ঢাবি প্রক্টরের অপসারণ দাবির পর শিক্ষকের ব্যক্তিগত নথি তল্লাশির অভিযোগ

প্রতিবেদক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খানছবি: সংগৃহীত

নেটওয়ার্কের পক্ষে গত সোমবার দুপুরে তানজীমউদ্দিনসহ কয়েকজন শিক্ষক ঢাবির প্রক্টরের অপসারণসহ চার দফা দাবিতে উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামানকে একটি স্মারকলিপি দিয়েছিলেন।

স্মারকলিপি দেওয়ার পরই বিভাগীয় কার্যালয়ে তল্লাশি, ব্যক্তিগত তথ্য নিয়ে যাওয়া ও স্থায়ী ঠিকানায় পুলিশ দিয়ে খোঁজ নেওয়ার ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ তানজীমউদ্দিনের। এর পেছনে প্রক্টরের সংশ্লিষ্টতা থাকতে পারে বলে ধারণা করছেন তিনি। তবে প্রক্টর বলছেন, এটা কল্পিত মিথ্যাচার।

তানজীমউদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা শিক্ষক নেটওয়ার্কের পক্ষ থেকে গত সোমবার দুপুরের দিকে উপাচার্যকে স্মারকলিপি দিয়ে আসি। বেলা সাড়ে তিনটার দিকে প্রক্টর কার্যালয় থেকে দুজন কর্মকর্তা-কর্মচারী আমার বিভাগীয় কার্যালয়ে গিয়ে ব্যক্তিগত ফাইল (নথি) তল্লাশি করেন। তাঁরা আমার স্থায়ী ঠিকানাসহ যাবতীয় তথ্য নিয়ে যান। আমার যাবতীয় তথ্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আছে। কোনো তথ্য দরকার হলে রেজিস্ট্রার ভবনই যথেষ্ট। তারপরও কেন আমার ব্যক্তিগত তথ্য জোগাড় করতে বিভাগে লোক পাঠানো হলো? একই দিন সন্ধ্যা পৌনে সাতটার দিকে পুলিশের একজন উপপরিদর্শক আমার স্থায়ী ঠিকানায় যান। উপপরিদর্শক বলেন, আমার ব্যাপারে ভেরিফিকেশনের (যাচাই) জন্য গিয়েছেন। সেখান থেকে আমাকে ফোন করা হয়। তখন পুলিশের ওই কর্মকর্তা বলেন, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের একটি তালিকা করা হচ্ছে। সে জন্য তিনি সেখানে গিয়েছেন। তবে আসল কারণটা তাঁর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলতে পারবেন।’

কোন ক্ষমতাবলে প্রক্টর একজন শিক্ষকের ব্যক্তিগত নথি তল্লাশির জন্য বিভাগীয় কার্যালয়ে লোক পাঠিয়েছেন, সেই প্রশ্ন তুলেছেন তানজীমউদ্দিন। তিনি বলেন, ‘সবকিছু মিলিয়ে আমার মনে হয়েছে, এই আত্মমর্যাদাহীন কাজের সঙ্গে প্রক্টর যুক্ত আছেন। ঘটনার পরম্পরা তা-ই নির্দেশ করছে। আমি জানতে চাই, একজন প্রক্টর কি আসলে শিক্ষক নাকি অন্য কিছু? ভিন্ন চিন্তার নিজ সহকর্মীদের কি তিনি চোর-ডাকাত মনে করেন? কোন আত্মমর্যাদা নিয়ে তিনি শিক্ষক হিসেবে শ্রেণিকক্ষে যান? অপরাজনীতির সেবাদাসের মানসিকতা নিয়ে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকেরা কীভাবে প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করেন?’

