ক্যারিয়ার গড়তে

প্রফেশনাল ডিগ্রি সিএমএ

সিএমএ কোর্স খুলে দিতে পারে অবারিত দিগন্ত, ছবি : সংগ্রহ

ফরিদুল ইসলাম নির্জন

গতানুগতিক শিক্ষার বাইরে পেশাগত ডিগ্রির চাহিদা ব্যাপক। নিজেকে দক্ষ ও যোগ্য হিসেবে গড়তে প্রফেশনাল ডিগ্রির চাহিদা উত্তরোত্তর বাড়ছে। বর্তমান বিশ্বে তেমনই এক পরিচিত প্রফেশনাল ডিগ্রি সিএমএ, যার পুরো নাম কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্সি। এটি আন্তর্জাতিক মানের ডিগ্রি হিসেবে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেছে। দি ইনস্টিটিউট অব কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএমএবি) থেকে এ ডিগ্রি দেওয়া হয়। একটি প্রতিষ্ঠানের আর্থিক ও সার্বিক সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা করার লক্ষ্যে সংশ্নিষ্ট কর্মকর্তাদের জন্য সিএমএ কোর্সের বিকল্প নেই। বিশ্বস্বীকৃত এই পেশাগত ডিগ্রি অর্জন করে দেশ-বিদেশে খুব সহজে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা হিসেবে চাকরি করার সুযোগ থাকে।

বর্তমানে আইসিএমএবিতে ভর্তি হওয়ার জন্য তিনটি এন্ট্রি রুট রয়েছে- ইন্টারমিডিয়েট, গ্র্যাজুয়েশন ও প্রফেশনাল এন্ট্রি রুট। যে কোনো বিভাগ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করার পর আইসিএমবিতে ভর্তি হতে পারবেন। তবে সে ক্ষেত্রে কমপক্ষে জিপিএ ৮ থাকতে হবে। এ ছাড়া ‘এ’ এবং ‘ও’ লেভেল পড়ে যদি কেউ ভর্তি হতে চান, তাঁদেরও সুযোগ রয়েছে। সে ক্ষেত্রে তাঁর ‘ও’ লেভেলে ৩০ পয়েন্ট থাকতে হবে পাঁচটি বিষয়ে এবং ‘এ’ লেভেলে ১২ পয়েন্ট থাকতে হবে তিনটি বিষয়ে। পয়েন্টের হিসাবটা হবে গ্রেড ‘এ’ ১০ পয়েন্ট, গ্রেড ‘বি’ ৬ পয়েন্ট এবং গ্রেড ‘সি’ ৪ পয়েন্ট। এ রুটে ভর্তি হলে আপনাকে মোট ২০টি বিষয় অধ্যয়ন করতে হবে। গ্র্যাজুয়েশন পাস করার পর আপনি সরাসরি ভর্তি হতে পারবেন। সে ক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিক বিষয়ে গ্র্যাজুয়েটদের ৫০ শতাংশের ওপরে নম্বর থাকলে সর্বোচ্চ তিনটি বিষয়ে এক্সাম্পশন পাওয়ার সুযোগ থাকে। এ ক্ষেত্রে ১৭টি বিষয়ে পড়াশোনা করতে হবে।

অন্য কোনো প্রফেশনাল বডির সদস্য হলে সরাসরি ভর্তি হওয়া যায়। সে ক্ষেত্রে আইসিএমএবির শিক্ষা কমিটি প্রতিটি আবেদন আলাদা যাচাই করে এক্সাম্পশন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন।

