রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪ বছর

মোহাম্মদ আলী

দেশের উত্তর জনপদে উচ্চশিক্ষা বিস্তারের লক্ষ্য নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়। দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রাম আর গণমানুষের স্বপ্নের বাস্তবায়ন এ প্রতিষ্ঠান। ২০০৮ সালে তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিশ্ববিদ্যালয়টি একটি অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠা করে।

দেখতে দেখতে ১৪ বছর অতিক্রম করে এ বছর ১৫তম বছরে পা রাখছে সম্ভাবনাময় প্রতিষ্ঠানটি। শুরু থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়টি নানা বিষয়ে আলোচিত হয়ে আসছে। হয়েছে গণমাধ্যমের শিরোনাম।

২০০৮ সালের ১২ অক্টোবর এ বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু হয়। কোনো শিক্ষক নিয়োগ ছাড়াই ২০০৮-২০০৯ শিক্ষাবর্ষে ছাত্রছাত্রী ভর্তি করা হয়। এর আগে রংপুরে একটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল, যা কিছুদিন চালু ছিল। ২০০১ সালে সরকার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে সেটি বন্ধ হয়ে যায়। যা হোক, ২০০৯ সালের ৪ এপ্রিল বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা কার্যক্রম চালু করা হয়। প্রথম উপাচার্য যোগদানের ছয় মাস যেতে না যেতেই নতুন সরকার এসে নতুন উপাচার্য নিয়োগ দেয়। দ্বিতীয় উপাচার্য তার চার বছরে পূর্বতন উপাচার্যের আমলে বরাদ্দকৃত শতকোটি টাকার ভৌত অবকাঠামো নির্মাণের কাজ শেষ করেন। বলতে গেলে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যবহার্য যত অবকাঠামো বিদ্যমান বা দৃশ্যমান, তার সবই দ্বিতীয় উপাচার্যের আমলে নির্মিত। চারতলাবিশিষ্ট চারটি একাডেমিক ভবন, একটি প্রশাসনিক ভবন, লাইব্রেরি ভবন, তিনটি আবাসিক হল, একটি কেন্দ্রীয় মসজিদ, উপাচার্যের আবাসিক ভবন, শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের জন্য চারটি ডরমেটরি, একটি ক্যাফেটেরিয়া ভবন, সেন্ট্রাল পাম্প ও বিদ্যুতের জন্য সাব-স্টেশন ভবন নির্মাণ করা হয়।

ছয়টি অনুষদের অধীনে ২১টি বিভাগ চালু করা হয়। একটি রিসার্চ ইনস্টিটিউটসহ অত্যাধুনিক তিনটি সেন্টার চালু করা হয়। বর্তমানে পঞ্চম উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়টির নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তিনি এসেই ঘোষণা দিয়েছেন, চার বছরের সেশনজট এক বছরেই মুক্ত করা হবে। তিনি কথা রেখেছেন। তার দায়িত্ব গ্রহণের দেড় বছরের মধ্যে চার বছরের সেশনজট প্রায় শেষ হতে চলেছে। এ বছর প্রতিষ্ঠা দিবসের প্রতিপাদ্য হলো ‘প্রতিষ্ঠা দিবসের অঙ্গীকার, সেশনজটমুক্ত হবে এবার’।

বর্তমান বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রমে গতিশীলতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অনলাইন সিস্টেম চালু করেছে। সম্প্রতি সেন্টার ফর ট্রান্সমিশন নামে যে সেন্টারটি চালু করা হয়েছে, এর মাধ্যমে আইসিটি সেল, সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ডিজিটাল ফরেনসিক সেল এবং হিউম্যান রিসোর্স ইনফরমেশন সেলের মধ্যে সমন্বয় ঘটিয়ে ডিজিটাল প্ল্যাটফরমকে শক্তিশালী করা হচ্ছে।

আগামী দিনে এ বিশ্ববিদ্যালয় হবে উত্তরাঞ্চলের শিক্ষা ও গবেষণার অন্যতম বিদ্যাপীঠ, বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে অনন্য প্রতিষ্ঠান হবে এটি-প্রতিষ্ঠা দিবসে এটাই প্রত্যাশা।

মোহাম্মদ আলী : উপপরিচালক (জনসংযোগ), বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর

রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪ বছর

মোহাম্মদ আলী

দেশের উত্তর জনপদে উচ্চশিক্ষা বিস্তারের লক্ষ্য নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়। দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রাম আর গণমানুষের স্বপ্নের বাস্তবায়ন এ প্রতিষ্ঠান। ২০০৮ সালে তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিশ্ববিদ্যালয়টি একটি অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠা করে।

দেখতে দেখতে ১৪ বছর অতিক্রম করে এ বছর ১৫তম বছরে পা রাখছে সম্ভাবনাময় প্রতিষ্ঠানটি। শুরু থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়টি নানা বিষয়ে আলোচিত হয়ে আসছে। হয়েছে গণমাধ্যমের শিরোনাম।

২০০৮ সালের ১২ অক্টোবর এ বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু হয়। কোনো শিক্ষক নিয়োগ ছাড়াই ২০০৮-২০০৯ শিক্ষাবর্ষে ছাত্রছাত্রী ভর্তি করা হয়। এর আগে রংপুরে একটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল, যা কিছুদিন চালু ছিল। ২০০১ সালে সরকার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে সেটি বন্ধ হয়ে যায়। যা হোক, ২০০৯ সালের ৪ এপ্রিল বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা কার্যক্রম চালু করা হয়। প্রথম উপাচার্য যোগদানের ছয় মাস যেতে না যেতেই নতুন সরকার এসে নতুন উপাচার্য নিয়োগ দেয়। দ্বিতীয় উপাচার্য তার চার বছরে পূর্বতন উপাচার্যের আমলে বরাদ্দকৃত শতকোটি টাকার ভৌত অবকাঠামো নির্মাণের কাজ শেষ করেন। বলতে গেলে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যবহার্য যত অবকাঠামো বিদ্যমান বা দৃশ্যমান, তার সবই দ্বিতীয় উপাচার্যের আমলে নির্মিত। চারতলাবিশিষ্ট চারটি একাডেমিক ভবন, একটি প্রশাসনিক ভবন, লাইব্রেরি ভবন, তিনটি আবাসিক হল, একটি কেন্দ্রীয় মসজিদ, উপাচার্যের আবাসিক ভবন, শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের জন্য চারটি ডরমেটরি, একটি ক্যাফেটেরিয়া ভবন, সেন্ট্রাল পাম্প ও বিদ্যুতের জন্য সাব-স্টেশন ভবন নির্মাণ করা হয়।

ছয়টি অনুষদের অধীনে ২১টি বিভাগ চালু করা হয়। একটি রিসার্চ ইনস্টিটিউটসহ অত্যাধুনিক তিনটি সেন্টার চালু করা হয়। বর্তমানে পঞ্চম উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়টির নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তিনি এসেই ঘোষণা দিয়েছেন, চার বছরের সেশনজট এক বছরেই মুক্ত করা হবে। তিনি কথা রেখেছেন। তার দায়িত্ব গ্রহণের দেড় বছরের মধ্যে চার বছরের সেশনজট প্রায় শেষ হতে চলেছে। এ বছর প্রতিষ্ঠা দিবসের প্রতিপাদ্য হলো ‘প্রতিষ্ঠা দিবসের অঙ্গীকার, সেশনজটমুক্ত হবে এবার’।

বর্তমান বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রমে গতিশীলতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অনলাইন সিস্টেম চালু করেছে। সম্প্রতি সেন্টার ফর ট্রান্সমিশন নামে যে সেন্টারটি চালু করা হয়েছে, এর মাধ্যমে আইসিটি সেল, সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ডিজিটাল ফরেনসিক সেল এবং হিউম্যান রিসোর্স ইনফরমেশন সেলের মধ্যে সমন্বয় ঘটিয়ে ডিজিটাল প্ল্যাটফরমকে শক্তিশালী করা হচ্ছে।

আগামী দিনে এ বিশ্ববিদ্যালয় হবে উত্তরাঞ্চলের শিক্ষা ও গবেষণার অন্যতম বিদ্যাপীঠ, বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে অনন্য প্রতিষ্ঠান হবে এটি-প্রতিষ্ঠা দিবসে এটাই প্রত্যাশা।

মোহাম্মদ আলী : উপপরিচালক (জনসংযোগ), বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর