বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে অগ্রসর শিক্ষাঙ্গন

মোহাম্মদ তানভীর হোসাইন
লাল ইটের সাম্রাজ্য আর আকাশি-বেগুনি রঙের বাস

লাল ইটের সাম্রাজ্য আর আকাশি-বেগুনি রঙের বাস! স্বপ্নরা বারবার হাতছানি দিয়ে ডাকে। সুবিশাল মেইনগেট যেন স্বপ্ন পূরণের দরজা, স্বপ্নবাজদের বিশ্বাস। সবুজের সমারোহ, ভোরের শিশিরে ভেজা ঘাস যেন জীবনানন্দের কবিতার মতো। লাল ইটের দালানগুলো যেন জ্ঞানের সুবিশাল পর্বতমালা। দেশ বিদেশের শিক্ষার্থীদের পদচারণায়, শিক্ষা ও গবেষণায় উর্বর হয়ে উঠেছে হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

গত ১১ সেপ্টেম্বর উত্তরবঙ্গের শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ২৪তম বছরে পদার্পণ করেছে। হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় দিনাজপুর জেলার বাঁশেরহাট নামক স্থানে অবস্থিত। বাংলাদেশের ২য় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং উত্তর বাংলার সেরা বিদ্যাপীঠ। বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি বিদেশি শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে এই বিদ্যাপীঠে।
তেভাগা আন্দোলনের নেতা দিনাজপুরের সন্তান হাজী মোহাম্মদ দানেশের নামে এর নামকরণ করা হয়। হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু ১৯৭৬ সালে এগ্রিকালচারাল এক্সটেনশন ট্রেনিং ইনিস্টিটিউট (অঊঞও) হিসেবে যা কৃষিতে ডিপ্লোমা ডিগ্রি প্রদান করত।

১৯৮৮ সালের ১১ নবেম্বর এটিকে স্নাতক পর্যায়ে কৃষি কলেজে উন্নীত করা হয়। এটি তখন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ এর অধিভুক্ত কলেজ ছিল। ১১ সেপ্টেম্বর ১৯৯৯ এই কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করার ঘোষণা দেয়া হয়। ২০০০ সালে কলেজটিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত করার লক্ষ্যে ‘বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন প্রকল্প’ গ্রহণ করা হয়।

৮ জুলাই ২০০১ হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন পাস করা হয়। ২০০২ সালের ৮ এপ্রিল মহামান্য রাষ্ট্রপতি প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হয়। ১৬ এপ্রিল আনুষ্ঠানিক শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়। বিশিষ্ট মৃত্তিকা বিজ্ঞানী প্রফেসর ড. মোঃ মোশাররফ হোসাইন মিঞা এ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মাধ্যম ইংরেজী। কোর্স-ক্রেডিট-সেমিস্টার পদ্ধতিতে পরিচালিত।

বর্তমানে ৯টি অনুষদের অধীনে ২৩টি বিষয়ে সনদ প্রদান করা হয়। স্নাতক পর্যায়ে ৮টি অনুষদে ২২টি বিষয় এবং স্নাতকোত্তর পর্যায়ে একটি অনুষদে ২৮টি বিষয় রয়েছে। বর্তমানে ক্যাম্পাসের আয়তন ১৩৫ একর। ক্যাম্পাস এর পাশ দিয়ে চলে গেছে ঢাকা-দিনাজপুর মহাসড়ক। দিনাজপুর শহর হতে ক্যাম্পাসের দূরত্ব মাত্র ১০ কি.মি.। বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে সবুজ গাছপালার সমারোহ। আছে লাল-সাদা ইটের দৃষ্টিনন্দন সুবিশাল ভবন, আছে শহীদদের স্মরণে শহীদ মিনার, জিমন্যাশিয়াম, টিএসসি ও ক্যান্টিন।
অবকাঠামোর মধ্যে রয়েছে বৃহৎ কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, ৫টি অ্যাকাডেমিক ভবন, একটি প্রশাসনিক ভবন, ৫টি ছাত্র হোস্টেল (একটি বিদেশি শিক্ষার্থীদের), ৪টি ছাত্রী হোস্টেল, আধুনিক সাজসজ্জা বিশিষ্ট ১০০ আসনের একটি ভিআইপি সেমিনার কক্ষ, ৬০০ ও ২৫০ আসনবিশিষ্ট আরও দুটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত অডিটরিয়াম।

