মাধ্যমিকেই শিক্ষাজীবন শেষ সাড়ে ৫ লাখের
আবদুল্লাহ আল জোবায়ের

পুরোনো ছবি
চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে ১৯ লাখ ৯৪ হাজার ১৩৭ জন। এর মধ্যে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থী ১৭ লাখ ৪৩ হাজার ৬১৯। অকৃতকার্য হয়েছে ২ লাখ ৫০ হাজার ৫১৮ জন। উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রথম ধাপের জন্য নির্ধারিত সময়ে কলেজে ভর্তির আবেদন করেছে ১৩ লাখ ৪৬ হাজার ১৪৬। গত কয়েক বছরের ধারা অনুযায়ী দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপে আরও কিছু আবেদন জমা হলেও কমপক্ষে ৩ লাখ শিক্ষার্থী উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তি হবে না বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এর সঙ্গে অকৃতকার্যদের যোগ করলে মাধ্যমিক পর্যায়েই শেষ হয়ে যাচ্ছে প্রায় সাড়ে ৫ লাখ শিক্ষার্থীর পড়াশোনা।
বিশ্লেষণে দেখা গেছে, আর্থিক অনটনের কারণে শিক্ষার ব্যয় নির্বাহে অক্ষমতাসহ বিভিন্ন কারণে প্রতিবছর এসএসসি পাস করা শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রায় ২০ শতাংশ পড়াশোনার ইতি টানে। ২০২০ সালের ফল ও একাদশে ভর্তি বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, সে বছর এসএসসিতে মোট পরীক্ষার্থী ছিল ২০ লাখ ৪০ হাজার ২৮। এর মধ্যে পাস করেছে ১৬ লাখ ৯০ হাজার ৫২৩ জন। একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছিল ১৪ লাখ ৮৭ হাজার ২৩৯ জন। ভর্তি হয়নি ২ লাখ ৩ হাজার ২৮৪ জন। অর্থাৎ, ১২ শতাংশ শিক্ষার্থী এসএসসি পাসের পর পরবর্তী শ্রেণিতে ভর্তি হয়নি। এই শিক্ষার্থীরা এখন কোথায়, সে তথ্য নেই কারও কাছে।

ধারণা করা হচ্ছে, তারা লেখাপড়া ছেড়ে কর্মজীবনে প্রবেশ করেছে। শুধু তাই নয়, ১৪ লাখ শিক্ষার্থী উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তি হলেও, এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে ১২ লাখ ৩ হাজার ৪০৭ জন। অর্থাৎ, ২ লাখ ৮৩ হাজার ৮৩২ শিক্ষার্থীর শিক্ষা জীবন শেষ হচ্ছে এইচএসসি পর্যায়েই। শতকরা এর হার ১৯ শতাংশ।
এদিকে এসএসসি পাস করা শিক্ষার্থীদের পাঁচ ভাগের এক ভাগ ভর্তির আবেদন না করায় বেশিরভাগ কলেজই আসন পূরণ করতে পারছে না। উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার জন্য দেশে বর্তমানে স্কুল ও কলেজে কলেজ শাখা আছে এমন প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ১ হাজার ৩৮৮টি। এর মধ্যে সরকারি কলেজ মাত্র ৬৪টি। উচ্চ মাধ্যমিক কলেজ আছে ১ হাজার ৩৯০টি। যার মধ্যে সরকারি শুধু ৫০টি। এ ছাড়া ডিগ্রি কলেজেও উচ্চ মাধ্যমিক পড়ার ব্যবস্থা রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মোট আসন সংখ্যা ২২ লাখের বেশি, যা এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ মোট শিক্ষার্থীর চেয়ে ৫ লাখ বেশি। এর সঙ্গে পড়াশোনার পাঠ চুকিয়ে ফেলা ৪ লাখ যোগ হয়ে ৯ লাখে দাঁড়াচ্ছে খালি থাকা আসনের সংখ্যা।
শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অনেক মা-বাবা আগে থেকেই ঠিক করে রাখেন এসএসসি পরীক্ষার পর আর সন্তানদের পড়াশোনা করাবেন না। মেয়েদের ক্ষেত্রে এ প্রবণতা বেশি। দারিদ্র্যর কারণে শিক্ষার্থীদের একটি অংশ এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ার পরই আয় করা যায় এমন কাজে যুক্ত হন। অনেক পরিবার এসএসসি পাসের পর ছেলেদের বিদেশে পাঠাতে আগ্রহী হয়ে ওঠে। আর মেয়েদের এসএসসি পাসের পর বিয়ে দেওয়া হয়।
অন্যদিকে এসএসসি উত্তীর্ণ সব শিক্ষার্থীই সাধারণ শিক্ষায় ভর্তি হয় না। এদের একাংশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের আওতায় ৪ বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে ভর্তি হয়। অনেকে বৃত্তিমূলক বা ভোকেশনাল কোর্সে যুক্ত হয়। এ ধরনের স্বল্পমেয়াদি কোর্স শেষে নিজ উদ্যোগে কর্মসংস্থানের সুযোগ থাকে।

