বিসিএসের জট কমাতে পিএসসির সদস্য বাড়তে পারে

মোছাব্বের হোসেন
বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন।

বিসিএসের গতি বাড়াতে ও নিয়োগের সময় কমিয়ে আনতে সরকারি কর্ম কমিশনে (পিএসসি) নতুন করে বেশ কয়েকজন নতুন সদস্য নিয়োগ দিতে পারে সরকার। এরই মধ্যে সরকার এ নিয়োগ কার্যক্রম শুরু করেছে। পিএসসি ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্র প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

বিসিএসের জট কমাতে ও নিয়োগপ্রক্রিয়া দ্রুত শেষ করার জন্য পিএসসির সদস্যসংখ্যা ১৫ থেকে ২০ করার আইন পাস করেছে সরকার। এর মাধ্যমে সাংবিধানিক এ প্রতিষ্ঠান সদস্য বাড়ানোর ক্ষমতা পেল।

পিএসসি নিয়ে এ বছর একটি আইন পাস করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার। বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন অর্ডিন্যান্স ১৯৭৭ রহিতপূর্বক যুগোপযোগী করে পুনঃপ্রণয়নকল্পে প্রণীত আইনে এ বিধান রাখা হয়েছে। এ বছরের ২৩ জানুয়ারি আইনটি পাস করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার। আইনে বলা আছে, ১ জন সভাপতি এবং অন্যূন ৬ জন ও অনধিক ২০ জন সদস্যের সমন্বয়ে কমিশন গঠিত হবে।

এর আগে গত বছরের ডিসেম্বরে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি পিএসসির সদস্যসংখ্যা ২০ করার সুপারিশ করে। এ ছাড়া সরকারি কর্ম কমিশন সচিবালয় গঠনের বিষয়টি আইনি কাঠামোতে অন্তর্ভুক্ত এবং আইনের অধীন বিধিমালা প্রণয়নের বিধান যুক্ত করার কথা বলে কমিটি। পিএসসিতে ১৫ সদস্যের পরিবর্তে ২০ জন করার যৌক্তিকতা তুলে ধরে সংসদীয় কমিটি জানায়, পিএসসির ১২ গ্রেড ও তদূর্ধ্ব (ক্যাডার ও নন-ক্যাডার) পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রাক্‌-বাছাই, লিখিত পরীক্ষা, মৌখিক পরীক্ষা এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ব্যবহারিক পরীক্ষা নেওয়া, ফলাফল প্রস্তুত ও ফলাফল প্রকাশে দীর্ঘ সময় লেগে যায়। এ ছাড়া এর পাশাপাশি নিয়োগবিধি, কর্মের শর্তাবলি ইত্যাদি বিষয়ে কমিশন পরামর্শ দিয়ে থাকে, যা বিদ্যমান সদস্যদের পক্ষে যথাসময়ে পরামর্শ দেওয়া প্রায়ই সম্ভব হয় না। এ অবস্থায় অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে সম্পাদনে কমিশনের সদস্যসংখ্যা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন বলে উল্লেখ করে কমিটি।

পিএসসি সূত্র জানায়, আইন পাস হওয়ার পর এখন পিএসসির নতুন সদস্য নিয়োগের বিষয়টি আলোচনায় এসেছে। বর্তমানে পিএসসিতে ১২ জন নিয়মিত সদস্য আছেন। জুলাই মাসে আরও এক সদস্য অবসরে যাবেন।

জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে পিএসসির এক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, আইন পাস হওয়ার পর নতুন সদস্য নিয়োগের চেষ্টা চলছে। আরও পাঁচজন নতুন সদস্য নেওয়ার কথা শোনা যাচ্ছে। এ ছাড়া সরকারও এ বিষয়ে আন্তরিক বলে জানান ওই কর্মকর্তা।

ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, বর্তমানে ৪১তম বিসিএসের ভাইভা চলছে। সামনে ৪৩ ও ৪৪তম বিসিএসের ভাইভা শুরু হবে। বর্তমানে সদস্যরা সবাই ভাইভা বোর্ডে থাকেন। তাই একটি বিসিএসের ভাইভা চলার সময় আর কোনো ভাইভা নেওয়া যায় না। আবার সদস্যের অভাবে বেশি বোর্ড পরিচালনা করা যায় না। নতুন সদস্য নিয়োগ হলে ভাইভা নেওয়ার পরিধি বাড়বে, দ্রুত ভাইভা নেওয়া যাবে। সব মিলে বিসিএসে দারুণ গতি পাবে। তবে কবে এই নতুন সদস্য নিয়োগ হবে, তা নিশ্চিত করে না বললেও ওই কর্মকর্তা আগামী সপ্তাহের মধ্যে এ বিষয়ে তথ্য জানা যাবে বলে আভাস দেন।

আইনে সদস্য বাড়ানোর বিষয়ে জানতে চাইলে পিএসসির সাবেক এক চেয়ারম্যান ও একজন সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, এখন আইন হয়েছে, পিএসসি সদস্য ২০ জন পর্যন্ত বাড়াতে পারবে। আইন না থাকায় এটি আগে করা যায়নি। আইন হওয়ায় কমিশনের সদস্য বাড়াতে আর কোনো বাধা নেই। কমিশনে বেশি সদস্য আসা মানে কাজে গতি আসা। কমিশনের সদস্য বৃদ্ধি পেলে ভাইভার বেশি বোর্ড হবে। ভাইভা গতিশীল হবে। আগের থেকে কম সময়ে ভাইভাগুলো শেষ হবে। আইনের এ পদক্ষেপকে ইতিবাচক বলে মনে করেন তাঁরা।

