পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে ভুল ও বিদ্বেষ

বিষয়টি মোটেও সামান্য নয়, অবহেলার তো নয়ই। আমাদের দেশে শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে, শিক্ষার মান নিয়ে, এমনকি শিক্ষকদের যোগ্যতা নিয়েও সমালোচনার শেষ নেই। সম্প্রতি অন্তত তিনটি পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র নিয়ে যে সমালোচনা হচ্ছে, তা শুধু যৌক্তিক নয়, এর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের শিক্ষা কার্যক্রম থেকে চিরদিনের জন্য বিদায় দেওয়াও জরুরি। না হলে শিক্ষার্থীরা উদারতা ও মানবিকতার পরিবর্তে বিদ্বেষ ও হিংসা শিখবে।

বর্তমানে দেশে এইচএসসি পরীক্ষা চলছে। এই পরীক্ষার প্রথম দিনই ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের বাংলা প্রথম পত্রের প্রশ্নে সৃজনশীলতার নামে সাম্প্রদায়িকতার উসকানি থাকার অভিযোগে দেশজুড়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। অন্যদিকে কারিগরি বোর্ডে ভুল প্রশ্ন বিতরণ করা হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এসব নিয়ে বিব্রতকর অবস্থা তৈরি হয়। এর রেশ শেষ হতে না হতেই কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের এইচএসসি পরীক্ষার একটি প্রশ্নপত্রে লেখক ও সাংবাদিক আনিসুল হককে হেয় করার অভিযোগ উঠেছে।

চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের এইচএসসি পরীক্ষার বাংলা প্রথম পত্রের ৪০ নম্বরের সৃজনশীল প্রশ্নে ৪১টি ভুল পাওয়া গেছে বলেও গণমাধ্যমে খবর বের হয়েছে। বিষয়গুলো মানুষের মধ্যে ব্যাপক হাস্যরসের সৃষ্টি করেছে।

প্রশ্নপত্রে এত ভুল আগে কখনো দেখা গেছে কি? বিষয়গুলো গণমাধ্যমে প্রকাশ হওয়ার পর বা পাবলিক হওয়ার পর সংশ্লিষ্ট বোর্ডের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা প্রশ্ন প্রণয়নকারী ও পরিশোধনকারীদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলছেন। বিভ্রান্তিকর বা ভুল প্রশ্ন প্রণয়নকারী ও পরিশোধনকারীরা যেন ভবিষ্যতে বোর্ডের কোনো কাজে সম্পৃক্ত হতে না পারেন, সে বিষয়ে আন্তশিক্ষা বোর্ড ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ করার কথাও বলা হচ্ছে।

কথা হলো, প্রশ্নপত্র তৈরি করার মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়ার সঙ্গে যে শিক্ষকদের যুক্ত করা হয়, তাঁদের যোগ্যতা বা মান নিয়ে আগে থেকে কেন ভালোভাবে খোঁজখবর নেওয়া হয় না? ঢাকা বোর্ডের বাংলা প্রশ্নপত্রে সাম্প্রদায়িক উসকানিমূলক প্রশ্নটি যিনি তৈরি করেছেন, সেই কলেজশিক্ষক আগেও এমন প্রশ্ন তৈরি করেছেন বলে অভিযোগ থাকার পরও কেন তাঁকে এই দায়িত্ব দেওয়া হলো?

যেকোনো পাবলিক পরীক্ষার আগে শতভাগ প্রস্তুতির পাশাপাশি সর্বাত্মক সাবধানতা অবলম্বন করতে হয়। কিন্তু ইদানীং এ ক্ষেত্রে বড় ত্রুটি বা গাফিলতি দেখা যাচ্ছে। সৃজনশীল প্রশ্ন নিয়ে সঠিক ধারণার ঘাটতি থাকায় সমস্যা হচ্ছে। শিক্ষাবিদদের অনেকে মনে করছেন, না বোঝার কারণে সৃজনশীল প্রশ্ন শিক্ষার বড় ক্ষতি করেছে। এই পদ্ধতি শিক্ষকেরাও বোঝেন না, শিক্ষার্থী-অভিভাবকেরাও বোঝেন না। একটি ধারা প্রতিষ্ঠা করতে হলে আগে তা বোঝার সক্ষমতা রাখতে হয়।

শিক্ষাব্যবস্থা, পরীক্ষা পদ্ধতি নিয়ে আমাদের দেশে নানা রকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা অব্যাহত আছে। আর আছে সর্বগ্রাসী অপরাজনীতি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষকসমাজ এই অপরাজনীতির থাবায় ক্ষতবিক্ষত। দায়িত্ব পালনে অবহেলা করেও কেউ কেউ ‘রাজনীতি’কে রক্ষাকবচ হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন বলেই কি পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র তৈরির এই বেহাল অবস্থা?

পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে ভুল ও বিদ্বেষ

বিষয়টি মোটেও সামান্য নয়, অবহেলার তো নয়ই। আমাদের দেশে শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে, শিক্ষার মান নিয়ে, এমনকি শিক্ষকদের যোগ্যতা নিয়েও সমালোচনার শেষ নেই। সম্প্রতি অন্তত তিনটি পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র নিয়ে যে সমালোচনা হচ্ছে, তা শুধু যৌক্তিক নয়, এর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের শিক্ষা কার্যক্রম থেকে চিরদিনের জন্য বিদায় দেওয়াও জরুরি। না হলে শিক্ষার্থীরা উদারতা ও মানবিকতার পরিবর্তে বিদ্বেষ ও হিংসা শিখবে।

বর্তমানে দেশে এইচএসসি পরীক্ষা চলছে। এই পরীক্ষার প্রথম দিনই ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের বাংলা প্রথম পত্রের প্রশ্নে সৃজনশীলতার নামে সাম্প্রদায়িকতার উসকানি থাকার অভিযোগে দেশজুড়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। অন্যদিকে কারিগরি বোর্ডে ভুল প্রশ্ন বিতরণ করা হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এসব নিয়ে বিব্রতকর অবস্থা তৈরি হয়। এর রেশ শেষ হতে না হতেই কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের এইচএসসি পরীক্ষার একটি প্রশ্নপত্রে লেখক ও সাংবাদিক আনিসুল হককে হেয় করার অভিযোগ উঠেছে।

চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের এইচএসসি পরীক্ষার বাংলা প্রথম পত্রের ৪০ নম্বরের সৃজনশীল প্রশ্নে ৪১টি ভুল পাওয়া গেছে বলেও গণমাধ্যমে খবর বের হয়েছে। বিষয়গুলো মানুষের মধ্যে ব্যাপক হাস্যরসের সৃষ্টি করেছে।

প্রশ্নপত্রে এত ভুল আগে কখনো দেখা গেছে কি? বিষয়গুলো গণমাধ্যমে প্রকাশ হওয়ার পর বা পাবলিক হওয়ার পর সংশ্লিষ্ট বোর্ডের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা প্রশ্ন প্রণয়নকারী ও পরিশোধনকারীদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলছেন। বিভ্রান্তিকর বা ভুল প্রশ্ন প্রণয়নকারী ও পরিশোধনকারীরা যেন ভবিষ্যতে বোর্ডের কোনো কাজে সম্পৃক্ত হতে না পারেন, সে বিষয়ে আন্তশিক্ষা বোর্ড ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ করার কথাও বলা হচ্ছে।

কথা হলো, প্রশ্নপত্র তৈরি করার মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়ার সঙ্গে যে শিক্ষকদের যুক্ত করা হয়, তাঁদের যোগ্যতা বা মান নিয়ে আগে থেকে কেন ভালোভাবে খোঁজখবর নেওয়া হয় না? ঢাকা বোর্ডের বাংলা প্রশ্নপত্রে সাম্প্রদায়িক উসকানিমূলক প্রশ্নটি যিনি তৈরি করেছেন, সেই কলেজশিক্ষক আগেও এমন প্রশ্ন তৈরি করেছেন বলে অভিযোগ থাকার পরও কেন তাঁকে এই দায়িত্ব দেওয়া হলো?

যেকোনো পাবলিক পরীক্ষার আগে শতভাগ প্রস্তুতির পাশাপাশি সর্বাত্মক সাবধানতা অবলম্বন করতে হয়। কিন্তু ইদানীং এ ক্ষেত্রে বড় ত্রুটি বা গাফিলতি দেখা যাচ্ছে। সৃজনশীল প্রশ্ন নিয়ে সঠিক ধারণার ঘাটতি থাকায় সমস্যা হচ্ছে। শিক্ষাবিদদের অনেকে মনে করছেন, না বোঝার কারণে সৃজনশীল প্রশ্ন শিক্ষার বড় ক্ষতি করেছে। এই পদ্ধতি শিক্ষকেরাও বোঝেন না, শিক্ষার্থী-অভিভাবকেরাও বোঝেন না। একটি ধারা প্রতিষ্ঠা করতে হলে আগে তা বোঝার সক্ষমতা রাখতে হয়।

শিক্ষাব্যবস্থা, পরীক্ষা পদ্ধতি নিয়ে আমাদের দেশে নানা রকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা অব্যাহত আছে। আর আছে সর্বগ্রাসী অপরাজনীতি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষকসমাজ এই অপরাজনীতির থাবায় ক্ষতবিক্ষত। দায়িত্ব পালনে অবহেলা করেও কেউ কেউ ‘রাজনীতি’কে রক্ষাকবচ হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন বলেই কি পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র তৈরির এই বেহাল অবস্থা?