দুর্নীতি দমনে ‘হুইসেলব্লোয়িং’, নিরাপত্তা দেবে আইন

রেফায়েত উল্যাহ রুপক

‘দেশে যে জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট একটি আইন আছে, সে বিষয়ে দেরিতে হলেও জানতে পেরেছি। দূুর্নীতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর জন্য আজকে কর্মশালাটি সহায়ক হিসেবে কাজ করবে। এতে করে দুর্নীতি দমন নাগরিকদের প্রত্যক্ষ ভূমিকা রাখা যাবে। বাস্তব জীবনে এটি ব্যবহারের চেষ্টা করার কথা বলেন রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী কাউছার মাহমুদ। ‘শিক্ষার্থীদের চিন্তায় হুইসেলব্লোয়িং: বাংলাদেশের পাবলিক সেক্টরে এর সচেতনতা, বিকাশ এবং বাস্তবায়নের বিভিন্ন সমস্যার মোকাবিলা’ শীর্ষক কর্মশালায় একজন প্রশিক্ষণার্থী হিসেবে ছিলেন তিনি।

দেশে দুর্নীতি, অনিয়ম ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের জবাবদিহিতা নিশ্চিতে একটি কার্যকরী পদক্ষেপ হতে পারে ‘হুইসেলব্লোয়িং’। যার মাধ্যমে সাধারণ শিক্ষার্থী হতে সরকারি কর্মকর্তা উপর্যুক্ত তথ্যপ্রমাণ নিয়ে রাষ্ট্রের অথবা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের স্বার্থের বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতি তুলে ধরতে পারেন। এই বিশাল কর্মযজ্ঞে হুইসেলব্লোয়ারের নিরাপত্তা দিবে দেশের জনস্বার্থ তথ্য প্রকাশের সুরক্ষা আইন ২০১১।

সোমবার (১৪ আগস্ট) দিনব্যাপী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের সেমিনার কক্ষে ইএমকে সেন্টারের অর্থায়নে অনুষ্ঠিত হয় এ কর্মশালা। এতে রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইসহাকের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি ছিলেন সামাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক সিরাজ উদ দৌলাহ এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন চবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মুস্তাফিজুর রহমান ছিদ্দিকী এবং রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. ভূঁইয়া মো: মনোয়ার কবীর।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিভাগের অধ্যাপক ড. আনোয়ারা বেগম, মাহফুজ পারভেজ, মো. সফিকুল ইসলাম ও সহযোগী অধ্যাপক মো. বখতেয়ার উদ্দীন, ড. হাসিনা আফরোজ এবং সহকারী অধ্যাপক উম্মে হাবিবা এবং প্রভাষক তমা রানি মিস্ত্রী, মো. এরশাদুল হক, ইসমত আরা’সহ বিভাগের ২৫ জন প্রশিক্ষণার্থী শিক্ষার্থী।

কর্মশালায় হুইসেলব্লোয়িং, ভার্চুয়াল হুইসেলব্লোয়িং এবং হুইসেলব্লোয়িংয়ের গুরুত্ব বিষয়ে আলোকপাত করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. নুরুল হুদা সাকিব ও মোহাম্মদ সাজেদুর রহমান।

