গুচ্ছ বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিতে ভোগান্তির শেষ কোথায়?

ভর্তি কমিটির এমন সিদ্ধান্তের কারণে অনেক বিশ্ববিদ্যালয় শেষ পর্যন্ত চাহিদা অনুযায়ী শিক্ষার্থীই ভর্তি করাতে পারেনি‌। আসন খালি রেখেই শুরু করেছিল ক্লাস কার্যক্রম। গুচ্ছ ভর্তি কমিটি স্বীকারও করেছিল তাদের ব্যর্থতা। তবে আশ্বাস দিয়েছিল, ভবিষ্যতে এ রকম হবে না। এটা ছিল ২০-২১ শিক্ষাবর্ষের গল্প।

এবার আসুন ২১-২২ শিক্ষাবর্ষের কথা শুরু করি। গত ১৩ আগস্ট এবারও ২২টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ে গুচ্ছ পদ্ধতিতে পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়। কিন্তু কথা রাখেনি ভর্তি কমিটি। পূর্বঘোষিত শর্ট সিলেবাসে পরীক্ষা নেওয়ার কথা বললেও তা করা হয়নি। এতে শর্ট সিলেবাসের প্রস্তুতি নেওয়া অনেক শিক্ষার্থীর স্বপ্ন ভেঙে যায়। ভর্তি পরীক্ষার জন্য পনেরো শত টাকা আবেদন ফি হিসেবে নিলেও প্রশ্নপত্রের বাহ্যিক ধরন ছিল মানহীন। এসব নিয়ে শিক্ষার্থীদের মনে ছিল অসন্তোষ। সবচেয়ে দুঃখজনক হলো, পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের প্রায় দুই মাস মাস অতিবাহিত হওয়ার পরও শুরু করতে পারেনি ভর্তি প্রক্রিয়া। এতে শিক্ষার্থীরা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। তবে গত ২৯ সেপ্টেম্বর ভর্তি কমিটির একাধিক মিটিং সম্পন্ন হয়। ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা অধীর আগ্রহে একটি সুন্দর সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় ছিল কিন্তু কমিটির সিদ্ধান্ত দেখে তাঁরা হতাশ।

আগে থেকে বলা হয়েছিল একটি আবেদনের মাধ্যমে সবগুলো বিশ্ববিদ্যালয় পছন্দক্রম দেওয়ার সুযোগ পেতে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। এ ক্ষেত্রে নিজ ইউনিটের জন্য কেবলমাত্র ৫০০ টাকা আবেদন ফি দিতে হবে। শুরুতে এমন কথা বললেও শেষ পর্যন্ত তাতে অটল থাকতে পারেনি ভর্তি কমিটি। কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ২২টি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য আলাদা আলাদা আবেদন করতে হবে শিক্ষার্থীদের। এতে আবেদনপ্রতি শিক্ষার্থীদের খরচ হবে ৫০০ টাকা। ফলে একজন শিক্ষার্থীকে ২২টি বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করতে গুনতে হবে ১১ হাজার টাকা। তারপর ভর্তিতে ১০-১৫ হাজার টাকা খরচ হবে। নিম্নবিত্ত পরিবারের একজন শিক্ষার্থীর পক্ষে এই ব্যয় নির্বাহ করা অসম্ভব।

ফলে, ভালো ফলাফল করেও ছিটকে যাবে অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী। মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী বলেছিলেন, শিক্ষার্থীদের কষ্ট লাঘব ও আর্থিক ক্ষতির হাত থেকে বাঁচাতেই একটা ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে গুচ্ছ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ দেওয়া হবে। কিন্তু শিক্ষার্থীরা এখন সেই সুবিধা পাচ্ছে না। বরং শিক্ষার্থীদের মনোবল ভেঙে যাচ্ছে।
শিক্ষার্থীদের এসব অব্যক্ত আর্তনাদ শুনবে কে? কে করবে এর সমাধান? কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ, শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি নিরসনে কার্যকরী পদক্ষেপ নিন। এক আবেদনের মাধ্যমে সব বিশ্ববিদ্যালয়ে পছন্দক্রম দেওয়ার সুযোগ দিন। শিক্ষার্থীবান্ধব সিদ্ধান্ত নিয়ে দ্রুত ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করুন।

শাহ্ মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
বাংলা বিভাগ, ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষ
(একজন গুচ্ছ বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার্থী)

 

গুচ্ছ বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিতে ভোগান্তির শেষ কোথায়?

