শিক্ষার্থী মূল্যায়নের প্রশ্ন গাইড বই থেকে

আব্দুল্লাহ আল জোবায়ের

আশঙ্কা সত্যি করে তৃতীয় ও পঞ্চম শ্রেণির ‘জাতীয় শিক্ষার্থী মূল্যায়ন’-এর প্রশ্ন হয়েছে গাইড বই থেকেই। গত মঙ্গলবার মূল্যায়ন পরীক্ষা হয়। এর প্রশ্ন মিলিয়ে দেখা যায়, তৃতীয় শ্রেণির বাংলা বিষয়ের দুটি আলাদা নমুনা প্রশ্নের মধ্যে গাইড থেকে কমন পড়েছে প্রায় ৮০ শতাংশ। কমন পড়েছে গণিতেও। একইভাবে পঞ্চম শ্রেণির বাংলা বিষয়ের জন্য তৈরি করা দুটি প্রশ্ন থেকেও হুবহু কমন পড়েছে। এর আগে এমন আশঙ্কার বিষয়টি তুলে ধরে সংবাদ প্রকাশ করেছিল কালবেলা; কিন্তু তাতে টনক নড়েনি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের (ডিপিই)।

কালবেলার অনুসন্ধানে দেখা যায়, তৃতীয় শ্রেণির মূল্যায়ন পরীক্ষা দুটি নমুনা প্রশ্নে অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিটিতে ছিল ৫টি করে অনুচ্ছেদ, যেখান থেকে কয়েকটি প্রশ্ন করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে ৭টি অনুচ্ছেদ ছিল একক। আর তিনটি অনুচ্ছেদ দুটো সেটেই ছিল এক। সেই সাতটি অনুচ্ছেদের মধ্যে ৫টি অনুচ্ছেদে বেশিরভাগ প্রশ্ন হুবহু কমন পড়েছে ফুলকুঁড়ি চমক থেকে। আর অল্প কয়েকটি প্রশ্ন সামান্য ঘুরিয়ে করা হয়েছে। তৃতীয় শ্রেণির গণিতের দুটো সেটে ছিল ৩৫টি করে প্রশ্ন। এর মধ্যে কিছু প্রশ্ন দুটো সেটেই পুনরাবৃত্তি হয়েছে। এর মধ্যে ফুলকুঁড়ি চমক থেকে কমন পড়েছে ১৩টি প্রশ্ন। পঞ্চম শ্রেণির বাংলা বিষয়ে আলাদা দুটি সেটে ৫টি করে মোট ১০টি অনুচ্ছেদ ছিল। এর মধ্যে ফুলকুঁড়ি চমক থেকে ৫টি অনুচ্ছেদের বেশিরভাগ প্রশ্ন হুবহু কমন পড়েছে। আর অল্প কয়েকটি প্রশ্ন ঘুরিয়ে লেখা হয়েছে। কম্পিউটার টাচ অ্যান্ড পাস গাইড থেকে এ পরীক্ষায় ৩টি অনুচ্ছেদ প্রশ্নসহ কমন পড়েছে।

এ বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সাবেক এক উপপরিচালক বলেন, ‘করোনার শুরুতে এ পরীক্ষা নেওয়ার জন্য খুব তোড়জোড় হয়েছিল। কিন্তু সেখান থেকে ডিপিই সরে এলো। এরপর তারা কীভাবে পরীক্ষা নিল, সেটা আমাদের জানা নেই। নমুনা তো কোনোভাবেই বাইরে যাওয়ার কথা নয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘তারা দেখাতে চেয়েছেন বর্তমান সরকারের আমলে শিক্ষার যথেষ্ট অগ্রগতি হয়েছে। এটা একটা প্রোপাগান্ডার মতো। ডিপিইর কিছু মাথামোটা লোক এমনটা করেছে। এটা তো সরকারের ভালো-মন্দের কিছু নয়, বাচ্চাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে কথা। কাউকে ভালো দেখানোর জন্য এ কাজটা করা ঠিক হয়নি।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক মো. মুজিবুর রহমান বলেন, ‘প্রশ্ন হুবহু বা বড় একটি অংশ মিলে যাওয়া এক ধরনের অপরাধ। এটা অসততা ও দুর্নীতির মধ্যে পড়ে। এর ফলে আমরা যে উদ্দেশ্য নিয়ে মূল্যায়ন করলাম তা শতভাগ বিফল হলো। এ মূল্যায়ন করা আর না করা সমান কথা। এমনটা করায় আগামীতে মূল্যায়নের ক্ষেত্রে এর প্রভাব পড়বে। এটা আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য দুর্যোগ।’

এ বিষয়ে জানতে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের পরিচালক উত্তম কুমার দাস ও মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াতকে ফোন করা হলেও তারা রিসিভ করেননি।

