প্রাথমিকের পাঠ্যবই ছাপা শুরু হয়নি এখনো

নিজামুল হক
প্রাথমিকের বই ছাপায় ধীরগতি।

মাধ্যমিক স্তরের বই ছাপার কাজ পুরোদমে চললেও প্রাথমিকের বই ছাপার কাজ এখনো শুরু হয়নি। তাই প্রাথমিক বইয়ের ক্ষেত্রে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে যথাসময়ে বই পৌঁছানো যাবে না বলে জানিয়েছেন প্রেস মালিকরা।

এদিকে বইয়ের সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে আজ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বৈঠক করবেন বই ছাপার সঙ্গে সম্পৃক্ত এনসিটিবিসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা। ইতিমধ্যে প্রাথমিকের বই ছাপার ক্ষেত্রে সৃষ্ট সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে বেশকিছু দাবি এনসিটিবির কাছে তুলে ধরেছেন প্রেস মালিকরা।

ব্রাইট প্রিন্টার্সের স্বত্বাধিকারী এস এম মহসিন বলেন, গতবারের চেয়ে এবার প্রাথমিকের পাঠ্যবইয়ের টেন্ডারসহ সব কাজ দেরিতে শুরু হয়েছে। ২২ অক্টোবর এনসিটিবির সঙ্গে চুক্তি করেছেন প্রেস মালিকরা। ফলে এখনো বই ছাপার কাজ শুরু হয়নি। এছাড়া কাগজের সংকট তো আছেই।

Untitled

ছবি: সংগৃহীত

তিনি জানান, গত বছর এনসিটিবির কাজ করেছে এমন অনেক প্রতিষ্ঠান এখনো বিল পায়নি। ফলে তারা ব্যাংক ঋণ শোধ করতে পারেনি। ফলে নতুন করে কাজ করার অর্থ তাদের কাছে নেই। কয়েক জন প্রেস মালিক এনসিটিবির চেয়ারম্যানের সঙ্গে দেখা করে তাদের সমস্যার কথা তুলে ধরেছেন। তারা বলেছেন, প্রেস মালিকরা যখন টেন্ডার করে তখন এনসিটিবির  স্পেসিফিকেশন অনুসারে কাগজের মূল্য ছিল টনপ্রতি ৮০ হাজার থেকে ৮৫ হাজার টাকা। কিন্তু বর্তমানে উক্ত কাগজের মূল্য টনপ্রতি ১ লাখ ২০ হাজার থেকে ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা। ফলে প্রেস মালিকদের পক্ষে কোনোভাবেই শর্ত অনুসারে কাগজ কিনে বই ছাপানো সম্ভব নয়।

অন্যদিকে দরপত্রের শর্ত অনুযায়ী প্রাথমিক স্তরে ৮০ জিএসএম (গ্রাম-স্কয়ার-মিটার) কাগজে ৮৫ শতাংশ উজ্জ্বলতা থাকতে হয়। বইয়ের যে মলাট তার কাগজের মান হবে ২৩০ জিএসএম। প্রেস মালিকরা জানিয়েছেন, কাগজের ক্ষেত্রে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর যেসব শর্ত  দিয়েছে সে অনুযায়ী বাজারে কাগজ পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে বই ছাপার কাজ শুরু করা যাচ্ছে না। শর্তের ক্ষেত্রে কিছুটা ছাড় চেয়েছেন প্রেস মালিকরা। তারা বলেছেন, বিষয়টি বিবেচনায় এনে ৮৫ শতাংশ উজ্জ্বলতার পরিবর্তে ৮০-৮২ শতাংশ করা উচিত।

