গুগলের স্বপ্নপূরণ রিপনের

রিপন কুমার রায়ের জন্ম ও বেড়ে ওঠা দিনাজপুরে। তিনি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে স্নাতক করেছেন। পড়াশোনার পর বিদেশে কয়েকটি কোম্পানিতে চাকরি করেন। পাশাপাশি গুগলে আবেদন করেন এবং ইন্টারভিউর ধাপ পেরিয়ে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে চাকরির অফার পান। সবশেষে ২০২২ সালের ৪ এপ্রিল সুইজারল্যান্ডের জুরিখ ব্রাঞ্চে ‘সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার’ হিসেবে যোগদান করেন। তাঁর গুগলে চাকরি পাওয়ার গল্প, নতুনদের প্রতি পরামর্শ ও ভবিষ্যৎ সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়েছেন তিনি নিজেই।

রিপন কুমার রায়, সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার, গুগল। ছবি: লেখক

রিপন কুমার রায়ের জন্ম ও বেড়ে ওঠা দিনাজপুরে। তিনি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে স্নাতক করেছেন। পড়াশোনার পর বিদেশে কয়েকটি কোম্পানিতে চাকরি করেন। পাশাপাশি গুগলে আবেদন করেন এবং ইন্টারভিউর ধাপ পেরিয়ে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে চাকরির অফার পান। সবশেষে ২০২২ সালের ৪ এপ্রিল সুইজারল্যান্ডের জুরিখ ব্রাঞ্চে ‘সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার’ হিসেবে যোগদান করেন। তাঁর গুগলে চাকরি পাওয়ার গল্প, নতুনদের প্রতি পরামর্শ ও ভবিষ্যৎ সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়েছেন তিনি নিজেই।

গুগলে চাকরির পাওয়ার অনুভূতি গুগলে যেদিন শুনেছিলাম ফাইনাল ইন্টারভিউয়ে পাস করেছি, সেদিন খুব খুশি হয়েছিলাম। ফাইনাল ইন্টারভিউর মধ্যে একটা ইন্টারভিউ ভালো হয়নি, তাই ভেবেছিলাম পাস না-ও করতে পারি। কিন্তু অবশেষে সৃষ্টিকর্তার কৃপায় সফল হই। এ অনুভূতি খুবই রোমাঞ্চকর ছিল।

যখন থেকে প্রোগ্রামিং শেখা শুরু

প্রথম কম্পিউটার প্রোগ্রামের হাতেখড়ি হয় ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার পর। ভর্তি পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর থেকে ভার্সিটি শুরু হওয়ার আগে বেশ কয়েকটা মাস ফাঁকা পেয়েছিলাম। এর মধ্যেই সুবিন ভাইয়ের ‘কম্পিউটার প্রোগ্রামিং’ নামক বইটি পড়ে সি প্রোগ্রামিংয়ের কিছু বেসিক জ্ঞান ঠিক করে নিয়েছিলাম। এরপর ভার্সিটিতে ওঠার প্রথম থেকেই বিভিন্ন ধরনের কমপিটিশনে অংশগ্রহণ করতাম। বুয়েটে কম্পিটিটিভ প্রোগ্রামিংয়ের একটা অসাধারণ কালচার আছে। তার সুবাদেই বড় ভাইদের সঙ্গে পরিচয় আর প্রোগ্রামিংয়ে চর্চা শুরু হয়।

গুগলে চাকরি পাওয়ার পেছনে
গুগলে চাকরি পাওয়ার জন্য নিজেকে সামগ্রিকভাবে প্রস্তুত করতে হয়। প্রথমত, অ্যালগরিদম এবং ডেটা স্ট্রাকচারের মতো কম্পিউটারবিজ্ঞানের মৌলিক বিষয়গুলো সম্পর্কে নিজের ভালোমতো কনসেপ্ট ক্লিয়ার থাকা। দ্বিতীয়ত, জাভা, পাইথন বা সি++ এ রকম অন্তত একটি প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজে খুব দক্ষ এবং সমস্যা সমাধানের জন্য কোড লিখতে সক্ষম হওয়া। উপরন্তু সিস্টেম ডিজাইন ও বিহ্যাভিওরাল ইন্টারভিউর জন্যও নিজেকে ভালোভাবে প্রস্তুত করা। আমি মূলত এসবের ওপর জোর দিয়েছি।

