসব শুরু

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চতুর্থ আন্তর্জাতিক ‘মূকাভিনয়’ উৎসব

‘মূকাভিনয় আমাদের সর্বজনীন ভাষা’-এই স্লোগান নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চতুর্থবারের মতো শুরু হয়েছে আন্তর্জাতিক মূকাভিনয় উৎসব। ঢাকা ইউনিভার্সিটি মাইম অ্যাকশনের (ডুমা) আয়োজনে শুক্রবার (২১ অক্টোবর) তিন দিনব্যাপী এই উৎসবের শুরু হয়। আজ দ্বিতীয় দিনের মতো পালিত হচ্ছে উৎসব।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে শুক্রবার সন্ধ্যায় চতুর্থ আন্তর্জাতিক মূকাভিনয় উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।

kalerkantho

অনুষ্ঠানে বন্য প্রাণী নিধন নিয়ে সাইলেন্ট থিয়েটার মঞ্চস্থ করে ‘প্রলয় নাচন’, থিয়েটার সার্কেল মুন্সীগঞ্জ সাব্বির হোসেনের রচনা ও সঞ্চালনায় মঞ্চস্থ করে ‘দ্য অনেস্ট’, ভারতীয় মাইম লিটল ড্রামা গৌতম সাহার ভাবনায় ও নির্দেশনায় মঞ্চস্থ করে ‘জুম চাষ’, ‘মাইম আর্ট’ নিথর মাহবুবের রচনায় ও নির্দেশনায় চারটি নকশা মূকাভিনয় প্রদর্শন করে, ‘শ্রুতি’ চারণ শিখরে অভিযানের পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় মঞ্চস্থ করে ‘বৃক্ষ লিপি’। ঢাকার ‘গোল্লাছুট নাট্যদল’ ওমর ফারুক সময়ের রচনায় ও শহিদুল্লাহ শহীদের নির্দেশনায় মঞ্চস্থ করে ‘থার্ড পারসন’ ও ‘কাতুকুতু’।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘মূকাভিনয় খুব প্রাচীন একটি শিল্প। যেটি ইতিহাসের আলোকে নানা গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার মধ্য দিয়ে কিভাবে সমাজে পরিবর্তন ঘটায় তার বেশ কিছু উদাহরণ আমাদের সামনে আছে। অষ্টাদশ শতকে যখন ফরাসি বিপ্লব সংঘটিত হয়েছে, তখন খুব কঠিনভাবে কতগুলো সেন্সরশিপ আরোপ করা হয়েছিল। যেমনি লেখনীতে, বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে। তখন প্যারিসের রাজপথে ও পশ্চিম ইউরোপের বিভিন্ন দেশে মূকাভিনয় ছিল প্রতিবাদের শক্তিশালী একটি মাধ্যম। যেটি সমাজে একটি বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটিয়ে দিয়েছিল। তখন দার্শনিকদের বাণী, লেখনী যতটা ভূমিকা রেখেছিল তার চেয়ে বেশি শক্তিশালী ভূমিকা রেখেছিল মূকাভিনয়শিল্পীদের প্রদর্শনী ও তাদের অভিনয়। সমাজকে পরিবর্তন করতে যুগে যুগে শিল্পের এই ঘরানা অনন্যসাধারণ ভূমিকা রেখেছে। ’

kalerkantho

তিনি আরো বলেন, ২০১০ সালে মীর লোকমান নামে যখন আমাদের এক শিক্ষার্থীর মাধ্যমে শুরু হয়, তখনও অনেকে সচেতন ছিল না। তারপর ক্রমান্বয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক উদ্যোগ গ্রহণ এবং সুধী সমাজের অংশগ্রহণের পর এই সংগঠনের সদস্য হওয়ার হিড়িক পড়ে যায়। মাইম এমন একটি শক্তিশালী মাধ্যম, যখন মাইমের মাধ্যমে কোনো বিষয় উপস্থাপন করা হয় তখন বইয়ের কথার চেয়ে বেশি দাগ কাটে, মানুষ দীর্ঘদিন মনে রাখে। এবং এভাবেই একটি সমাজে পরিবর্তন ঘটে।

এ ছাড়া আরো বক্তব্য দেন উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মিহির লাল সাহা, সংস্কৃত বিভাগের অধ্যাপক ড. অসীম সরকার, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ড্রামা অ্যান্ড ড্রামাটিকস বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. ইসরাফিল আহমেদ এবং স্বপ্নদলের প্রতিষ্ঠাতা ও মাইম ফেডারেশনের সাবেক চেয়ারম্যান জাহিদ রিপন। স্বাগত বক্তব্য দেবেন ডুমা মডারেটর ড. তপন ডি রোজারিও।

তিন দিনের এই উৎসবে প্রতিদিন সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা থেকে থাকবে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন দলের মূকাভিনয় প্রদর্শনী। ২৩ অক্টোবর রাত ১০টায় অংশগ্রহণকারী দল এবং প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণের মাধ্যমে সমাপ্ত হবে আন্তর্জাতিক এ মূকাভিনয় উৎসব।