ভর্তি প্রক্রিয়া ও সময়
আইসিএমবিতে দুটি পদ্ধতিতে ভর্তি হওয়া যায়- করেসপনডেন্স ও কোচিং পদ্ধতি। জানুয়ারি-জুন এবং জুলাই-ডিসেম্বর এ দুই সেশনে ভর্তি হওয়া যায়। জানুয়ারি-জুন সেশনে ভর্তির সময় থাকে মার্চের শেষ পর্যন্ত (কোচিংয়ে জানুয়ারিতেই শেষ হয়ে যায়, করেসপনডেন্সে সময় থাকে মার্চের শেষ পর্যন্ত)। অন্যদিকে জুলাই-ডিসেম্বরে ভর্তির সময় থাকে সেপ্টেম্বর মাসের শেষ পর্যন্ত (কোচিংয়ের ভর্তির সময় জুলাইতেই শেষ হয়ে যায়)। ভর্তির সময় বাড়ানো হলে তা আইসিএমএবির ওয়েবসাইটে নোটিশ করা হয়।

ভর্তির খরচ
সরাসরি আইসিএমএবির অফিস বা অনলাইনে আইসিএমবির ওয়েব থেকে আবেদনপত্র সংগ্রহ করা যায়। আবেদনপত্রের জন্য ৫০০ টাকা লাগবে। আবেদনপত্রের সঙ্গে দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি, দুই কপি স্ট্যাম্প সাইজের ছবি, একাডেমিক সব পরীক্ষার সার্টিফিকেট ও মার্কশিটের ফটোকপি লাগবে। ভর্তির সময় অবশ্যই মূল মার্কশিট ও সার্টিফিকেট উপস্থাপন করতে হবে। সিএমএ পাস করতে পাঁচটি লেভেল পাড়ি দিতে হয়। প্রথমে ২৮ হাজার ৫০০ টাকা দিয়ে ফাউন্ডেশন লেভেলে ভর্তি হতে হয়। পরে ইন্টারমিডিয়েট-১ লেভেলের জন্য ৮ হাজার, ইন্টারমিডিয়েট-২-এর জন্য ১০ হাজার, অ্যাডভান্স-১ লেভেলের জন্য ১৪ হাজার এবং অ্যাডভান্স লেভেল-২-এর জন্য ১৮ হাজার টাকা এককালীন পরিশোধ করতে হয়। এ ছাড়া ফাউন্ডেশন লেভেলের জন্য পরীক্ষা ফি প্রতি বিষয়ে ৫০০ এবং অন্য চারটি লেভেলের প্রতি বিষয়ে ৬২৫ টাকা করে জমা দিতে হয়।

ক্লাস ও পাঠদান
বর্তমান সময়কে ধারণ করে আইসিএমবি সরাসরি ও অনলাইনেও ক্লাসের সুযোগ করে দিয়েছে। কোচিং ও করেসপনডেন্স উভয় পদ্ধতিতে ছাত্রছাত্রীরা ক্লাস করার সুযোগ পাবেন। যদিও করেসপনডেন্স পদ্ধতিতে ক্লাস করার বাধ্যকতা নেই। ডে শিফটে বেলা ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা এবং নাইট শিফটে সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ক্লাস হয়। তবে কোচিং পদ্ধতিতে ক্লাসে উপস্থিতি আর করেসপনডেন্সে অ্যাসাইনমেন্ট জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক। ক্লাসে উপস্থিতি ৮০ শতাংশের কম হলে জরিমানা দিতে হবে। অন্যদিকে করেসপনডেন্স শিক্ষার্থীরা অ্যাসাইনমেন্ট জমা দিতে ব্যর্থ হলে জরিমানা দিতে হবে। শিক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান ইমতিয়াজ আলম এফসিএমএ বলেন, ‘আইসিএমবিএর শিক্ষা ব্যবস্থায় বিভিন্ন বিষয়ভিত্তিক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে। আইসিএমএবির নিজস্ব Learning management system

‘CMA Space’, Teaching-learning পদ্ধতিকে আন্তর্জাতিক মানের এবং শিক্ষা ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে। আইসিএমএবি বাংলাদেশের প্রফেশনাল অ্যাকাউন্টিং প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে প্রথম ফুল টাইম শিক্ষক নিয়োগ করেছে।’

