দাতা-গ্রহীতার রূপান্তরে শিক্ষা এখন দ্বীপান্তরে

গোলাম কবির

সংসারে যে কাজে যার প্রবল অনুরাগ, সেই সত্যিকার উতরে যায়। অর্থনীতির ভাষায় বলা হয়েছে গোষ্ঠীর পারঙ্গমতার কথা। বিশেষ কাজে যুক্ত থাকা পরিবারের উত্তরপুরুষরা কাজটি সুচারুরূপে করতে সক্ষম। যাকে বলা হয় ‘হেরিডিটি অব ট্রান্সমিশন’।

তা হয়, কিন্তু সেটাই শেষ কথা নয়। অন্যরা মেধা আর চর্চার ফলে ওই একই কাজের এমন নতুন সুড়ঙ্গ বের করেন, যাতে সবাইকে তাক লাগিয়ে দেন। ওই যে মার্কনি কিংবা রাইটস ভ্রাতৃদ্বয়, আজ যে বিশ্বজোড়া স্মরণীয়, এঁরা কেবল ছুতার-মিস্ত্রির ঘরের সন্তান ছিলেন বলে শোনা যায়নি। বেশিদূর যাব না, আমাদের ঘরের কাছের মানুষ, যাঁরা শিক্ষার অসাধারণত্ব প্রদর্শন করে গেছেন, তাঁরা কি শিক্ষক পরিবারের মানুষ! না, আসলে মানুষের মেধা যে পথে সচল করা হয়, সেখানেই তা কার্যকর হবে। এটা স্বীকার্য হলেও মেধার নিজস্ব একটা মূল্য আছে।

আজ কেমন যেন সব কিছু ওলটপালট হয়ে গেছে। এখন মানুষের মেধাজ্ঞান শতভাগ ব্যাবসায়িক পর্যায়ে। কড়ির আমদানি যেখানে বেশি, মানুষ সেখানেই হামাগুড়ি দেয়। ফলে কিছু মেধাবী ওই কড়ির খপ্পরে বাধা পড়ে গেছে। প্রকৃত-অপ্রকৃত তলিয়ে দেখছে না। কিছুদিন আগেও ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার হলে কাজের অভাব কম ছিল। সে রমরমা এখন আর নেই। যাদের আগ্রহ, তারা পড়ুক। সবাই কেন? এতে সরবরাহ বাড়ছে; মানুষ তার মূল্য পাচ্ছে না। কারণ সবাই একই পেশার হলে কাজ পাবে কোথায়? আমরা এখন সবাই মিলে ডাক্তার হওয়ার পথের পথিক। এখানেই শেষ নয়, ডাক্তারের সঙ্গে নানা জাতীয় ইঞ্জিনিয়ারও হওয়ার জন্য আমরা উদ্বাহু। বুঝি না সংসারের কাজ কেবল ডাক্তার ও ইঞ্জিনিয়ার দিয়েই চলে না। কত ছন্দে আমাদের ওঠাবসা। সব দিক অন্ধকারে রেখে আমরা নগদপ্রাপ্তির পথে আলো ফেলছি। কতটা পেলাম, তার হিসাব রাখি না। দেখি না ওই সব আলোর দিশারির উত্তরপুরুষ আমাদের কোন গহিন অন্ধকারে টানছে। তবু খুঁজছি, কিন্তু পাচ্ছি কই! এটা কি আমাদের অক্ষমতা, নাকি ভুলিয়ে রাখা। না, এমনভাবে কতকাল ভুলে থাকা যায়! আমাদের সচেতন হতে হবে। চারপাশে চোখ মেলে চেয়ে দেখতে হবে। মনে রাখা দরকার, অর্থের প্রয়োজন আছে, তাই বলে অর্থই যে সব নয়, তা অবশ্যই ভেবে দেখার প্রয়োজন কম নয়।

