যোগাযোগ দক্ষতা বাড়ানোর কৌশল

বর্তমান সময়ের জটিল ও দ্রুত বিকাশমান সামাজিক ব্যবস্থায় যোগাযোগের দক্ষতা বৃদ্ধি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। যোগাযোগ দক্ষতা বৃদ্ধি এখন সব বয়সী ও সব পেশার মানুষের জন্যই বেশ গুরুত্বপূর্ণ। তবে এটিকে কঠিন কোনো বিষয় ভাবার কারণ নেই। আমাদের স্বাভাবিক জীবনপদ্ধতির মধ্যেই আমরা কিছু নিয়ম অনুশীলনের মাধ্যমে বাড়িয়ে তুলতে পারি অপরের সঙ্গে সুন্দরভাবে কথা বলার ক্ষমতা, অন্যদের সঙ্গে নিজের ভাব আদান-প্রদানের সক্ষমতা।

এখানে ছয়টি খুব গুরুত্বপূর্ণ কমিউনিকেশন স্কিল নিয়ে আলোচনা করা হলো, যা আমাদের পেশাগত ও ব্যক্তিগত—সব জীবনেই ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

মনোযোগ দিয়ে শোনা
মনোযোগী শ্রোতা হতে পারা কারও সঙ্গে যোগাযোগের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি দিক। শুধু কারও কথা মন দিয়ে শোনাই নয়, বক্তা আসলে কী বলতে চাইছেন, সেটা উপলব্ধি করতে পারাটাও মনোযোগী শ্রোতার বৈশিষ্ট্য। কথোপকথনের গভীরে গিয়ে মূল বিষয়টা তুলে আনা যেকোনো যোগাযোগ স্থাপনের ক্ষেত্রেই খুব জরুরি। বক্তা যখন অনুভব করবেন যে সামনে বসা মানুষটি তাঁর কথা মন দিয়ে শুনছেন এবং বুঝতে চেষ্টা করছেন, তখন আপনা-আপনিই একটি সুন্দর সম্পর্কের সৃষ্টি হয়। মনোযোগ দিয়ে অন্যের কথা শোনাটা একটা সুস্থ পরিবেশের সৃষ্টি করে, ফলে প্রত্যেকেই নিজের মতামত, অনুভূতিগুলো নির্দ্বিধায় প্রকাশ করতে পারে। এতে করে যেকোনো সমস্যার সমাধানও সহজে করা যায়।

সোজাসুজি কথা বলা
কারও সঙ্গে যোগাযোগ গড়ে তোলার মূল ভিত্তিই হলো কথোপকথন। সব সময় কথোপকথন গড়ে তোলার অভ্যাস করতে হবে। যে কারও সঙ্গে একটি সহজ, বন্ধুত্বপূর্ণ আলাপ পারস্পরিক বন্ধন তৈরি করতে সাহায্য করে। একটি স্বাস্থ্যকর আলাপচারিতা আপনাকে সাহায্য করবে নতুন বন্ধু তৈরিতে। তাই নিজেকে আত্মবিশ্বাসী ও বন্ধুবৎসল মানুষ হিসেবে গড়ে তুলুন, এটি যোগাযোগের দক্ষতা বৃদ্ধির অন্যতম উপায়।

বাচনভঙ্গি হোক নমনীয়
যখন আমরা খুব গুরুত্বপূর্ণ কোনো বিষয় নিয়ে কথা বলি, তখন আমরা বিভিন্ন দেহভঙ্গির মাধ্যমে অনেক অমৌখিক বার্তা অপরপক্ষের কাছে পাঠাতে থাকি। অমৌখিক সংকেত যেমন মুখভঙ্গি, দেহভঙ্গি, হাতের নড়াচড়া, কণ্ঠস্বরের ওঠানামা ইত্যাদি বিষয়ের মাধ্যমে আমরা কথা না বলেই অনেক বার্তা বা ইঙ্গিত দিয়ে থাকি। এসব অমৌখিক বাচনভঙ্গি যেন সামনের মানুষটির জন্য স্বস্তিদায়ক হয়, সে বিষয়ে আমাদের লক্ষ রাখা উচিত। তা ছাড়া আমাদের ভাবনা-চিন্তাগুলো আরও সুষ্ঠুভাবে প্রকাশের জন্যও এসব অমৌখিক সংকেত প্রয়োজন।

আরও পড়ুন

 

মানসিক উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণে রাখুন
যেকোনো কাজের জন্য নির্দিষ্ট মাত্রার উত্তেজনা দরকারি ও উৎসাহব্যঞ্জক হতে পারে। কিন্তু মাত্রাতিরিক্ত মানসিক উত্তেজনা সাধারণত কাজের ক্ষতিই করে থাকে। কোনো বিষয়ে অতিরিক্ত চিন্তাভাবনা বা স্নায়বিক চাপ আপনার যোগাযোগের দক্ষতা, মতের স্বচ্ছতা ও আপনার সহকর্মীর প্রতি আচরণকে প্রভাবিত করতে পারে। আপনি যখন মানসিক কোনো চাপের মধ্যে থাকেন, তখন আশপাশের লোকদের আচরণের ভুল ব্যাখ্যা করতে পারেন কিংবা নিজে বিভ্রান্তিমূলক আচরণ করতে পারেন, যা হয়তো পরবর্তীকালে অনুশোচনার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাই সব সময় মানসিক উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করুন।

