কাগজের দামে শিক্ষা খাত এলোমেলো

শরীফুল আলম সুমন

শিক্ষার প্রধান উপকরণ কাগজ। কাগজের দাম হু হু করে বাড়ছে। ফলে বেড়েছে কাগজ-সংশ্লিষ্ট প্রতিটি শিক্ষার উপকরণের দাম। বাড়ানো হয়েছে অন্যান্য শিক্ষা-উপকরণের দামও। কাগজের সংকটে মারাত্মক ব্যাহত হচ্ছে পাঠ্যবইয়ের মুদ্রণ। ৩৫ কোটি পাঠ্যবইয়ের মুদ্রণ ব্যাহত হচ্ছে।

অনেক স্কুল শিক্ষার্থীদের নিজ দায়িত্বে পরীক্ষার খাতা আনতে বলেছে। আবার অনেক অভিভাবক খাতা কেনা কমিয়ে দিয়েছেন। ফলে বিঘিœত হচ্ছে লেখাপড়া। কাগজের মূল্যবৃদ্ধিতে পুরোই এলোমেলো হয়ে পড়েছে শিক্ষা খাত।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রতি বছর অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত কাগজের চাহিদা থাকে সবচেয়ে বেশি। এ সময়ে বিনা মূল্যের বই ছাপা হয়। এ ছাড়া প্রতিটি শ্রেণিরই সহায়ক বই, বিভিন্ন ধরনের গাইড, নতুন বছরের ডায়েরি, ক্যালেন্ডার প্রভৃতির জন্য বিপুল পরিমাণ কাগজ লাগে।

এ বছর ডলার সংকটের কারণে লেটার অব ক্রেডিট (এলসি) খুলতে পারছেন না কাগজকলের মালিকরা। কাগজ তৈরির মূল উপাদান পাল্প আমদানি করতে পারছেন না তারা। ফলে কাগজ সংকট দৃঢ় হচ্ছে।

জানা যায়, একুশে বইমেলা উপলক্ষে নতুন নতুন বই প্রকাশের কাজও শুরু হয় মূলত নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে। এ সময়েই লেখকদের কাছ থেকে পা-ুলিপি জমা নেন প্রকাশকরা। কিন্তু অনেক প্রকাশক কাগজের দাম বাড়ার কারণে আগামী একুশে বইমেলায় নতুন বই প্রকাশ করবেন না বলে জানিয়েছেন।

পুঁথিনিলয় প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী শ্যামল পাল দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘কাগজের দাম প্রায় তিন গুণ। বইয়ের দাম তো আমরা তিন গুণ করতে পারছি না। তাহলে বইগুলো পাঠকের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাবে। প্রকাশকরা আগামী বইমেলা উপলক্ষে নতুন বই প্রকাশে সমস্যা বোধ করছেন। আগে যিনি ৫০টি নতুন বই বের করতেন, তিনি হয়তো ১৫টি করবেন। এটা সাহিত্য বিকাশের ক্ষেত্রে বড় বাধা। সরকারের এ ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়া উচিত।’

পাঠ্যবই মুদ্রণকারীরা জানিয়েছেন, আগামী শিক্ষাবর্ষের ৩৫ কোটি বই ছাপার কাজ চলছে। কিন্তু প্রয়োজনীয় কাগজ পাওয়া যাচ্ছে না। মিল মালিকদের কাগজ বাবদ অগ্রিম টাকা দেওয়া হলেও তারা কাগজ দিতে পারছেন না। মাস তিনেক আগে মিলে প্রতি টন হোয়াইট প্রিন্ট ৯০ থেকে ৯৫ হাজার টাকায় পাওয়া যেত। এখন সেই কাগজের দাম প্রায় ১ লাখ ৩০ হাজার টাকায় পৌঁছেছে। পাশাপাশি কাগজের সরবরাহও কমিয়ে দিয়েছে তারা।

বাংলাদেশ মুদ্রণশিল্প সমিতির সাধারণ সম্পাদক জহুরুল ইসলাম দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘কাগজ পাওয়া যাচ্ছে না। পাল্প নেই, ওয়েস্টেজ নেই, নিউজপ্রিন্ট নেই। পাল্প আমদানির জন্য এলসি খুলতে পারছে না মিল মালিকরা। মুদ্রণকারীরা কাগজের প্রতি টন ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত ধরে কাজ পেয়েছে। এখন সেই কাগজ ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা।’