পাকিস্তান হাসিলের অব্যবহিত পরে আমাদের নেক-বুদ্ধি কাজ করা শুরু করল—এসবের মধ্যে শিক্ষা অন্যতম। আমাদের ভাবিত করা হলো, শিক্ষায় বহুমুখিতা আমাদের উন্নতির অন্যতম সোপান। আমরা উঠেপড়ে লাগলাম, সমস্বরে বলতে লাগলাম, ‘তরক্কি চাই, তরক্কি চাই’। চিন্তায় এলো না, কেবল বিজ্ঞানই নয়, সে জীবন হবে কলা-সুন্দর। সে পথের অনুসারীও থাকতে হবে। সেখানে আবশ্যিক প্রয়োজন মেধার! দুঃখের বিষয়, মেধা কেবল বিজ্ঞানের প্রতি ধাবিত হলো বুঝে অথবা না বুঝে।

এত সব তেলেসমাতি হয়ে গেল, অতি অল্প সময়ে। বলে রাখা ভালো, ‘এর সূচনা আইয়ুবি শাহেনশাহিতে। (এখন সমাপ্তির পদধ্বনি শোনা যায়। ) এ কালের কিছু তথাকথিত বিপ্লবী তাঁর পদলেহন করে কবিতা লিখেছেন। তোষামোদির এক পর্যায়ে নিকটাত্মীয়কে ওপরে তুলে দিয়েছিলেন। এখনো তিনি সমাসীন। ’

মানুষ জন্মগতভাবে সুবিধাভোগ করতে চায়। ন্যায়-অন্যায়বোধ কজনের আছে। আজ পরিবর্তনের রমরমা বাদ্যি-বাজনা। আমরা উঠেপড়ে ছুটছি বিজ্ঞানের পথে! ৯০ ভাগ মেধাবী শিক্ষার্থী গেল বিজ্ঞান পড়তে। নিতান্ত যেখানে বিজ্ঞান পড়ার সুযোগ ছিল না, সেখানে কিছু শিক্ষার্থী কলা বিভাগে পড়তে বাধ্য হলো, জগৎ বিজ্ঞানময় হতে থাকল, তাকে সুন্দর করতে কলার দরকার, সে সত্য না বুঝে আমরা বিজ্ঞানে অবগাহন শুরু করলাম। চারপাশে শুরু হলো বিজ্ঞানের জয়জয়কার। গ্রামে-গঞ্জে গড়ে উঠল বিজ্ঞানপ্রধান বিদ্যালয়।

অবিমৃশ্যকারীর পরিণতি ভালো হয় না। মানবসভ্যতার পুরো ইতিহাসটাই তার নজির। শিক্ষার্থীর পারঙ্গমতা ও আগ্রহের মূল্য দিয়ে আমরা তখনই গর্বিত হব, যখন যথার্থই উপকৃত হব। কোথায়, কিভাবে আমাদের জাতীয় উন্নয়ন রক্ষিত, তা অবশ্যই খুঁজে বের করতে হবে। ব্যক্তিউন্নতি খুঁজলেই সব ব্যর্থতা কাঁধে এসে পড়বে। বিষয়টি গভীরভাবে উপলব্ধির প্রয়োজন রাখে।

শিক্ষায় আমরা জগত্জয়ী হওয়ার জন্য গ্রামে গ্রামে বড় বিদ্যালয় খোলার প্রদর্শনী শুরু করেছি। এতে কিছু অনুরাগী বেকার কাজ পাচ্ছে। কিন্তু কাজের কাজ হচ্ছে কতটুকু! ষোড়শ শতকের অক্সফোর্ডে আমরা এমন ধারা লক্ষ করেছি। তা সামলে নিয়ে আজ শিক্ষায় তারা স্থিতিস্থাপক। আমরা কোথায়? কেবল নিজের খ্যাতি দেখতেই স্বপনচারী।

বলতে গেলে এখন প্রায় প্রতিটি জনপদে বিজ্ঞাননির্ভর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে। এদের কাজ কী! সমাজে এদের অবদান কতটুকু, তা ভাবার অবকাশ আমাদের নেই।

