রাবি ছাত্রের মৃত্যু ও হাসপাতালে তাণ্ডব

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র গোলাম মোস্তফা শাহরিয়ারের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে তাঁর সহপাঠীরা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে হামলা চালিয়েছেন, ভাঙচুর করেছেন। কথা-কাটাকাটির জেরে ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা তাঁদের ওপর চড়াও হওয়ায় কিছুটা অচলাবস্থা তৈরি হয়েছিল। ঘটনা তদন্তে একদিকে দুটি কমিটি করা হয়েছে অন্যদিকে আবার হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা রাজপাড়া থানায় অজ্ঞাতনামা ৩০০ ছাত্রের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

শাহরিয়ার কীভাবে মারা গেলেন? তাঁর সহপাঠীদের অভিযোগ, আহত অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকদের গাফিলতির কারণে ‘বিনা চিকিৎসায়’ তাঁর মৃত্যু হয়েছে। শাহরিয়ার আহত হলেন কীভাবে? পত্রিকায় প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, তিনি হবিবুর রহমান হলের তৃতীয় ব্লকের তিনতলার বারান্দা থেকে পড়ে গিয়েছিলেন। বারান্দায় রেলিং থাকা সত্ত্বেও শাহরিয়ার পড়ে গেলেন কীভাবে, সে প্রশ্ন উঠেছে। তবে এর কোনো জবাব কেউ দিতে পারছেন না। ঘটনা ঘটেছে গত বুধবার রাত আটটার দিকে এবং সেখানে কোনো প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন না। ওপর থেকে কিছু একটা পড়ার শব্দ শুনে কয়েকজন গিয়ে হল মসজিদের সামনে নলকূপের স্ল্যাবের ওপর রক্তাক্ত অবস্থায় শাহরিয়ারকে পড়ে থাকতে দেখে দ্রুত তাঁকে রামেক হাসপাতালে নিয়ে যান।

হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি না নিয়ে শাহরিয়ারকে একটি ওয়ার্ডে পাঠানো হয়। সেখানে কোনো চিকিৎসক ছিলেন না বলে অভিযোগ উঠেছে। তাঁকে আইসিইউতে নেওয়ার দাবিও উপেক্ষিত হয়েছে। এরই এক পর্যায়ে শাহরিয়ারের মৃত্যুর কথা শুনে তাঁর সহপাঠী ও হাসপাতালে জমা হওয়া শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের ওপর চড়াও হন হাসপাতালের কয়েকজন ইন্টার্ন চিকিৎসক। এক পক্ষ আরেক পক্ষের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ করে। কয়েকজন শিক্ষার্থীর আহত হওয়ার কথাও জানা গেছে। ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা হামলার প্রতিবাদে কর্মবিরতিও শুরু করেছিলেন।

হাসপাতাল, পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আলোচনায় বসে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ঘটনার তদন্তে গঠিত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে হামলা, ভাঙচুরের অভিযোগে মামলা হলে আবার উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। একজন আহত সহপাঠীর জন্য সহমর্মিতার কারণে শিক্ষার্থীরা হাসপাতালে জড়ো হয়েছিলেন। আহত একজনের জন্য দরদ বা মমতা সঙ্গী-সাথিদের যতটা থাকে, হাসপাতালে কর্মরতদের ততটা থাকে না। কারণ, চিকিৎসক, নার্সরা সারাক্ষণই একধরনের মানসিক চাপ নিয়ে রোগীর সেবা-শুশ্রূষা করেন। তারপরও চিকিৎসক কিংবা নার্সদের কাছ থেকে মানবিক আচরণই প্রত্যাশিত। কারণ, তাঁদের পেশাটাই সেবামূলক।

রাবির ছাত্র শাহরিয়ারকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসা দিতে কোনো অবহেলা হয়েছে কি না, যথাসময়ে উপযুক্ত চিকিৎসা পেলে তাঁকে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব হতো কি না, সেসব নিয়ে বিতর্ক এখন অর্থহীন। বাস্তব সত্য হলো, কবরে শয্যা নেওয়া শাহরিয়ারকে আর ফিরিয়ে আনা যাবে না। বিনা চিকিৎসায় তাঁর মৃত্যু হলো কি না, এটা অন্তত তদন্ত করে তাঁর মা-বাবা এবং স্বজনদের জানানো হোক।