এছাড়াও একটি বিশ্ববিদ্যালয়কে পূর্ণাঙ্গ করতে রয়েছে শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ক্লাব, ২টি মসজিদ, ১৩৬টি আবাসিক ইউনিট/ভবন, ১টি শিশুপার্ক, পোস্ট অফিস, রূপালী ব্যাংক শাখা, মেঘনা ব্যাংক শাখা, শ্রমিক ব্যারাক, সার্বক্ষণিক ইন্টারনেট সুবিধা, নিজস্ব বৈদ্যুতিক লাইন, বৃহৎ খেলার মাঠ, ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপ এবং ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থা।

গবেষণা ও প্রশিক্ষণের সমন্বয় ও সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য রয়েছে ইনস্টিটিউট অব রিসার্চ এন্ড ট্রেনিং (আই.আর.টি.)। আছে একটি ভিআইপি গেস্ট হাউস, হাবিপ্রবি স্কুল, ডাক্তার ও অ্যাম্বুলেন্সসহ ১২ শয্যার একটি মেডিক্যাল সেন্টারও। গবেষণালব্ধ থিসিস, রিপোর্ট, জার্নালের পাশাপাশি রয়েছে ২৫ হাজার বইয়ের সমৃদ্ধ লাইব্রেরি।

দুষ্প্রাপ্য গাছ-গাছালির সংগ্রহ নিয়ে গড়ে উঠেছে একটি সমৃদ্ধ বোটানিক্যাল গার্ডেন এবং বিভিন্ন বিভাগের তত্ত্বাবধানে গবেষণার জন্য জামপর্স্নাজম সেন্টার। সুবিশাল ১০ তলা ভবনের নির্মান কাজও প্রায় শেষের দিকে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমানে উপাচার্য হিসেবে দায়িত্বে আছেন অধ্যাপক ড.এম কামরুজ্জামান। তিনি ২০২১ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বে আসেন। দায়িত্ব আসার পর বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যাপক পরিবর্তন এনেছেন। শিক্ষার প্রসার ও গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন তিনি।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে অগ্রসর শিক্ষাঙ্গন

মোহাম্মদ তানভীর হোসাইন
লাল ইটের সাম্রাজ্য আর আকাশি-বেগুনি রঙের বাস

লাল ইটের সাম্রাজ্য আর আকাশি-বেগুনি রঙের বাস! স্বপ্নরা বারবার হাতছানি দিয়ে ডাকে। সুবিশাল মেইনগেট যেন স্বপ্ন পূরণের দরজা, স্বপ্নবাজদের বিশ্বাস। সবুজের সমারোহ, ভোরের শিশিরে ভেজা ঘাস যেন জীবনানন্দের কবিতার মতো। লাল ইটের দালানগুলো যেন জ্ঞানের সুবিশাল পর্বতমালা। দেশ বিদেশের শিক্ষার্থীদের পদচারণায়, শিক্ষা ও গবেষণায় উর্বর হয়ে উঠেছে হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

গত ১১ সেপ্টেম্বর উত্তরবঙ্গের শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ২৪তম বছরে পদার্পণ করেছে। হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় দিনাজপুর জেলার বাঁশেরহাট নামক স্থানে অবস্থিত। বাংলাদেশের ২য় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং উত্তর বাংলার সেরা বিদ্যাপীঠ। বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি বিদেশি শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে এই বিদ্যাপীঠে।
তেভাগা আন্দোলনের নেতা দিনাজপুরের সন্তান হাজী মোহাম্মদ দানেশের নামে এর নামকরণ করা হয়। হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু ১৯৭৬ সালে এগ্রিকালচারাল এক্সটেনশন ট্রেনিং ইনিস্টিটিউট (অঊঞও) হিসেবে যা কৃষিতে ডিপ্লোমা ডিগ্রি প্রদান করত।

১৯৮৮ সালের ১১ নবেম্বর এটিকে স্নাতক পর্যায়ে কৃষি কলেজে উন্নীত করা হয়। এটি তখন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ এর অধিভুক্ত কলেজ ছিল। ১১ সেপ্টেম্বর ১৯৯৯ এই কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করার ঘোষণা দেয়া হয়। ২০০০ সালে কলেজটিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত করার লক্ষ্যে ‘বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন প্রকল্প’ গ্রহণ করা হয়।