ফলাফল ও মূল্যায়ন
যেহেতু প্রফেশনাল ডিগ্রি, সেহেতু ফলাফলের নির্দিষ্ট কোনো মার্ক নেই। শিক্ষার্থীদের খাতার মূল্যায়নের পাশাপাশি প্র্যাকটিক্যালি তিনি কতটা মূল্যায়িত হয়েছেন, তার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। কোর্সের মেয়াদ আড়াই বছর থাকলেও দক্ষ না হলে মূল্যায়িত হন না। এতে দীর্ঘ সময় লাগে। এ বিষয়ে পরীক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম, এফসিএমএ বলেন, “আমাদের এখানে অসংখ্য শিক্ষার্থীর রেকর্ড আছে, যাঁরা নির্দিষ্ট সময়ের আগেই পাস করে বের হয়েছেন এবং কর্মক্ষেত্রে ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন। সুতরাং একজন দক্ষ অ্যাকাউন্ট্যান্ট ও ব্যবস্থাপক হতে সর্বপ্রথম নিজেকে নিজেই মূল্যায়িত করতে হবে এবং সেভাবে নিজের অবস্থান তৈরি করতে হবে। ‘দীর্ঘ সময় লাগে’- এটা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলতে হবে। ‘আমিও পারব’- এমনটি নিজের ভেতর ধারণ করে এগোতে হবে। সে ক্ষেত্রে আইসিএমবির পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সব সহযোগিতা দেওয়ার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ শিক্ষা ব্যবস্থায় আইসিএমএবি প্রথম মিশ্র পদ্ধতিতে (একই সঙ্গে সরসারি ও অনলাইনে) ক্লাস নেওয়ার ব্যবস্থা করেছে।”

কর্মক্ষেত্র
সিএমএদের জন্য দেশে বা বিদেশে বিভিন্ন কর্মক্ষেত্রের সুযোগ রয়েছে। সামাজিকভাবে তাঁরা ব্যাপক মর্যাদা পেয়ে থাকেন। এ বিষয়ে আইসিএমবির প্রেসিডেন্ট মামুনুর রশিদ, এফসিএমএ বলেন, ‘আইসিএমবিতে পাসের পর সবাই নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে ভালো করছেন। এ ছাড়া চাকরির ব্যাপারে আমরা সর্বাত্মক সহযোগিতা করি। আইসিএমএবির জব সাইটে সিভি জমা নেওয়ার পদ্ধতি চালু করেছি। যোগ্যতা অনুযায়ী আরও ভালো জায়গায় চাকরি করার পরামর্শ দিয়ে থাকি। সিএমএ পাস করে বেকার থাকার সুযোগও কম। কারণ সময়ের চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত প্রফেশনালের এখনও অভাব রয়েছে। বলা যায়, আমাদের সদস্যদের সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধি, অর্থনৈতিকভাবে সচ্ছলতা এবং জীবন পাল্টে দিয়েছে সিএমএ প্রফেশনাল ডিগ্রি।’

পাঠাগার ও বিনোদন
একাডেমিক অ্যাফেয়ার্স ডিভিশনের ডিরেক্টর ও প্রফেসর ড. মো. জাকারিয়া মাসুদ বলেন,’আইসিএমবির নিজস্ব পাঠাগার সপ্তাহের সাত দিন খোলা থাকে। আইসিএমবির যে কোনো শিক্ষার্থী লাইব্রেরি কার্ড দিয়ে দেশি-বিদেশি সম্পাদিত বই এবং অন্যান্য রিসোর্স ব্যবহার করতে পারে’। সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত এ সুবিধা গ্রহণ করা যায়, তবে শুক্রবার খোলা থাকে বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। বিনোদনের জন্য রয়েছে স্টুডিও, ক্যারম, দাবাসহ নানা রকম খেলার ব্যবস্থা।