আবেগ নিয়ন্ত্রণ
আবেগীয় অনুভূতিগুলো আমাদের যোগাযোগ দক্ষতাকে বিশেষভাবে প্রভাবিত করে। আমরা যখন কোনো সিদ্ধান্ত নিই, তখন চিন্তার চেয়ে আমাদের আবেগ দ্বারাই বেশি নিয়ন্ত্রিত হই। আবেগ ও অনুভূতিই আমাদের চাহিদা ও অভিজ্ঞতাগুলো প্রকাশ করে। নিজের অতিরিক্ত আবেগ নিয়ন্ত্রণে রাখার মাধ্যমে আমাদের অপরের সঙ্গে যোগাযোগ করার দক্ষতা বৃদ্ধি পায়। নেতিবাচক আবেগ নিয়ন্ত্রণে রেখে ইতিবাচক আবেগীয় অনুভূতিকে বিকশিত করা উচিত, এতে করে আমাদের জন্য যেকোনো কাজ আরও সহজ হবে।

কর্মক্ষেত্রে নিজের পরিচিতি বাড়ান
বর্তমান সময়ে কর্মজগতের পরিধি অনেক বেশি বিস্তৃত। তাই কর্মক্ষেত্রে নিজের একটি সঠিক ও সুবিধাজনক পরিচিতি ছাড়া কোনো লক্ষ্যে পৌঁছানো অসম্ভব। নিজের পরিচিতি তৈরির লক্ষ্যে সবার সঙ্গে বন্ধুসুলভ আচরণ করা বাঞ্ছনীয়। উচ্চ পদাধিকারী ব্যক্তি বা অধীনদের সঙ্গে সঠিক আচরণ আপনার ব্যক্তিত্বকে পূর্ণরূপে বিকশিত করবে। নিজের পরিচিতি তৈরির জন্য নিজেকে সবার মাঝে ছড়িয়ে দিন, নেতিবাচকতাকে দূরে সরিয়ে রাখুন।

তথ্যসূত্র: হাই লো ডটকম
অনুবাদ: যারীন তাসনিম

যোগাযোগ দক্ষতা বাড়ানোর কৌশল

বর্তমান সময়ের জটিল ও দ্রুত বিকাশমান সামাজিক ব্যবস্থায় যোগাযোগের দক্ষতা বৃদ্ধি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। যোগাযোগ দক্ষতা বৃদ্ধি এখন সব বয়সী ও সব পেশার মানুষের জন্যই বেশ গুরুত্বপূর্ণ। তবে এটিকে কঠিন কোনো বিষয় ভাবার কারণ নেই। আমাদের স্বাভাবিক জীবনপদ্ধতির মধ্যেই আমরা কিছু নিয়ম অনুশীলনের মাধ্যমে বাড়িয়ে তুলতে পারি অপরের সঙ্গে সুন্দরভাবে কথা বলার ক্ষমতা, অন্যদের সঙ্গে নিজের ভাব আদান-প্রদানের সক্ষমতা।

এখানে ছয়টি খুব গুরুত্বপূর্ণ কমিউনিকেশন স্কিল নিয়ে আলোচনা করা হলো, যা আমাদের পেশাগত ও ব্যক্তিগত—সব জীবনেই ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

মনোযোগ দিয়ে শোনা
মনোযোগী শ্রোতা হতে পারা কারও সঙ্গে যোগাযোগের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি দিক। শুধু কারও কথা মন দিয়ে শোনাই নয়, বক্তা আসলে কী বলতে চাইছেন, সেটা উপলব্ধি করতে পারাটাও মনোযোগী শ্রোতার বৈশিষ্ট্য। কথোপকথনের গভীরে গিয়ে মূল বিষয়টা তুলে আনা যেকোনো যোগাযোগ স্থাপনের ক্ষেত্রেই খুব জরুরি। বক্তা যখন অনুভব করবেন যে সামনে বসা মানুষটি তাঁর কথা মন দিয়ে শুনছেন এবং বুঝতে চেষ্টা করছেন, তখন আপনা-আপনিই একটি সুন্দর সম্পর্কের সৃষ্টি হয়। মনোযোগ দিয়ে অন্যের কথা শোনাটা একটা সুস্থ পরিবেশের সৃষ্টি করে, ফলে প্রত্যেকেই নিজের মতামত, অনুভূতিগুলো নির্দ্বিধায় প্রকাশ করতে পারে। এতে করে যেকোনো সমস্যার সমাধানও সহজে করা যায়।

