পরীক্ষায় ‘উসকানিমূলক ও অবমাননাকর’ প্রশ্নে ২৪ বিশিষ্টজনের ক্ষোভ
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
![](https://shikkha-shikkhangan.com/wp-content/uploads/2022/11/bi.jpg)
পরীক্ষায় এমন প্রশ্নপত্র সমালোচনার ঝড় তুলেছে দেশজুড়ে
সম্প্রতি মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক ও কারিগরি স্তরের পাবলিক পরীক্ষার সৃজনশীল প্রশ্নপত্রে ‘সাম্প্রদায়িক উসকানিমূলক, নারীর প্রতি অবমাননাকর এবং একজন লেখকের প্রতি বিদ্বেষপ্রসূত ও অবমাননাকর প্রশ্ন’র সংযোজন ঘটেছে উল্লেখ করে ২৪ বিশিষ্ট নাগরিক বলেছেন, ‘এসব অনাকাঙ্ক্ষিত এবং অনভিপ্রেত; কোনো অবস্থাতেই এসব মেনে নেয়া যায় না। এসব বিষয় আমাদের ক্ষুব্ধ করেছে।’
আজ শুক্রবার এক যৌথ বিবৃতিতে তারা আরও বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের ৫০ বছর পরও ৩০ লাখ জীবনের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশে একটি সার্বজনীন, অসাম্প্রদায়িক, বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষা ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়নি। হেফাজতের ১৩টি দাবি মেনে নিয়ে এই শিক্ষাকে আরও পশ্চাৎপদ ও প্রতিক্রিয়াাশীল করা হয়েছে। দেশের শিশুদের একটি বিরাট অংশ শিক্ষা গ্রহণ করছে সরকার নিয়ন্ত্রিত আলিয়া মাদরাসা ও সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকা কওমি মাদরাসায়।’
‘অনেক বিতর্কের মধ্যে শিক্ষা ক্ষেত্রে সৃজনশীল পদ্ধতি প্রবর্তনের পরও শিক্ষকরা নিজেদের এই পদ্ধতির উপযোগী করে গড়ে তুলতে পেরেছেন কি না- তা নিয়ে এখনো প্রশ্ন আছে। সৃজনশীল শিক্ষা পদ্ধতিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থী সবাইকে সৃজনশীল হয়ে উঠতে হবে।’
বিবৃতিতে তারা বলেন, ‘অতি সম্প্রতি পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ, নারীর প্রতি অবমাননাকর, ব্যক্তির প্রতি বিদ্বেষমূলক প্রশ্নপত্র শিক্ষা ব্যবস্থার প্রতিক্রিয়াশীল, সাম্প্রদায়িক ও আধুনিকতাবিরোধী প্রবণতার চিত্র তুলে ধরেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রশ্নপত্র প্রণয়নকারী ও মডারেশন বোর্ডের সদস্যদের যোগ্যতা ও ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন করার পাশাপাশি সমগ্র শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে ভাবার সময়ও এসেছে। পাশাপাশি মৌলবাদী একটি গোষ্ঠী বিজ্ঞান শিক্ষার পঠন-পাঠন থেকে চার্লস ডারউনের যুগান্তকারী বিবর্তনবাদ তত্ত্ব বাদ দেয়ার যে দাবি তুলেছেন, তাও আমাদের বিচলিত করছে। এসব বিষয় বাংলাদেশে বিজ্ঞান শিক্ষা ও মুক্তচিন্তার প্রসারকে বাধাগ্রস্ত করবে এবং দীর্ঘমেয়াদে রাষ্ট্র ও সমাজকে অন্ধকার, সাম্প্রদায়িকতা আর কূপমন্ডুকতায় ঠেলে দেবে।’
বিবৃতিদাতারা হলেন ঐক্য ন্যাপের সভাপতি পঙ্কজ ভট্টাচার্য, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য রামেন্দু মজুমদার, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রাশেদা কে. চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি ডা. সারওয়ার আলী, বাংলাদেশ কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. নুর মোহাম্মদ তালুকদার, বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশ গুপ্ত, বাংলাদেশ কৃষক সমিতির সভাপতি এস.এম.এ সবুর, মানবাধিকার কর্মী খুশী কবির, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এম. এম. আকাশ, অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক সালেহ আহমেদ, আইনজীবী পারভেজ হাসেম, জাতীয় শ্রমিক জোটের কার্যকরী সভাপতি আবদুল ওয়াহেদ, সমাজকর্মী এম এ সামাদ, গবেষক ও সংস্কৃতি কর্মী ড. সেলু বাসিত, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য রনজিৎ কুমার সাহা, সংস্কৃতি কর্মী এ কে আজাদ, অলক দাস গুপ্ত, শ্রমিক সংগঠক আব্দুর রাজ্জাক, মানবাধিকার কর্মী আবদুল আলীম, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের তথ্য ও প্রচার সম্পাদক দীপায়ন খীসা, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের (বিসিএল) সভাপতি গৌতম শীল।
