বিশ্ববিদ্যালয় কী ছাত্রলীগের কাছে জিম্মি?

রেফায়েত উল্যাহ রুপক

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতির সদস্যবৃন্দ।

সংবাদ প্রকাশের জেরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) দৈনিক প্রথম আলোর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিকে মারধরের ঘটনায় মানববন্ধন করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি (চবিসাস)। রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে বঙ্গবন্ধু চত্বরে ওই মানবন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনের প্রক্টরিয়াল বডিকে প্রতিবাদলিপি দেয় চবিসাস। চবিসাসের দপ্তর সম্পাদক মোহাম্মদ আজহারের সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য রাখেন চবিসাসের নেতারা।

মানববন্ধনে চবিসাসের সভাপতি মাহবুব এ রহমান বলেন, ‘প্রশাসন ছাত্রলীগের এইসব কর্মকাণ্ড দেখেও না দেখার ভান করে আছে। যদি আগের ঘটনাগুলোর সুষ্ঠু বিচার করতো তাহলে তারা এমন দুঃসাহস দেখাতে পারতো না। এই ঘটনায় জড়িতদের স্থায়ী বহিষ্কারের দাবি জানাচ্ছি। তাদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের কাছে আমি অনুরোধ জানাবো, যারা সংগঠনের নামকে কলুষিত করছে তাদেরও ছাত্রলীগের থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করতে হবে।’

চবিসাসের সাধারণ সম্পাদক ইমাম ইমু বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় কি ছাত্রলীগের কাছে জিম্মি? বিশ্ববিদ্যালয় কি তাদের কাছে ইজারা দেয়া হয়েছে সাংবাদিকদের মারধর ঘটনা বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন না। এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলঙ্কজনক অধ্যায়। বিচারহীনতার কারণে তারা বারবার এমন বর্বর কাজ করতে সাহস পায়। সাংবাদিক অন্যায়, অবিচার তার কলমের কালিতে তুলে আনেন। সাংবাদিকের ওপর হামলা মানে বাকস্বাধীনতা হরণের নামান্তর।’

এরআগে রোববার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে দ্বিতীয় কলা অনুষদের সামনে হামলার শিকার হন মোশাররফ। ভুক্তভোগী সাংবাদিক মোশাররফ শাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সদস্য।

মোশাররফের ভাষ্যমতে, মারধরকারীরা শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রেজাউল হক রুবেলের অনুসারী ও সিএফসি গ্রুপের কর্মী।

ভুক্তভোগী মোশাররফ শাহ বলেন, ‘বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে তিনি উপাচার্যের কার্যালয়ে যাচ্ছিলাম বক্তব্য নেয়ার জন্য। এ সময় দ্বিতীয় কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের সামনে ১৫ থেকে ২০ জন ছাত্রলীগের কর্মী আমাকে আটকায়। তারা লাঠিসোটা দিয়ে মারধর করে। আমার মোবাইল কেড়ে নেয়। পরে সেখান থেকে রব হলে নিয়ে গিয়ে দ্বিতীয় দফা মারধর করে।’

তিনি বলেন, ‘মারধরের সময় নেতা–কর্মীরা পরবর্তীতে আর ছাত্রলীগ নিয়ে প্রতিবেদন না ছাপানোর হুমকি দেন। তারা বলেন, ‘আর নিউজ করিস, তারপর দেখব তোরে কে বাঁচাতে আসে। ছাত্রলীগকে নিয়ে কোনো নিউজ হবে না।’

এ বিষয়ে সিএফসি গ্রুপের একাংশের নেতা ও শাখা ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি রেজাউল হক রুবেল বলেন, আমার অনুসারী বলে কথা নেই। যারা অপরাধী এবং ঘটনার সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। আমি প্রশাসনকে বলেছি এবং আমরা সাংগঠনিকভাবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবো।

প্রক্টর ড. নূরুল আজিম সিকদার বলেন, সাংবাদিক কোন গ্রুপের না, সাংবাদিক পুরো দেশের। সাংবাদিকরা দেশের মুখপাত্র হিসেবে কাজ করে। সাংবাদিকদের মারধরের বিষয়ে আমাদের উপরমহলের সিন্ডিকেট সদস্য, উপদেষ্টা সদস্য এবং প্রক্টোরিয়াল বডি মিলে আমরা মিটিংয়ে বসবো। আমরা এ বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নিচ্ছি। এই ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত কঠোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ইবিহো/এসএস

বিশ্ববিদ্যালয় কী ছাত্রলীগের কাছে জিম্মি?

