বিদেশে উচ্চশিক্ষা: নিড ব্লাইন্ড স্কলারশিপের আদ্যোপান্ত

প্রতীকী ছবি

এইচএসসি পরীক্ষার পরপরই বিদেশে উচ্চশিক্ষার ফেসবুক গ্রুপগুলোতে নানান জিজ্ঞাসার ঝড় বয়ে যায়; বিশেষ করে কোন কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে স্কলারশিপ পাওয়া যাবে, কোন বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিড ব্লাইন্ড। আজ নিড ব্লাইন্ড স্কলারশিপের আদ্যোপান্ত নিয়ে আলোচনা করব।

নিড ব্লাইন্ড কী
একজন স্টুডেন্টের আর্থিক সহায়তার প্রয়োজনকে গুরুত্ব না দিয়ে কেবল মেধা ও যোগ্যতার বিবেচনায় ফিন্যান্সিয়াল এইড প্রদান করাই হচ্ছে নিড ব্লাইন্ড অ্যাডমিশন।

নিড ব্লাইন্ড প্রক্রিয়ায় নির্দিষ্ট কিছু বিশ্ববিদ্যালয় আবেদনপত্র যাচাই-বাছাইয়ের সময় আপনি আর্থিকভাবে কতটা সক্ষম, সে বিষয় বিবেচনা করে না; বরং আপনার মেধা ও যোগ্যতাকেই ভর্তির মূল মাপকাঠি হিসেবে দেখা হয়। অর্থের বিষয়টি বিবেচ্য হয় সবার শেষে।

তবে নিড ব্লাইন্ড অ্যাডমিশন মানে আপনার পুরো টিউশন ফি মওকুফ হয়ে যাওয়া না। নিড ব্লাইন্ড বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আপনাকে আর্থিক সহায়তা দেবে ঠিকই, কিন্তু বিনা মূল্যে পড়াবে না। তবে তা আপনার মা-বাবার বার্ষিক আয়ের ওপর ভিত্তি করেই।

বাইরের অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ই বিভিন্ন সময়ে ভর্তি নেওয়া শিক্ষার্থীদের নিড ব্লাইন্ড অ্যাডমিশন দেয়; অর্থাৎ একটি সেশনের জন্য তারা যতজনকে ভর্তি করবে, তাদের সবাইকে ফিন্যান্সিয়াল এইড দিয়ে আর্থিকভাবে সহায়তা করবে। তবে যে কেউ চাইলেই সেই সব বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারে না। কারণ এসব জায়গায় তুখোড় মেধাবী না হলে সুযোগ পাওয়া বেশ মুশকিল।

বিশ্বের জনপ্রিয় নিড ব্লাইন্ড বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হলো

  • হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি
  • ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি
  • প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটি
  • এমহার্স্ট কলেজ
  • ইয়েল ইউনিভার্সিটি
  • ব্রাউন ইউনিভার্সিটি
  • এডরিয়ান ইউনিভার্সিটি
  • ব্যাবসন কলেজ
  • বোস্টন ইউনিভার্সিটি
  • ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি
  • কর্নেল ইউনিভার্সিটি
  • ডিউক ইউনিভার্সিটি
  • গ্রিনেল ইউনিভার্সিটি
  • হ্যাভারফোর্ড কলেজ
  • নর্থ সেন্ট্রাল কলেজ
  • স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটি
  • সোয়ার্টমোর্থ কলেজ
  • ইউনিভার্সিটি অব সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়া
  • ইউনিভার্সিটি অব ভার্জিনিয়া
  • ভ্যান্ডারবিল্ট ইউনিভার্সিটি

এ ছাড়া আরও অনেক বিশ্ববিদ্যালয় এই সুবিধা দিয়ে থাকে। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে মেধাতালিকার ওপর ভিত্তি করে কোনো স্কলারশিপ নেই। আর্থিক সামর্থ্যের ওপর ভিত্তি করেই তারা বৃত্তি দিয়ে থাকে। এ ক্ষেত্রে তারা প্রতিটি শিক্ষার্থীর আর্থিক অবস্থা ভালোমতো বিবেচনা করে বৃত্তি দেয়।