![](https://shikkha-shikkhangan.com/wp-content/uploads/2023/01/logo-removebg-preview-1.png)
পরীক্ষায় ‘উসকানিমূলক ও অবমাননাকর’ প্রশ্নে ২৪ বিশিষ্টজনের ক্ষোভ
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
![](https://shikkha-shikkhangan.com/wp-content/uploads/2022/11/bi.jpg)
পরীক্ষায় এমন প্রশ্নপত্র সমালোচনার ঝড় তুলেছে দেশজুড়ে
সম্প্রতি মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক ও কারিগরি স্তরের পাবলিক পরীক্ষার সৃজনশীল প্রশ্নপত্রে ‘সাম্প্রদায়িক উসকানিমূলক, নারীর প্রতি অবমাননাকর এবং একজন লেখকের প্রতি বিদ্বেষপ্রসূত ও অবমাননাকর প্রশ্ন’র সংযোজন ঘটেছে উল্লেখ করে ২৪ বিশিষ্ট নাগরিক বলেছেন, ‘এসব অনাকাঙ্ক্ষিত এবং অনভিপ্রেত; কোনো অবস্থাতেই এসব মেনে নেয়া যায় না। এসব বিষয় আমাদের ক্ষুব্ধ করেছে।’
আজ শুক্রবার এক যৌথ বিবৃতিতে তারা আরও বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের ৫০ বছর পরও ৩০ লাখ জীবনের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশে একটি সার্বজনীন, অসাম্প্রদায়িক, বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষা ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়নি। হেফাজতের ১৩টি দাবি মেনে নিয়ে এই শিক্ষাকে আরও পশ্চাৎপদ ও প্রতিক্রিয়াাশীল করা হয়েছে। দেশের শিশুদের একটি বিরাট অংশ শিক্ষা গ্রহণ করছে সরকার নিয়ন্ত্রিত আলিয়া মাদরাসা ও সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকা কওমি মাদরাসায়।’
‘অনেক বিতর্কের মধ্যে শিক্ষা ক্ষেত্রে সৃজনশীল পদ্ধতি প্রবর্তনের পরও শিক্ষকরা নিজেদের এই পদ্ধতির উপযোগী করে গড়ে তুলতে পেরেছেন কি না- তা নিয়ে এখনো প্রশ্ন আছে। সৃজনশীল শিক্ষা পদ্ধতিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থী সবাইকে সৃজনশীল হয়ে উঠতে হবে।’
বিবৃতিতে তারা বলেন, ‘অতি সম্প্রতি পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ, নারীর প্রতি অবমাননাকর, ব্যক্তির প্রতি বিদ্বেষমূলক প্রশ্নপত্র শিক্ষা ব্যবস্থার প্রতিক্রিয়াশীল, সাম্প্রদায়িক ও আধুনিকতাবিরোধী প্রবণতার চিত্র তুলে ধরেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রশ্নপত্র প্রণয়নকারী ও মডারেশন বোর্ডের সদস্যদের যোগ্যতা ও ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন করার পাশাপাশি সমগ্র শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে ভাবার সময়ও এসেছে। পাশাপাশি মৌলবাদী একটি গোষ্ঠী বিজ্ঞান শিক্ষার পঠন-পাঠন থেকে চার্লস ডারউনের যুগান্তকারী বিবর্তনবাদ তত্ত্ব বাদ দেয়ার যে দাবি তুলেছেন, তাও আমাদের বিচলিত করছে। এসব বিষয় বাংলাদেশে বিজ্ঞান শিক্ষা ও মুক্তচিন্তার প্রসারকে বাধাগ্রস্ত করবে এবং দীর্ঘমেয়াদে রাষ্ট্র ও সমাজকে অন্ধকার, সাম্প্রদায়িকতা আর কূপমন্ডুকতায় ঠেলে দেবে।’
বিবৃতিদাতারা হলেন ঐক্য ন্যাপের সভাপতি পঙ্কজ ভট্টাচার্য, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য রামেন্দু মজুমদার, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রাশেদা কে. চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি ডা. সারওয়ার আলী, বাংলাদেশ কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. নুর মোহাম্মদ তালুকদার, বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশ গুপ্ত, বাংলাদেশ কৃষক সমিতির সভাপতি এস.এম.এ সবুর, মানবাধিকার কর্মী খুশী কবির, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এম. এম. আকাশ, অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক সালেহ আহমেদ, আইনজীবী পারভেজ হাসেম, জাতীয় শ্রমিক জোটের কার্যকরী সভাপতি আবদুল ওয়াহেদ, সমাজকর্মী এম এ সামাদ, গবেষক ও সংস্কৃতি কর্মী ড. সেলু বাসিত, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য রনজিৎ কুমার সাহা, সংস্কৃতি কর্মী এ কে আজাদ, অলক দাস গুপ্ত, শ্রমিক সংগঠক আব্দুর রাজ্জাক, মানবাধিকার কর্মী আবদুল আলীম, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের তথ্য ও প্রচার সম্পাদক দীপায়ন খীসা, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের (বিসিএল) সভাপতি গৌতম শীল।