তানজীমউদ্দিন বলেন, বিষয়টি তিনি লিখিতভাবে উপাচার্যকে জানাবেন।

তানজীমউদ্দিনের অভিযোগকে কল্পিত মিথ্যাচার বলেছেন প্রক্টর গোলাম রব্বানী। প্রক্টর বলেন, ‘তিনি (তানজীমউদ্দিন) যা দাবি করছেন, তা তাঁর ব্যক্তিগত অতিরঞ্জন। এটি কেন করেছেন, তার ব্যাখ্যা তিনিই দিতে পারবেন। আমার কার্যালয়ের একজন কর্মকর্তা আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের কার্যালয়ে গিয়েছিলেন। তিনি সেখানকার প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে একটি তথ্যের জন্য অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু এই ঘটনাটিকে সম্পূর্ণ বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে মিথ্যাচার করছেন তানজীমউদ্দিন। আমার কার্যালয়ের ওই কর্মকর্তার আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের কার্যালয়ে যাওয়ার বিষয়টি আমি জানতাম না। তবে একটি তথ্য যে তাঁর দরকার, সেটা আমি জানি। বিভাগে যাওয়ার বিষয়টি জানার সঙ্গে সঙ্গে আমি তাঁকে চলে আসতে বলেছি। তাঁর (তানজীমউদ্দিন) উচিত প্রকৃত ঘটনা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাছ থেকে জেনে নেওয়া। এভাবে কল্পিত মিথ্যাচার করা ঠিক নয়।’

তানজীমউদ্দিনের ব্যক্তিগত নথি তল্লাশি করতে যে দুজন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের কার্যালয়ে গিয়েছিলেন, তাঁদের একজনের নাম জানা গেছে। তিনি প্রক্টর কার্যালয়ের সেকশন অফিসার রেজাউল করিম। তাঁর বক্তব্যের সঙ্গে অবশ্য প্রক্টরের কথার মিল পাওয়া যায়নি। রেজাউল প্রথম আলোকে বলেন, প্রক্টরের নির্দেশেই তিনি আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের কার্যালয়ে গিয়েছিলেন। তবে তথ্য না পেয়ে তিনি ফিরে আসেন।

ঢাবি প্রক্টরের অপসারণ দাবির পর শিক্ষকের ব্যক্তিগত নথি তল্লাশির অভিযোগ

প্রতিবেদক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খানছবি: সংগৃহীত

নেটওয়ার্কের পক্ষে গত সোমবার দুপুরে তানজীমউদ্দিনসহ কয়েকজন শিক্ষক ঢাবির প্রক্টরের অপসারণসহ চার দফা দাবিতে উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামানকে একটি স্মারকলিপি দিয়েছিলেন।

স্মারকলিপি দেওয়ার পরই বিভাগীয় কার্যালয়ে তল্লাশি, ব্যক্তিগত তথ্য নিয়ে যাওয়া ও স্থায়ী ঠিকানায় পুলিশ দিয়ে খোঁজ নেওয়ার ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ তানজীমউদ্দিনের। এর পেছনে প্রক্টরের সংশ্লিষ্টতা থাকতে পারে বলে ধারণা করছেন তিনি। তবে প্রক্টর বলছেন, এটা কল্পিত মিথ্যাচার।

তানজীমউদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা শিক্ষক নেটওয়ার্কের পক্ষ থেকে গত সোমবার দুপুরের দিকে উপাচার্যকে স্মারকলিপি দিয়ে আসি। বেলা সাড়ে তিনটার দিকে প্রক্টর কার্যালয় থেকে দুজন কর্মকর্তা-কর্মচারী আমার বিভাগীয় কার্যালয়ে গিয়ে ব্যক্তিগত ফাইল (নথি) তল্লাশি করেন। তাঁরা আমার স্থায়ী ঠিকানাসহ যাবতীয় তথ্য নিয়ে যান। আমার যাবতীয় তথ্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আছে। কোনো তথ্য দরকার হলে রেজিস্ট্রার ভবনই যথেষ্ট। তারপরও কেন আমার ব্যক্তিগত তথ্য জোগাড় করতে বিভাগে লোক পাঠানো হলো? একই দিন সন্ধ্যা পৌনে সাতটার দিকে পুলিশের একজন উপপরিদর্শক আমার স্থায়ী ঠিকানায় যান। উপপরিদর্শক বলেন, আমার ব্যাপারে ভেরিফিকেশনের (যাচাই) জন্য গিয়েছেন। সেখান থেকে আমাকে ফোন করা হয়। তখন পুলিশের ওই কর্মকর্তা বলেন, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের একটি তালিকা করা হচ্ছে। সে জন্য তিনি সেখানে গিয়েছেন। তবে আসল কারণটা তাঁর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলতে পারবেন।’