দেশভাগের আগে আমাদের প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ছিল না। এখন প্রায় শখানেক। আমরা তুলনা করলে দেখব, সংখ্যা বেড়েছে বিজ্ঞান আর প্রযুক্তির। কিন্তু মান কোথায় যেন হাবুডুবু খাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তীচ্ছুরা অপর ভাষায় শতকরা ১০ জন পাস করছে আর মাতৃভাষার বেইজ্জতি বেশুমার। তবু এদের জন্য প্রযুক্তির দ্বার উন্মুক্ত। কারণ মানসম্মান, গাড়ি-বাড়ি ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে যাতায়াত করার সুযোগ মিললেই হলো। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় পার হয়ে আসছি। তার প্রমাণ রাখতে পারছি কজন!

আমরা দলে দলে ভিসি সাজার জন্য প্রকাশ্যে লম্ফঝম্প করছি। চারপাশে মোসাহেব কম নেই। মাঝখান থেকে জনগণ পড়ছে প্রবল ফাঁকিতে। এত সব উচ্চারণ করতে গেলে কী জানি দেশদ্রোহী হয়ে যেতে হয়। না, ওসব ঝামেলায় নেই। আছি কর্মসাধনায় যুক্তদের সঙ্গে। বিদেশি ইঞ্জিনিয়ারদের দেখা যায় গামবুট পরে মাঠে-ময়দানে সশরীরে কাজে যুক্ত। আমরা এক্সিকিউটিভ, সুপার এক্সিকিউটিভ সেজে দামি গাড়ি হাঁকিয়ে, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার দেমাগ দেখিয়ে প্রকারান্তরে শিক্ষা ও জনগণকে অপমান করছি। সেই সঙ্গে প্রকৃত শিক্ষাকে নির্বাসনে পাঠাচ্ছি। এর পরিণতি দেখার জন্য বোধকরি বেশি প্রতীক্ষার প্রয়োজন নেই।

 

লেখক : সাবেক শিক্ষক, রাজশাহী কলেজ

দাতা-গ্রহীতার রূপান্তরে শিক্ষা এখন দ্বীপান্তরে

গোলাম কবির

সংসারে যে কাজে যার প্রবল অনুরাগ, সেই সত্যিকার উতরে যায়। অর্থনীতির ভাষায় বলা হয়েছে গোষ্ঠীর পারঙ্গমতার কথা। বিশেষ কাজে যুক্ত থাকা পরিবারের উত্তরপুরুষরা কাজটি সুচারুরূপে করতে সক্ষম। যাকে বলা হয় ‘হেরিডিটি অব ট্রান্সমিশন’।

তা হয়, কিন্তু সেটাই শেষ কথা নয়। অন্যরা মেধা আর চর্চার ফলে ওই একই কাজের এমন নতুন সুড়ঙ্গ বের করেন, যাতে সবাইকে তাক লাগিয়ে দেন। ওই যে মার্কনি কিংবা রাইটস ভ্রাতৃদ্বয়, আজ যে বিশ্বজোড়া স্মরণীয়, এঁরা কেবল ছুতার-মিস্ত্রির ঘরের সন্তান ছিলেন বলে শোনা যায়নি। বেশিদূর যাব না, আমাদের ঘরের কাছের মানুষ, যাঁরা শিক্ষার অসাধারণত্ব প্রদর্শন করে গেছেন, তাঁরা কি শিক্ষক পরিবারের মানুষ! না, আসলে মানুষের মেধা যে পথে সচল করা হয়, সেখানেই তা কার্যকর হবে। এটা স্বীকার্য হলেও মেধার নিজস্ব একটা মূল্য আছে।