তিনি বলেন, ‘যারা বিনা মূল্যের পাঠ্যবইয়ের কাজ করেন, তাদের অনেকেই আগেভাগে কাগজ কিনে রাখেন। এ বছর দেরিতে কার্যাদেশ দেওয়ায় কাগজের দাম বেশি ছিল। ফলে খুব বেশি কাগজ কিনে রাখা সম্ভব হয়নি। এখন কাগজের দাম বেশি। ফলে প্রেসগুলো ধীরে চালানো হচ্ছে। কাগজ পাওয়া না গেলে প্রেসগুলো এমনিতেই বন্ধ হয়ে যাবে। দ্রুত কাগজের সংকটের সমাধান না করতে পারলে বছরের প্রথম দিন অর্ধেক বই দিয়ে পাঠ্যপুস্তক উৎসব করতে হবে।’

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. ফরহাদুল ইসলাম দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আমরা প্রায় প্রতিদিন কাগজকল মালিকদের সঙ্গে বসছি। ব্রাইটনেসে কিছুটা ছাড় দিয়েছি। ফলে ভার্জিন পাল্প ব্যবহার না করেই কাগজ উৎপাদন করতে পারছেন মালিকরা। কাগজের সংকট থাকলেও বিনা মূল্যের পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণের জন্য কাগজের সংকট হবে না। সে আশ^াস আমাদের মালিকরা দিয়েছেন। প্রেসগুলো নিয়মিতভাবে বই ছেপে যাচ্ছে। যথাসময়েই আমাদের কাজ শেষ করতে পারব। বছরের প্রথম দিনেই উৎসব করে আমরা সব শিক্ষার্থীর হাতে নতুন বই তুলে দিতে পারব।’

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, বই-খাতার পাশাপাশি প্রায় প্রতিটি শিক্ষা-উপকরণের দাম বেড়েছে ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ। মানভেদে খাতার দাম বেড়েছে ৫ থেকে ২০ টাকা। কলমের দাম বেড়েছে ডজনপ্রতি ১০ থেকে ১৫ টাকা। মার্কিং করার ছোট কালার পেনের দাম পাঁচ টাকা বেড়েছে। আগে যে প্রাকটিক্যাল খাতা ৮০ থেকে ৮৫ টাকা ছিল, এখন বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকায়। স্টিলের স্কেল ১০ টাকা ও প্লাস্টিকের স্কেলের দাম বেড়েছে ৫ টাকা। জ্যামিতি বক্সের দামও বেড়েছে ২০ থেকে ৩০ টাকা।

বাজারে ফটোকপির চার্জও বেড়েছে। আগে এক পৃষ্ঠা ফটোকপি করতে খরচ হতো দেড় থেকে দুই টাকা। এখন খরচ হয় আড়াই থেকে তিন টাকা। পাড়া-মহল্লায় ফটোকপির চার্জ আরও বেশি। প্রতিটি প্লাস্টিক ফাইলের দাম ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়েছে। প্রতি ডজন পেনসিল ও রাবার ১০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত বেশি দিয়ে কিনতে হচ্ছে অভিভাবকদের।

নাম প্রকাশ না করে মিরপুরের একজন অভিভাবক বলেন, ‘আমার ছেলে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। ওর অনেক খাতার দরকার হয়। আগে বিভিন্ন কোম্পানির বাইন্ডিং খাতা কিনে দিতাম। দাম বাড়ার কারণে খাতা কেনা কমিয়ে দিয়েছি। এখন দিস্তা খাতাই বেশি কিনে দিচ্ছি। শুধু খাতাই নয়, প্রতিটি শিক্ষা-উপকরণেরই দাম বেড়েছে। সন্তানের লেখাপড়ার খরচ জোগাতেই এখন হিমশিম খাচ্ছি।’

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের এক আদেশেও কাগজ সংকটের চিত্র ফুটে উঠেছে। প্রাথমিকের বার্ষিক পরীক্ষা শুরু ৬ ডিসেম্বর। কিন্তু পরীক্ষায় এবার আগের মতো প্রশ্ন-খাতা দেওয়া হবে না। শ্রেণিকক্ষের বোর্ডে প্রশ্ন লিখে দেওয়া হবে আর বাড়ি থেকে খাতা নিয়ে যাবে শিশুরা।

আদেশে এ-ও বলা হয়েছে, ‘বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষের বোর্ডে প্রশ্নপত্র লিখে মূল্যায়ন কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে। কোনো শ্রেণিতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি হলে প্রশ্নপত্র হাতে লিখে ফটোকপি করে নেওয়া যেতে পারে। প্রশ্নপত্র ফটোকপির প্রয়োজন হলে বিদ্যালয়ের আনুষঙ্গিক খাত থেকে ব্যয় করা যাবে। কোনো অবস্থাতেই প্রশ্নপত্র ছাপানো যাবে না। চূড়ান্ত মূল্যায়নের জন্য প্রয়োজনীয়সংখ্যক সাদা কাগজ বাড়ি থেকে নিয়ে আসার জন্য আগেই শিক্ষার্থীদের জানাতে হবে।’