বিসিএসের জট কমাতে পিএসসির সদস্য বাড়তে পারে

মোছাব্বের হোসেন
বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন।

বিসিএসের গতি বাড়াতে ও নিয়োগের সময় কমিয়ে আনতে সরকারি কর্ম কমিশনে (পিএসসি) নতুন করে বেশ কয়েকজন নতুন সদস্য নিয়োগ দিতে পারে সরকার। এরই মধ্যে সরকার এ নিয়োগ কার্যক্রম শুরু করেছে। পিএসসি ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্র প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

বিসিএসের জট কমাতে ও নিয়োগপ্রক্রিয়া দ্রুত শেষ করার জন্য পিএসসির সদস্যসংখ্যা ১৫ থেকে ২০ করার আইন পাস করেছে সরকার। এর মাধ্যমে সাংবিধানিক এ প্রতিষ্ঠান সদস্য বাড়ানোর ক্ষমতা পেল।

পিএসসি নিয়ে এ বছর একটি আইন পাস করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার। বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন অর্ডিন্যান্স ১৯৭৭ রহিতপূর্বক যুগোপযোগী করে পুনঃপ্রণয়নকল্পে প্রণীত আইনে এ বিধান রাখা হয়েছে। এ বছরের ২৩ জানুয়ারি আইনটি পাস করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার। আইনে বলা আছে, ১ জন সভাপতি এবং অন্যূন ৬ জন ও অনধিক ২০ জন সদস্যের সমন্বয়ে কমিশন গঠিত হবে।

এর আগে গত বছরের ডিসেম্বরে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি পিএসসির সদস্যসংখ্যা ২০ করার সুপারিশ করে। এ ছাড়া সরকারি কর্ম কমিশন সচিবালয় গঠনের বিষয়টি আইনি কাঠামোতে অন্তর্ভুক্ত এবং আইনের অধীন বিধিমালা প্রণয়নের বিধান যুক্ত করার কথা বলে কমিটি। পিএসসিতে ১৫ সদস্যের পরিবর্তে ২০ জন করার যৌক্তিকতা তুলে ধরে সংসদীয় কমিটি জানায়, পিএসসির ১২ গ্রেড ও তদূর্ধ্ব (ক্যাডার ও নন-ক্যাডার) পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রাক্‌-বাছাই, লিখিত পরীক্ষা, মৌখিক পরীক্ষা এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ব্যবহারিক পরীক্ষা নেওয়া, ফলাফল প্রস্তুত ও ফলাফল প্রকাশে দীর্ঘ সময় লেগে যায়। এ ছাড়া এর পাশাপাশি নিয়োগবিধি, কর্মের শর্তাবলি ইত্যাদি বিষয়ে কমিশন পরামর্শ দিয়ে থাকে, যা বিদ্যমান সদস্যদের পক্ষে যথাসময়ে পরামর্শ দেওয়া প্রায়ই সম্ভব হয় না। এ অবস্থায় অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে সম্পাদনে কমিশনের সদস্যসংখ্যা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন বলে উল্লেখ করে কমিটি।

পিএসসি সূত্র জানায়, আইন পাস হওয়ার পর এখন পিএসসির নতুন সদস্য নিয়োগের বিষয়টি আলোচনায় এসেছে। বর্তমানে পিএসসিতে ১২ জন নিয়মিত সদস্য আছেন। জুলাই মাসে আরও এক সদস্য অবসরে যাবেন।

জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে পিএসসির এক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, আইন পাস হওয়ার পর নতুন সদস্য নিয়োগের চেষ্টা চলছে। আরও পাঁচজন নতুন সদস্য নেওয়ার কথা শোনা যাচ্ছে। এ ছাড়া সরকারও এ বিষয়ে আন্তরিক বলে জানান ওই কর্মকর্তা।

ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, বর্তমানে ৪১তম বিসিএসের ভাইভা চলছে। সামনে ৪৩ ও ৪৪তম বিসিএসের ভাইভা শুরু হবে। বর্তমানে সদস্যরা সবাই ভাইভা বোর্ডে থাকেন। তাই একটি বিসিএসের ভাইভা চলার সময় আর কোনো ভাইভা নেওয়া যায় না। আবার সদস্যের অভাবে বেশি বোর্ড পরিচালনা করা যায় না। নতুন সদস্য নিয়োগ হলে ভাইভা নেওয়ার পরিধি বাড়বে, দ্রুত ভাইভা নেওয়া যাবে। সব মিলে বিসিএসে দারুণ গতি পাবে। তবে কবে এই নতুন সদস্য নিয়োগ হবে, তা নিশ্চিত করে না বললেও ওই কর্মকর্তা আগামী সপ্তাহের মধ্যে এ বিষয়ে তথ্য জানা যাবে বলে আভাস দেন।

আইনে সদস্য বাড়ানোর বিষয়ে জানতে চাইলে পিএসসির সাবেক এক চেয়ারম্যান ও একজন সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, এখন আইন হয়েছে, পিএসসি সদস্য ২০ জন পর্যন্ত বাড়াতে পারবে। আইন না থাকায় এটি আগে করা যায়নি। আইন হওয়ায় কমিশনের সদস্য বাড়াতে আর কোনো বাধা নেই। কমিশনে বেশি সদস্য আসা মানে কাজে গতি আসা। কমিশনের সদস্য বৃদ্ধি পেলে ভাইভার বেশি বোর্ড হবে। ভাইভা গতিশীল হবে। আগের থেকে কম সময়ে ভাইভাগুলো শেষ হবে। আইনের এ পদক্ষেপকে ইতিবাচক বলে মনে করেন তাঁরা।