শিক্ষার্থীদের ভাবনায় নারী দিবস

মোজাহিদুল ইসলাম নিরব

শিক্ষার্থী, গণ বিশ্ববিদ্যালয়।

‘বিশ্বে যা কিছু সৃষ্টি চির কল্যাণকর, অর্ধেক তার করিয়াছে নারী অর্ধেক তার নর’ কবি নজরুল তার এই কবিতার মাধ্যমে দেশ এবং সমাজে নারীর গুরুত্বকে তুলে ধরেছেন। একটি দেশে পুরুষের যেমন প্রয়োজন রয়েছে ঠিক ততোটাই প্রয়োজন রয়েছে একজন নারীর। তার একটি প্রমাণ ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে নারীদের অবদান। ৭১ এর ন্যায় দেশে এখনো রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সামাজিক সকল ক্ষেত্রে নারীর অবদান অতুলনীয়। কিন্তু আজ স্বাধীনতার ৫০ বছর পরেও সমাজে নারীরা অনেক ক্ষেত্রে স্বাধীন নয়। পুরুষশাসিত সমাজে নারীরা আজও অবহেলিত, লাঞ্ছিত, শোষিত। দেশে নারী-পুরুষ সমান অধিকার থাকলেও নারীরা তাদের প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। রাস্তাঘাটে, কর্মসংস্থানে, রাজনৈতিক ময়দানে নারীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগে। দিন দিন বেড়েই চলেছে নারীর প্রতি সহিংসতা।

আজ ৮ মার্চ। আন্তর্জাতিক নারী দিবস। নারীর প্রতি অবিচার, বৈষম্য, সহিংসতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে সমাজ এবং রাষ্ট্রে নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা করাই আন্তর্জাতিক নারী দিবসের লক্ষ্য। প্রতিবছর বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে উদযাপন করা হয় দিনটিকে। নারী দিবসে নিজেদের ভাবনা প্রকাশ করেছেন গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

চার দেয়ালের আবদ্ধতা ভেঙে নারীর অগ্রযাত্রা: হিসানা জাহান মুন

চার দেয়ালের আবদ্ধতাকে ডিঙিয়ে নারীরা আজ হিমালয় জয় থেকে শুরু করে, বিমান উঁড়ানো সবকিছুতেই পারদর্শী।একটা সময় নারীদের সমাজে অবহেলিত করে রাখা হতো। চার দেয়ালের বাইরে বের হওয়া ছিলো মানা। তারা আজ শিক্ষার আলোতে আলোকিত হয়ে ভেঙে ফেলেছে সব বাধা। দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে সামনের দিকে। উচ্চশিক্ষার জন্য পারি জমাচ্ছে দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিলেতে। দেশের সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক সকল স্তরে রয়েছে নারীদের অবদান। নারীরা এখন পরনির্ভরশীল নয়। পুরুষদের সাথে পাল্লা দিয়ে নারীরাও ছুটে চলে কর্মসংস্থানে। দেশের সরকারি, বেসরকারি সকল কর্মসংস্থানে নারীদের অনবদ্য অংশগ্রহণই বুঝিয়ে দেয় সমাজ এবং রাষ্ট্রের জন্য নারীর প্রয়োজনীয়তা। তবে এখনো সমাজে বিভিন্ন প্রতিকূলতার স্বীকার হয় নারীরা । নারীদের এখনো আটকে রাখতে চায় ওই চার দেয়ালের মধ্যে। প্রায়ই শোনা যায়, নারীদের ধর্ষণ এবং নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনা। নারীদের নিরাপত্তা রক্ষা করাটা এখন সবচেয়ে বেশি জরুরি।

