বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌন হয়রানি: প্রতিকার কোথায়?

নারীরা যেন দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক। এই দেশের আনাচে কানাচে যে যেভাবে পারে নারীদের নিজের মনমতো চালাতে চায়। অধীনস্ত করতে চায়। এ এক আশ্চর্য সাইকোলজিক্যাল ব্যাটেলে নারীরা আছে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটি উচ্চশিক্ষার জায়গায় যখন ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে নারীদের যৌন হয়রানির করার মতো সংবাদ সামনে আসে তখন চিন্তার জগৎটাই উল্টেপাল্টে যায়।

আশা ইউনিভার্সিটির বাথরুমে কৌশলে ক্যামেরা স্থাপন করে নারী শিক্ষার্থীদের নগ্ন ভিডিও করে তাদের ব্ল্যাকমেইল করা হচ্ছে বলে একটি সংবাদে আমার মাথা ঘুরে উঠলো। এমনটা কীভাবে সম্ভব? জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আশরাফুল হক চৌধুরী ওরফে তানভীর তার একজন এমএলএসএসকে দিয়ে মেয়েদের ওয়াশরুমে গোপনে মোবাইল ক্যামেরা ফিট করে রাখতো। পরে সেইসব নগ্ন ভিডিও কম্পিউটারে এডিট করে মেয়েদের তানভীরের সাথে ঘনিষ্ঠ হওয়ার অফার দেওয়া হতো। রাজি না হলে তাদের সেই ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখানো হতো।বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আশরাফুল হক চৌধুরী ওরফে তানভীর তার একজন এমএলএসএসকে দিয়ে মেয়েদের ওয়াশরুমে গোপনে মোবাইল ক্যামেরা ফিট করে রাখতো। পরে সেইসব নগ্ন ভিডিও কম্পিউটারে এডিট করে মেয়েদের তানভীরের সাথে ঘনিষ্ঠ হওয়ার অফার দেওয়া হতো। রাজি না হলে তাদের সেই ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখানো হতো

কে এই তানভীর? এই তানভীরের পিতা সফিকুল হক চৌধুরী এই আশা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা। জানা গেছে, তার মৃত্যুর আগ পর্যন্ত এই বিশ্ববিদ্যালয়টি সুনামের সাথেই কাজ করে যাচ্ছিল। কিন্তু বাবার মৃত্যুর পর সব দায়িত্ব গ্রহণ করে এই তানভীর। সেই থেকেই সে এমন লাম্পট্য কার্যক্রম করে যাচ্ছে। কী আশ্চর্য তাই না? সংবাদ বলছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় অনেকেই এর সবটাই জানে অথচ কেউ মুখ খুলতে রাজি নয়। এমনকি শিক্ষা জীবন নষ্ট হয়ে যাওয়ার হুমকির কাছে হার মেনে বসে আছে অনেক ভুক্তভোগী নারী শিক্ষার্থীও।

সংবাদটি পড়ার পর কিছুক্ষণ ঝিম মেরে বসে ছিলাম। কোথায় আছি আমরা? শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হচ্ছে সবচেয়ে নিরাপদ স্থান যেখানে গেলে ছাত্ররা নিশ্চিন্তে চলতে পারে, কথা বলতে পারে, শিখতে পারে, আলোচনা, তর্ক-বিতর্ক করতে পারে। শিক্ষকদের বলা হয় পিতার সমান। অথচ তানভীরের মতো এমন শিক্ষকও সমাজে আছে এটা কল্পনাতেও আনা যায় না। তানভীর সরাসরি শিক্ষক না হলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন রেজিস্ট্রার শিক্ষকের চেয়েও কম কিছু নয়। কেবল পিতার রেখে যাওয়া সম্পদের ওপর বসে এমন একজন বিকৃত মানুষ স্বেচ্ছাচারিতা করে যাবে আর কেউ কিছু বলতে পারবে না। এ যেন মগের মুল্লুকের কথাই মনে করিয়ে দেয়।

একজন ছাত্রী মামলা করেছে বলে জানা গেছে কিন্তু পরে চার্জশিটে মূল আসামি তানভীরের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। তানভীর ও তার আসল চ্যালা কর্মচারী আমিনুল ইসলামকে একই অভিযোগে গ্রেফতারও করা হয়েছিল কিন্তু টাকার জোরেই হয়তো তানভীর ছাড়া পেয়ে গেছে।

