সফল হওয়ার দশ উপায়

যারীন তাসনিম

ড. এ পি জে আবদুল কালাম

ভারতীয় বিজ্ঞানী, সাবেক রাষ্ট্রপতি ড. এ পি জে আবদুল কালাম। তরুণদের জন্য তিনি এক বিস্ময়কর অনুপ্রেরণা। শিক্ষক-শিক্ষার্থী এমনকি রাজনীতিবিদদের অনেকেই তাঁকে অনুকরণীয় হিসেবে গ্রহণ করেন। এ পি জে আবদুল কালাম ও তাঁর জীবনপদ্ধতি মানুষের জন্য শিক্ষণীয়। তাঁর কিছু মূল্যবান ও প্রেরণাদায়ী বক্তব্য থেকে সফলতার ১০টি উপায় তুলে ধরা হলো:

নিজের স্বপ্নকে অনুসরণ করুন 
পারিপার্শ্বিকতা অথবা পরিস্থিতির শিকার হয়ে নিজের অপছন্দনীয় যেকোনো কাজের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার অর্থ নিজের স্বপ্নকে হত্যা করা। কোনো কিছুর বিনিময়েই নিজের স্বপ্নের সঙ্গে, নিজের ইচ্ছার সঙ্গে আপস করবেন না। স্বপ্ন সেটা নয়, যা আমরা ঘুমিয়ে দেখি; বরং স্বপ্ন সেটাই, যেটা পূরণ করার তাগিদ আমাদের ঘুমাতে দেয় না। তাই আপনি যদি জীবনে সফল হতে চান, অবশ্যই নিজের স্বপ্নপূরণে কাজ করুন। স্বপ্ন চিন্তায় রূপান্তরিত হয় এবং চিন্তার ফলাফল একটি কর্মে পরিণত হয়। কর্মই মানুষকে সাফল্যের দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়। অতএব, নিজের স্বপ্নকে অনুসরণ করুন।

শেখা থামাবেন না 
জীবনে নতুন কিছু, ভিন্ন কিছু শেখার জন্য সর্বদা প্রস্তুত থাকুন। জীবন আমাদের অনেক কিছু শেখায়। জীবনের কাছ থেকে শিক্ষাগ্রহণ করা কখনো বন্ধ করবেন না। আমরা সবাই জীবনের কাছে একেকজন শিক্ষার্থী। কারণ এই শেখাই আমাদের সৃজনশীল করে তোলে। সৃজনশীলতা মানুষকে চিন্তার দিকে ধাবিত করে, চিন্তা মানুষকে জ্ঞান দান করে। আর এই অর্জিত জ্ঞানই মানুষকে অসাধারণ করে তোলে, পরিণত করে তোলে অন্যদের থেকে আলাদা এক মানুষে। তাই কখনো শেখা বন্ধ করবেন না, সর্বদাই শিখতে থাকুন।

নিজের মতো হতে শিখুন 
কখনো অন্য কারও মতো হওয়ার চেষ্টা করবেন না, আপনি শুধু আপনিই। আপনি জীবনে কী হতে চান তা নিজে স্থির করুন। নিজের জীবনে সিদ্ধান্তগুলো নিজেই ঠিক করুন। অন্যদের দেখানো পথে না হেঁটে নিজের জন্য অনন্য এক পথ তৈরি করুন; সেই পথই আপনাকে অন্যদের থেকে আলাদা করে তুলবে।

সীমাবদ্ধতাকে ভেঙে ফেলুন 
আপনার অবশ্যই নিজস্ব একটি দৃষ্টিভঙ্গি থাকতে হবে। নিরবচ্ছিন্নভাবে জ্ঞানার্জনের স্পৃহা বজায় রাখুন। নিয়মিত কঠোর পরিশ্রম ও প্রচেষ্টা চালিয়ে যান। প্রতিকূলতাকে কখনো ভয় পাবেন না; প্রতিকূলতাগুলোই আমাদের সম্ভাবনাকে প্রমাণ করার সুযোগ করে দেয়। সামাজিক সীমাবদ্ধতা, চিন্তাধারাকে ভেঙে নিজের নতুন চিন্তাধারা তৈরি করুন। নিজের উদ্ভাবনী ক্ষমতা দিয়ে তৈরি করুন নতুন চিন্তার জগৎ। নিজেকে বদলে ফেলুন, নিজের সীমাবদ্ধতাগুলোকে ভেঙে ফেলে নিজের স্বপ্নকে গড়ে তুলুন।