কোন ক্ষমতাবলে প্রক্টর একজন শিক্ষকের ব্যক্তিগত নথি তল্লাশির জন্য বিভাগীয় কার্যালয়ে লোক পাঠিয়েছেন, সেই প্রশ্ন তুলেছেন তানজীমউদ্দিন। তিনি বলেন, ‘সবকিছু মিলিয়ে আমার মনে হয়েছে, এই আত্মমর্যাদাহীন কাজের সঙ্গে প্রক্টর যুক্ত আছেন। ঘটনার পরম্পরা তা-ই নির্দেশ করছে। আমি জানতে চাই, একজন প্রক্টর কি আসলে শিক্ষক নাকি অন্য কিছু? ভিন্ন চিন্তার নিজ সহকর্মীদের কি তিনি চোর-ডাকাত মনে করেন? কোন আত্মমর্যাদা নিয়ে তিনি শিক্ষক হিসেবে শ্রেণিকক্ষে যান? অপরাজনীতির সেবাদাসের মানসিকতা নিয়ে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকেরা কীভাবে প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করেন?’

তানজীমউদ্দিন বলেন, বিষয়টি তিনি লিখিতভাবে উপাচার্যকে জানাবেন।

তানজীমউদ্দিনের অভিযোগকে কল্পিত মিথ্যাচার বলেছেন প্রক্টর গোলাম রব্বানী। প্রক্টর বলেন, ‘তিনি (তানজীমউদ্দিন) যা দাবি করছেন, তা তাঁর ব্যক্তিগত অতিরঞ্জন। এটি কেন করেছেন, তার ব্যাখ্যা তিনিই দিতে পারবেন। আমার কার্যালয়ের একজন কর্মকর্তা আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের কার্যালয়ে গিয়েছিলেন। তিনি সেখানকার প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে একটি তথ্যের জন্য অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু এই ঘটনাটিকে সম্পূর্ণ বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে মিথ্যাচার করছেন তানজীমউদ্দিন। আমার কার্যালয়ের ওই কর্মকর্তার আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের কার্যালয়ে যাওয়ার বিষয়টি আমি জানতাম না। তবে একটি তথ্য যে তাঁর দরকার, সেটা আমি জানি। বিভাগে যাওয়ার বিষয়টি জানার সঙ্গে সঙ্গে আমি তাঁকে চলে আসতে বলেছি। তাঁর (তানজীমউদ্দিন) উচিত প্রকৃত ঘটনা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাছ থেকে জেনে নেওয়া। এভাবে কল্পিত মিথ্যাচার করা ঠিক নয়।’

তানজীমউদ্দিনের ব্যক্তিগত নথি তল্লাশি করতে যে দুজন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের কার্যালয়ে গিয়েছিলেন, তাঁদের একজনের নাম জানা গেছে। তিনি প্রক্টর কার্যালয়ের সেকশন অফিসার রেজাউল করিম। তাঁর বক্তব্যের সঙ্গে অবশ্য প্রক্টরের কথার মিল পাওয়া যায়নি। রেজাউল প্রথম আলোকে বলেন, প্রক্টরের নির্দেশেই তিনি আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের কার্যালয়ে গিয়েছিলেন। তবে তথ্য না পেয়ে তিনি ফিরে আসেন।