জাবি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মারমুখী আচরণ ও গালাগালের অভিযোগ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।ছবি : সংগৃহীত

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত আন্তঃবিভাগ ফুটবল টুর্নামেন্ট চলাকালে খেলোয়াড় ও শিক্ষার্থীদের ওপর মারমুখী আচরণ এবং চড় মেরে দাঁত ফেলে দেওয়ার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে জাবি শারীরিক শিক্ষা অফিসের উপ-পরিচালক সাবিহা কবিরের বিরুদ্ধে।

গতকাল মঙ্গলবার বিকেল ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে অনুষ্ঠিত লোক প্রশাসন বিভাগ বনাম ফার্মেসি বিভাগের মধ্যকার খেলা চলাকালে এ ঘটনা ঘটে।এ ঘটনায় সাবিহা কবিরের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে আন্তঃবিভাগ ফুটবল প্রতিযোগিতা পরিচালনা কমিটির সভাপতি বরাবর অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে লোকপ্রশাসন বিভাগের খেলোয়াড়রা।

অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়, গতকাল বিকেলে অনুষ্ঠিত লোকপ্রশাসন বনাম ফার্মাসি বিভাগের খেলার শেষের দিকে একটি বিতর্কিত সিদ্ধান্তে লোকপ্রশাসন বিভাগের দলের বিরুদ্ধে রেফারি পেনাল্টি ঘোষণা করেন এবং নির্ধারিত সময়ের আগেই খেলা সমাপ্ত করেন। বিষয়টি নিয়ে মাঠে রেফারির কাছে লোকপ্রশাসন বিভাগের খেলোয়াড়রা প্রতিবাদ জানান।

এ সময় হঠাৎ করে জাবি শারীরিক শিক্ষা অফিসের উপ-পরিচালক ও ম্যাচ কর্মকর্তা সাবিহা কবির খেলোয়াড় এবং ওই বিভাগের শিক্ষার্থীদের গালাগাল এবং মারমুখী আচরণ শুরু করেন। তিনি শিক্ষার্থী ও খেলোয়াড়দের ‘বেয়াদবের বাচ্চা’ আখ্যা দিয়ে চড় মেরে দাঁত ফেলে দেওয়ার হুমকি দেন। তাদের পরবর্তীতে দেখে নেওয়ারও হুমকি দেন।

খেলার মাঠে একজন কর্মকর্তার প্রকাশ্য এমন আচরণে সবাই হতবিহ্বল হয়ে পড়েন। সর্বশেষ সেখানে উপস্থিত কয়েকজন শিক্ষক, সহকারী প্রক্টর ও সিনিয়র ব্যক্তিরা এসে উনাকে নিবৃত করেন।

এ ঘটনায় অভিযুক্ত সাবিহা কবিরের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ এবং পক্ষপাতিত্বমূলক খেলাটি পুনরায় অনুষ্ঠিত করার দাবি জানান টিম ম্যানেজমেন্ট।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, লোকপ্রশাসন বিভাগ বনাম ফার্মাসি বিভাগের ম্যাচটি গোলশূন্য সমতায় ছিল। দ্বিতীয়ার্ধের শেষের দিকে একটি বিতর্কিত সিদ্ধান্তে পেনাল্টি দেওয়া হয়। পরক্ষণেই অতিরিক্ত সময় যুক্ত না করে এবং নির্ধারিত ৪০ মিনিট সময় শেষ হওয়ার ৪-৫ মিনিট আগেই রেফারি খেলা সমাপ্ত করেন। এ নিয়ে খেলার মাঠেই রেফারির কাছে অভিযোগ জানান লোকপ্রশাসন বিভাগের খেলোয়াড়রা।

তখন হঠাৎ করে ম্যাচ কর্মকর্তা সাবিহা কবির মাঠে প্রবেশ করে খেলোয়াড়দের গালমন্দ শুরু করেন। একপর্যায়ে সেখানে উপস্থিত শিক্ষার্থীদের সাথেও মারমুখী আচরণ করেন তিনি। তার এমন আচরণের প্রতিবাদ জানালে তিনি সবাইকে গালাগাল শুরু করেন। তাদেরকে চড় মেরে দাঁত ফেলে দেওয়া এবং দেখে নেওয়ার হুমকিও দেন। সেখানে অনেক শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন।শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তঃবিভাগ বা আন্তঃহল টুর্নামেন্টগুলোতে স্বাভাবিকভাবেই খেলার মাঠে কিছু সমস্যা হয়। কিছু সিদ্ধান্ত নিয়ে অসন্তুষ্টি হয়। বলতে গেলে প্রায় প্রতিটি ম্যাচেই কিছু সমস্যা হয়, যা পরক্ষণেই ঠিকঠাক হয়ে যায়। এটা স্বাভাবিক একটা বিষয় খেলার মাঠে। কিন্তু হঠাৎ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন কর্মকর্তার এত খেলোয়াড় ও শিক্ষার্থীদের প্রতি এমন আচরণ একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়।’