কাজ করুন একাগ্রতার সঙ্গে 
সততা, একাগ্রতা ও ধৈর্যের সঙ্গে কাজ করুন। দলগতভাবে কাজ করার অভ্যাস গড়ে তুলুন, কারণ দলীয় কাজ বিরাট সাফল্য এনে দেয়।

ফলাফল সম্পর্কে ভাবুন
কোনো কাজ শুরু করার আগে এর ফলাফল সম্পর্কে চিন্তা করুন। কাজ শেষ হওয়ার আগেই ফলাফলের কথা ভাবুন। আপনার সম্ভাবনাকে বিশ্লেষণ করুন। কোনো কাজে নিজের দক্ষতা প্রয়োগের আগেই এর ফলাফলের উপকারিতা যাচাই করুন।

ব্যর্থতাকে মেনে নিন 
আপনি যদি সাফল্যকে ধরে রাখতে চান, তাহলে আপনাকে অবশ্যই ব্যর্থতাকে সামলানো শিখতে হবে। ব্যর্থতাই সফলতার প্রথম ধাপ। ব্যর্থতাকে মেনে নিয়ে নিজেকে উন্নত মানুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করুন, তাহলেই আপনি আপনার স্বপ্ন পূরণে সফল হবেন।

ন্যায়পরায়ণতাই শান্তি আনে
আপনি যদি জীবনে সুখী হতে চান, তাহলে আপনাকে অবশ্যই কিছু না কিছু দেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। হতে পারে এটা মুচকি হাসি অথবা সদয় কিছু শব্দ, যা অন্যদের সুখী করবে। মানবধর্মের এটাই সবচেয়ে বড় কাজ। হৃদয়ের ন্যায়পরায়ণতাই চারিত্রিক সৌন্দর্যকে ফুটিয়ে তোলে। চারিত্রিক সৌন্দর্য পারিবারিক সম্প্রীতি সৃষ্টি করে, জাতিগতভাবে সৌহার্দ্য জন্ম নেয়। এভাবেই সমগ্র পৃথিবী শান্তির শৃঙ্খলে আবদ্ধ করে তোলে ন্যায়পরায়ণতা।

নিজের কাজকে ভালোবাসুন
নিজের কাজকে ভালোবাসুন, কোনো প্রতিষ্ঠানকে নয়। নিজের কাজের ব্যাপারে সক্রিয় থাকুন। নিজের কাজের দায়িত্ব নিতে শিখুন। আপনি যা করতে ভালোবাসেন, সেটাই করুন। সাফল্যকে নিজের লক্ষ্য বানান। আপনি যা ভালোবাসেন তা শতভাগ প্রচেষ্টা দিয়ে করুন, তাহলেই আপনি সফল হবেন।

উৎসাহ দিন শেখার জন্য 
যুবসমাজের জন্য একজন শিক্ষক হোন। নিজের জ্ঞান, চিন্তা, ধ্যান-ধারণা সবার মাঝে ছড়িয়ে দিন। কারও শিক্ষক হতে পারা অনেক বড় প্রাপ্তি এবং আনন্দের বিষয়। কোনো জাতির মহৎ ব্যক্তিদের সব সময়ই ক্লাসরুম থেকেই পাওয়া যায়। তাই একজন শিক্ষক হোন এবং সব সময় অন্যদের উৎসাহিত করুন।
তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া, রোওরিং ক্রিয়েশন ফিল্মস

