চবিতে উপাচার্য নিয়োগের প্রথম দিনেই রেজিস্ট্রারকে শাসালো ছাত্রলীগ

রেফায়েত উল্যাহ রুপক

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) নতুন উপাচার্য (ভিসি) দায়িত্ব গ্রহণের প্রথম দিনেই সদ্য সাবেক উপাচার্য ড. শিরীণ আখতার কর্তৃক নিয়োগকৃত ব্যাক্তিকে রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের ভেতরে আটকিয়ে মারধর করেছে শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। এসময় তারা চবি রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) কে এম নূর আহমদকে ‘ছাত্রলীগের বাহিরে সকল নিয়োগ ক্যান্সেল’ করতে শাসাতে থাকেন।

বুধবার (২০ মার্চ) নতুন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের দায়িত্ব গ্রহণ করার পরপর দুপুর দেড়টার দিকে তারা ওই নিয়োগকৃত ব্যক্তিকে মারধর করে রেজিস্ট্রার অফিসে আটকে রেখে ছাত্রলীগের বাহিরে সকল নিয়োগ ক্যান্সেল করতে বলেন।

আটক ওই ব্যাক্তির নাম ইয়াহিয়া টিপু। তাকে ৫৫০ টাকা দৈনিক মজুরিতে চবির মনোবিজ্ঞান বিভাগে কম্পিউটার ল্যাব সহকারী হিসেবে নিয়োগ দিয়ে গেছেন সদ্য সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার। আজ বুধবার (২০ মার্চ) তিনি রেজিস্ট্রার অফিসে যোগদান করতে এসেছিলেন। এসময়ই তাকে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা মারধর করে রেজিস্ট্রার অফিসে আটকিয়ে রাখেন।

তিনি বলেন, আমার চাকুরি এপ্রুভ হইছে। তাই আমাকে তারা মারছে। আমার গালে মারছে। আমি এমনিতেই বসা ছিলাম। আমি জয়েন করতে আসছিলাম রেজিস্ট্রার অফিসে। আমাকে জিজ্ঞেস করেছে আমি ছাত্রলীগ করি কিনা। বললাম, না। তখন তারা আমাকে মারধর করে।

ছাত্রলীগ কর্মীদের বাহিরে সকল নিয়োগ ক্যান্সেল করতে রেজিস্টারকে প্রথমে শাসাতে থাকেন শাখা ছাত্রলীগের উপগ্রুপ বিজয়ের একাংশের নেতা ওয়াহিদুল ইসলাম। তিনি রেজিস্ট্রারের দিকে আঙুল উঁচিয়ে বলতে থাকেন, “এখনো পিছনে বসে আছে ও। ও ছাত্রলীগ করে না। তবুও ওরে চাকুরি দিয়েছেন। ওর কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা ঘুষ খাইছে ভিসি ম্যাম।”

এরপর শাসাতে থাকেন একই গ্রুপের নেতা শাখা ছাত্রলীগের সাবেক আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মোরশেদুল আলম রিফাত। এসময় তিনি রেজিস্ট্রারকে বলতে থাকেন, “ছাত্রলীগের বাইরের এগুলা ক্যান্সেল। ছাত্রলীগের বাইরের নিয়োগ ক্যান্সেল। ছাত্রলীগের পোলারে নিয়োগ দিলে সমস্যা নাই। ছাত্রলীগের বাইরে যেগুলা, ওইগুলা ক্যান্সেল। ছাত্রলীগের পোলাপাইনের চাকরি লওয়ার অধিকার আছে। বাইরের পোলাপাইনের কী অধিকার? ছাত্রলীগের বাইরে সব ক্যান্সেল।”

তার সাথে সাথে এসময় উপস্থিত সকল ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরাও রেজিস্ট্রারকে শাসাতে থাকেন। আর ভিসিকে এসব নিয়োগের ব্যাপারে বলার জন্য তাদের পক্ষে রেজিস্ট্রারকে বুঝাতে থাকেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মো. সুমন মামুন, সাধারণ সম্পাদক মো. মনসুর আলী।

শাখা ছাত্রলীগের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন— একাকার গ্রুপের নেতা মইনুল ইসলাম রাসেল, ভার্সিটি এক্সপ্রেসের (ভিএক্স) আল -আমিন শান্ত, রায়হান ও আশিব তানিম।

এছাড়াও তখন রেজিস্ট্রার অফিসে উপস্থিত ছিলেন— বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর নাজেমুল আলম মুরাদ, মোহাম্মদ রোকন উদ্দিন, আব্দুল মান্নান ও শঙ্কর বড়ুয়া।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) কে এক নূর আহমদ বলেন, আমার অফিসে এসে তারা এরকম আচরণ করেছে। এটা আমার জন্য অপমানজনক। আমি তো তাদের নিয়োগ দিতে পারবো না। নিয়োগ দিবে ভিসি। তবুও তারা আমার এখানে এসে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছে।

