প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত থাকছে না পরীক্ষা, মূল্যায়ন যেভাবে

প্রাথমিক শিক্ষা

ফাইল ছবি

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

প্রাথমিক শিক্ষায় নতুন বছর থেকে প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত সব ধরনের পরীক্ষা তুলে দেওয়া হচ্ছে। পরীক্ষা না নিয়ে জ্ঞান, দক্ষতা, মূল্যবোধ ও দৃষ্টিভঙ্গি বিবেচনায় নিয়ে ‘সক্রিয় শিখন পদ্ধতিতে’ শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করবেন শিক্ষকরা।

জানা গেছে, সাময়িক পরীক্ষার পরিবর্তে চার মাস পরপর বছরে তিনবার শিক্ষার্থীদের শিখন অগ্রগতি প্রতিবেদন নামে একটি ‘রিপোর্ট কার্ড’ দেওয়া হবে। এতে শিক্ষার্থীর অবস্থা অনুযায়ী ‘সন্তোষজনক, উত্তম ও অতিউত্তম’ লেখা থাকবে।

বর্তমানে বছরে তিনবার প্রথম সাময়িক, দ্বিতীয় সাময়িক বা অর্ধবার্ষিক এবং বার্ষিক পরীক্ষা দিতে হয় শিক্ষার্থীদের। কিন্তু নতুন পদ্ধতিতে এসবের কিছুই থাকছে না, স্কুলেই হবে সব পড়াশোনা। পাশাপাশি সময়নিষ্ঠা, শৃঙ্খলা ও নিয়মানুবর্তিতা, দায়িত্ব ও কর্তব্যবোধ, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, আচার-আচরণ, দলীয় ও একক কাজে অংশগ্রহণ এবং বিশেষ পারদর্শিতা ধারাবাহিকভাবে মূল্যায়ন করা হবে।

একজন শিক্ষার্থী স্কুলে এসে কী করে, কীভাবে হাঁটাচলা করে, কীভাবে পড়াশোনা করে, কীভাবে শিক্ষক ও সহপাঠীদের সঙ্গে কথা বলে, খেলাধুলা কিংবা অন্যান্য বিষয়ে ওই শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণ কেমন- তার সবই মূল্যায়ন করবেন শিক্ষকরা।

অর্থাৎ স্কুলে শিক্ষার্থীর প্রতি মুহূর্তের কর্মকাণ্ডই মূল্যায়ন করবেন শিক্ষকরা। আর একেই ধারাবাহিক মূল্যায়ন বা সক্রিয় শিখন পদ্ধতির মূল্যায়ন বলা হচ্ছে। এই মূল্যায়নের জন্য পাঠ্যবইও পরিবর্তন হচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) প্রাথমিক শিক্ষাক্রম উইংয়ের সদস্য অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান বলেন, নতুন শিক্ষা পদ্ধতিতে পড়ালেখার ধারা ও মূল্যায়ণে বড় পরিবর্তন আনা হয়েছে। এতে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষাভীতি থেকেও মুক্ত হবে। নতুন এই পদ্ধতির জন্য প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে ৭টি বিষয়ে তিনটি বই পড়ানো হবে এবং তৃতীয় শ্রেণিতে ৮টি বিষয়ে ৬টি বই পড়ানো হবে।

তিনি বলেন, নতুন পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীর শিখন অগ্রগতি নিয়ে চার মাস পরপর অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলবেন শিক্ষকরা। ওই সময়ই অভিভাবকদের জানাতে হবে শিক্ষার্থীর কোথায় কোথায় ঘাটতি রয়েছে। এই ঘাটতি পোষাতে দুর্বল শিক্ষার্থীদের নিয়ে ‘নিরাময়মূলক ক্লাস’ করবেন শিক্ষকরা। এজন্য শিক্ষকদের যা যা কৌশল নিতে হবে তাও শিক্ষক গাইডে এনসিটিবি থেকে বলে দেওয়া হবে।

জানা গেছে, ধারাবাহিক মূল্যায়নের চারটি ধাপ রয়েছে। এগুলো হচ্ছে- পরিকল্পনা প্রণয়ন, মূল্যায়ন পদ্ধতি, মূল্যায়ন পরিচালনা ও তথ্য সংরক্ষণ, সংগৃহীত তথ্য বিশ্লেষণ কার্যকর ফলাবর্তন দেওয়া। ধারাবাহিক মূল্যায়নে যে কৌশলগুলোর কথা বলা হয়েছে সেগুলো হচ্ছে- মৌখিক প্রশ্নোত্তর, লিখিত প্রশ্নোত্তর, পর্যবেক্ষণ, প্রকল্প/ব্যবহারিক, একক কাজ, জোড়ায় কাজ ও দলগত কাজ, সাক্ষাৎকার, স্বমূল্যায়ন, সতীর্থ/সহপাঠী কর্তৃক মূল্যায়ন।

এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ধারাবাহিক মূল্যায়ন শিখন-শেখানো কার্যাবলির অংশ। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীর শিখন নিশ্চিত করা হবে।