আজ কেমন যেন সব কিছু ওলটপালট হয়ে গেছে। এখন মানুষের মেধাজ্ঞান শতভাগ ব্যাবসায়িক পর্যায়ে। কড়ির আমদানি যেখানে বেশি, মানুষ সেখানেই হামাগুড়ি দেয়। ফলে কিছু মেধাবী ওই কড়ির খপ্পরে বাধা পড়ে গেছে। প্রকৃত-অপ্রকৃত তলিয়ে দেখছে না। কিছুদিন আগেও ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার হলে কাজের অভাব কম ছিল। সে রমরমা এখন আর নেই। যাদের আগ্রহ, তারা পড়ুক। সবাই কেন? এতে সরবরাহ বাড়ছে; মানুষ তার মূল্য পাচ্ছে না। কারণ সবাই একই পেশার হলে কাজ পাবে কোথায়? আমরা এখন সবাই মিলে ডাক্তার হওয়ার পথের পথিক। এখানেই শেষ নয়, ডাক্তারের সঙ্গে নানা জাতীয় ইঞ্জিনিয়ারও হওয়ার জন্য আমরা উদ্বাহু। বুঝি না সংসারের কাজ কেবল ডাক্তার ও ইঞ্জিনিয়ার দিয়েই চলে না। কত ছন্দে আমাদের ওঠাবসা। সব দিক অন্ধকারে রেখে আমরা নগদপ্রাপ্তির পথে আলো ফেলছি। কতটা পেলাম, তার হিসাব রাখি না। দেখি না ওই সব আলোর দিশারির উত্তরপুরুষ আমাদের কোন গহিন অন্ধকারে টানছে। তবু খুঁজছি, কিন্তু পাচ্ছি কই! এটা কি আমাদের অক্ষমতা, নাকি ভুলিয়ে রাখা। না, এমনভাবে কতকাল ভুলে থাকা যায়! আমাদের সচেতন হতে হবে। চারপাশে চোখ মেলে চেয়ে দেখতে হবে। মনে রাখা দরকার, অর্থের প্রয়োজন আছে, তাই বলে অর্থই যে সব নয়, তা অবশ্যই ভেবে দেখার প্রয়োজন কম নয়।

পাকিস্তান হাসিলের অব্যবহিত পরে আমাদের নেক-বুদ্ধি কাজ করা শুরু করল—এসবের মধ্যে শিক্ষা অন্যতম। আমাদের ভাবিত করা হলো, শিক্ষায় বহুমুখিতা আমাদের উন্নতির অন্যতম সোপান। আমরা উঠেপড়ে লাগলাম, সমস্বরে বলতে লাগলাম, ‘তরক্কি চাই, তরক্কি চাই’। চিন্তায় এলো না, কেবল বিজ্ঞানই নয়, সে জীবন হবে কলা-সুন্দর। সে পথের অনুসারীও থাকতে হবে। সেখানে আবশ্যিক প্রয়োজন মেধার! দুঃখের বিষয়, মেধা কেবল বিজ্ঞানের প্রতি ধাবিত হলো বুঝে অথবা না বুঝে।

এত সব তেলেসমাতি হয়ে গেল, অতি অল্প সময়ে। বলে রাখা ভালো, ‘এর সূচনা আইয়ুবি শাহেনশাহিতে। (এখন সমাপ্তির পদধ্বনি শোনা যায়। ) এ কালের কিছু তথাকথিত বিপ্লবী তাঁর পদলেহন করে কবিতা লিখেছেন। তোষামোদির এক পর্যায়ে নিকটাত্মীয়কে ওপরে তুলে দিয়েছিলেন। এখনো তিনি সমাসীন। ’

মানুষ জন্মগতভাবে সুবিধাভোগ করতে চায়। ন্যায়-অন্যায়বোধ কজনের আছে। আজ পরিবর্তনের রমরমা বাদ্যি-বাজনা। আমরা উঠেপড়ে ছুটছি বিজ্ঞানের পথে! ৯০ ভাগ মেধাবী শিক্ষার্থী গেল বিজ্ঞান পড়তে। নিতান্ত যেখানে বিজ্ঞান পড়ার সুযোগ ছিল না, সেখানে কিছু শিক্ষার্থী কলা বিভাগে পড়তে বাধ্য হলো, জগৎ বিজ্ঞানময় হতে থাকল, তাকে সুন্দর করতে কলার দরকার, সে সত্য না বুঝে আমরা বিজ্ঞানে অবগাহন শুরু করলাম। চারপাশে শুরু হলো বিজ্ঞানের জয়জয়কার। গ্রামে-গঞ্জে গড়ে উঠল বিজ্ঞানপ্রধান বিদ্যালয়।