কাগজের দামে শিক্ষা খাত এলোমেলো

শরীফুল আলম সুমন

শিক্ষার প্রধান উপকরণ কাগজ। কাগজের দাম হু হু করে বাড়ছে। ফলে বেড়েছে কাগজ-সংশ্লিষ্ট প্রতিটি শিক্ষার উপকরণের দাম। বাড়ানো হয়েছে অন্যান্য শিক্ষা-উপকরণের দামও। কাগজের সংকটে মারাত্মক ব্যাহত হচ্ছে পাঠ্যবইয়ের মুদ্রণ। ৩৫ কোটি পাঠ্যবইয়ের মুদ্রণ ব্যাহত হচ্ছে।

অনেক স্কুল শিক্ষার্থীদের নিজ দায়িত্বে পরীক্ষার খাতা আনতে বলেছে। আবার অনেক অভিভাবক খাতা কেনা কমিয়ে দিয়েছেন। ফলে বিঘিœত হচ্ছে লেখাপড়া। কাগজের মূল্যবৃদ্ধিতে পুরোই এলোমেলো হয়ে পড়েছে শিক্ষা খাত।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রতি বছর অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত কাগজের চাহিদা থাকে সবচেয়ে বেশি। এ সময়ে বিনা মূল্যের বই ছাপা হয়। এ ছাড়া প্রতিটি শ্রেণিরই সহায়ক বই, বিভিন্ন ধরনের গাইড, নতুন বছরের ডায়েরি, ক্যালেন্ডার প্রভৃতির জন্য বিপুল পরিমাণ কাগজ লাগে।

এ বছর ডলার সংকটের কারণে লেটার অব ক্রেডিট (এলসি) খুলতে পারছেন না কাগজকলের মালিকরা। কাগজ তৈরির মূল উপাদান পাল্প আমদানি করতে পারছেন না তারা। ফলে কাগজ সংকট দৃঢ় হচ্ছে।

জানা যায়, একুশে বইমেলা উপলক্ষে নতুন নতুন বই প্রকাশের কাজও শুরু হয় মূলত নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে। এ সময়েই লেখকদের কাছ থেকে পা-ুলিপি জমা নেন প্রকাশকরা। কিন্তু অনেক প্রকাশক কাগজের দাম বাড়ার কারণে আগামী একুশে বইমেলায় নতুন বই প্রকাশ করবেন না বলে জানিয়েছেন।

পুঁথিনিলয় প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী শ্যামল পাল দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘কাগজের দাম প্রায় তিন গুণ। বইয়ের দাম তো আমরা তিন গুণ করতে পারছি না। তাহলে বইগুলো পাঠকের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাবে। প্রকাশকরা আগামী বইমেলা উপলক্ষে নতুন বই প্রকাশে সমস্যা বোধ করছেন। আগে যিনি ৫০টি নতুন বই বের করতেন, তিনি হয়তো ১৫টি করবেন। এটা সাহিত্য বিকাশের ক্ষেত্রে বড় বাধা। সরকারের এ ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়া উচিত।’

পাঠ্যবই মুদ্রণকারীরা জানিয়েছেন, আগামী শিক্ষাবর্ষের ৩৫ কোটি বই ছাপার কাজ চলছে। কিন্তু প্রয়োজনীয় কাগজ পাওয়া যাচ্ছে না। মিল মালিকদের কাগজ বাবদ অগ্রিম টাকা দেওয়া হলেও তারা কাগজ দিতে পারছেন না। মাস তিনেক আগে মিলে প্রতি টন হোয়াইট প্রিন্ট ৯০ থেকে ৯৫ হাজার টাকায় পাওয়া যেত। এখন সেই কাগজের দাম প্রায় ১ লাখ ৩০ হাজার টাকায় পৌঁছেছে। পাশাপাশি কাগজের সরবরাহও কমিয়ে দিয়েছে তারা।

বাংলাদেশ মুদ্রণশিল্প সমিতির সাধারণ সম্পাদক জহুরুল ইসলাম দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘কাগজ পাওয়া যাচ্ছে না। পাল্প নেই, ওয়েস্টেজ নেই, নিউজপ্রিন্ট নেই। পাল্প আমদানির জন্য এলসি খুলতে পারছে না মিল মালিকরা। মুদ্রণকারীরা কাগজের প্রতি টন ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত ধরে কাজ পেয়েছে। এখন সেই কাগজ ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা।’