আপনার আয় যেমনই হোক না কেন, তা দিয়ে হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির কিছুই যায়-আসে না। কারণ তাদের ওয়েবসাইটেই লেখা আছে, ‘আপনার আর্থিক সামর্থ্য এবং বৃত্তির আবেদন কখনোই আপনার ভর্তির পথে বাধা দেবে না।’ এখানে মেধাতালিকার ভিত্তিতে কোনো বৃত্তি দেওয়া হয় না। বৃত্তি দেওয়া হয় শিক্ষার্থীর আর্থিক সামর্থ্য অনুযায়ী। আবার এমহার্স্ট কলেজের ওয়েবসাইটে গেলে দেখবেন লেখা আছে, ‘এমহার্স্ট আপনার বৃত্তির আবেদন দেখে আপনার ভর্তির বিবেচনা করে না।’ অর্থাৎ আপনি যদি সেখানে পড়ার খরচ মেটাতে না পারেন, কিন্তু ভর্তির যোগ্যতা অর্জন করেন, তাহলেও তারা আপনাকে সেখানে ভর্তি করবে।

নিড ব্লাইন্ড অ্যাডমিশন যেভাবে

  • এইচএসসি/এ-লেভেলে ভালো ফলাফল
  • স্যাট স্কোর (১৪৯০-১৬০০)
  • আইইএলটিএস বা টোফেল স্কোর
  • রিকমেন্ডেশন লেটার
  • সহশিক্ষা কার্যক্রম সনদ
  • সামাজিক বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজের সনদ
  • গণিত অলিম্পিয়াড, পদার্থবিজ্ঞান অলিম্পিয়াডসহ বিভিন্ন মেধাবৃত্তি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের অভিজ্ঞতা

অনুবাদ: মুসাররাত আবির

বিদেশে উচ্চশিক্ষা: নিড ব্লাইন্ড স্কলারশিপের আদ্যোপান্ত

প্রতীকী ছবি

এইচএসসি পরীক্ষার পরপরই বিদেশে উচ্চশিক্ষার ফেসবুক গ্রুপগুলোতে নানান জিজ্ঞাসার ঝড় বয়ে যায়; বিশেষ করে কোন কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে স্কলারশিপ পাওয়া যাবে, কোন বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিড ব্লাইন্ড। আজ নিড ব্লাইন্ড স্কলারশিপের আদ্যোপান্ত নিয়ে আলোচনা করব।

নিড ব্লাইন্ড কী
একজন স্টুডেন্টের আর্থিক সহায়তার প্রয়োজনকে গুরুত্ব না দিয়ে কেবল মেধা ও যোগ্যতার বিবেচনায় ফিন্যান্সিয়াল এইড প্রদান করাই হচ্ছে নিড ব্লাইন্ড অ্যাডমিশন।

নিড ব্লাইন্ড প্রক্রিয়ায় নির্দিষ্ট কিছু বিশ্ববিদ্যালয় আবেদনপত্র যাচাই-বাছাইয়ের সময় আপনি আর্থিকভাবে কতটা সক্ষম, সে বিষয় বিবেচনা করে না; বরং আপনার মেধা ও যোগ্যতাকেই ভর্তির মূল মাপকাঠি হিসেবে দেখা হয়। অর্থের বিষয়টি বিবেচ্য হয় সবার শেষে।

তবে নিড ব্লাইন্ড অ্যাডমিশন মানে আপনার পুরো টিউশন ফি মওকুফ হয়ে যাওয়া না। নিড ব্লাইন্ড বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আপনাকে আর্থিক সহায়তা দেবে ঠিকই, কিন্তু বিনা মূল্যে পড়াবে না। তবে তা আপনার মা-বাবার বার্ষিক আয়ের ওপর ভিত্তি করেই।