সোজাসুজি কথা বলা
কারও সঙ্গে যোগাযোগ গড়ে তোলার মূল ভিত্তিই হলো কথোপকথন। সব সময় কথোপকথন গড়ে তোলার অভ্যাস করতে হবে। যে কারও সঙ্গে একটি সহজ, বন্ধুত্বপূর্ণ আলাপ পারস্পরিক বন্ধন তৈরি করতে সাহায্য করে। একটি স্বাস্থ্যকর আলাপচারিতা আপনাকে সাহায্য করবে নতুন বন্ধু তৈরিতে। তাই নিজেকে আত্মবিশ্বাসী ও বন্ধুবৎসল মানুষ হিসেবে গড়ে তুলুন, এটি যোগাযোগের দক্ষতা বৃদ্ধির অন্যতম উপায়।

বাচনভঙ্গি হোক নমনীয়
যখন আমরা খুব গুরুত্বপূর্ণ কোনো বিষয় নিয়ে কথা বলি, তখন আমরা বিভিন্ন দেহভঙ্গির মাধ্যমে অনেক অমৌখিক বার্তা অপরপক্ষের কাছে পাঠাতে থাকি। অমৌখিক সংকেত যেমন মুখভঙ্গি, দেহভঙ্গি, হাতের নড়াচড়া, কণ্ঠস্বরের ওঠানামা ইত্যাদি বিষয়ের মাধ্যমে আমরা কথা না বলেই অনেক বার্তা বা ইঙ্গিত দিয়ে থাকি। এসব অমৌখিক বাচনভঙ্গি যেন সামনের মানুষটির জন্য স্বস্তিদায়ক হয়, সে বিষয়ে আমাদের লক্ষ রাখা উচিত। তা ছাড়া আমাদের ভাবনা-চিন্তাগুলো আরও সুষ্ঠুভাবে প্রকাশের জন্যও এসব অমৌখিক সংকেত প্রয়োজন।

আরও পড়ুন

 

মানসিক উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণে রাখুন
যেকোনো কাজের জন্য নির্দিষ্ট মাত্রার উত্তেজনা দরকারি ও উৎসাহব্যঞ্জক হতে পারে। কিন্তু মাত্রাতিরিক্ত মানসিক উত্তেজনা সাধারণত কাজের ক্ষতিই করে থাকে। কোনো বিষয়ে অতিরিক্ত চিন্তাভাবনা বা স্নায়বিক চাপ আপনার যোগাযোগের দক্ষতা, মতের স্বচ্ছতা ও আপনার সহকর্মীর প্রতি আচরণকে প্রভাবিত করতে পারে। আপনি যখন মানসিক কোনো চাপের মধ্যে থাকেন, তখন আশপাশের লোকদের আচরণের ভুল ব্যাখ্যা করতে পারেন কিংবা নিজে বিভ্রান্তিমূলক আচরণ করতে পারেন, যা হয়তো পরবর্তীকালে অনুশোচনার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাই সব সময় মানসিক উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করুন।

আবেগ নিয়ন্ত্রণ
আবেগীয় অনুভূতিগুলো আমাদের যোগাযোগ দক্ষতাকে বিশেষভাবে প্রভাবিত করে। আমরা যখন কোনো সিদ্ধান্ত নিই, তখন চিন্তার চেয়ে আমাদের আবেগ দ্বারাই বেশি নিয়ন্ত্রিত হই। আবেগ ও অনুভূতিই আমাদের চাহিদা ও অভিজ্ঞতাগুলো প্রকাশ করে। নিজের অতিরিক্ত আবেগ নিয়ন্ত্রণে রাখার মাধ্যমে আমাদের অপরের সঙ্গে যোগাযোগ করার দক্ষতা বৃদ্ধি পায়। নেতিবাচক আবেগ নিয়ন্ত্রণে রেখে ইতিবাচক আবেগীয় অনুভূতিকে বিকশিত করা উচিত, এতে করে আমাদের জন্য যেকোনো কাজ আরও সহজ হবে।

কর্মক্ষেত্রে নিজের পরিচিতি বাড়ান
বর্তমান সময়ে কর্মজগতের পরিধি অনেক বেশি বিস্তৃত। তাই কর্মক্ষেত্রে নিজের একটি সঠিক ও সুবিধাজনক পরিচিতি ছাড়া কোনো লক্ষ্যে পৌঁছানো অসম্ভব। নিজের পরিচিতি তৈরির লক্ষ্যে সবার সঙ্গে বন্ধুসুলভ আচরণ করা বাঞ্ছনীয়। উচ্চ পদাধিকারী ব্যক্তি বা অধীনদের সঙ্গে সঠিক আচরণ আপনার ব্যক্তিত্বকে পূর্ণরূপে বিকশিত করবে। নিজের পরিচিতি তৈরির জন্য নিজেকে সবার মাঝে ছড়িয়ে দিন, নেতিবাচকতাকে দূরে সরিয়ে রাখুন।

তথ্যসূত্র: হাই লো ডটকম
অনুবাদ: যারীন তাসনিম