প্রশিক্ষণ শেষে চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সানজিদা শারমিন মুন্নী বলেন, হুইসেলব্লোয়িং বিষয়টা পৃথিবীতে বেশ পুরানো একটা আলোচিত বিষয় হলেও বাংলাদেশে এই বিষয় সম্পর্কে তেমন কোনো আলাপ আলোচনা হয় না। আবার এটি করলেও আমাদের বিভিন্ন সমস্যার মুখোমুখি হতে হয় পরবর্তীতে। তবে ২০১১ সালে যে জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট তথ্য প্রকাশের সুরক্ষা নিয়ে আইন আছে তা আমরা জানতাম না। এই সেমিনারটা আমাদের বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত জানার একটি সুযোগ তৈরি করেছে। পাশাপাশি আমরা আরও সচেতনভাবে বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে এটি ব্যবহার করতে পারব। আইনটি বেশ সময়োপযোগী হওয়ায় এর প্রয়োগে একজন হুইসেলব্লোয়ারের নিরাপত্তা দেয়া সম্ভব হবে। এছাড়াও, কেউ ভুল তথ্য দিয়ে যাতে আইনটির সুবিধা না নিতে পারে, সেটিও নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। সর্বোপরি বর্তমান সময়ে এতো কার্যকর একটি বিষয় সবাইকে জানানোর জন্য আরও অনেক প্রচার-প্রচারণা প্রয়োজন বলে আমি মনে করি।

কর্মশালা প্রকল্পটির পরিচালক ড. নুরুল হুদা সাকিব বলেন, এই ওয়ার্কশপের মাধ্যমে প্রতিবাদের প্রকৃত পদ্ধতি এবং তাদের সুরক্ষার জন্য যে আইন রয়েছে তা জানানোর মধ্য দিয়ে তরুণদের মধ্যে নেতৃত্বের গুণাবলি বিকশিত হবে। এ ধরনের হুইসেলব্লোয়িং প্রোগ্রামের মাধ্যমে তরুণদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি হয়, যা কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জনে সহায়ক হবে। এতে সমাজে বিদ্যমান অনিয়ম ও দুর্নীতির চর্চা কিছুটা হলেও দূরীভূত হবে বলে আশা রাখি।

উল্লেখ্য, সহযোগী অধ্যাপক নুরুল হুদা সাকিব ইএমকে সেন্টারের অর্থায়নে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য ওয়ার্কশপটির আয়োজন করেছেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, গণ বিশ্ববিদ্যালয়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস’সহ মোট ১২টি পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে এ ওয়ার্কশপটি পর্যায়ক্রমে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

ইবিহো/এসএস

দুর্নীতি দমনে ‘হুইসেলব্লোয়িং’, নিরাপত্তা দেবে আইন

রেফায়েত উল্যাহ রুপক

‘দেশে যে জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট একটি আইন আছে, সে বিষয়ে দেরিতে হলেও জানতে পেরেছি। দূুর্নীতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর জন্য আজকে কর্মশালাটি সহায়ক হিসেবে কাজ করবে। এতে করে দুর্নীতি দমন নাগরিকদের প্রত্যক্ষ ভূমিকা রাখা যাবে। বাস্তব জীবনে এটি ব্যবহারের চেষ্টা করার কথা বলেন রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী কাউছার মাহমুদ। ‘শিক্ষার্থীদের চিন্তায় হুইসেলব্লোয়িং: বাংলাদেশের পাবলিক সেক্টরে এর সচেতনতা, বিকাশ এবং বাস্তবায়নের বিভিন্ন সমস্যার মোকাবিলা’ শীর্ষক কর্মশালায় একজন প্রশিক্ষণার্থী হিসেবে ছিলেন তিনি।

দেশে দুর্নীতি, অনিয়ম ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের জবাবদিহিতা নিশ্চিতে একটি কার্যকরী পদক্ষেপ হতে পারে ‘হুইসেলব্লোয়িং’। যার মাধ্যমে সাধারণ শিক্ষার্থী হতে সরকারি কর্মকর্তা উপর্যুক্ত তথ্যপ্রমাণ নিয়ে রাষ্ট্রের অথবা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের স্বার্থের বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতি তুলে ধরতে পারেন। এই বিশাল কর্মযজ্ঞে হুইসেলব্লোয়ারের নিরাপত্তা দিবে দেশের জনস্বার্থ তথ্য প্রকাশের সুরক্ষা আইন ২০১১।