হিসানা জাহান মুন, মাইক্রোবায়োলজি বিভাগ, ৩য় সেমিস্টার।

নারীরা কখনো বীরাঙ্গনা, কখনো মোনালিসা: সুলতানা আক্তার মিতু

আন্তর্জাতিক নারী দিবস, নারীদের জন্য নিবেদিত একটা গোটা দিন। তাই শুধু এক দিনের জন্য হলেও, আমরা স্মরণ করি, বিশ্বের অগণিত নারীকে যারা কখনও বিরাঙ্গনা, কখনও বা মোনালিসার রূপে, কখনও একুশ শতকের একজন অতি সাধারণ নারী হিসেবে। বিশ্বে এখনও এমন বহু নারী আছেন, যারা ধরেই নেন, যে তাদের জন্ম হয়েছে পরের সেবা করার জন্য। কন্যা-জায়া-জননী রূপে তারা সৃষ্টির প্রথম লগ্ন থেকে আমাদের সেবা করেছেন, আপন করেছেন। অথচ সেই নারীকে বারে বারেই বঞ্চিত করেছে সমাজ, রাষ্ট্র, এমনকি পরিবারও। নারী স্বাধীনতার ঢেউ এখনও পৌঁছায়নি বিশ্বের প্রতিটি প্রান্তে। আর পৌঁছালেও তা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই থেকে গেছে শুধু কাগজে-কলমে। নারীকে নারী হিসেবে তো নয়ই, মানুষ হিসেবেও নিজের পায়ে দাঁড়াতে দিতে চায়নি পুরুষতান্ত্রিক এই সমাজ।

তবে তারপরেও, বিশ্বের গণতান্ত্রিক দেশগুলোর সঙ্গে তাল মিলিয়ে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ও নারীবাদি সংস্থা নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠার বিভিন্ন দলিল প্রকাশ করেছে। ইউরোপ-আমেরিকার সঙ্গে হাত মিলিয়ে, ভারত-বাংলাদেশের মতো দেশও নারীর অধিকার বাস্তবায়নে অগ্রসর হয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ায় নারী অগ্রগতির জন্য প্রশংসিতও হয়েছে তারা। বর্তমান বিশ্বে নারীর অধিকার নিয়ে কাজ করছে বহু আন্তর্জাতিক সংগঠন। কর্মক্ষেত্রের সকল জায়গায় নারীদের সরব পদচারণা এখন চোখে পড়ার মতো। কিন্তু ৫০ বছর বা ১০০ বছর আগের চিত্র ছিল ভিন্ন। নারীর এগিয়ে যাওয়ার পথে বাঁধা ছিল শত শত। সেই সব বাঁধা পেরিয়ে এগিয়ে গেছেন এমন নারীদের নাম জায়গা করে নিয়েছে ইতিহাসের পাতায়। যারা আজকের নারীদের অনুপ্রেরণা জোগান। গ্রামীন উন্নয়ন, খাদ্য নিরাপত্তা ও দারিদ্র্য দূরীকরণসহ নানা ক্ষেত্রে গ্রামীণ নারীদের ভূমিকার স্বীকৃতিস্বরূপ দিবসটি পালিত হয়ে আসছে বিশ্বজুড়ে। গ্রামীণ নারীর বহুমাত্রিক ভূমিকা ও অবদানকে যথাযথ স্বীকৃতি ও মর্যাদা দেওয়ার জন্য আন্দোলন চলছে যুগ যুগ ধরে। তবে এর মাঝে একটু একটু করে উন্নতি করছেন অনেকেই। সমাজের অগ্রগতিতে গ্রামীণ নারীর অবদান অনস্বীকার্য।

সুলতানা আক্তার মিতু, বাংলা বিভাগ, ৩য় সেমিস্টার।

নারী সমাজের মূল চালিকা শক্তি: আফরা

একজন নারীর মাঝে দশভুজার শক্তি থাকে। ঘর থেকে কর্মক্ষেত্র সব জায়গায় সমান তালে পুরুষের সাথে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে নারী। একসময় নারীদের ঘরের বাহিরে যাওয়া নিষেধ ছিলো। বেগম রোকেয়া বলেছিলেন, ‘আমরা পুরুষের ন্যায় সাম্যক সুবিধা না পাইয়া পশ্চাতে পড়িয়া আছি’। একসময় এই ছিলো নারীদের অবস্থান। কিন্তু আগের তুলনায় বর্তমানে আমরা অনেক এগিয়ে আছি। এখন সেই আগের মতো মেয়েদের উপর চোখ রাঙানি নেই, আমাদের সমাজ পরিবর্তন হয়েছে। সেই সাথে আমাদের চিন্তা চেতনা। নারীরা এখন পুরুষের থেকে কোনো অংশেই কম নয়। কর্মক্ষেত্র, শিক্ষাসহ সকল ক্ষেত্রে নারীরা পুরুষের থেকে এগিয়ে। একজন পুরুষ হয়তো তার কর্মক্ষেত্রে সফল, কিন্তু নারী সকল ক্ষেত্রে সফল। একজন নারী ঘর সামলে তার নিজের কর্মক্ষেত্রেও সফল যেটা একজন পুরুষের পক্ষে সম্ভব না।আমাদের দেশ, সমাজ, রাষ্ট্র যতই উন্নত হোক, এখনো অনেক ক্ষেত্রে নারীরা অবহেলিত। অনেক সময় দেখা যায়, যোগ্যতার থেকে জেন্ডারে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়। অনেক নারী এখনো শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়। তবে নারীরা এখন অনেক সরব হয়ে উঠেছে, এইসব নির্যাতনের বিরুদ্ধে। পুরুষদের সাথে তাল মিলিয়ে বরং তাদের চেয়েও বেশি অবদান রেখে দেশ, সমাজ রাষ্ট্রকে এগিয়ে নিয়ে চলেছে।