আমি জানি না আশা ইউনিভার্সিটিতে কোনো নীতিমালা আছে কি না। যৌন হয়রানির মতো ঘটনা ঘটলে শিক্ষার্থীরা কোথায় যাবে, কার কাছে বিচার চাইবে বা শাস্তিই বা কী হবে এমন কোনো কিছুই হয়তো নেই। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কর্মক্ষেত্রে যৌন নিপীড়ন রোধে যৌন নিপীড়নবিরোধী নীতিমালা প্রণয়নে ২০০৯ সালে মহামান্য হাইকোর্ট একটি নির্দেশনা দিয়েছিলেন যেখানে পরিষ্কার বলা হয়েছিল প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে নারী ও পুরুষ নির্বিশেষে প্রতিটি মানুষের অধিকার সংরক্ষণে যৌন নিপীড়নবিরোধী একটি নীতিমালা করতে হবে এবং এর বাস্তবায়নে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।

সেদিন আমরা বাংলাদেশের সব প্রগতিমনারা খুব খুশি হয়েছিলাম যে অন্তত কিছু একটা তো এলো। এবার বোধহয় একটি নিপীড়নমুক্ত বাংলাদেশের কথা ভাবতেই পারি। সে গুড়ে বালি। বাংলাদেশে আইন হয়। আইনের সংখ্যাও নেহায়েত কম নয়। কিন্তু সমস্যা হয়ে যায় সেসব আইনের বাস্তবায়ন ও অভ্যস্ততায়। হাতেগোনা কয়েকটি সংস্থা ছাড়া আর কোনো প্রতিষ্ঠান হাইকোর্টের সেই রায় সম্পর্কে কতটা সচেতন সে বিষয়টিও সন্দেহমুক্ত নয়। আজকের প্রজন্মকে হয়তো জিজ্ঞেস করলেও অবাক চাহনি দিয়ে জানতে চাইবে নীতিমালা আবার কী?

আমি নিশ্চিত আশা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই রেজিস্ট্রারও জীবনে কোনোদিন এই নীতিমালা সংক্রান্ত কোন কিছুর নাম শুনেইনি। না হয় একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের মালিক হয়ে কেমন করে একজন লোক তারই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের সাথে এমন নিম্ন আচরণ করতে পারে? তার কি একবারের জন্যও মাথায় আসেনি যে সে এটা অন্যায় করছে এবং এর জন্যও শাস্তি হতে পারে?

আসলে ক্ষমতা। পুরুষতান্ত্রিক এই সমাজে ক্ষমতাই হচ্ছে সব কিছুর চালক। সেখানে নারীর সম্মান, অবস্থান বা স্বতন্ত্রতা এমনকি একজন নারী কারও সাথে যৌন মিলনের বিষয়েও নিজের মতো করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার স্বাধীনতা রাখতে পারে এমন শিক্ষা যেন সমাজ থেকে দিন দিন নাই হয়ে যাচ্ছে।

আশা ইউনিভার্সিটির ঘটনা হয়তো সামনে এলো কিন্তু এমন আরও ঘটনা যে আমাদের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে ঘটছে না এমন কথা হলফ করেই বলা যায় না। কিন্তু এসবের প্রতিকার কোন পথে? হাইকোর্ট তো নির্দেশই দিয়েছিল কিন্তু সেটি তো কেউ মানেনি। এই যে কেউ মানলো না তার ফলাফলই হচ্ছে এই ঘটনা। হাইকোর্টের রায়কে বাস্তবায়নের দায়িত্ব কার ওপর বর্তায়? বাস্তবায়ন হলো কি হলো না কার মনিটরিং করার কথা ছিল?

বিশ্ববিদ্যালয় বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যদি এমন যৌন হয়রানির মতো ঘটনা ঘটে তাহলে এর দায় কোথায় কোথায় যাবে? ইউজিসির কি কিছুই করার ছিল না? কেন তানভীরের মতো একজন অপরাধীকে মামলার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হলো? এভাবে করে অপরাধকেই তো আশ্রয় প্রশ্রয় দেওয়া হচ্ছে।

জানি প্রশ্ন করা সহজ কিন্তু উত্তর দেওয়া অনেক কঠিন। তবে উত্তরগুলো পাওয়ার রাস্তা বের করতেই হবে আমাদের। এভাবে চলতে দেওয়া যায় না। আজ আশা ইউনিভার্সিটির মালিক যদি পার পেয়ে যায় তবে দুদিন পর আরও অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষমতাধররা এমন কাণ্ড করার সাহস পেয়ে যাবে। তাই অবিলম্বে আশা ইউনিভার্সিটির ঘটনাকে আইনের আওতায় এনে নারী নির্যাতন/যৌন হয়রানি বন্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ গ্রহণ করা জরুরি।

লেখক: অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট, কলামিস্ট।

বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌন হয়রানি: প্রতিকার কোথায়?