সংশ্লিষ্টরা বলেন, ‘শারীরিক শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তা সাবিহা কবির প্রায় সময় এমন ক্ষ্যাপাটে আচরণ করেন এবং শিক্ষক-শিক্ষার্থী, খেলোয়াড় ও অন্যদের সাথে দুর্ব্যবহার করেন। তিনি নিজেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক ক্ষমতাবান হিসেবে উপস্থাপন করে দাম্ভিকতা প্রদর্শন করেন।’

এ ঘটনায় সাবিহা কবিরের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। নয়তো দাবি আদায়ে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে বলে জানান তারা।

এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত কর্মকর্তা সাবিহা কবিরকে একাধিকবার ফোন কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

জাবি শারীরিক শিক্ষা অফিসের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক বেগম নাছরীন বলেন, ‘গতকালকের ঘটনাটি নিয়ে আমরা একটি অভিযোগপত্র পেয়েছি। আমাদের একটি টেকনিক্যাল কমিটি আছে। কমিটির সবাই মিলে আমরা বসব। দ্রুততম সময়ের মধ্যেই আমরা সমস্যাটি সুরাহা করব। আশা করি সুন্দর একটি সমাধান আসবে।’

আন্তঃবিভাগ ফুটবল প্রতিযোগিতা পরিচালনা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. বশির আহমেদ বলেন, ‘আমরা ছাত্রদের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেয়েছি। আজ বিকেল ৩টায় ফুটবলসংক্রান্ত টেকনিক্যাল কমিটির মিটিং আছে। মিটিংয়ের পর আমাদের সিদ্ধান্ত জানাব।’

জাবি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মারমুখী আচরণ ও গালাগালের অভিযোগ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।ছবি : সংগৃহীত

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত আন্তঃবিভাগ ফুটবল টুর্নামেন্ট চলাকালে খেলোয়াড় ও শিক্ষার্থীদের ওপর মারমুখী আচরণ এবং চড় মেরে দাঁত ফেলে দেওয়ার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে জাবি শারীরিক শিক্ষা অফিসের উপ-পরিচালক সাবিহা কবিরের বিরুদ্ধে।

গতকাল মঙ্গলবার বিকেল ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে অনুষ্ঠিত লোক প্রশাসন বিভাগ বনাম ফার্মেসি বিভাগের মধ্যকার খেলা চলাকালে এ ঘটনা ঘটে।এ ঘটনায় সাবিহা কবিরের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে আন্তঃবিভাগ ফুটবল প্রতিযোগিতা পরিচালনা কমিটির সভাপতি বরাবর অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে লোকপ্রশাসন বিভাগের খেলোয়াড়রা।

অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়, গতকাল বিকেলে অনুষ্ঠিত লোকপ্রশাসন বনাম ফার্মাসি বিভাগের খেলার শেষের দিকে একটি বিতর্কিত সিদ্ধান্তে লোকপ্রশাসন বিভাগের দলের বিরুদ্ধে রেফারি পেনাল্টি ঘোষণা করেন এবং নির্ধারিত সময়ের আগেই খেলা সমাপ্ত করেন। বিষয়টি নিয়ে মাঠে রেফারির কাছে লোকপ্রশাসন বিভাগের খেলোয়াড়রা প্রতিবাদ জানান।

এ সময় হঠাৎ করে জাবি শারীরিক শিক্ষা অফিসের উপ-পরিচালক ও ম্যাচ কর্মকর্তা সাবিহা কবির খেলোয়াড় এবং ওই বিভাগের শিক্ষার্থীদের গালাগাল এবং মারমুখী আচরণ শুরু করেন। তিনি শিক্ষার্থী ও খেলোয়াড়দের ‘বেয়াদবের বাচ্চা’ আখ্যা দিয়ে চড় মেরে দাঁত ফেলে দেওয়ার হুমকি দেন। তাদের পরবর্তীতে দেখে নেওয়ারও হুমকি দেন।