আফরা, আইন বিভাগ, ২য় সেমিস্টার।

সমাজে নারীর নিরাপত্তা জরুরী: আফসানা আক্তার

দেশ এবং রাষ্ট্রকে এগিয়ে নিতে হলে, সকল ক্ষেত্রে পুরুষের পাশাপাশি নারীর অংশগ্রহণ প্রয়োজন। তবে সমাজে নারীদের হতে হয় বিভিন্ন অবিচার, সহিংসতা, ধর্ষণের মুখোমুখি, যা নারীর অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্থ করছে। নারীরা স্বাচ্ছন্দ মতো অনেক সময় রাস্তায় বেরোতে পারে না। যৌন হয়রানি যেনো এখন নিত্যদিনের সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাস্তা-ঘাট, কর্মসংস্থান সবজায়গাতেই নারীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে। দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে নারীর অবদান গুরুত্বপূর্ণ, তাই সর্বপ্রথম সমাজে নারীদের নিরাপত্তা দিতে হবে। একটি নারীও যেনো যৌন হয়রানি, সহিংসতা, অবিচারের শিকার না হয়, সেটি নিশ্চিত করতে হবে। নারী পুরুষের সমান অবদানে দেশ পৌঁছে যাবে উন্নতির দিকে।

আফসানা আক্তার, ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ, ১ম সেমিস্টার।

লেখা: শিক্ষার্থী, গণ বিশ্ববিদ্যালয়, সাভার।

শিক্ষার্থীদের ভাবনায় নারী দিবস

মোজাহিদুল ইসলাম নিরব

শিক্ষার্থী, গণ বিশ্ববিদ্যালয়।

‘বিশ্বে যা কিছু সৃষ্টি চির কল্যাণকর, অর্ধেক তার করিয়াছে নারী অর্ধেক তার নর’ কবি নজরুল তার এই কবিতার মাধ্যমে দেশ এবং সমাজে নারীর গুরুত্বকে তুলে ধরেছেন। একটি দেশে পুরুষের যেমন প্রয়োজন রয়েছে ঠিক ততোটাই প্রয়োজন রয়েছে একজন নারীর। তার একটি প্রমাণ ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে নারীদের অবদান। ৭১ এর ন্যায় দেশে এখনো রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সামাজিক সকল ক্ষেত্রে নারীর অবদান অতুলনীয়। কিন্তু আজ স্বাধীনতার ৫০ বছর পরেও সমাজে নারীরা অনেক ক্ষেত্রে স্বাধীন নয়। পুরুষশাসিত সমাজে নারীরা আজও অবহেলিত, লাঞ্ছিত, শোষিত। দেশে নারী-পুরুষ সমান অধিকার থাকলেও নারীরা তাদের প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। রাস্তাঘাটে, কর্মসংস্থানে, রাজনৈতিক ময়দানে নারীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগে। দিন দিন বেড়েই চলেছে নারীর প্রতি সহিংসতা।

আজ ৮ মার্চ। আন্তর্জাতিক নারী দিবস। নারীর প্রতি অবিচার, বৈষম্য, সহিংসতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে সমাজ এবং রাষ্ট্রে নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা করাই আন্তর্জাতিক নারী দিবসের লক্ষ্য। প্রতিবছর বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে উদযাপন করা হয় দিনটিকে। নারী দিবসে নিজেদের ভাবনা প্রকাশ করেছেন গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