শিক্ষার্থী মূল্যায়নের প্রশ্ন গাইড বই থেকে

আব্দুল্লাহ আল জোবায়ের

আশঙ্কা সত্যি করে তৃতীয় ও পঞ্চম শ্রেণির ‘জাতীয় শিক্ষার্থী মূল্যায়ন’-এর প্রশ্ন হয়েছে গাইড বই থেকেই। গত মঙ্গলবার মূল্যায়ন পরীক্ষা হয়। এর প্রশ্ন মিলিয়ে দেখা যায়, তৃতীয় শ্রেণির বাংলা বিষয়ের দুটি আলাদা নমুনা প্রশ্নের মধ্যে গাইড থেকে কমন পড়েছে প্রায় ৮০ শতাংশ। কমন পড়েছে গণিতেও। একইভাবে পঞ্চম শ্রেণির বাংলা বিষয়ের জন্য তৈরি করা দুটি প্রশ্ন থেকেও হুবহু কমন পড়েছে। এর আগে এমন আশঙ্কার বিষয়টি তুলে ধরে সংবাদ প্রকাশ করেছিল কালবেলা; কিন্তু তাতে টনক নড়েনি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের (ডিপিই)।

কালবেলার অনুসন্ধানে দেখা যায়, তৃতীয় শ্রেণির মূল্যায়ন পরীক্ষা দুটি নমুনা প্রশ্নে অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিটিতে ছিল ৫টি করে অনুচ্ছেদ, যেখান থেকে কয়েকটি প্রশ্ন করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে ৭টি অনুচ্ছেদ ছিল একক। আর তিনটি অনুচ্ছেদ দুটো সেটেই ছিল এক। সেই সাতটি অনুচ্ছেদের মধ্যে ৫টি অনুচ্ছেদে বেশিরভাগ প্রশ্ন হুবহু কমন পড়েছে ফুলকুঁড়ি চমক থেকে। আর অল্প কয়েকটি প্রশ্ন সামান্য ঘুরিয়ে করা হয়েছে। তৃতীয় শ্রেণির গণিতের দুটো সেটে ছিল ৩৫টি করে প্রশ্ন। এর মধ্যে কিছু প্রশ্ন দুটো সেটেই পুনরাবৃত্তি হয়েছে। এর মধ্যে ফুলকুঁড়ি চমক থেকে কমন পড়েছে ১৩টি প্রশ্ন। পঞ্চম শ্রেণির বাংলা বিষয়ে আলাদা দুটি সেটে ৫টি করে মোট ১০টি অনুচ্ছেদ ছিল। এর মধ্যে ফুলকুঁড়ি চমক থেকে ৫টি অনুচ্ছেদের বেশিরভাগ প্রশ্ন হুবহু কমন পড়েছে। আর অল্প কয়েকটি প্রশ্ন ঘুরিয়ে লেখা হয়েছে। কম্পিউটার টাচ অ্যান্ড পাস গাইড থেকে এ পরীক্ষায় ৩টি অনুচ্ছেদ প্রশ্নসহ কমন পড়েছে।

এ বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সাবেক এক উপপরিচালক বলেন, ‘করোনার শুরুতে এ পরীক্ষা নেওয়ার জন্য খুব তোড়জোড় হয়েছিল। কিন্তু সেখান থেকে ডিপিই সরে এলো। এরপর তারা কীভাবে পরীক্ষা নিল, সেটা আমাদের জানা নেই। নমুনা তো কোনোভাবেই বাইরে যাওয়ার কথা নয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘তারা দেখাতে চেয়েছেন বর্তমান সরকারের আমলে শিক্ষার যথেষ্ট অগ্রগতি হয়েছে। এটা একটা প্রোপাগান্ডার মতো। ডিপিইর কিছু মাথামোটা লোক এমনটা করেছে। এটা তো সরকারের ভালো-মন্দের কিছু নয়, বাচ্চাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে কথা। কাউকে ভালো দেখানোর জন্য এ কাজটা করা ঠিক হয়নি।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক মো. মুজিবুর রহমান বলেন, ‘প্রশ্ন হুবহু বা বড় একটি অংশ মিলে যাওয়া এক ধরনের অপরাধ। এটা অসততা ও দুর্নীতির মধ্যে পড়ে। এর ফলে আমরা যে উদ্দেশ্য নিয়ে মূল্যায়ন করলাম তা শতভাগ বিফল হলো। এ মূল্যায়ন করা আর না করা সমান কথা। এমনটা করায় আগামীতে মূল্যায়নের ক্ষেত্রে এর প্রভাব পড়বে। এটা আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য দুর্যোগ।’

এ বিষয়ে জানতে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের পরিচালক উত্তম কুমার দাস ও মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াতকে ফোন করা হলেও তারা রিসিভ করেননি।