ইবিহো/এসএস

চবিতে উপাচার্য নিয়োগের প্রথম দিনেই রেজিস্ট্রারকে শাসালো ছাত্রলীগ

রেফায়েত উল্যাহ রুপক

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) নতুন উপাচার্য (ভিসি) দায়িত্ব গ্রহণের প্রথম দিনেই সদ্য সাবেক উপাচার্য ড. শিরীণ আখতার কর্তৃক নিয়োগকৃত ব্যাক্তিকে রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের ভেতরে আটকিয়ে মারধর করেছে শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। এসময় তারা চবি রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) কে এম নূর আহমদকে ‘ছাত্রলীগের বাহিরে সকল নিয়োগ ক্যান্সেল’ করতে শাসাতে থাকেন।

বুধবার (২০ মার্চ) নতুন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের দায়িত্ব গ্রহণ করার পরপর দুপুর দেড়টার দিকে তারা ওই নিয়োগকৃত ব্যক্তিকে মারধর করে রেজিস্ট্রার অফিসে আটকে রেখে ছাত্রলীগের বাহিরে সকল নিয়োগ ক্যান্সেল করতে বলেন।

আটক ওই ব্যাক্তির নাম ইয়াহিয়া টিপু। তাকে ৫৫০ টাকা দৈনিক মজুরিতে চবির মনোবিজ্ঞান বিভাগে কম্পিউটার ল্যাব সহকারী হিসেবে নিয়োগ দিয়ে গেছেন সদ্য সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার। আজ বুধবার (২০ মার্চ) তিনি রেজিস্ট্রার অফিসে যোগদান করতে এসেছিলেন। এসময়ই তাকে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা মারধর করে রেজিস্ট্রার অফিসে আটকিয়ে রাখেন।

তিনি বলেন, আমার চাকুরি এপ্রুভ হইছে। তাই আমাকে তারা মারছে। আমার গালে মারছে। আমি এমনিতেই বসা ছিলাম। আমি জয়েন করতে আসছিলাম রেজিস্ট্রার অফিসে। আমাকে জিজ্ঞেস করেছে আমি ছাত্রলীগ করি কিনা। বললাম, না। তখন তারা আমাকে মারধর করে।

ছাত্রলীগ কর্মীদের বাহিরে সকল নিয়োগ ক্যান্সেল করতে রেজিস্টারকে প্রথমে শাসাতে থাকেন শাখা ছাত্রলীগের উপগ্রুপ বিজয়ের একাংশের নেতা ওয়াহিদুল ইসলাম। তিনি রেজিস্ট্রারের দিকে আঙুল উঁচিয়ে বলতে থাকেন, “এখনো পিছনে বসে আছে ও। ও ছাত্রলীগ করে না। তবুও ওরে চাকুরি দিয়েছেন। ওর কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা ঘুষ খাইছে ভিসি ম্যাম।”

এরপর শাসাতে থাকেন একই গ্রুপের নেতা শাখা ছাত্রলীগের সাবেক আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মোরশেদুল আলম রিফাত। এসময় তিনি রেজিস্ট্রারকে বলতে থাকেন, “ছাত্রলীগের বাইরের এগুলা ক্যান্সেল। ছাত্রলীগের বাইরের নিয়োগ ক্যান্সেল। ছাত্রলীগের পোলারে নিয়োগ দিলে সমস্যা নাই। ছাত্রলীগের বাইরে যেগুলা, ওইগুলা ক্যান্সেল। ছাত্রলীগের পোলাপাইনের চাকরি লওয়ার অধিকার আছে। বাইরের পোলাপাইনের কী অধিকার? ছাত্রলীগের বাইরে সব ক্যান্সেল।”

তার সাথে সাথে এসময় উপস্থিত সকল ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরাও রেজিস্ট্রারকে শাসাতে থাকেন। আর ভিসিকে এসব নিয়োগের ব্যাপারে বলার জন্য তাদের পক্ষে রেজিস্ট্রারকে বুঝাতে থাকেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মো. সুমন মামুন, সাধারণ সম্পাদক মো. মনসুর আলী।

শাখা ছাত্রলীগের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন— একাকার গ্রুপের নেতা মইনুল ইসলাম রাসেল, ভার্সিটি এক্সপ্রেসের (ভিএক্স) আল -আমিন শান্ত, রায়হান ও আশিব তানিম।

এছাড়াও তখন রেজিস্ট্রার অফিসে উপস্থিত ছিলেন— বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর নাজেমুল আলম মুরাদ, মোহাম্মদ রোকন উদ্দিন, আব্দুল মান্নান ও শঙ্কর বড়ুয়া।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) কে এক নূর আহমদ বলেন, আমার অফিসে এসে তারা এরকম আচরণ করেছে। এটা আমার জন্য অপমানজনক। আমি তো তাদের নিয়োগ দিতে পারবো না। নিয়োগ দিবে ভিসি। তবুও তারা আমার এখানে এসে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছে।

ইবিহো/এসএস