চার দেয়ালের আবদ্ধতা ভেঙে নারীর অগ্রযাত্রা: হিসানা জাহান মুন

চার দেয়ালের আবদ্ধতাকে ডিঙিয়ে নারীরা আজ হিমালয় জয় থেকে শুরু করে, বিমান উঁড়ানো সবকিছুতেই পারদর্শী।একটা সময় নারীদের সমাজে অবহেলিত করে রাখা হতো। চার দেয়ালের বাইরে বের হওয়া ছিলো মানা। তারা আজ শিক্ষার আলোতে আলোকিত হয়ে ভেঙে ফেলেছে সব বাধা। দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে সামনের দিকে। উচ্চশিক্ষার জন্য পারি জমাচ্ছে দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিলেতে। দেশের সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক সকল স্তরে রয়েছে নারীদের অবদান। নারীরা এখন পরনির্ভরশীল নয়। পুরুষদের সাথে পাল্লা দিয়ে নারীরাও ছুটে চলে কর্মসংস্থানে। দেশের সরকারি, বেসরকারি সকল কর্মসংস্থানে নারীদের অনবদ্য অংশগ্রহণই বুঝিয়ে দেয় সমাজ এবং রাষ্ট্রের জন্য নারীর প্রয়োজনীয়তা। তবে এখনো সমাজে বিভিন্ন প্রতিকূলতার স্বীকার হয় নারীরা । নারীদের এখনো আটকে রাখতে চায় ওই চার দেয়ালের মধ্যে। প্রায়ই শোনা যায়, নারীদের ধর্ষণ এবং নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনা। নারীদের নিরাপত্তা রক্ষা করাটা এখন সবচেয়ে বেশি জরুরি।

হিসানা জাহান মুন, মাইক্রোবায়োলজি বিভাগ, ৩য় সেমিস্টার।

নারীরা কখনো বীরাঙ্গনা, কখনো মোনালিসা: সুলতানা আক্তার মিতু

আন্তর্জাতিক নারী দিবস, নারীদের জন্য নিবেদিত একটা গোটা দিন। তাই শুধু এক দিনের জন্য হলেও, আমরা স্মরণ করি, বিশ্বের অগণিত নারীকে যারা কখনও বিরাঙ্গনা, কখনও বা মোনালিসার রূপে, কখনও একুশ শতকের একজন অতি সাধারণ নারী হিসেবে। বিশ্বে এখনও এমন বহু নারী আছেন, যারা ধরেই নেন, যে তাদের জন্ম হয়েছে পরের সেবা করার জন্য। কন্যা-জায়া-জননী রূপে তারা সৃষ্টির প্রথম লগ্ন থেকে আমাদের সেবা করেছেন, আপন করেছেন। অথচ সেই নারীকে বারে বারেই বঞ্চিত করেছে সমাজ, রাষ্ট্র, এমনকি পরিবারও। নারী স্বাধীনতার ঢেউ এখনও পৌঁছায়নি বিশ্বের প্রতিটি প্রান্তে। আর পৌঁছালেও তা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই থেকে গেছে শুধু কাগজে-কলমে। নারীকে নারী হিসেবে তো নয়ই, মানুষ হিসেবেও নিজের পায়ে দাঁড়াতে দিতে চায়নি পুরুষতান্ত্রিক এই সমাজ।

তবে তারপরেও, বিশ্বের গণতান্ত্রিক দেশগুলোর সঙ্গে তাল মিলিয়ে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ও নারীবাদি সংস্থা নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠার বিভিন্ন দলিল প্রকাশ করেছে। ইউরোপ-আমেরিকার সঙ্গে হাত মিলিয়ে, ভারত-বাংলাদেশের মতো দেশও নারীর অধিকার বাস্তবায়নে অগ্রসর হয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ায় নারী অগ্রগতির জন্য প্রশংসিতও হয়েছে তারা। বর্তমান বিশ্বে নারীর অধিকার নিয়ে কাজ করছে বহু আন্তর্জাতিক সংগঠন। কর্মক্ষেত্রের সকল জায়গায় নারীদের সরব পদচারণা এখন চোখে পড়ার মতো। কিন্তু ৫০ বছর বা ১০০ বছর আগের চিত্র ছিল ভিন্ন। নারীর এগিয়ে যাওয়ার পথে বাঁধা ছিল শত শত। সেই সব বাঁধা পেরিয়ে এগিয়ে গেছেন এমন নারীদের নাম জায়গা করে নিয়েছে ইতিহাসের পাতায়। যারা আজকের নারীদের অনুপ্রেরণা জোগান। গ্রামীন উন্নয়ন, খাদ্য নিরাপত্তা ও দারিদ্র্য দূরীকরণসহ নানা ক্ষেত্রে গ্রামীণ নারীদের ভূমিকার স্বীকৃতিস্বরূপ দিবসটি পালিত হয়ে আসছে বিশ্বজুড়ে। গ্রামীণ নারীর বহুমাত্রিক ভূমিকা ও অবদানকে যথাযথ স্বীকৃতি ও মর্যাদা দেওয়ার জন্য আন্দোলন চলছে যুগ যুগ ধরে। তবে এর মাঝে একটু একটু করে উন্নতি করছেন অনেকেই। সমাজের অগ্রগতিতে গ্রামীণ নারীর অবদান অনস্বীকার্য।