বাইরের অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ই বিভিন্ন সময়ে ভর্তি নেওয়া শিক্ষার্থীদের নিড ব্লাইন্ড অ্যাডমিশন দেয়; অর্থাৎ একটি সেশনের জন্য তারা যতজনকে ভর্তি করবে, তাদের সবাইকে ফিন্যান্সিয়াল এইড দিয়ে আর্থিকভাবে সহায়তা করবে। তবে যে কেউ চাইলেই সেই সব বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারে না। কারণ এসব জায়গায় তুখোড় মেধাবী না হলে সুযোগ পাওয়া বেশ মুশকিল।

বিশ্বের জনপ্রিয় নিড ব্লাইন্ড বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হলো

  • হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি
  • ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি
  • প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটি
  • এমহার্স্ট কলেজ
  • ইয়েল ইউনিভার্সিটি
  • ব্রাউন ইউনিভার্সিটি
  • এডরিয়ান ইউনিভার্সিটি
  • ব্যাবসন কলেজ
  • বোস্টন ইউনিভার্সিটি
  • ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি
  • কর্নেল ইউনিভার্সিটি
  • ডিউক ইউনিভার্সিটি
  • গ্রিনেল ইউনিভার্সিটি
  • হ্যাভারফোর্ড কলেজ
  • নর্থ সেন্ট্রাল কলেজ
  • স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটি
  • সোয়ার্টমোর্থ কলেজ
  • ইউনিভার্সিটি অব সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়া
  • ইউনিভার্সিটি অব ভার্জিনিয়া
  • ভ্যান্ডারবিল্ট ইউনিভার্সিটি

এ ছাড়া আরও অনেক বিশ্ববিদ্যালয় এই সুবিধা দিয়ে থাকে। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে মেধাতালিকার ওপর ভিত্তি করে কোনো স্কলারশিপ নেই। আর্থিক সামর্থ্যের ওপর ভিত্তি করেই তারা বৃত্তি দিয়ে থাকে। এ ক্ষেত্রে তারা প্রতিটি শিক্ষার্থীর আর্থিক অবস্থা ভালোমতো বিবেচনা করে বৃত্তি দেয়।

আপনার আয় যেমনই হোক না কেন, তা দিয়ে হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির কিছুই যায়-আসে না। কারণ তাদের ওয়েবসাইটেই লেখা আছে, ‘আপনার আর্থিক সামর্থ্য এবং বৃত্তির আবেদন কখনোই আপনার ভর্তির পথে বাধা দেবে না।’ এখানে মেধাতালিকার ভিত্তিতে কোনো বৃত্তি দেওয়া হয় না। বৃত্তি দেওয়া হয় শিক্ষার্থীর আর্থিক সামর্থ্য অনুযায়ী। আবার এমহার্স্ট কলেজের ওয়েবসাইটে গেলে দেখবেন লেখা আছে, ‘এমহার্স্ট আপনার বৃত্তির আবেদন দেখে আপনার ভর্তির বিবেচনা করে না।’ অর্থাৎ আপনি যদি সেখানে পড়ার খরচ মেটাতে না পারেন, কিন্তু ভর্তির যোগ্যতা অর্জন করেন, তাহলেও তারা আপনাকে সেখানে ভর্তি করবে।

নিড ব্লাইন্ড অ্যাডমিশন যেভাবে

  • এইচএসসি/এ-লেভেলে ভালো ফলাফল
  • স্যাট স্কোর (১৪৯০-১৬০০)
  • আইইএলটিএস বা টোফেল স্কোর
  • রিকমেন্ডেশন লেটার
  • সহশিক্ষা কার্যক্রম সনদ
  • সামাজিক বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজের সনদ
  • গণিত অলিম্পিয়াড, পদার্থবিজ্ঞান অলিম্পিয়াডসহ বিভিন্ন মেধাবৃত্তি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের অভিজ্ঞতা

অনুবাদ: মুসাররাত আবির