প্রোগ্রামিং বিষয়টা অনেক বেশি মজার। বিভিন্ন অ্যালগরিদম আর ডেটা স্ট্রাকচার শেখা। নিয়মিত কোডিং কমপিটিশনে অংশগ্রহণ করা, অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট সবটাই কিন্তু অনেক রোমাঞ্চকর।

গুগলে চাকরির সুযোগ 
গুগলে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের পাশাপাশি সেলস, ইউএক্স ডিজাইন, মার্কেটিং, ফিন্যান্স, এইচইআর রিলেটেড চাকরি ইত্যাদির সুযোগ রয়েছে। কয়েকটি উল্লেখযোগ্য জব পজিশন হলো—সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার, প্রোডাক্ট ম্যানেজার, অ্যাকাউন্ট ম্যানেজার, ডেটা সায়েন্টিস্ট ও টেকনিক্যাল প্রোগ্রাম ম্যানেজার ইত্যাদি। এ ছাড়া বিশেষায়িত এরিয়া, যেমন মেশিন লার্নিং, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের অনেক চাকরির সুযোগ রয়েছে। জবের বিস্তারিত গুগল ক্যারিয়ার ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে।

গুগলে চাকরির আবেদন-প্রক্রিয়া
নতুন গ্র্যাজুয়েটদের প্রথমে গুগলের ক্যারিয়ার ওয়েবসাইট থেকে দক্ষতা আর আগ্রহের সঙ্গে মিলে এমন ওপেন পজিশনগুলো খুঁজে বের করতে হবে। এরপর প্রাসঙ্গিক কোর্স ওয়াক এবং প্রজেক্টগুলো, ইন্টার্ন যদি থাকে, এগুলো হাইলাইট করে একটা সংক্ষিপ্ত সিভি বানাতে হবে। তারপর ক্যারিয়ার ওয়েবসাইটে আবেদনপত্র জমা করা যাবে। কিন্তু খুব ভালো হয় যদি পরিচিত গুগলের রেফারেল নিয়ে অ্যাপ্লাই করলে। এতে ইন্টারভিউয়ের ডাক পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে।

গুগলে চাকরির ইন্টারভিউ
গুগলের ইন্টারভিউ প্রসেস অনেকটা স্ট্যান্ডার্ড, সবার জন্যই মোটামুটি একই রকমের। আমি আমার সিভিটা গুগলের এক ভাইকে দিয়েছিলাম রেফার করার জন্য সুইজারল্যান্ডের জুরিখের দুটি ওপেন পজিশনে। একটা সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারের, আরেকটা ছিল সাইট রিলায়েবিলিটি ইঞ্জিনিয়ারের। সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং পজিশনের জন্য রিক্রুটার আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে। প্রথমে রিক্রুটারের সঙ্গে একটা চেক-ইন ইন্টারভিউ হয়। যেখানে রিক্রুটার কিছু বেসিক নন-টেকনিক্যাল জিনিস নিয়ে জিজ্ঞেস করে। ইন্টারভিউর শেষে রিক্রুটার পুরো ইন্টারভিউ প্রসেস ব্যাখ্যা করে এবং ইন্টারভিউর প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য কিছু ম্যাটেরিয়াল দিয়ে দেয়। এরপর প্রথম টেকনিক্যাল ইন্টারভিউ হয় যেখানে আমাকে ডাইনামিক প্রোগ্রামিংয়ের একটা প্রবলেম সমাধান করতে দেয়।

কিছুদিন পর রিক্রুটার জানায় ইন্টারভিউর ফিডব্যাক পজেটিভ। এরপর আমাকে ভার্চুয়াল অনসাইট ইন্টারভিউর জন্য ইনভাইট করে। আমি ভার্চুয়াল অনসাইট দুই দিনে ভাগ করে করি। দুই দিনে পাঁচটি ইন্টারভিউর মধ্যে তিনটি কোডিং, একটি সিস্টেম ডিজাইন এবং একটি বিহ্যাভিওরাল ইন্টারভিউ। ২০২১ সালের ৭ অক্টোবর রিক্রুটার জানায় যে অনসাইট ইন্টারভিউতে সফল হয়েছি। এরপরের ধাপ হলো টিম ম্যাচিং, যেখানে বিভিন্ন ম্যানেজারের সঙ্গে কথা বলতে হয়।