নারীরা যেন দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক। এই দেশের আনাচে কানাচে যে যেভাবে পারে নারীদের নিজের মনমতো চালাতে চায়। অধীনস্ত করতে চায়। এ এক আশ্চর্য সাইকোলজিক্যাল ব্যাটেলে নারীরা আছে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটি উচ্চশিক্ষার জায়গায় যখন ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে নারীদের যৌন হয়রানির করার মতো সংবাদ সামনে আসে তখন চিন্তার জগৎটাই উল্টেপাল্টে যায়।

আশা ইউনিভার্সিটির বাথরুমে কৌশলে ক্যামেরা স্থাপন করে নারী শিক্ষার্থীদের নগ্ন ভিডিও করে তাদের ব্ল্যাকমেইল করা হচ্ছে বলে একটি সংবাদে আমার মাথা ঘুরে উঠলো। এমনটা কীভাবে সম্ভব? জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আশরাফুল হক চৌধুরী ওরফে তানভীর তার একজন এমএলএসএসকে দিয়ে মেয়েদের ওয়াশরুমে গোপনে মোবাইল ক্যামেরা ফিট করে রাখতো। পরে সেইসব নগ্ন ভিডিও কম্পিউটারে এডিট করে মেয়েদের তানভীরের সাথে ঘনিষ্ঠ হওয়ার অফার দেওয়া হতো। রাজি না হলে তাদের সেই ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখানো হতো।বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আশরাফুল হক চৌধুরী ওরফে তানভীর তার একজন এমএলএসএসকে দিয়ে মেয়েদের ওয়াশরুমে গোপনে মোবাইল ক্যামেরা ফিট করে রাখতো। পরে সেইসব নগ্ন ভিডিও কম্পিউটারে এডিট করে মেয়েদের তানভীরের সাথে ঘনিষ্ঠ হওয়ার অফার দেওয়া হতো। রাজি না হলে তাদের সেই ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখানো হতো

কে এই তানভীর? এই তানভীরের পিতা সফিকুল হক চৌধুরী এই আশা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা। জানা গেছে, তার মৃত্যুর আগ পর্যন্ত এই বিশ্ববিদ্যালয়টি সুনামের সাথেই কাজ করে যাচ্ছিল। কিন্তু বাবার মৃত্যুর পর সব দায়িত্ব গ্রহণ করে এই তানভীর। সেই থেকেই সে এমন লাম্পট্য কার্যক্রম করে যাচ্ছে। কী আশ্চর্য তাই না? সংবাদ বলছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় অনেকেই এর সবটাই জানে অথচ কেউ মুখ খুলতে রাজি নয়। এমনকি শিক্ষা জীবন নষ্ট হয়ে যাওয়ার হুমকির কাছে হার মেনে বসে আছে অনেক ভুক্তভোগী নারী শিক্ষার্থীও।

সংবাদটি পড়ার পর কিছুক্ষণ ঝিম মেরে বসে ছিলাম। কোথায় আছি আমরা? শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হচ্ছে সবচেয়ে নিরাপদ স্থান যেখানে গেলে ছাত্ররা নিশ্চিন্তে চলতে পারে, কথা বলতে পারে, শিখতে পারে, আলোচনা, তর্ক-বিতর্ক করতে পারে। শিক্ষকদের বলা হয় পিতার সমান। অথচ তানভীরের মতো এমন শিক্ষকও সমাজে আছে এটা কল্পনাতেও আনা যায় না। তানভীর সরাসরি শিক্ষক না হলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন রেজিস্ট্রার শিক্ষকের চেয়েও কম কিছু নয়। কেবল পিতার রেখে যাওয়া সম্পদের ওপর বসে এমন একজন বিকৃত মানুষ স্বেচ্ছাচারিতা করে যাবে আর কেউ কিছু বলতে পারবে না। এ যেন মগের মুল্লুকের কথাই মনে করিয়ে দেয়।

একজন ছাত্রী মামলা করেছে বলে জানা গেছে কিন্তু পরে চার্জশিটে মূল আসামি তানভীরের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। তানভীর ও তার আসল চ্যালা কর্মচারী আমিনুল ইসলামকে একই অভিযোগে গ্রেফতারও করা হয়েছিল কিন্তু টাকার জোরেই হয়তো তানভীর ছাড়া পেয়ে গেছে।