মাধ্যমিকেই শিক্ষাজীবন শেষ সাড়ে ৫ লাখের
আবদুল্লাহ আল জোবায়ের

পুরোনো ছবি
চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে ১৯ লাখ ৯৪ হাজার ১৩৭ জন। এর মধ্যে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থী ১৭ লাখ ৪৩ হাজার ৬১৯। অকৃতকার্য হয়েছে ২ লাখ ৫০ হাজার ৫১৮ জন। উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রথম ধাপের জন্য নির্ধারিত সময়ে কলেজে ভর্তির আবেদন করেছে ১৩ লাখ ৪৬ হাজার ১৪৬। গত কয়েক বছরের ধারা অনুযায়ী দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপে আরও কিছু আবেদন জমা হলেও কমপক্ষে ৩ লাখ শিক্ষার্থী উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তি হবে না বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এর সঙ্গে অকৃতকার্যদের যোগ করলে মাধ্যমিক পর্যায়েই শেষ হয়ে যাচ্ছে প্রায় সাড়ে ৫ লাখ শিক্ষার্থীর পড়াশোনা।
বিশ্লেষণে দেখা গেছে, আর্থিক অনটনের কারণে শিক্ষার ব্যয় নির্বাহে অক্ষমতাসহ বিভিন্ন কারণে প্রতিবছর এসএসসি পাস করা শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রায় ২০ শতাংশ পড়াশোনার ইতি টানে। ২০২০ সালের ফল ও একাদশে ভর্তি বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, সে বছর এসএসসিতে মোট পরীক্ষার্থী ছিল ২০ লাখ ৪০ হাজার ২৮। এর মধ্যে পাস করেছে ১৬ লাখ ৯০ হাজার ৫২৩ জন। একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছিল ১৪ লাখ ৮৭ হাজার ২৩৯ জন। ভর্তি হয়নি ২ লাখ ৩ হাজার ২৮৪ জন। অর্থাৎ, ১২ শতাংশ শিক্ষার্থী এসএসসি পাসের পর পরবর্তী শ্রেণিতে ভর্তি হয়নি। এই শিক্ষার্থীরা এখন কোথায়, সে তথ্য নেই কারও কাছে।

ধারণা করা হচ্ছে, তারা লেখাপড়া ছেড়ে কর্মজীবনে প্রবেশ করেছে। শুধু তাই নয়, ১৪ লাখ শিক্ষার্থী উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তি হলেও, এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে ১২ লাখ ৩ হাজার ৪০৭ জন। অর্থাৎ, ২ লাখ ৮৩ হাজার ৮৩২ শিক্ষার্থীর শিক্ষা জীবন শেষ হচ্ছে এইচএসসি পর্যায়েই। শতকরা এর হার ১৯ শতাংশ।
এদিকে এসএসসি পাস করা শিক্ষার্থীদের পাঁচ ভাগের এক ভাগ ভর্তির আবেদন না করায় বেশিরভাগ কলেজই আসন পূরণ করতে পারছে না। উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার জন্য দেশে বর্তমানে স্কুল ও কলেজে কলেজ শাখা আছে এমন প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ১ হাজার ৩৮৮টি। এর মধ্যে সরকারি কলেজ মাত্র ৬৪টি। উচ্চ মাধ্যমিক কলেজ আছে ১ হাজার ৩৯০টি। যার মধ্যে সরকারি শুধু ৫০টি। এ ছাড়া ডিগ্রি কলেজেও উচ্চ মাধ্যমিক পড়ার ব্যবস্থা রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মোট আসন সংখ্যা ২২ লাখের বেশি, যা এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ মোট শিক্ষার্থীর চেয়ে ৫ লাখ বেশি। এর সঙ্গে পড়াশোনার পাঠ চুকিয়ে ফেলা ৪ লাখ যোগ হয়ে ৯ লাখে দাঁড়াচ্ছে খালি থাকা আসনের সংখ্যা।
শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অনেক মা-বাবা আগে থেকেই ঠিক করে রাখেন এসএসসি পরীক্ষার পর আর সন্তানদের পড়াশোনা করাবেন না। মেয়েদের ক্ষেত্রে এ প্রবণতা বেশি। দারিদ্র্যর কারণে শিক্ষার্থীদের একটি অংশ এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ার পরই আয় করা যায় এমন কাজে যুক্ত হন। অনেক পরিবার এসএসসি পাসের পর ছেলেদের বিদেশে পাঠাতে আগ্রহী হয়ে ওঠে। আর মেয়েদের এসএসসি পাসের পর বিয়ে দেওয়া হয়।
অন্যদিকে এসএসসি উত্তীর্ণ সব শিক্ষার্থীই সাধারণ শিক্ষায় ভর্তি হয় না। এদের একাংশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের আওতায় ৪ বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে ভর্তি হয়। অনেকে বৃত্তিমূলক বা ভোকেশনাল কোর্সে যুক্ত হয়। এ ধরনের স্বল্পমেয়াদি কোর্স শেষে নিজ উদ্যোগে কর্মসংস্থানের সুযোগ থাকে।