ক্যারিয়ার গড়তে

প্রফেশনাল ডিগ্রি সিএমএ

সিএমএ কোর্স খুলে দিতে পারে অবারিত দিগন্ত, ছবি : সংগ্রহ

ফরিদুল ইসলাম নির্জন

গতানুগতিক শিক্ষার বাইরে পেশাগত ডিগ্রির চাহিদা ব্যাপক। নিজেকে দক্ষ ও যোগ্য হিসেবে গড়তে প্রফেশনাল ডিগ্রির চাহিদা উত্তরোত্তর বাড়ছে। বর্তমান বিশ্বে তেমনই এক পরিচিত প্রফেশনাল ডিগ্রি সিএমএ, যার পুরো নাম কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্সি। এটি আন্তর্জাতিক মানের ডিগ্রি হিসেবে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেছে। দি ইনস্টিটিউট অব কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএমএবি) থেকে এ ডিগ্রি দেওয়া হয়। একটি প্রতিষ্ঠানের আর্থিক ও সার্বিক সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা করার লক্ষ্যে সংশ্নিষ্ট কর্মকর্তাদের জন্য সিএমএ কোর্সের বিকল্প নেই। বিশ্বস্বীকৃত এই পেশাগত ডিগ্রি অর্জন করে দেশ-বিদেশে খুব সহজে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা হিসেবে চাকরি করার সুযোগ থাকে।

বর্তমানে আইসিএমএবিতে ভর্তি হওয়ার জন্য তিনটি এন্ট্রি রুট রয়েছে- ইন্টারমিডিয়েট, গ্র্যাজুয়েশন ও প্রফেশনাল এন্ট্রি রুট। যে কোনো বিভাগ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করার পর আইসিএমবিতে ভর্তি হতে পারবেন। তবে সে ক্ষেত্রে কমপক্ষে জিপিএ ৮ থাকতে হবে। এ ছাড়া ‘এ’ এবং ‘ও’ লেভেল পড়ে যদি কেউ ভর্তি হতে চান, তাঁদেরও সুযোগ রয়েছে। সে ক্ষেত্রে তাঁর ‘ও’ লেভেলে ৩০ পয়েন্ট থাকতে হবে পাঁচটি বিষয়ে এবং ‘এ’ লেভেলে ১২ পয়েন্ট থাকতে হবে তিনটি বিষয়ে। পয়েন্টের হিসাবটা হবে গ্রেড ‘এ’ ১০ পয়েন্ট, গ্রেড ‘বি’ ৬ পয়েন্ট এবং গ্রেড ‘সি’ ৪ পয়েন্ট। এ রুটে ভর্তি হলে আপনাকে মোট ২০টি বিষয় অধ্যয়ন করতে হবে। গ্র্যাজুয়েশন পাস করার পর আপনি সরাসরি ভর্তি হতে পারবেন। সে ক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিক বিষয়ে গ্র্যাজুয়েটদের ৫০ শতাংশের ওপরে নম্বর থাকলে সর্বোচ্চ তিনটি বিষয়ে এক্সাম্পশন পাওয়ার সুযোগ থাকে। এ ক্ষেত্রে ১৭টি বিষয়ে পড়াশোনা করতে হবে।

অন্য কোনো প্রফেশনাল বডির সদস্য হলে সরাসরি ভর্তি হওয়া যায়। সে ক্ষেত্রে আইসিএমএবির শিক্ষা কমিটি প্রতিটি আবেদন আলাদা যাচাই করে এক্সাম্পশন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন।

ভর্তি প্রক্রিয়া ও সময়
আইসিএমবিতে দুটি পদ্ধতিতে ভর্তি হওয়া যায়- করেসপনডেন্স ও কোচিং পদ্ধতি। জানুয়ারি-জুন এবং জুলাই-ডিসেম্বর এ দুই সেশনে ভর্তি হওয়া যায়। জানুয়ারি-জুন সেশনে ভর্তির সময় থাকে মার্চের শেষ পর্যন্ত (কোচিংয়ে জানুয়ারিতেই শেষ হয়ে যায়, করেসপনডেন্সে সময় থাকে মার্চের শেষ পর্যন্ত)। অন্যদিকে জুলাই-ডিসেম্বরে ভর্তির সময় থাকে সেপ্টেম্বর মাসের শেষ পর্যন্ত (কোচিংয়ের ভর্তির সময় জুলাইতেই শেষ হয়ে যায়)। ভর্তির সময় বাড়ানো হলে তা আইসিএমএবির ওয়েবসাইটে নোটিশ করা হয়।

ভর্তির খরচ
সরাসরি আইসিএমএবির অফিস বা অনলাইনে আইসিএমবির ওয়েব থেকে আবেদনপত্র সংগ্রহ করা যায়। আবেদনপত্রের জন্য ৫০০ টাকা লাগবে। আবেদনপত্রের সঙ্গে দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি, দুই কপি স্ট্যাম্প সাইজের ছবি, একাডেমিক সব পরীক্ষার সার্টিফিকেট ও মার্কশিটের ফটোকপি লাগবে। ভর্তির সময় অবশ্যই মূল মার্কশিট ও সার্টিফিকেট উপস্থাপন করতে হবে। সিএমএ পাস করতে পাঁচটি লেভেল পাড়ি দিতে হয়। প্রথমে ২৮ হাজার ৫০০ টাকা দিয়ে ফাউন্ডেশন লেভেলে ভর্তি হতে হয়। পরে ইন্টারমিডিয়েট-১ লেভেলের জন্য ৮ হাজার, ইন্টারমিডিয়েট-২-এর জন্য ১০ হাজার, অ্যাডভান্স-১ লেভেলের জন্য ১৪ হাজার এবং অ্যাডভান্স লেভেল-২-এর জন্য ১৮ হাজার টাকা এককালীন পরিশোধ করতে হয়। এ ছাড়া ফাউন্ডেশন লেভেলের জন্য পরীক্ষা ফি প্রতি বিষয়ে ৫০০ এবং অন্য চারটি লেভেলের প্রতি বিষয়ে ৬২৫ টাকা করে জমা দিতে হয়।

ক্লাস ও পাঠদান
বর্তমান সময়কে ধারণ করে আইসিএমবি সরাসরি ও অনলাইনেও ক্লাসের সুযোগ করে দিয়েছে। কোচিং ও করেসপনডেন্স উভয় পদ্ধতিতে ছাত্রছাত্রীরা ক্লাস করার সুযোগ পাবেন। যদিও করেসপনডেন্স পদ্ধতিতে ক্লাস করার বাধ্যকতা নেই। ডে শিফটে বেলা ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা এবং নাইট শিফটে সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ক্লাস হয়। তবে কোচিং পদ্ধতিতে ক্লাসে উপস্থিতি আর করেসপনডেন্সে অ্যাসাইনমেন্ট জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক। ক্লাসে উপস্থিতি ৮০ শতাংশের কম হলে জরিমানা দিতে হবে। অন্যদিকে করেসপনডেন্স শিক্ষার্থীরা অ্যাসাইনমেন্ট জমা দিতে ব্যর্থ হলে জরিমানা দিতে হবে। শিক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান ইমতিয়াজ আলম এফসিএমএ বলেন, ‘আইসিএমবিএর শিক্ষা ব্যবস্থায় বিভিন্ন বিষয়ভিত্তিক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে। আইসিএমএবির নিজস্ব Learning management system

‘CMA Space’, Teaching-learning পদ্ধতিকে আন্তর্জাতিক মানের এবং শিক্ষা ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে। আইসিএমএবি বাংলাদেশের প্রফেশনাল অ্যাকাউন্টিং প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে প্রথম ফুল টাইম শিক্ষক নিয়োগ করেছে।’