সুলতানা আক্তার মিতু, বাংলা বিভাগ, ৩য় সেমিস্টার।

নারী সমাজের মূল চালিকা শক্তি: আফরা

একজন নারীর মাঝে দশভুজার শক্তি থাকে। ঘর থেকে কর্মক্ষেত্র সব জায়গায় সমান তালে পুরুষের সাথে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে নারী। একসময় নারীদের ঘরের বাহিরে যাওয়া নিষেধ ছিলো। বেগম রোকেয়া বলেছিলেন, ‘আমরা পুরুষের ন্যায় সাম্যক সুবিধা না পাইয়া পশ্চাতে পড়িয়া আছি’। একসময় এই ছিলো নারীদের অবস্থান। কিন্তু আগের তুলনায় বর্তমানে আমরা অনেক এগিয়ে আছি। এখন সেই আগের মতো মেয়েদের উপর চোখ রাঙানি নেই, আমাদের সমাজ পরিবর্তন হয়েছে। সেই সাথে আমাদের চিন্তা চেতনা। নারীরা এখন পুরুষের থেকে কোনো অংশেই কম নয়। কর্মক্ষেত্র, শিক্ষাসহ সকল ক্ষেত্রে নারীরা পুরুষের থেকে এগিয়ে। একজন পুরুষ হয়তো তার কর্মক্ষেত্রে সফল, কিন্তু নারী সকল ক্ষেত্রে সফল। একজন নারী ঘর সামলে তার নিজের কর্মক্ষেত্রেও সফল যেটা একজন পুরুষের পক্ষে সম্ভব না।আমাদের দেশ, সমাজ, রাষ্ট্র যতই উন্নত হোক, এখনো অনেক ক্ষেত্রে নারীরা অবহেলিত। অনেক সময় দেখা যায়, যোগ্যতার থেকে জেন্ডারে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়। অনেক নারী এখনো শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়। তবে নারীরা এখন অনেক সরব হয়ে উঠেছে, এইসব নির্যাতনের বিরুদ্ধে। পুরুষদের সাথে তাল মিলিয়ে বরং তাদের চেয়েও বেশি অবদান রেখে দেশ, সমাজ রাষ্ট্রকে এগিয়ে নিয়ে চলেছে।

আফরা, আইন বিভাগ, ২য় সেমিস্টার।

সমাজে নারীর নিরাপত্তা জরুরী: আফসানা আক্তার

দেশ এবং রাষ্ট্রকে এগিয়ে নিতে হলে, সকল ক্ষেত্রে পুরুষের পাশাপাশি নারীর অংশগ্রহণ প্রয়োজন। তবে সমাজে নারীদের হতে হয় বিভিন্ন অবিচার, সহিংসতা, ধর্ষণের মুখোমুখি, যা নারীর অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্থ করছে। নারীরা স্বাচ্ছন্দ মতো অনেক সময় রাস্তায় বেরোতে পারে না। যৌন হয়রানি যেনো এখন নিত্যদিনের সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাস্তা-ঘাট, কর্মসংস্থান সবজায়গাতেই নারীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে। দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে নারীর অবদান গুরুত্বপূর্ণ, তাই সর্বপ্রথম সমাজে নারীদের নিরাপত্তা দিতে হবে। একটি নারীও যেনো যৌন হয়রানি, সহিংসতা, অবিচারের শিকার না হয়, সেটি নিশ্চিত করতে হবে। নারী পুরুষের সমান অবদানে দেশ পৌঁছে যাবে উন্নতির দিকে।

আফসানা আক্তার, ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ, ১ম সেমিস্টার।

লেখা: শিক্ষার্থী, গণ বিশ্ববিদ্যালয়, সাভার।