মনোবল ভাঙতে মাদক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ : ফারদিনের বাবা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি

সোমবার বুয়েটের শহীদ মিনারে আয়োজিত মানববন্ধনে ফারদিন নুর পরশের বাবা কাজী নুর উদ্দিন।ছবি : কালবেলা

বুয়েট শিক্ষার্থী ফারদিন নুর পরশ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বিচারের দাবি জানানো আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মনোবল ভেঙে দিতে ফারদিনের বিরুদ্ধে মাদক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ আনা হয়েছে বলে দাবি করেছেন তার বাবা কাজী নুর উদ্দিন।

আজ সোমবার বেলা ১১টার দিকে বুয়েটের শহীদ মিনারে সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের বিচারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আয়োজিত মানববন্ধনে এ দাবি করেন তিনি।

ফারদিনের বাবা বলেন, ‘মাদক তো দূরের কথা, আমার ছেলে সিগারেটের ধোঁয়াও সহ্য করতে পারত না। আমার তিন ছেলের কেউ সিগারেট খায় না। আমার ছেলে সম্পর্কে বলা হচ্ছে- সে নাকি ফেনসিডিল সেবন করত। এটি কোনোভাবেই বিশ্বাসযোগ্য নয়। তার হত্যার তদন্ত ও বিচার দাবিতে যারা মানববন্ধন ও আন্দোলন করছে, তাদের মনোবল ভেঙে দিতে আমার ছেলের নামে মাদক সেবনের সংশ্লিষ্টতা আনা হয়েছে।’

ফারদিনের সঙ্গে তার বন্ধু বুশরা ও আয়শার সম্পর্কের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমি বা আমার পরিবারের কেউ তাদের চিনি না। বুশরার বিরুদ্ধে অভিযোগের কারণ, আমার ছেলে ঘর থেকে তার মাকে যা বলে বের হত, তার থেকে এক পয়েন্ট ভিন্ন কিছু করত না। পরদিন তার পরীক্ষা ছিল। সে বলেছিল, হলে গিয়ে গ্রুপ স্টাডি করবে। কিন্তু পরে আমরা জানতে পারি, সে নাকি রাত ১০টা পর্যন্ত বাইরে ওই মেয়ের সঙ্গে ছিল। তাই আমাদের সন্দেহ ছিল যে রাত ১০টা পর্যন্ত ওই মেয়ের সঙ্গে সে কী করে। সেজন্যই আমরা তার কথা বলেছি।’

তদন্ত প্রসঙ্গে ফারদিনের বাবা বলেন, ‘আমার ছেলে নিখোঁজ হওয়ার পর আমরা থানায় জিডি করি। এরপর থেকে লাশ পাওয়া পর্যন্ত আমরা তদন্তের কোনো অগ্রগতি সম্পর্কে জানি না। এর মধ্যে কী হয়েছে, তার কিছুই আমাদের জানানো হয়নি। জিডির পরিপ্রেক্ষিতে যে তদন্ত, তাতে আমরা সন্তষ্ট নই।’

মানববন্ধনে লিখিত বক্তব্যে বুয়েটের শিক্ষার্থীরা বলেন, ফারদিনের মর্মান্তিক মৃত্যুতে আমরা শোকস্তব্ধ ও ক্ষুব্ধ। এরইমধ্যে ফারদিনের মরদেহ উদ্ধারের সাতদিন পার হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত প্রকৃত হত্যাকারী চিহ্নিত এবং হত্যার কারণ পরিপূর্ণভাবে উদঘাটন হয়নি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তদন্তের ওপর আমরা আস্থাশীল। আমরা বিশ্বাস করি, তারা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে এ হত্যাকাণ্ডের তদন্ত চালিয়ে যাবে এবং দ্রুততম সময়ে প্রকৃত অপরাধীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসবে।

গণমাধ্যমে ফারদিন সম্পর্কে আপত্তিকর ও ভিত্তিহীন তথ্য প্রচার করা হচ্ছে দাবি করে শিক্ষার্থীরা বলেন, সত্য প্রকাশে গণমাধ্যম সবসময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। দুঃখজনকভাবে কয়েকদিন ধরে কিছু গণমাধ্যমে ফারদিনের বিষয়ে কিছু আপত্তিকর ও ভিত্তিহীন তথ্য প্রচার করা হয়েছে, যা আমাদের হতাশ করেছে। বুয়েট সাংবাদিক সমিতির মাধ্যমে এরইমধ্যে আমরা প্রতিবাদ জানিয়েছি এবং সত্য তুলে ধরেছি। আমরা আশা করব, ভবিষ্যতে গণমাধ্যমগুলো সংবাদ প্রকাশে সতর্ক হবে, পাশাপাশি ফারদিন হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচনে আমাদের পাশে থেকে সাহায্য করবে।’

এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন ও বিচার না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা ফারদিনের পরিবারের পাশে থাকবেন বলে জানিয়েছেন। তারা বলেন, ফারদিন আমাদের সহপাঠী, আমাদের ভাই। হত্যাকারীদের শনাক্ত করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে গ্রেপ্তার এবং তাদের বিচারের আওতায় আনার জন্যে দাবি জানাচ্ছি। হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত এবং প্রকৃত হত্যাকারীদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা বুয়েট শিক্ষার্থীরা ফারদিনের পরিবারের পাশে আছি এবং থাকব। আমরা আশা করি, ভবিষ্যতে ফারদিনের মতো আর কোনো মেধাবী প্রাণ অকালে ঝরে পড়বে না।’

গত ৪ নভেম্বর নিখোঁজ হন ফারদিন নুর পরশ। এরপর ৭ নভেম্বর শীতলক্ষ্যা নদীতে তার মরদেহ পাওয়া যায়। তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারী চিকিৎসক।

মনোবল ভাঙতে মাদক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ : ফারদিনের বাবা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি

সোমবার বুয়েটের শহীদ মিনারে আয়োজিত মানববন্ধনে ফারদিন নুর পরশের বাবা কাজী নুর উদ্দিন।ছবি : কালবেলা

বুয়েট শিক্ষার্থী ফারদিন নুর পরশ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বিচারের দাবি জানানো আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মনোবল ভেঙে দিতে ফারদিনের বিরুদ্ধে মাদক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ আনা হয়েছে বলে দাবি করেছেন তার বাবা কাজী নুর উদ্দিন।

আজ সোমবার বেলা ১১টার দিকে বুয়েটের শহীদ মিনারে সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের বিচারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আয়োজিত মানববন্ধনে এ দাবি করেন তিনি।

ফারদিনের বাবা বলেন, ‘মাদক তো দূরের কথা, আমার ছেলে সিগারেটের ধোঁয়াও সহ্য করতে পারত না। আমার তিন ছেলের কেউ সিগারেট খায় না। আমার ছেলে সম্পর্কে বলা হচ্ছে- সে নাকি ফেনসিডিল সেবন করত। এটি কোনোভাবেই বিশ্বাসযোগ্য নয়। তার হত্যার তদন্ত ও বিচার দাবিতে যারা মানববন্ধন ও আন্দোলন করছে, তাদের মনোবল ভেঙে দিতে আমার ছেলের নামে মাদক সেবনের সংশ্লিষ্টতা আনা হয়েছে।’

ফারদিনের সঙ্গে তার বন্ধু বুশরা ও আয়শার সম্পর্কের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমি বা আমার পরিবারের কেউ তাদের চিনি না। বুশরার বিরুদ্ধে অভিযোগের কারণ, আমার ছেলে ঘর থেকে তার মাকে যা বলে বের হত, তার থেকে এক পয়েন্ট ভিন্ন কিছু করত না। পরদিন তার পরীক্ষা ছিল। সে বলেছিল, হলে গিয়ে গ্রুপ স্টাডি করবে। কিন্তু পরে আমরা জানতে পারি, সে নাকি রাত ১০টা পর্যন্ত বাইরে ওই মেয়ের সঙ্গে ছিল। তাই আমাদের সন্দেহ ছিল যে রাত ১০টা পর্যন্ত ওই মেয়ের সঙ্গে সে কী করে। সেজন্যই আমরা তার কথা বলেছি।’

তদন্ত প্রসঙ্গে ফারদিনের বাবা বলেন, ‘আমার ছেলে নিখোঁজ হওয়ার পর আমরা থানায় জিডি করি। এরপর থেকে লাশ পাওয়া পর্যন্ত আমরা তদন্তের কোনো অগ্রগতি সম্পর্কে জানি না। এর মধ্যে কী হয়েছে, তার কিছুই আমাদের জানানো হয়নি। জিডির পরিপ্রেক্ষিতে যে তদন্ত, তাতে আমরা সন্তষ্ট নই।’

মানববন্ধনে লিখিত বক্তব্যে বুয়েটের শিক্ষার্থীরা বলেন, ফারদিনের মর্মান্তিক মৃত্যুতে আমরা শোকস্তব্ধ ও ক্ষুব্ধ। এরইমধ্যে ফারদিনের মরদেহ উদ্ধারের সাতদিন পার হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত প্রকৃত হত্যাকারী চিহ্নিত এবং হত্যার কারণ পরিপূর্ণভাবে উদঘাটন হয়নি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তদন্তের ওপর আমরা আস্থাশীল। আমরা বিশ্বাস করি, তারা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে এ হত্যাকাণ্ডের তদন্ত চালিয়ে যাবে এবং দ্রুততম সময়ে প্রকৃত অপরাধীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসবে।

গণমাধ্যমে ফারদিন সম্পর্কে আপত্তিকর ও ভিত্তিহীন তথ্য প্রচার করা হচ্ছে দাবি করে শিক্ষার্থীরা বলেন, সত্য প্রকাশে গণমাধ্যম সবসময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। দুঃখজনকভাবে কয়েকদিন ধরে কিছু গণমাধ্যমে ফারদিনের বিষয়ে কিছু আপত্তিকর ও ভিত্তিহীন তথ্য প্রচার করা হয়েছে, যা আমাদের হতাশ করেছে। বুয়েট সাংবাদিক সমিতির মাধ্যমে এরইমধ্যে আমরা প্রতিবাদ জানিয়েছি এবং সত্য তুলে ধরেছি। আমরা আশা করব, ভবিষ্যতে গণমাধ্যমগুলো সংবাদ প্রকাশে সতর্ক হবে, পাশাপাশি ফারদিন হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচনে আমাদের পাশে থেকে সাহায্য করবে।’

এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন ও বিচার না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা ফারদিনের পরিবারের পাশে থাকবেন বলে জানিয়েছেন। তারা বলেন, ফারদিন আমাদের সহপাঠী, আমাদের ভাই। হত্যাকারীদের শনাক্ত করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে গ্রেপ্তার এবং তাদের বিচারের আওতায় আনার জন্যে দাবি জানাচ্ছি। হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত এবং প্রকৃত হত্যাকারীদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা বুয়েট শিক্ষার্থীরা ফারদিনের পরিবারের পাশে আছি এবং থাকব। আমরা আশা করি, ভবিষ্যতে ফারদিনের মতো আর কোনো মেধাবী প্রাণ অকালে ঝরে পড়বে না।’

গত ৪ নভেম্বর নিখোঁজ হন ফারদিন নুর পরশ। এরপর ৭ নভেম্বর শীতলক্ষ্যা নদীতে তার মরদেহ পাওয়া যায়। তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারী চিকিৎসক।