৮ জুলাই ২০০১ হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন পাস করা হয়। ২০০২ সালের ৮ এপ্রিল মহামান্য রাষ্ট্রপতি প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হয়। ১৬ এপ্রিল আনুষ্ঠানিক শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়। বিশিষ্ট মৃত্তিকা বিজ্ঞানী প্রফেসর ড. মোঃ মোশাররফ হোসাইন মিঞা এ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মাধ্যম ইংরেজী। কোর্স-ক্রেডিট-সেমিস্টার পদ্ধতিতে পরিচালিত।

বর্তমানে ৯টি অনুষদের অধীনে ২৩টি বিষয়ে সনদ প্রদান করা হয়। স্নাতক পর্যায়ে ৮টি অনুষদে ২২টি বিষয় এবং স্নাতকোত্তর পর্যায়ে একটি অনুষদে ২৮টি বিষয় রয়েছে। বর্তমানে ক্যাম্পাসের আয়তন ১৩৫ একর। ক্যাম্পাস এর পাশ দিয়ে চলে গেছে ঢাকা-দিনাজপুর মহাসড়ক। দিনাজপুর শহর হতে ক্যাম্পাসের দূরত্ব মাত্র ১০ কি.মি.। বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে সবুজ গাছপালার সমারোহ। আছে লাল-সাদা ইটের দৃষ্টিনন্দন সুবিশাল ভবন, আছে শহীদদের স্মরণে শহীদ মিনার, জিমন্যাশিয়াম, টিএসসি ও ক্যান্টিন।
অবকাঠামোর মধ্যে রয়েছে বৃহৎ কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, ৫টি অ্যাকাডেমিক ভবন, একটি প্রশাসনিক ভবন, ৫টি ছাত্র হোস্টেল (একটি বিদেশি শিক্ষার্থীদের), ৪টি ছাত্রী হোস্টেল, আধুনিক সাজসজ্জা বিশিষ্ট ১০০ আসনের একটি ভিআইপি সেমিনার কক্ষ, ৬০০ ও ২৫০ আসনবিশিষ্ট আরও দুটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত অডিটরিয়াম।

এছাড়াও একটি বিশ্ববিদ্যালয়কে পূর্ণাঙ্গ করতে রয়েছে শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ক্লাব, ২টি মসজিদ, ১৩৬টি আবাসিক ইউনিট/ভবন, ১টি শিশুপার্ক, পোস্ট অফিস, রূপালী ব্যাংক শাখা, মেঘনা ব্যাংক শাখা, শ্রমিক ব্যারাক, সার্বক্ষণিক ইন্টারনেট সুবিধা, নিজস্ব বৈদ্যুতিক লাইন, বৃহৎ খেলার মাঠ, ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপ এবং ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থা।

গবেষণা ও প্রশিক্ষণের সমন্বয় ও সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য রয়েছে ইনস্টিটিউট অব রিসার্চ এন্ড ট্রেনিং (আই.আর.টি.)। আছে একটি ভিআইপি গেস্ট হাউস, হাবিপ্রবি স্কুল, ডাক্তার ও অ্যাম্বুলেন্সসহ ১২ শয্যার একটি মেডিক্যাল সেন্টারও। গবেষণালব্ধ থিসিস, রিপোর্ট, জার্নালের পাশাপাশি রয়েছে ২৫ হাজার বইয়ের সমৃদ্ধ লাইব্রেরি।

দুষ্প্রাপ্য গাছ-গাছালির সংগ্রহ নিয়ে গড়ে উঠেছে একটি সমৃদ্ধ বোটানিক্যাল গার্ডেন এবং বিভিন্ন বিভাগের তত্ত্বাবধানে গবেষণার জন্য জামপর্স্নাজম সেন্টার। সুবিশাল ১০ তলা ভবনের নির্মান কাজও প্রায় শেষের দিকে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমানে উপাচার্য হিসেবে দায়িত্বে আছেন অধ্যাপক ড.এম কামরুজ্জামান। তিনি ২০২১ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বে আসেন। দায়িত্ব আসার পর বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যাপক পরিবর্তন এনেছেন। শিক্ষার প্রসার ও গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন তিনি।