আমি জানি না আশা ইউনিভার্সিটিতে কোনো নীতিমালা আছে কি না। যৌন হয়রানির মতো ঘটনা ঘটলে শিক্ষার্থীরা কোথায় যাবে, কার কাছে বিচার চাইবে বা শাস্তিই বা কী হবে এমন কোনো কিছুই হয়তো নেই। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কর্মক্ষেত্রে যৌন নিপীড়ন রোধে যৌন নিপীড়নবিরোধী নীতিমালা প্রণয়নে ২০০৯ সালে মহামান্য হাইকোর্ট একটি নির্দেশনা দিয়েছিলেন যেখানে পরিষ্কার বলা হয়েছিল প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে নারী ও পুরুষ নির্বিশেষে প্রতিটি মানুষের অধিকার সংরক্ষণে যৌন নিপীড়নবিরোধী একটি নীতিমালা করতে হবে এবং এর বাস্তবায়নে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।

সেদিন আমরা বাংলাদেশের সব প্রগতিমনারা খুব খুশি হয়েছিলাম যে অন্তত কিছু একটা তো এলো। এবার বোধহয় একটি নিপীড়নমুক্ত বাংলাদেশের কথা ভাবতেই পারি। সে গুড়ে বালি। বাংলাদেশে আইন হয়। আইনের সংখ্যাও নেহায়েত কম নয়। কিন্তু সমস্যা হয়ে যায় সেসব আইনের বাস্তবায়ন ও অভ্যস্ততায়। হাতেগোনা কয়েকটি সংস্থা ছাড়া আর কোনো প্রতিষ্ঠান হাইকোর্টের সেই রায় সম্পর্কে কতটা সচেতন সে বিষয়টিও সন্দেহমুক্ত নয়। আজকের প্রজন্মকে হয়তো জিজ্ঞেস করলেও অবাক চাহনি দিয়ে জানতে চাইবে নীতিমালা আবার কী?

আমি নিশ্চিত আশা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই রেজিস্ট্রারও জীবনে কোনোদিন এই নীতিমালা সংক্রান্ত কোন কিছুর নাম শুনেইনি। না হয় একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের মালিক হয়ে কেমন করে একজন লোক তারই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের সাথে এমন নিম্ন আচরণ করতে পারে? তার কি একবারের জন্যও মাথায় আসেনি যে সে এটা অন্যায় করছে এবং এর জন্যও শাস্তি হতে পারে?

আসলে ক্ষমতা। পুরুষতান্ত্রিক এই সমাজে ক্ষমতাই হচ্ছে সব কিছুর চালক। সেখানে নারীর সম্মান, অবস্থান বা স্বতন্ত্রতা এমনকি একজন নারী কারও সাথে যৌন মিলনের বিষয়েও নিজের মতো করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার স্বাধীনতা রাখতে পারে এমন শিক্ষা যেন সমাজ থেকে দিন দিন নাই হয়ে যাচ্ছে।

আশা ইউনিভার্সিটির ঘটনা হয়তো সামনে এলো কিন্তু এমন আরও ঘটনা যে আমাদের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে ঘটছে না এমন কথা হলফ করেই বলা যায় না। কিন্তু এসবের প্রতিকার কোন পথে? হাইকোর্ট তো নির্দেশই দিয়েছিল কিন্তু সেটি তো কেউ মানেনি। এই যে কেউ মানলো না তার ফলাফলই হচ্ছে এই ঘটনা। হাইকোর্টের রায়কে বাস্তবায়নের দায়িত্ব কার ওপর বর্তায়? বাস্তবায়ন হলো কি হলো না কার মনিটরিং করার কথা ছিল?

বিশ্ববিদ্যালয় বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যদি এমন যৌন হয়রানির মতো ঘটনা ঘটে তাহলে এর দায় কোথায় কোথায় যাবে? ইউজিসির কি কিছুই করার ছিল না? কেন তানভীরের মতো একজন অপরাধীকে মামলার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হলো? এভাবে করে অপরাধকেই তো আশ্রয় প্রশ্রয় দেওয়া হচ্ছে।

জানি প্রশ্ন করা সহজ কিন্তু উত্তর দেওয়া অনেক কঠিন। তবে উত্তরগুলো পাওয়ার রাস্তা বের করতেই হবে আমাদের। এভাবে চলতে দেওয়া যায় না। আজ আশা ইউনিভার্সিটির মালিক যদি পার পেয়ে যায় তবে দুদিন পর আরও অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষমতাধররা এমন কাণ্ড করার সাহস পেয়ে যাবে। তাই অবিলম্বে আশা ইউনিভার্সিটির ঘটনাকে আইনের আওতায় এনে নারী নির্যাতন/যৌন হয়রানি বন্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ গ্রহণ করা জরুরি।

লেখক: অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট, কলামিস্ট।