 প্রেস মালিকরা এনসিটিবিকে জানিয়েছেন, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মাহফুজা খানম নামে এক কর্মকর্তা রয়েছেন। তিনি প্রেস মালিকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে। তাকে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে বদলির দাবি জানিয়েছেন তারা। তারা বলেন, ব্যাংক ঋণ নিয়ে প্রেস মালিকরা মুদ্রণ কাজ সম্পাদন করে থাকেন। কাজ শেষ হওয়ার ১০ দিনের মধ্যে ৮০ শতাংশ বিল এবং ফেব্রুয়ারির মধ্যে বাকি ২০ শতাংশ বিল দিতে হবে। বিল পরিশোধের দীর্ঘসূত্রতার কারণে অনেককে ব্যাংক ঋণ নিতে নানা ভোগান্তিতে পড়তে হয়। ফলে বই ছাপায় তারা আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। ৩৩ কোটি বই ছাপা হচ্ছে। এর মধ্যে কিছু ভুলত্রুটি হতে পারে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ত্রুটিপূর্ণ বই নতুন করে দিতে না পারলে দ্বিগুণ জরিমানা ধার্য করা হয়। এতে আপত্তি প্রেস মালিকদের। এক্ষেত্রে সমপরিমাণ জরিমানা ধার্য করার দাবি প্রেস মালিকদের।

এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ফরহাদুল ইসলাম গতকাল ইত্তেফাককে বলেন, চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, প্রেস মালিকরা ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় পাবেন। তাই জানুয়ারির শুরুতেই শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেওয়া যাবে। যেসব প্রতিষ্ঠান এখনো বই ছাপার জন্য চুক্তি করেনি, আশা করছি তারাও করবে। এছাড়া কেউ টেন্ডারে বই ছাপার কাজ পেয়েও না করলে একাধিক বিকল্প আছে, সে আলোকেই কাজ করা হবে। তিনি বলেন, প্রেস মালিকরা যেভাবে সংকটের কথা বলেন ঠিক ততটা সংকট নেই। ২০২৩ শিক্ষাবর্ষে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে ৩৩ কোটির বেশি বই ছাপানো হবে। তার মধ্যে প্রাথমিক পর্যায়ে সাড়ে ৯ কোটি আর মাধ্যমিক পর্যায়ে সাড়ে ২৩ কোটি।

প্রাথমিকের পাঠ্যবই ছাপা শুরু হয়নি এখনো

নিজামুল হক
প্রাথমিকের বই ছাপায় ধীরগতি।

মাধ্যমিক স্তরের বই ছাপার কাজ পুরোদমে চললেও প্রাথমিকের বই ছাপার কাজ এখনো শুরু হয়নি। তাই প্রাথমিক বইয়ের ক্ষেত্রে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে যথাসময়ে বই পৌঁছানো যাবে না বলে জানিয়েছেন প্রেস মালিকরা।

এদিকে বইয়ের সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে আজ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বৈঠক করবেন বই ছাপার সঙ্গে সম্পৃক্ত এনসিটিবিসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা। ইতিমধ্যে প্রাথমিকের বই ছাপার ক্ষেত্রে সৃষ্ট সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে বেশকিছু দাবি এনসিটিবির কাছে তুলে ধরেছেন প্রেস মালিকরা।

ব্রাইট প্রিন্টার্সের স্বত্বাধিকারী এস এম মহসিন বলেন, গতবারের চেয়ে এবার প্রাথমিকের পাঠ্যবইয়ের টেন্ডারসহ সব কাজ দেরিতে শুরু হয়েছে। ২২ অক্টোবর এনসিটিবির সঙ্গে চুক্তি করেছেন প্রেস মালিকরা। ফলে এখনো বই ছাপার কাজ শুরু হয়নি। এছাড়া কাগজের সংকট তো আছেই।