কোন টিমের সঙ্গে ম্যাচিং হলে গুগল থেকে ফাইনালি অফার করে।

যত সময় লাগতে পারে
আমি প্রথম ২০২১ সালের ৭ জুলাই আবেদন করি। আর চূড়ান্ত প্রস্তাব পাই ১৪ ডিসেম্বর। আমার মোটামুটি পাঁচ মাস লাগে। তবে চাইলেই একটু তাড়াতাড়ি করে ফেলা যায়। তারপর প্রস্তাব পাওয়ার পর ভিসা আবেদন মিলিয়ে আরও তিন-চার মাস লাগে চাকরি শুরু করতে।

নতুনদের জন্য পরামর্শ 
চাকরির বিষয়টা একদম মুখ্য হিসেবে চিন্তা করার দরকার নেই। প্রোগ্রামিং জিনিসটা অনেক বেশি মজার। বিভিন্ন অ্যালগরিদম আর ডেটা স্ট্রাকচার শেখা। নিয়মিত কোডিং কমপিটিশনে অংশগ্রহণ করা, অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট সবটাই কিন্তু অনেক রোমাঞ্চকর। কম্পিউটার প্রোগ্রামিংয়ের বেসিকটা ভালো করে আয়ত্ত করাটা খুবই জরুরি।

ভবিষ্যতে যা করব
গুগলে শেখার মতো অনেক কিছুই আছে। আপাতত ইচ্ছে গুগলে থেকে নতুন কিছু শেখা। গুগলে চাকরি করার আরেকটা এক্সাইটিং পার্ট হচ্ছে আপনি অনেক ইম্পেক্টফুল কাজ করতে পারবেন, যেটা বিলিয়ন মানুষ ব্যবহার করবে। অদূর ভবিষ্যতে এ রকম ভালো কিছু কাজ করার স্বপ্ন রয়েছে।

অনুলিখন: আনিসুল ইসলাম নাঈম

গুগলের স্বপ্নপূরণ রিপনের

রিপন কুমার রায়ের জন্ম ও বেড়ে ওঠা দিনাজপুরে। তিনি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে স্নাতক করেছেন। পড়াশোনার পর বিদেশে কয়েকটি কোম্পানিতে চাকরি করেন। পাশাপাশি গুগলে আবেদন করেন এবং ইন্টারভিউর ধাপ পেরিয়ে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে চাকরির অফার পান। সবশেষে ২০২২ সালের ৪ এপ্রিল সুইজারল্যান্ডের জুরিখ ব্রাঞ্চে ‘সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার’ হিসেবে যোগদান করেন। তাঁর গুগলে চাকরি পাওয়ার গল্প, নতুনদের প্রতি পরামর্শ ও ভবিষ্যৎ সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়েছেন তিনি নিজেই।

রিপন কুমার রায়, সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার, গুগল। ছবি: লেখক

রিপন কুমার রায়ের জন্ম ও বেড়ে ওঠা দিনাজপুরে। তিনি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে স্নাতক করেছেন। পড়াশোনার পর বিদেশে কয়েকটি কোম্পানিতে চাকরি করেন। পাশাপাশি গুগলে আবেদন করেন এবং ইন্টারভিউর ধাপ পেরিয়ে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে চাকরির অফার পান। সবশেষে ২০২২ সালের ৪ এপ্রিল সুইজারল্যান্ডের জুরিখ ব্রাঞ্চে ‘সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার’ হিসেবে যোগদান করেন। তাঁর গুগলে চাকরি পাওয়ার গল্প, নতুনদের প্রতি পরামর্শ ও ভবিষ্যৎ সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়েছেন তিনি নিজেই।

গুগলে চাকরির পাওয়ার অনুভূতি গুগলে যেদিন শুনেছিলাম ফাইনাল ইন্টারভিউয়ে পাস করেছি, সেদিন খুব খুশি হয়েছিলাম। ফাইনাল ইন্টারভিউর মধ্যে একটা ইন্টারভিউ ভালো হয়নি, তাই ভেবেছিলাম পাস না-ও করতে পারি। কিন্তু অবশেষে সৃষ্টিকর্তার কৃপায় সফল হই। এ অনুভূতি খুবই রোমাঞ্চকর ছিল।