ফলাফল ও মূল্যায়ন
যেহেতু প্রফেশনাল ডিগ্রি, সেহেতু ফলাফলের নির্দিষ্ট কোনো মার্ক নেই। শিক্ষার্থীদের খাতার মূল্যায়নের পাশাপাশি প্র্যাকটিক্যালি তিনি কতটা মূল্যায়িত হয়েছেন, তার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। কোর্সের মেয়াদ আড়াই বছর থাকলেও দক্ষ না হলে মূল্যায়িত হন না। এতে দীর্ঘ সময় লাগে। এ বিষয়ে পরীক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম, এফসিএমএ বলেন, “আমাদের এখানে অসংখ্য শিক্ষার্থীর রেকর্ড আছে, যাঁরা নির্দিষ্ট সময়ের আগেই পাস করে বের হয়েছেন এবং কর্মক্ষেত্রে ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন। সুতরাং একজন দক্ষ অ্যাকাউন্ট্যান্ট ও ব্যবস্থাপক হতে সর্বপ্রথম নিজেকে নিজেই মূল্যায়িত করতে হবে এবং সেভাবে নিজের অবস্থান তৈরি করতে হবে। ‘দীর্ঘ সময় লাগে’- এটা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলতে হবে। ‘আমিও পারব’- এমনটি নিজের ভেতর ধারণ করে এগোতে হবে। সে ক্ষেত্রে আইসিএমবির পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সব সহযোগিতা দেওয়ার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ শিক্ষা ব্যবস্থায় আইসিএমএবি প্রথম মিশ্র পদ্ধতিতে (একই সঙ্গে সরসারি ও অনলাইনে) ক্লাস নেওয়ার ব্যবস্থা করেছে।”

কর্মক্ষেত্র
সিএমএদের জন্য দেশে বা বিদেশে বিভিন্ন কর্মক্ষেত্রের সুযোগ রয়েছে। সামাজিকভাবে তাঁরা ব্যাপক মর্যাদা পেয়ে থাকেন। এ বিষয়ে আইসিএমবির প্রেসিডেন্ট মামুনুর রশিদ, এফসিএমএ বলেন, ‘আইসিএমবিতে পাসের পর সবাই নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে ভালো করছেন। এ ছাড়া চাকরির ব্যাপারে আমরা সর্বাত্মক সহযোগিতা করি। আইসিএমএবির জব সাইটে সিভি জমা নেওয়ার পদ্ধতি চালু করেছি। যোগ্যতা অনুযায়ী আরও ভালো জায়গায় চাকরি করার পরামর্শ দিয়ে থাকি। সিএমএ পাস করে বেকার থাকার সুযোগও কম। কারণ সময়ের চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত প্রফেশনালের এখনও অভাব রয়েছে। বলা যায়, আমাদের সদস্যদের সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধি, অর্থনৈতিকভাবে সচ্ছলতা এবং জীবন পাল্টে দিয়েছে সিএমএ প্রফেশনাল ডিগ্রি।’

পাঠাগার ও বিনোদন
একাডেমিক অ্যাফেয়ার্স ডিভিশনের ডিরেক্টর ও প্রফেসর ড. মো. জাকারিয়া মাসুদ বলেন,’আইসিএমবির নিজস্ব পাঠাগার সপ্তাহের সাত দিন খোলা থাকে। আইসিএমবির যে কোনো শিক্ষার্থী লাইব্রেরি কার্ড দিয়ে দেশি-বিদেশি সম্পাদিত বই এবং অন্যান্য রিসোর্স ব্যবহার করতে পারে’। সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত এ সুবিধা গ্রহণ করা যায়, তবে শুক্রবার খোলা থাকে বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। বিনোদনের জন্য রয়েছে স্টুডিও, ক্যারম, দাবাসহ নানা রকম খেলার ব্যবস্থা।