অনুবাদ: যারীন তাসনিম

সফল হওয়ার দশ উপায়

যারীন তাসনিম

ড. এ পি জে আবদুল কালাম

ভারতীয় বিজ্ঞানী, সাবেক রাষ্ট্রপতি ড. এ পি জে আবদুল কালাম। তরুণদের জন্য তিনি এক বিস্ময়কর অনুপ্রেরণা। শিক্ষক-শিক্ষার্থী এমনকি রাজনীতিবিদদের অনেকেই তাঁকে অনুকরণীয় হিসেবে গ্রহণ করেন। এ পি জে আবদুল কালাম ও তাঁর জীবনপদ্ধতি মানুষের জন্য শিক্ষণীয়। তাঁর কিছু মূল্যবান ও প্রেরণাদায়ী বক্তব্য থেকে সফলতার ১০টি উপায় তুলে ধরা হলো:

নিজের স্বপ্নকে অনুসরণ করুন 
পারিপার্শ্বিকতা অথবা পরিস্থিতির শিকার হয়ে নিজের অপছন্দনীয় যেকোনো কাজের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার অর্থ নিজের স্বপ্নকে হত্যা করা। কোনো কিছুর বিনিময়েই নিজের স্বপ্নের সঙ্গে, নিজের ইচ্ছার সঙ্গে আপস করবেন না। স্বপ্ন সেটা নয়, যা আমরা ঘুমিয়ে দেখি; বরং স্বপ্ন সেটাই, যেটা পূরণ করার তাগিদ আমাদের ঘুমাতে দেয় না। তাই আপনি যদি জীবনে সফল হতে চান, অবশ্যই নিজের স্বপ্নপূরণে কাজ করুন। স্বপ্ন চিন্তায় রূপান্তরিত হয় এবং চিন্তার ফলাফল একটি কর্মে পরিণত হয়। কর্মই মানুষকে সাফল্যের দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়। অতএব, নিজের স্বপ্নকে অনুসরণ করুন।

শেখা থামাবেন না 
জীবনে নতুন কিছু, ভিন্ন কিছু শেখার জন্য সর্বদা প্রস্তুত থাকুন। জীবন আমাদের অনেক কিছু শেখায়। জীবনের কাছ থেকে শিক্ষাগ্রহণ করা কখনো বন্ধ করবেন না। আমরা সবাই জীবনের কাছে একেকজন শিক্ষার্থী। কারণ এই শেখাই আমাদের সৃজনশীল করে তোলে। সৃজনশীলতা মানুষকে চিন্তার দিকে ধাবিত করে, চিন্তা মানুষকে জ্ঞান দান করে। আর এই অর্জিত জ্ঞানই মানুষকে অসাধারণ করে তোলে, পরিণত করে তোলে অন্যদের থেকে আলাদা এক মানুষে। তাই কখনো শেখা বন্ধ করবেন না, সর্বদাই শিখতে থাকুন।

নিজের মতো হতে শিখুন 
কখনো অন্য কারও মতো হওয়ার চেষ্টা করবেন না, আপনি শুধু আপনিই। আপনি জীবনে কী হতে চান তা নিজে স্থির করুন। নিজের জীবনে সিদ্ধান্তগুলো নিজেই ঠিক করুন। অন্যদের দেখানো পথে না হেঁটে নিজের জন্য অনন্য এক পথ তৈরি করুন; সেই পথই আপনাকে অন্যদের থেকে আলাদা করে তুলবে।

সীমাবদ্ধতাকে ভেঙে ফেলুন 
আপনার অবশ্যই নিজস্ব একটি দৃষ্টিভঙ্গি থাকতে হবে। নিরবচ্ছিন্নভাবে জ্ঞানার্জনের স্পৃহা বজায় রাখুন। নিয়মিত কঠোর পরিশ্রম ও প্রচেষ্টা চালিয়ে যান। প্রতিকূলতাকে কখনো ভয় পাবেন না; প্রতিকূলতাগুলোই আমাদের সম্ভাবনাকে প্রমাণ করার সুযোগ করে দেয়। সামাজিক সীমাবদ্ধতা, চিন্তাধারাকে ভেঙে নিজের নতুন চিন্তাধারা তৈরি করুন। নিজের উদ্ভাবনী ক্ষমতা দিয়ে তৈরি করুন নতুন চিন্তার জগৎ। নিজেকে বদলে ফেলুন, নিজের সীমাবদ্ধতাগুলোকে ভেঙে ফেলে নিজের স্বপ্নকে গড়ে তুলুন।