যখন থেকে প্রোগ্রামিং শেখা শুরু

প্রথম কম্পিউটার প্রোগ্রামের হাতেখড়ি হয় ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার পর। ভর্তি পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর থেকে ভার্সিটি শুরু হওয়ার আগে বেশ কয়েকটা মাস ফাঁকা পেয়েছিলাম। এর মধ্যেই সুবিন ভাইয়ের ‘কম্পিউটার প্রোগ্রামিং’ নামক বইটি পড়ে সি প্রোগ্রামিংয়ের কিছু বেসিক জ্ঞান ঠিক করে নিয়েছিলাম। এরপর ভার্সিটিতে ওঠার প্রথম থেকেই বিভিন্ন ধরনের কমপিটিশনে অংশগ্রহণ করতাম। বুয়েটে কম্পিটিটিভ প্রোগ্রামিংয়ের একটা অসাধারণ কালচার আছে। তার সুবাদেই বড় ভাইদের সঙ্গে পরিচয় আর প্রোগ্রামিংয়ে চর্চা শুরু হয়।

গুগলে চাকরি পাওয়ার পেছনে
গুগলে চাকরি পাওয়ার জন্য নিজেকে সামগ্রিকভাবে প্রস্তুত করতে হয়। প্রথমত, অ্যালগরিদম এবং ডেটা স্ট্রাকচারের মতো কম্পিউটারবিজ্ঞানের মৌলিক বিষয়গুলো সম্পর্কে নিজের ভালোমতো কনসেপ্ট ক্লিয়ার থাকা। দ্বিতীয়ত, জাভা, পাইথন বা সি++ এ রকম অন্তত একটি প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজে খুব দক্ষ এবং সমস্যা সমাধানের জন্য কোড লিখতে সক্ষম হওয়া। উপরন্তু সিস্টেম ডিজাইন ও বিহ্যাভিওরাল ইন্টারভিউর জন্যও নিজেকে ভালোভাবে প্রস্তুত করা। আমি মূলত এসবের ওপর জোর দিয়েছি।

প্রোগ্রামিং বিষয়টা অনেক বেশি মজার। বিভিন্ন অ্যালগরিদম আর ডেটা স্ট্রাকচার শেখা। নিয়মিত কোডিং কমপিটিশনে অংশগ্রহণ করা, অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট সবটাই কিন্তু অনেক রোমাঞ্চকর।

গুগলে চাকরির সুযোগ 
গুগলে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের পাশাপাশি সেলস, ইউএক্স ডিজাইন, মার্কেটিং, ফিন্যান্স, এইচইআর রিলেটেড চাকরি ইত্যাদির সুযোগ রয়েছে। কয়েকটি উল্লেখযোগ্য জব পজিশন হলো—সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার, প্রোডাক্ট ম্যানেজার, অ্যাকাউন্ট ম্যানেজার, ডেটা সায়েন্টিস্ট ও টেকনিক্যাল প্রোগ্রাম ম্যানেজার ইত্যাদি। এ ছাড়া বিশেষায়িত এরিয়া, যেমন মেশিন লার্নিং, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের অনেক চাকরির সুযোগ রয়েছে। জবের বিস্তারিত গুগল ক্যারিয়ার ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে।

গুগলে চাকরির আবেদন-প্রক্রিয়া
নতুন গ্র্যাজুয়েটদের প্রথমে গুগলের ক্যারিয়ার ওয়েবসাইট থেকে দক্ষতা আর আগ্রহের সঙ্গে মিলে এমন ওপেন পজিশনগুলো খুঁজে বের করতে হবে। এরপর প্রাসঙ্গিক কোর্স ওয়াক এবং প্রজেক্টগুলো, ইন্টার্ন যদি থাকে, এগুলো হাইলাইট করে একটা সংক্ষিপ্ত সিভি বানাতে হবে। তারপর ক্যারিয়ার ওয়েবসাইটে আবেদনপত্র জমা করা যাবে। কিন্তু খুব ভালো হয় যদি পরিচিত গুগলের রেফারেল নিয়ে অ্যাপ্লাই করলে। এতে ইন্টারভিউয়ের ডাক পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে।