রেফায়েত উল্যাহ রুপক

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতির সদস্যবৃন্দ।

সংবাদ প্রকাশের জেরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) দৈনিক প্রথম আলোর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিকে মারধরের ঘটনায় মানববন্ধন করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি (চবিসাস)। রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে বঙ্গবন্ধু চত্বরে ওই মানবন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনের প্রক্টরিয়াল বডিকে প্রতিবাদলিপি দেয় চবিসাস। চবিসাসের দপ্তর সম্পাদক মোহাম্মদ আজহারের সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য রাখেন চবিসাসের নেতারা।

মানববন্ধনে চবিসাসের সভাপতি মাহবুব এ রহমান বলেন, ‘প্রশাসন ছাত্রলীগের এইসব কর্মকাণ্ড দেখেও না দেখার ভান করে আছে। যদি আগের ঘটনাগুলোর সুষ্ঠু বিচার করতো তাহলে তারা এমন দুঃসাহস দেখাতে পারতো না। এই ঘটনায় জড়িতদের স্থায়ী বহিষ্কারের দাবি জানাচ্ছি। তাদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের কাছে আমি অনুরোধ জানাবো, যারা সংগঠনের নামকে কলুষিত করছে তাদেরও ছাত্রলীগের থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করতে হবে।’

চবিসাসের সাধারণ সম্পাদক ইমাম ইমু বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় কি ছাত্রলীগের কাছে জিম্মি? বিশ্ববিদ্যালয় কি তাদের কাছে ইজারা দেয়া হয়েছে সাংবাদিকদের মারধর ঘটনা বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন না। এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলঙ্কজনক অধ্যায়। বিচারহীনতার কারণে তারা বারবার এমন বর্বর কাজ করতে সাহস পায়। সাংবাদিক অন্যায়, অবিচার তার কলমের কালিতে তুলে আনেন। সাংবাদিকের ওপর হামলা মানে বাকস্বাধীনতা হরণের নামান্তর।’

এরআগে রোববার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে দ্বিতীয় কলা অনুষদের সামনে হামলার শিকার হন মোশাররফ। ভুক্তভোগী সাংবাদিক মোশাররফ শাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সদস্য।

মোশাররফের ভাষ্যমতে, মারধরকারীরা শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রেজাউল হক রুবেলের অনুসারী ও সিএফসি গ্রুপের কর্মী।

ভুক্তভোগী মোশাররফ শাহ বলেন, ‘বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে তিনি উপাচার্যের কার্যালয়ে যাচ্ছিলাম বক্তব্য নেয়ার জন্য। এ সময় দ্বিতীয় কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের সামনে ১৫ থেকে ২০ জন ছাত্রলীগের কর্মী আমাকে আটকায়। তারা লাঠিসোটা দিয়ে মারধর করে। আমার মোবাইল কেড়ে নেয়। পরে সেখান থেকে রব হলে নিয়ে গিয়ে দ্বিতীয় দফা মারধর করে।’

তিনি বলেন, ‘মারধরের সময় নেতা–কর্মীরা পরবর্তীতে আর ছাত্রলীগ নিয়ে প্রতিবেদন না ছাপানোর হুমকি দেন। তারা বলেন, ‘আর নিউজ করিস, তারপর দেখব তোরে কে বাঁচাতে আসে। ছাত্রলীগকে নিয়ে কোনো নিউজ হবে না।’

এ বিষয়ে সিএফসি গ্রুপের একাংশের নেতা ও শাখা ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি রেজাউল হক রুবেল বলেন, আমার অনুসারী বলে কথা নেই। যারা অপরাধী এবং ঘটনার সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। আমি প্রশাসনকে বলেছি এবং আমরা সাংগঠনিকভাবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবো।

প্রক্টর ড. নূরুল আজিম সিকদার বলেন, সাংবাদিক কোন গ্রুপের না, সাংবাদিক পুরো দেশের। সাংবাদিকরা দেশের মুখপাত্র হিসেবে কাজ করে। সাংবাদিকদের মারধরের বিষয়ে আমাদের উপরমহলের সিন্ডিকেট সদস্য, উপদেষ্টা সদস্য এবং প্রক্টোরিয়াল বডি মিলে আমরা মিটিংয়ে বসবো। আমরা এ বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নিচ্ছি। এই ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত কঠোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ইবিহো/এসএস