রাবি ছাত্রের মৃত্যু ও হাসপাতালে তাণ্ডব

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র গোলাম মোস্তফা শাহরিয়ারের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে তাঁর সহপাঠীরা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে হামলা চালিয়েছেন, ভাঙচুর করেছেন। কথা-কাটাকাটির জেরে ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা তাঁদের ওপর চড়াও হওয়ায় কিছুটা অচলাবস্থা তৈরি হয়েছিল। ঘটনা তদন্তে একদিকে দুটি কমিটি করা হয়েছে অন্যদিকে আবার হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা রাজপাড়া থানায় অজ্ঞাতনামা ৩০০ ছাত্রের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

শাহরিয়ার কীভাবে মারা গেলেন? তাঁর সহপাঠীদের অভিযোগ, আহত অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকদের গাফিলতির কারণে ‘বিনা চিকিৎসায়’ তাঁর মৃত্যু হয়েছে। শাহরিয়ার আহত হলেন কীভাবে? পত্রিকায় প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, তিনি হবিবুর রহমান হলের তৃতীয় ব্লকের তিনতলার বারান্দা থেকে পড়ে গিয়েছিলেন। বারান্দায় রেলিং থাকা সত্ত্বেও শাহরিয়ার পড়ে গেলেন কীভাবে, সে প্রশ্ন উঠেছে। তবে এর কোনো জবাব কেউ দিতে পারছেন না। ঘটনা ঘটেছে গত বুধবার রাত আটটার দিকে এবং সেখানে কোনো প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন না। ওপর থেকে কিছু একটা পড়ার শব্দ শুনে কয়েকজন গিয়ে হল মসজিদের সামনে নলকূপের স্ল্যাবের ওপর রক্তাক্ত অবস্থায় শাহরিয়ারকে পড়ে থাকতে দেখে দ্রুত তাঁকে রামেক হাসপাতালে নিয়ে যান।

হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি না নিয়ে শাহরিয়ারকে একটি ওয়ার্ডে পাঠানো হয়। সেখানে কোনো চিকিৎসক ছিলেন না বলে অভিযোগ উঠেছে। তাঁকে আইসিইউতে নেওয়ার দাবিও উপেক্ষিত হয়েছে। এরই এক পর্যায়ে শাহরিয়ারের মৃত্যুর কথা শুনে তাঁর সহপাঠী ও হাসপাতালে জমা হওয়া শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের ওপর চড়াও হন হাসপাতালের কয়েকজন ইন্টার্ন চিকিৎসক। এক পক্ষ আরেক পক্ষের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ করে। কয়েকজন শিক্ষার্থীর আহত হওয়ার কথাও জানা গেছে। ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা হামলার প্রতিবাদে কর্মবিরতিও শুরু করেছিলেন।

হাসপাতাল, পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আলোচনায় বসে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ঘটনার তদন্তে গঠিত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে হামলা, ভাঙচুরের অভিযোগে মামলা হলে আবার উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। একজন আহত সহপাঠীর জন্য সহমর্মিতার কারণে শিক্ষার্থীরা হাসপাতালে জড়ো হয়েছিলেন। আহত একজনের জন্য দরদ বা মমতা সঙ্গী-সাথিদের যতটা থাকে, হাসপাতালে কর্মরতদের ততটা থাকে না। কারণ, চিকিৎসক, নার্সরা সারাক্ষণই একধরনের মানসিক চাপ নিয়ে রোগীর সেবা-শুশ্রূষা করেন। তারপরও চিকিৎসক কিংবা নার্সদের কাছ থেকে মানবিক আচরণই প্রত্যাশিত। কারণ, তাঁদের পেশাটাই সেবামূলক।

রাবির ছাত্র শাহরিয়ারকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসা দিতে কোনো অবহেলা হয়েছে কি না, যথাসময়ে উপযুক্ত চিকিৎসা পেলে তাঁকে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব হতো কি না, সেসব নিয়ে বিতর্ক এখন অর্থহীন। বাস্তব সত্য হলো, কবরে শয্যা নেওয়া শাহরিয়ারকে আর ফিরিয়ে আনা যাবে না। বিনা চিকিৎসায় তাঁর মৃত্যু হলো কি না, এটা অন্তত তদন্ত করে তাঁর মা-বাবা এবং স্বজনদের জানানো হোক।