গুগলে চাকরির ইন্টারভিউ
গুগলের ইন্টারভিউ প্রসেস অনেকটা স্ট্যান্ডার্ড, সবার জন্যই মোটামুটি একই রকমের। আমি আমার সিভিটা গুগলের এক ভাইকে দিয়েছিলাম রেফার করার জন্য সুইজারল্যান্ডের জুরিখের দুটি ওপেন পজিশনে। একটা সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারের, আরেকটা ছিল সাইট রিলায়েবিলিটি ইঞ্জিনিয়ারের। সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং পজিশনের জন্য রিক্রুটার আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে। প্রথমে রিক্রুটারের সঙ্গে একটা চেক-ইন ইন্টারভিউ হয়। যেখানে রিক্রুটার কিছু বেসিক নন-টেকনিক্যাল জিনিস নিয়ে জিজ্ঞেস করে। ইন্টারভিউর শেষে রিক্রুটার পুরো ইন্টারভিউ প্রসেস ব্যাখ্যা করে এবং ইন্টারভিউর প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য কিছু ম্যাটেরিয়াল দিয়ে দেয়। এরপর প্রথম টেকনিক্যাল ইন্টারভিউ হয় যেখানে আমাকে ডাইনামিক প্রোগ্রামিংয়ের একটা প্রবলেম সমাধান করতে দেয়।

কিছুদিন পর রিক্রুটার জানায় ইন্টারভিউর ফিডব্যাক পজেটিভ। এরপর আমাকে ভার্চুয়াল অনসাইট ইন্টারভিউর জন্য ইনভাইট করে। আমি ভার্চুয়াল অনসাইট দুই দিনে ভাগ করে করি। দুই দিনে পাঁচটি ইন্টারভিউর মধ্যে তিনটি কোডিং, একটি সিস্টেম ডিজাইন এবং একটি বিহ্যাভিওরাল ইন্টারভিউ। ২০২১ সালের ৭ অক্টোবর রিক্রুটার জানায় যে অনসাইট ইন্টারভিউতে সফল হয়েছি। এরপরের ধাপ হলো টিম ম্যাচিং, যেখানে বিভিন্ন ম্যানেজারের সঙ্গে কথা বলতে হয়।

কোন টিমের সঙ্গে ম্যাচিং হলে গুগল থেকে ফাইনালি অফার করে।

যত সময় লাগতে পারে
আমি প্রথম ২০২১ সালের ৭ জুলাই আবেদন করি। আর চূড়ান্ত প্রস্তাব পাই ১৪ ডিসেম্বর। আমার মোটামুটি পাঁচ মাস লাগে। তবে চাইলেই একটু তাড়াতাড়ি করে ফেলা যায়। তারপর প্রস্তাব পাওয়ার পর ভিসা আবেদন মিলিয়ে আরও তিন-চার মাস লাগে চাকরি শুরু করতে।

নতুনদের জন্য পরামর্শ 
চাকরির বিষয়টা একদম মুখ্য হিসেবে চিন্তা করার দরকার নেই। প্রোগ্রামিং জিনিসটা অনেক বেশি মজার। বিভিন্ন অ্যালগরিদম আর ডেটা স্ট্রাকচার শেখা। নিয়মিত কোডিং কমপিটিশনে অংশগ্রহণ করা, অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট সবটাই কিন্তু অনেক রোমাঞ্চকর। কম্পিউটার প্রোগ্রামিংয়ের বেসিকটা ভালো করে আয়ত্ত করাটা খুবই জরুরি।

ভবিষ্যতে যা করব
গুগলে শেখার মতো অনেক কিছুই আছে। আপাতত ইচ্ছে গুগলে থেকে নতুন কিছু শেখা। গুগলে চাকরি করার আরেকটা এক্সাইটিং পার্ট হচ্ছে আপনি অনেক ইম্পেক্টফুল কাজ করতে পারবেন, যেটা বিলিয়ন মানুষ ব্যবহার করবে। অদূর ভবিষ্যতে এ রকম ভালো কিছু কাজ করার স্বপ্ন রয়েছে।

অনুলিখন: আনিসুল ইসলাম নাঈম