খেলার মাঠে একজন কর্মকর্তার প্রকাশ্য এমন আচরণে সবাই হতবিহ্বল হয়ে পড়েন। সর্বশেষ সেখানে উপস্থিত কয়েকজন শিক্ষক, সহকারী প্রক্টর ও সিনিয়র ব্যক্তিরা এসে উনাকে নিবৃত করেন।

এ ঘটনায় অভিযুক্ত সাবিহা কবিরের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ এবং পক্ষপাতিত্বমূলক খেলাটি পুনরায় অনুষ্ঠিত করার দাবি জানান টিম ম্যানেজমেন্ট।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, লোকপ্রশাসন বিভাগ বনাম ফার্মাসি বিভাগের ম্যাচটি গোলশূন্য সমতায় ছিল। দ্বিতীয়ার্ধের শেষের দিকে একটি বিতর্কিত সিদ্ধান্তে পেনাল্টি দেওয়া হয়। পরক্ষণেই অতিরিক্ত সময় যুক্ত না করে এবং নির্ধারিত ৪০ মিনিট সময় শেষ হওয়ার ৪-৫ মিনিট আগেই রেফারি খেলা সমাপ্ত করেন। এ নিয়ে খেলার মাঠেই রেফারির কাছে অভিযোগ জানান লোকপ্রশাসন বিভাগের খেলোয়াড়রা।

তখন হঠাৎ করে ম্যাচ কর্মকর্তা সাবিহা কবির মাঠে প্রবেশ করে খেলোয়াড়দের গালমন্দ শুরু করেন। একপর্যায়ে সেখানে উপস্থিত শিক্ষার্থীদের সাথেও মারমুখী আচরণ করেন তিনি। তার এমন আচরণের প্রতিবাদ জানালে তিনি সবাইকে গালাগাল শুরু করেন। তাদেরকে চড় মেরে দাঁত ফেলে দেওয়া এবং দেখে নেওয়ার হুমকিও দেন। সেখানে অনেক শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন।শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তঃবিভাগ বা আন্তঃহল টুর্নামেন্টগুলোতে স্বাভাবিকভাবেই খেলার মাঠে কিছু সমস্যা হয়। কিছু সিদ্ধান্ত নিয়ে অসন্তুষ্টি হয়। বলতে গেলে প্রায় প্রতিটি ম্যাচেই কিছু সমস্যা হয়, যা পরক্ষণেই ঠিকঠাক হয়ে যায়। এটা স্বাভাবিক একটা বিষয় খেলার মাঠে। কিন্তু হঠাৎ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন কর্মকর্তার এত খেলোয়াড় ও শিক্ষার্থীদের প্রতি এমন আচরণ একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়।’

সংশ্লিষ্টরা বলেন, ‘শারীরিক শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তা সাবিহা কবির প্রায় সময় এমন ক্ষ্যাপাটে আচরণ করেন এবং শিক্ষক-শিক্ষার্থী, খেলোয়াড় ও অন্যদের সাথে দুর্ব্যবহার করেন। তিনি নিজেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক ক্ষমতাবান হিসেবে উপস্থাপন করে দাম্ভিকতা প্রদর্শন করেন।’

এ ঘটনায় সাবিহা কবিরের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। নয়তো দাবি আদায়ে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে বলে জানান তারা।

এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত কর্মকর্তা সাবিহা কবিরকে একাধিকবার ফোন কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

জাবি শারীরিক শিক্ষা অফিসের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক বেগম নাছরীন বলেন, ‘গতকালকের ঘটনাটি নিয়ে আমরা একটি অভিযোগপত্র পেয়েছি। আমাদের একটি টেকনিক্যাল কমিটি আছে। কমিটির সবাই মিলে আমরা বসব। দ্রুততম সময়ের মধ্যেই আমরা সমস্যাটি সুরাহা করব। আশা করি সুন্দর একটি সমাধান আসবে।’

আন্তঃবিভাগ ফুটবল প্রতিযোগিতা পরিচালনা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. বশির আহমেদ বলেন, ‘আমরা ছাত্রদের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেয়েছি। আজ বিকেল ৩টায় ফুটবলসংক্রান্ত টেকনিক্যাল কমিটির মিটিং আছে। মিটিংয়ের পর আমাদের সিদ্ধান্ত জানাব।’