অবিমৃশ্যকারীর পরিণতি ভালো হয় না। মানবসভ্যতার পুরো ইতিহাসটাই তার নজির। শিক্ষার্থীর পারঙ্গমতা ও আগ্রহের মূল্য দিয়ে আমরা তখনই গর্বিত হব, যখন যথার্থই উপকৃত হব। কোথায়, কিভাবে আমাদের জাতীয় উন্নয়ন রক্ষিত, তা অবশ্যই খুঁজে বের করতে হবে। ব্যক্তিউন্নতি খুঁজলেই সব ব্যর্থতা কাঁধে এসে পড়বে। বিষয়টি গভীরভাবে উপলব্ধির প্রয়োজন রাখে।

শিক্ষায় আমরা জগত্জয়ী হওয়ার জন্য গ্রামে গ্রামে বড় বিদ্যালয় খোলার প্রদর্শনী শুরু করেছি। এতে কিছু অনুরাগী বেকার কাজ পাচ্ছে। কিন্তু কাজের কাজ হচ্ছে কতটুকু! ষোড়শ শতকের অক্সফোর্ডে আমরা এমন ধারা লক্ষ করেছি। তা সামলে নিয়ে আজ শিক্ষায় তারা স্থিতিস্থাপক। আমরা কোথায়? কেবল নিজের খ্যাতি দেখতেই স্বপনচারী।

বলতে গেলে এখন প্রায় প্রতিটি জনপদে বিজ্ঞাননির্ভর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে। এদের কাজ কী! সমাজে এদের অবদান কতটুকু, তা ভাবার অবকাশ আমাদের নেই।

দেশভাগের আগে আমাদের প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ছিল না। এখন প্রায় শখানেক। আমরা তুলনা করলে দেখব, সংখ্যা বেড়েছে বিজ্ঞান আর প্রযুক্তির। কিন্তু মান কোথায় যেন হাবুডুবু খাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তীচ্ছুরা অপর ভাষায় শতকরা ১০ জন পাস করছে আর মাতৃভাষার বেইজ্জতি বেশুমার। তবু এদের জন্য প্রযুক্তির দ্বার উন্মুক্ত। কারণ মানসম্মান, গাড়ি-বাড়ি ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে যাতায়াত করার সুযোগ মিললেই হলো। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় পার হয়ে আসছি। তার প্রমাণ রাখতে পারছি কজন!

আমরা দলে দলে ভিসি সাজার জন্য প্রকাশ্যে লম্ফঝম্প করছি। চারপাশে মোসাহেব কম নেই। মাঝখান থেকে জনগণ পড়ছে প্রবল ফাঁকিতে। এত সব উচ্চারণ করতে গেলে কী জানি দেশদ্রোহী হয়ে যেতে হয়। না, ওসব ঝামেলায় নেই। আছি কর্মসাধনায় যুক্তদের সঙ্গে। বিদেশি ইঞ্জিনিয়ারদের দেখা যায় গামবুট পরে মাঠে-ময়দানে সশরীরে কাজে যুক্ত। আমরা এক্সিকিউটিভ, সুপার এক্সিকিউটিভ সেজে দামি গাড়ি হাঁকিয়ে, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার দেমাগ দেখিয়ে প্রকারান্তরে শিক্ষা ও জনগণকে অপমান করছি। সেই সঙ্গে প্রকৃত শিক্ষাকে নির্বাসনে পাঠাচ্ছি। এর পরিণতি দেখার জন্য বোধকরি বেশি প্রতীক্ষার প্রয়োজন নেই।

 

লেখক : সাবেক শিক্ষক, রাজশাহী কলেজ