Untitled

ছবি: সংগৃহীত

তিনি জানান, গত বছর এনসিটিবির কাজ করেছে এমন অনেক প্রতিষ্ঠান এখনো বিল পায়নি। ফলে তারা ব্যাংক ঋণ শোধ করতে পারেনি। ফলে নতুন করে কাজ করার অর্থ তাদের কাছে নেই। কয়েক জন প্রেস মালিক এনসিটিবির চেয়ারম্যানের সঙ্গে দেখা করে তাদের সমস্যার কথা তুলে ধরেছেন। তারা বলেছেন, প্রেস মালিকরা যখন টেন্ডার করে তখন এনসিটিবির  স্পেসিফিকেশন অনুসারে কাগজের মূল্য ছিল টনপ্রতি ৮০ হাজার থেকে ৮৫ হাজার টাকা। কিন্তু বর্তমানে উক্ত কাগজের মূল্য টনপ্রতি ১ লাখ ২০ হাজার থেকে ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা। ফলে প্রেস মালিকদের পক্ষে কোনোভাবেই শর্ত অনুসারে কাগজ কিনে বই ছাপানো সম্ভব নয়।

অন্যদিকে দরপত্রের শর্ত অনুযায়ী প্রাথমিক স্তরে ৮০ জিএসএম (গ্রাম-স্কয়ার-মিটার) কাগজে ৮৫ শতাংশ উজ্জ্বলতা থাকতে হয়। বইয়ের যে মলাট তার কাগজের মান হবে ২৩০ জিএসএম। প্রেস মালিকরা জানিয়েছেন, কাগজের ক্ষেত্রে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর যেসব শর্ত  দিয়েছে সে অনুযায়ী বাজারে কাগজ পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে বই ছাপার কাজ শুরু করা যাচ্ছে না। শর্তের ক্ষেত্রে কিছুটা ছাড় চেয়েছেন প্রেস মালিকরা। তারা বলেছেন, বিষয়টি বিবেচনায় এনে ৮৫ শতাংশ উজ্জ্বলতার পরিবর্তে ৮০-৮২ শতাংশ করা উচিত।

 প্রেস মালিকরা এনসিটিবিকে জানিয়েছেন, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মাহফুজা খানম নামে এক কর্মকর্তা রয়েছেন। তিনি প্রেস মালিকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে। তাকে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে বদলির দাবি জানিয়েছেন তারা। তারা বলেন, ব্যাংক ঋণ নিয়ে প্রেস মালিকরা মুদ্রণ কাজ সম্পাদন করে থাকেন। কাজ শেষ হওয়ার ১০ দিনের মধ্যে ৮০ শতাংশ বিল এবং ফেব্রুয়ারির মধ্যে বাকি ২০ শতাংশ বিল দিতে হবে। বিল পরিশোধের দীর্ঘসূত্রতার কারণে অনেককে ব্যাংক ঋণ নিতে নানা ভোগান্তিতে পড়তে হয়। ফলে বই ছাপায় তারা আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। ৩৩ কোটি বই ছাপা হচ্ছে। এর মধ্যে কিছু ভুলত্রুটি হতে পারে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ত্রুটিপূর্ণ বই নতুন করে দিতে না পারলে দ্বিগুণ জরিমানা ধার্য করা হয়। এতে আপত্তি প্রেস মালিকদের। এক্ষেত্রে সমপরিমাণ জরিমানা ধার্য করার দাবি প্রেস মালিকদের।

এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ফরহাদুল ইসলাম গতকাল ইত্তেফাককে বলেন, চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, প্রেস মালিকরা ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় পাবেন। তাই জানুয়ারির শুরুতেই শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেওয়া যাবে। যেসব প্রতিষ্ঠান এখনো বই ছাপার জন্য চুক্তি করেনি, আশা করছি তারাও করবে। এছাড়া কেউ টেন্ডারে বই ছাপার কাজ পেয়েও না করলে একাধিক বিকল্প আছে, সে আলোকেই কাজ করা হবে। তিনি বলেন, প্রেস মালিকরা যেভাবে সংকটের কথা বলেন ঠিক ততটা সংকট নেই। ২০২৩ শিক্ষাবর্ষে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে ৩৩ কোটির বেশি বই ছাপানো হবে। তার মধ্যে প্রাথমিক পর্যায়ে সাড়ে ৯ কোটি আর মাধ্যমিক পর্যায়ে সাড়ে ২৩ কোটি।