তিনি বলেন, ‘যারা বিনা মূল্যের পাঠ্যবইয়ের কাজ করেন, তাদের অনেকেই আগেভাগে কাগজ কিনে রাখেন। এ বছর দেরিতে কার্যাদেশ দেওয়ায় কাগজের দাম বেশি ছিল। ফলে খুব বেশি কাগজ কিনে রাখা সম্ভব হয়নি। এখন কাগজের দাম বেশি। ফলে প্রেসগুলো ধীরে চালানো হচ্ছে। কাগজ পাওয়া না গেলে প্রেসগুলো এমনিতেই বন্ধ হয়ে যাবে। দ্রুত কাগজের সংকটের সমাধান না করতে পারলে বছরের প্রথম দিন অর্ধেক বই দিয়ে পাঠ্যপুস্তক উৎসব করতে হবে।’

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. ফরহাদুল ইসলাম দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আমরা প্রায় প্রতিদিন কাগজকল মালিকদের সঙ্গে বসছি। ব্রাইটনেসে কিছুটা ছাড় দিয়েছি। ফলে ভার্জিন পাল্প ব্যবহার না করেই কাগজ উৎপাদন করতে পারছেন মালিকরা। কাগজের সংকট থাকলেও বিনা মূল্যের পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণের জন্য কাগজের সংকট হবে না। সে আশ^াস আমাদের মালিকরা দিয়েছেন। প্রেসগুলো নিয়মিতভাবে বই ছেপে যাচ্ছে। যথাসময়েই আমাদের কাজ শেষ করতে পারব। বছরের প্রথম দিনেই উৎসব করে আমরা সব শিক্ষার্থীর হাতে নতুন বই তুলে দিতে পারব।’

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, বই-খাতার পাশাপাশি প্রায় প্রতিটি শিক্ষা-উপকরণের দাম বেড়েছে ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ। মানভেদে খাতার দাম বেড়েছে ৫ থেকে ২০ টাকা। কলমের দাম বেড়েছে ডজনপ্রতি ১০ থেকে ১৫ টাকা। মার্কিং করার ছোট কালার পেনের দাম পাঁচ টাকা বেড়েছে। আগে যে প্রাকটিক্যাল খাতা ৮০ থেকে ৮৫ টাকা ছিল, এখন বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকায়। স্টিলের স্কেল ১০ টাকা ও প্লাস্টিকের স্কেলের দাম বেড়েছে ৫ টাকা। জ্যামিতি বক্সের দামও বেড়েছে ২০ থেকে ৩০ টাকা।

বাজারে ফটোকপির চার্জও বেড়েছে। আগে এক পৃষ্ঠা ফটোকপি করতে খরচ হতো দেড় থেকে দুই টাকা। এখন খরচ হয় আড়াই থেকে তিন টাকা। পাড়া-মহল্লায় ফটোকপির চার্জ আরও বেশি। প্রতিটি প্লাস্টিক ফাইলের দাম ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়েছে। প্রতি ডজন পেনসিল ও রাবার ১০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত বেশি দিয়ে কিনতে হচ্ছে অভিভাবকদের।

নাম প্রকাশ না করে মিরপুরের একজন অভিভাবক বলেন, ‘আমার ছেলে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। ওর অনেক খাতার দরকার হয়। আগে বিভিন্ন কোম্পানির বাইন্ডিং খাতা কিনে দিতাম। দাম বাড়ার কারণে খাতা কেনা কমিয়ে দিয়েছি। এখন দিস্তা খাতাই বেশি কিনে দিচ্ছি। শুধু খাতাই নয়, প্রতিটি শিক্ষা-উপকরণেরই দাম বেড়েছে। সন্তানের লেখাপড়ার খরচ জোগাতেই এখন হিমশিম খাচ্ছি।’

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের এক আদেশেও কাগজ সংকটের চিত্র ফুটে উঠেছে। প্রাথমিকের বার্ষিক পরীক্ষা শুরু ৬ ডিসেম্বর। কিন্তু পরীক্ষায় এবার আগের মতো প্রশ্ন-খাতা দেওয়া হবে না। শ্রেণিকক্ষের বোর্ডে প্রশ্ন লিখে দেওয়া হবে আর বাড়ি থেকে খাতা নিয়ে যাবে শিশুরা।

আদেশে এ-ও বলা হয়েছে, ‘বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষের বোর্ডে প্রশ্নপত্র লিখে মূল্যায়ন কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে। কোনো শ্রেণিতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি হলে প্রশ্নপত্র হাতে লিখে ফটোকপি করে নেওয়া যেতে পারে। প্রশ্নপত্র ফটোকপির প্রয়োজন হলে বিদ্যালয়ের আনুষঙ্গিক খাত থেকে ব্যয় করা যাবে। কোনো অবস্থাতেই প্রশ্নপত্র ছাপানো যাবে না। চূড়ান্ত মূল্যায়নের জন্য প্রয়োজনীয়সংখ্যক সাদা কাগজ বাড়ি থেকে নিয়ে আসার জন্য আগেই শিক্ষার্থীদের জানাতে হবে।’