কাজ করুন একাগ্রতার সঙ্গে 
সততা, একাগ্রতা ও ধৈর্যের সঙ্গে কাজ করুন। দলগতভাবে কাজ করার অভ্যাস গড়ে তুলুন, কারণ দলীয় কাজ বিরাট সাফল্য এনে দেয়।

ফলাফল সম্পর্কে ভাবুন
কোনো কাজ শুরু করার আগে এর ফলাফল সম্পর্কে চিন্তা করুন। কাজ শেষ হওয়ার আগেই ফলাফলের কথা ভাবুন। আপনার সম্ভাবনাকে বিশ্লেষণ করুন। কোনো কাজে নিজের দক্ষতা প্রয়োগের আগেই এর ফলাফলের উপকারিতা যাচাই করুন।

ব্যর্থতাকে মেনে নিন 
আপনি যদি সাফল্যকে ধরে রাখতে চান, তাহলে আপনাকে অবশ্যই ব্যর্থতাকে সামলানো শিখতে হবে। ব্যর্থতাই সফলতার প্রথম ধাপ। ব্যর্থতাকে মেনে নিয়ে নিজেকে উন্নত মানুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করুন, তাহলেই আপনি আপনার স্বপ্ন পূরণে সফল হবেন।

ন্যায়পরায়ণতাই শান্তি আনে
আপনি যদি জীবনে সুখী হতে চান, তাহলে আপনাকে অবশ্যই কিছু না কিছু দেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। হতে পারে এটা মুচকি হাসি অথবা সদয় কিছু শব্দ, যা অন্যদের সুখী করবে। মানবধর্মের এটাই সবচেয়ে বড় কাজ। হৃদয়ের ন্যায়পরায়ণতাই চারিত্রিক সৌন্দর্যকে ফুটিয়ে তোলে। চারিত্রিক সৌন্দর্য পারিবারিক সম্প্রীতি সৃষ্টি করে, জাতিগতভাবে সৌহার্দ্য জন্ম নেয়। এভাবেই সমগ্র পৃথিবী শান্তির শৃঙ্খলে আবদ্ধ করে তোলে ন্যায়পরায়ণতা।

নিজের কাজকে ভালোবাসুন
নিজের কাজকে ভালোবাসুন, কোনো প্রতিষ্ঠানকে নয়। নিজের কাজের ব্যাপারে সক্রিয় থাকুন। নিজের কাজের দায়িত্ব নিতে শিখুন। আপনি যা করতে ভালোবাসেন, সেটাই করুন। সাফল্যকে নিজের লক্ষ্য বানান। আপনি যা ভালোবাসেন তা শতভাগ প্রচেষ্টা দিয়ে করুন, তাহলেই আপনি সফল হবেন।

উৎসাহ দিন শেখার জন্য 
যুবসমাজের জন্য একজন শিক্ষক হোন। নিজের জ্ঞান, চিন্তা, ধ্যান-ধারণা সবার মাঝে ছড়িয়ে দিন। কারও শিক্ষক হতে পারা অনেক বড় প্রাপ্তি এবং আনন্দের বিষয়। কোনো জাতির মহৎ ব্যক্তিদের সব সময়ই ক্লাসরুম থেকেই পাওয়া যায়। তাই একজন শিক্ষক হোন এবং সব সময় অন্যদের উৎসাহিত করুন।
তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া, রোওরিং ক্রিয়েশন ফিল্মস

অনুবাদ: যারীন তাসনিম