গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেসবুক পেইজ হ্যাক, কারণ অপেশাদারিত্ব

মোজাহিদুল ইসলাম নিরব

গণ বিশ্ববিদ্যালয়।

অপেশাদারীত্ব ও গাফিলতির মধ্য দিয়ে নিয়ন্ত্রিত হতো গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের (গবি) অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজ। যার ফলপ্রসূতে গত শনিবার (৬ মে) রাত ১০টায় হ্যাক হয়ে যায় পেইজটি। তখনই বিষয়টি প্রশাসনের দৃষ্টিগোচর হলে দায়িত্বপ্রাপ্ত এডমিনরা একাধিকবার চেষ্টা করেও আর পেইজে প্রবেশ করতে পারেনি।

পরদিন (৭ মে) সকালেই আশুলিয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয় এবং সাইবার সিকিউরিটি বিভাগে বিষয়টি অবহিত করা হয়। তাতে কোনো কাঙ্ক্ষিত ফলাফল না আসায় এবং পেইজে অসঙ্গতিপূর্ণ ও অসামঞ্জস্য প্রোফাইল ফটো, কাভার ফটো এবং পোস্ট আপলোড করায় একটি সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে গণ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

মঙ্গলবার (৯ মে) রেজিস্ট্রার এস তাসাদ্দেক আহমেদ স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসিয়াল ফেইসবুক পেইজটির যেকোনো ধরনের পোস্ট কিংবা মেসেজ এড়িয়ে যাওয়ার জন্য সকলকে অনুরোধ করা হয়।

এই বিষয়ে পেইজের এডমিন ও সিএসই বিভাগের সিনিয়র প্রভাষক মো. আতিকুর রহমান জানান, এক বছর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচারণার স্বার্থে আমি আমার আইডি থেকে অফিসিয়াল এই পেইজটি খুলি। যেখানে আমি ছাড়াও আরো তিনজন এডমিন ছিলেন। যারা ডেইলি প্রোগ্রামগুলোর পোস্ট করতেন এবং ভর্তির বিজ্ঞাপনসহ সকল পোস্ট বুস্ট করতেন।

তিনি আরও বলেন, পেইজ খোলার সময় ভেরিফাই করা হয়নি। তখন শুধু ইমেইলের মাধ্যমে ফেসবুক কর্মকর্তাদের জানিয়ে রেখেছিলাম, তবে টেকনিক্যাল ইস্যুর কারণে তাদের কাছ থেকে সাড়া পাওয়া যায়নি।

পেইজের অন্য এডমিন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোগ্রামার মো. সাদ্দাম হোসাইন রুবেল বলেন, একটা ওয়েব সাইট যখন খোলা হয় তখন তার যাবতীয় সিকিউরিটি সিস্টেম আমাদের কাছেই থাকে। তখন কেউ সিস্টেম ব্রেক করতে গেলে বিষয়টি দ্রুত দৃষ্টিগোচর হবে এবং তা করাটাও যথেষ্ট কষ্টসাধ্য।

তবে ফেইসবুকের পেইজের ক্ষেত্রে বিষয় টা ভিন্ন বলে মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন, যেহেতু অফিসিয়াল পেইজ ছিল তাই ভেরিফাই করা জরুরি ছিলো। কিন্তু ফেইসবুকের নিজস্ব কিছু নীতিমালা আছে যা পূর্ণ না হওয়ায় ভেরিফাই করা সম্ভব হয়নি। আমরা যখনই সব শর্ত পূরণের প্রায় কাছাকাছি ছিলাম তখনই পেইজটি হ্যাক হয়ে যায়।

পেইজের আরেক এডমিন ও বায়োকেমিস্ট্রি ও মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের প্রধান সিনিয়র অধ্যাপক ড. ফুয়াদ হোসেন এডমিনদের দুর্বলতা স্বীকার করে বলেন, এই পেইজ খোলার সময় থেকেই বিভিন্ন সমস্যা রয়েছে। পেইজটি অন্য একজনের ফেসবুক একাউন্ট থেকে খোলা হয়েছিল। এটা খোলার সময় ব্যবহৃত মোবাইল নম্বর, ইমেইল সবই ছিল ব্যক্তিগত। মূলত কার তথ্য দিয়ে এটি খোলা হয়েছে তাও আমি নিশ্চিত না।

কারণ হিসেবে তিনি জানান, যখন পেইজটি খোলা হয়েছে তখন অফিশিয়াল কোনো ই-মেইল না থাকায় ব্যক্তিগত তথ্যাদি দিয়ে খুলতে হয়েছিল। এতে উল্লেখযোগ্য ফলোয়ার থাকায় আমরা যারা এডমিন ছিলাম আমরা এ বিষয়গুলোতে এতদিন গুরুত্ব দেইনি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসিয়াল এই পেইজটা কে খুলেছে বা কারা চালাচ্ছে তা জানেন না দাবি করে রেজিস্ট্রার এস তাসাদ্দেক আহমেদ বলেন, আমি আসার আগে হয়তো কেউ খুলেছে। আমি জানলে অনেক আগেই সিকিউরিটির বিষয়টি নিশ্চিত করতাম।

তিনি আরও জানান, আশুলিয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে এবং সাইবার সিকিউরিটি বিভাগ এবং ফেসবুকে জানানো হয়েছে। তারা বিষয়টি দেখছেন।

শুধুমাত্র অফিসিয়াল পেইজ নয়, একাধিক বিভাগীয় ফেসবুক পেইজ চলছে এমন নিরাপত্তাহীনতায় ও অফিসিয়াল তথ্যদি ব্যবহার না করে। যার ফলে প্রায়ই এভাবে নষ্ট হয়ে যায় বিভাগীয় পেইজগুলো।