প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত থাকছে না পরীক্ষা, মূল্যায়ন যেভাবে

প্রাথমিক শিক্ষা

ফাইল ছবি

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

প্রাথমিক শিক্ষায় নতুন বছর থেকে প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত সব ধরনের পরীক্ষা তুলে দেওয়া হচ্ছে। পরীক্ষা না নিয়ে জ্ঞান, দক্ষতা, মূল্যবোধ ও দৃষ্টিভঙ্গি বিবেচনায় নিয়ে ‘সক্রিয় শিখন পদ্ধতিতে’ শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করবেন শিক্ষকরা।

জানা গেছে, সাময়িক পরীক্ষার পরিবর্তে চার মাস পরপর বছরে তিনবার শিক্ষার্থীদের শিখন অগ্রগতি প্রতিবেদন নামে একটি ‘রিপোর্ট কার্ড’ দেওয়া হবে। এতে শিক্ষার্থীর অবস্থা অনুযায়ী ‘সন্তোষজনক, উত্তম ও অতিউত্তম’ লেখা থাকবে।

বর্তমানে বছরে তিনবার প্রথম সাময়িক, দ্বিতীয় সাময়িক বা অর্ধবার্ষিক এবং বার্ষিক পরীক্ষা দিতে হয় শিক্ষার্থীদের। কিন্তু নতুন পদ্ধতিতে এসবের কিছুই থাকছে না, স্কুলেই হবে সব পড়াশোনা। পাশাপাশি সময়নিষ্ঠা, শৃঙ্খলা ও নিয়মানুবর্তিতা, দায়িত্ব ও কর্তব্যবোধ, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, আচার-আচরণ, দলীয় ও একক কাজে অংশগ্রহণ এবং বিশেষ পারদর্শিতা ধারাবাহিকভাবে মূল্যায়ন করা হবে।

একজন শিক্ষার্থী স্কুলে এসে কী করে, কীভাবে হাঁটাচলা করে, কীভাবে পড়াশোনা করে, কীভাবে শিক্ষক ও সহপাঠীদের সঙ্গে কথা বলে, খেলাধুলা কিংবা অন্যান্য বিষয়ে ওই শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণ কেমন- তার সবই মূল্যায়ন করবেন শিক্ষকরা।

অর্থাৎ স্কুলে শিক্ষার্থীর প্রতি মুহূর্তের কর্মকাণ্ডই মূল্যায়ন করবেন শিক্ষকরা। আর একেই ধারাবাহিক মূল্যায়ন বা সক্রিয় শিখন পদ্ধতির মূল্যায়ন বলা হচ্ছে। এই মূল্যায়নের জন্য পাঠ্যবইও পরিবর্তন হচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) প্রাথমিক শিক্ষাক্রম উইংয়ের সদস্য অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান বলেন, নতুন শিক্ষা পদ্ধতিতে পড়ালেখার ধারা ও মূল্যায়ণে বড় পরিবর্তন আনা হয়েছে। এতে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষাভীতি থেকেও মুক্ত হবে। নতুন এই পদ্ধতির জন্য প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে ৭টি বিষয়ে তিনটি বই পড়ানো হবে এবং তৃতীয় শ্রেণিতে ৮টি বিষয়ে ৬টি বই পড়ানো হবে।

তিনি বলেন, নতুন পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীর শিখন অগ্রগতি নিয়ে চার মাস পরপর অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলবেন শিক্ষকরা। ওই সময়ই অভিভাবকদের জানাতে হবে শিক্ষার্থীর কোথায় কোথায় ঘাটতি রয়েছে। এই ঘাটতি পোষাতে দুর্বল শিক্ষার্থীদের নিয়ে ‘নিরাময়মূলক ক্লাস’ করবেন শিক্ষকরা। এজন্য শিক্ষকদের যা যা কৌশল নিতে হবে তাও শিক্ষক গাইডে এনসিটিবি থেকে বলে দেওয়া হবে।

জানা গেছে, ধারাবাহিক মূল্যায়নের চারটি ধাপ রয়েছে। এগুলো হচ্ছে- পরিকল্পনা প্রণয়ন, মূল্যায়ন পদ্ধতি, মূল্যায়ন পরিচালনা ও তথ্য সংরক্ষণ, সংগৃহীত তথ্য বিশ্লেষণ কার্যকর ফলাবর্তন দেওয়া। ধারাবাহিক মূল্যায়নে যে কৌশলগুলোর কথা বলা হয়েছে সেগুলো হচ্ছে- মৌখিক প্রশ্নোত্তর, লিখিত প্রশ্নোত্তর, পর্যবেক্ষণ, প্রকল্প/ব্যবহারিক, একক কাজ, জোড়ায় কাজ ও দলগত কাজ, সাক্ষাৎকার, স্বমূল্যায়ন, সতীর্থ/সহপাঠী কর্তৃক মূল্যায়ন।

এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ধারাবাহিক মূল্যায়ন শিখন-শেখানো কার্যাবলির অংশ। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীর শিখন নিশ্চিত করা হবে।