সোমবার (১৪ আগস্ট) দিনব্যাপী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের সেমিনার কক্ষে ইএমকে সেন্টারের অর্থায়নে অনুষ্ঠিত হয় এ কর্মশালা। এতে রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইসহাকের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি ছিলেন সামাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক সিরাজ উদ দৌলাহ এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন চবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মুস্তাফিজুর রহমান ছিদ্দিকী এবং রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. ভূঁইয়া মো: মনোয়ার কবীর।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিভাগের অধ্যাপক ড. আনোয়ারা বেগম, মাহফুজ পারভেজ, মো. সফিকুল ইসলাম ও সহযোগী অধ্যাপক মো. বখতেয়ার উদ্দীন, ড. হাসিনা আফরোজ এবং সহকারী অধ্যাপক উম্মে হাবিবা এবং প্রভাষক তমা রানি মিস্ত্রী, মো. এরশাদুল হক, ইসমত আরা’সহ বিভাগের ২৫ জন প্রশিক্ষণার্থী শিক্ষার্থী।

কর্মশালায় হুইসেলব্লোয়িং, ভার্চুয়াল হুইসেলব্লোয়িং এবং হুইসেলব্লোয়িংয়ের গুরুত্ব বিষয়ে আলোকপাত করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. নুরুল হুদা সাকিব ও মোহাম্মদ সাজেদুর রহমান।

প্রশিক্ষণ শেষে চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সানজিদা শারমিন মুন্নী বলেন, হুইসেলব্লোয়িং বিষয়টা পৃথিবীতে বেশ পুরানো একটা আলোচিত বিষয় হলেও বাংলাদেশে এই বিষয় সম্পর্কে তেমন কোনো আলাপ আলোচনা হয় না। আবার এটি করলেও আমাদের বিভিন্ন সমস্যার মুখোমুখি হতে হয় পরবর্তীতে। তবে ২০১১ সালে যে জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট তথ্য প্রকাশের সুরক্ষা নিয়ে আইন আছে তা আমরা জানতাম না। এই সেমিনারটা আমাদের বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত জানার একটি সুযোগ তৈরি করেছে। পাশাপাশি আমরা আরও সচেতনভাবে বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে এটি ব্যবহার করতে পারব। আইনটি বেশ সময়োপযোগী হওয়ায় এর প্রয়োগে একজন হুইসেলব্লোয়ারের নিরাপত্তা দেয়া সম্ভব হবে। এছাড়াও, কেউ ভুল তথ্য দিয়ে যাতে আইনটির সুবিধা না নিতে পারে, সেটিও নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। সর্বোপরি বর্তমান সময়ে এতো কার্যকর একটি বিষয় সবাইকে জানানোর জন্য আরও অনেক প্রচার-প্রচারণা প্রয়োজন বলে আমি মনে করি।

কর্মশালা প্রকল্পটির পরিচালক ড. নুরুল হুদা সাকিব বলেন, এই ওয়ার্কশপের মাধ্যমে প্রতিবাদের প্রকৃত পদ্ধতি এবং তাদের সুরক্ষার জন্য যে আইন রয়েছে তা জানানোর মধ্য দিয়ে তরুণদের মধ্যে নেতৃত্বের গুণাবলি বিকশিত হবে। এ ধরনের হুইসেলব্লোয়িং প্রোগ্রামের মাধ্যমে তরুণদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি হয়, যা কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জনে সহায়ক হবে। এতে সমাজে বিদ্যমান অনিয়ম ও দুর্নীতির চর্চা কিছুটা হলেও দূরীভূত হবে বলে আশা রাখি।

উল্লেখ্য, সহযোগী অধ্যাপক নুরুল হুদা সাকিব ইএমকে সেন্টারের অর্থায়নে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য ওয়ার্কশপটির আয়োজন করেছেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, গণ বিশ্ববিদ্যালয়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস’সহ মোট ১২টি পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে এ ওয়ার্কশপটি পর্যায়ক্রমে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

ইবিহো/এসএস