ইবিহো/এসএস

গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেসবুক পেইজ হ্যাক, কারণ অপেশাদারিত্ব

মোজাহিদুল ইসলাম নিরব

গণ বিশ্ববিদ্যালয়।

অপেশাদারীত্ব ও গাফিলতির মধ্য দিয়ে নিয়ন্ত্রিত হতো গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের (গবি) অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজ। যার ফলপ্রসূতে গত শনিবার (৬ মে) রাত ১০টায় হ্যাক হয়ে যায় পেইজটি। তখনই বিষয়টি প্রশাসনের দৃষ্টিগোচর হলে দায়িত্বপ্রাপ্ত এডমিনরা একাধিকবার চেষ্টা করেও আর পেইজে প্রবেশ করতে পারেনি।

পরদিন (৭ মে) সকালেই আশুলিয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয় এবং সাইবার সিকিউরিটি বিভাগে বিষয়টি অবহিত করা হয়। তাতে কোনো কাঙ্ক্ষিত ফলাফল না আসায় এবং পেইজে অসঙ্গতিপূর্ণ ও অসামঞ্জস্য প্রোফাইল ফটো, কাভার ফটো এবং পোস্ট আপলোড করায় একটি সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে গণ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

মঙ্গলবার (৯ মে) রেজিস্ট্রার এস তাসাদ্দেক আহমেদ স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসিয়াল ফেইসবুক পেইজটির যেকোনো ধরনের পোস্ট কিংবা মেসেজ এড়িয়ে যাওয়ার জন্য সকলকে অনুরোধ করা হয়।

এই বিষয়ে পেইজের এডমিন ও সিএসই বিভাগের সিনিয়র প্রভাষক মো. আতিকুর রহমান জানান, এক বছর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচারণার স্বার্থে আমি আমার আইডি থেকে অফিসিয়াল এই পেইজটি খুলি। যেখানে আমি ছাড়াও আরো তিনজন এডমিন ছিলেন। যারা ডেইলি প্রোগ্রামগুলোর পোস্ট করতেন এবং ভর্তির বিজ্ঞাপনসহ সকল পোস্ট বুস্ট করতেন।

তিনি আরও বলেন, পেইজ খোলার সময় ভেরিফাই করা হয়নি। তখন শুধু ইমেইলের মাধ্যমে ফেসবুক কর্মকর্তাদের জানিয়ে রেখেছিলাম, তবে টেকনিক্যাল ইস্যুর কারণে তাদের কাছ থেকে সাড়া পাওয়া যায়নি।

পেইজের অন্য এডমিন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোগ্রামার মো. সাদ্দাম হোসাইন রুবেল বলেন, একটা ওয়েব সাইট যখন খোলা হয় তখন তার যাবতীয় সিকিউরিটি সিস্টেম আমাদের কাছেই থাকে। তখন কেউ সিস্টেম ব্রেক করতে গেলে বিষয়টি দ্রুত দৃষ্টিগোচর হবে এবং তা করাটাও যথেষ্ট কষ্টসাধ্য।

তবে ফেইসবুকের পেইজের ক্ষেত্রে বিষয় টা ভিন্ন বলে মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন, যেহেতু অফিসিয়াল পেইজ ছিল তাই ভেরিফাই করা জরুরি ছিলো। কিন্তু ফেইসবুকের নিজস্ব কিছু নীতিমালা আছে যা পূর্ণ না হওয়ায় ভেরিফাই করা সম্ভব হয়নি। আমরা যখনই সব শর্ত পূরণের প্রায় কাছাকাছি ছিলাম তখনই পেইজটি হ্যাক হয়ে যায়।

পেইজের আরেক এডমিন ও বায়োকেমিস্ট্রি ও মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের প্রধান সিনিয়র অধ্যাপক ড. ফুয়াদ হোসেন এডমিনদের দুর্বলতা স্বীকার করে বলেন, এই পেইজ খোলার সময় থেকেই বিভিন্ন সমস্যা রয়েছে। পেইজটি অন্য একজনের ফেসবুক একাউন্ট থেকে খোলা হয়েছিল। এটা খোলার সময় ব্যবহৃত মোবাইল নম্বর, ইমেইল সবই ছিল ব্যক্তিগত। মূলত কার তথ্য দিয়ে এটি খোলা হয়েছে তাও আমি নিশ্চিত না।

কারণ হিসেবে তিনি জানান, যখন পেইজটি খোলা হয়েছে তখন অফিশিয়াল কোনো ই-মেইল না থাকায় ব্যক্তিগত তথ্যাদি দিয়ে খুলতে হয়েছিল। এতে উল্লেখযোগ্য ফলোয়ার থাকায় আমরা যারা এডমিন ছিলাম আমরা এ বিষয়গুলোতে এতদিন গুরুত্ব দেইনি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসিয়াল এই পেইজটা কে খুলেছে বা কারা চালাচ্ছে তা জানেন না দাবি করে রেজিস্ট্রার এস তাসাদ্দেক আহমেদ বলেন, আমি আসার আগে হয়তো কেউ খুলেছে। আমি জানলে অনেক আগেই সিকিউরিটির বিষয়টি নিশ্চিত করতাম।

তিনি আরও জানান, আশুলিয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে এবং সাইবার সিকিউরিটি বিভাগ এবং ফেসবুকে জানানো হয়েছে। তারা বিষয়টি দেখছেন।

শুধুমাত্র অফিসিয়াল পেইজ নয়, একাধিক বিভাগীয় ফেসবুক পেইজ চলছে এমন নিরাপত্তাহীনতায় ও অফিসিয়াল তথ্যদি ব্যবহার না করে। যার ফলে প্রায়ই এভাবে নষ্ট হয়ে যায় বিভাগীয় পেইজগুলো।

ইবিহো/এসএস