ভর্তি কমিটির এমন সিদ্ধান্তের কারণে অনেক বিশ্ববিদ্যালয় শেষ পর্যন্ত চাহিদা অনুযায়ী শিক্ষার্থীই ভর্তি করাতে পারেনি‌। আসন খালি রেখেই শুরু করেছিল ক্লাস কার্যক্রম। গুচ্ছ ভর্তি কমিটি স্বীকারও করেছিল তাদের ব্যর্থতা। তবে আশ্বাস দিয়েছিল, ভবিষ্যতে এ রকম হবে না। এটা ছিল ২০-২১ শিক্ষাবর্ষের গল্প।

এবার আসুন ২১-২২ শিক্ষাবর্ষের কথা শুরু করি। গত ১৩ আগস্ট এবারও ২২টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ে গুচ্ছ পদ্ধতিতে পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়। কিন্তু কথা রাখেনি ভর্তি কমিটি। পূর্বঘোষিত শর্ট সিলেবাসে পরীক্ষা নেওয়ার কথা বললেও তা করা হয়নি। এতে শর্ট সিলেবাসের প্রস্তুতি নেওয়া অনেক শিক্ষার্থীর স্বপ্ন ভেঙে যায়। ভর্তি পরীক্ষার জন্য পনেরো শত টাকা আবেদন ফি হিসেবে নিলেও প্রশ্নপত্রের বাহ্যিক ধরন ছিল মানহীন। এসব নিয়ে শিক্ষার্থীদের মনে ছিল অসন্তোষ। সবচেয়ে দুঃখজনক হলো, পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের প্রায় দুই মাস মাস অতিবাহিত হওয়ার পরও শুরু করতে পারেনি ভর্তি প্রক্রিয়া। এতে শিক্ষার্থীরা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। তবে গত ২৯ সেপ্টেম্বর ভর্তি কমিটির একাধিক মিটিং সম্পন্ন হয়। ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা অধীর আগ্রহে একটি সুন্দর সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় ছিল কিন্তু কমিটির সিদ্ধান্ত দেখে তাঁরা হতাশ।

আগে থেকে বলা হয়েছিল একটি আবেদনের মাধ্যমে সবগুলো বিশ্ববিদ্যালয় পছন্দক্রম দেওয়ার সুযোগ পেতে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। এ ক্ষেত্রে নিজ ইউনিটের জন্য কেবলমাত্র ৫০০ টাকা আবেদন ফি দিতে হবে। শুরুতে এমন কথা বললেও শেষ পর্যন্ত তাতে অটল থাকতে পারেনি ভর্তি কমিটি। কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ২২টি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য আলাদা আলাদা আবেদন করতে হবে শিক্ষার্থীদের। এতে আবেদনপ্রতি শিক্ষার্থীদের খরচ হবে ৫০০ টাকা। ফলে একজন শিক্ষার্থীকে ২২টি বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করতে গুনতে হবে ১১ হাজার টাকা। তারপর ভর্তিতে ১০-১৫ হাজার টাকা খরচ হবে। নিম্নবিত্ত পরিবারের একজন শিক্ষার্থীর পক্ষে এই ব্যয় নির্বাহ করা অসম্ভব।

ফলে, ভালো ফলাফল করেও ছিটকে যাবে অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী। মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী বলেছিলেন, শিক্ষার্থীদের কষ্ট লাঘব ও আর্থিক ক্ষতির হাত থেকে বাঁচাতেই একটা ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে গুচ্ছ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ দেওয়া হবে। কিন্তু শিক্ষার্থীরা এখন সেই সুবিধা পাচ্ছে না। বরং শিক্ষার্থীদের মনোবল ভেঙে যাচ্ছে।
শিক্ষার্থীদের এসব অব্যক্ত আর্তনাদ শুনবে কে? কে করবে এর সমাধান? কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ, শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি নিরসনে কার্যকরী পদক্ষেপ নিন। এক আবেদনের মাধ্যমে সব বিশ্ববিদ্যালয়ে পছন্দক্রম দেওয়ার সুযোগ দিন। শিক্ষার্থীবান্ধব সিদ্ধান্ত নিয়ে দ্রুত ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করুন।

শাহ্ মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
বাংলা বিভাগ, ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষ
(একজন গুচ্ছ বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার্থী)