মাধ্যমিক শিক্ষার জন্য পৃথক অধিদপ্তরের প্রস্তাব উঠছে ডিসি সম্মেলনে

নিজামুল হক

মাধ্যমিক শিক্ষাব্যবস্থায় গতি আনতে দীর্ঘদিন ধরেই এই স্তরের জন্য পৃথক অধিদপ্তরের দাবি ছিল শিক্ষকদের। এবার এই দাবি সংবলিত প্রস্তাব উঠছে জেলা প্রশাসক সম্মেলনে। আগামী ২৪ জানুয়ারি থেকে জেলা প্রশাসক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।

বর্তমানে মাধ্যমিক ও কলেজ—এই দুই স্তরের জন্য একটি অধিদপ্তর রয়েছে, যেটি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি), যেখানে একজন মহাপরিচালক থাকেন। ২৫ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষা কার্যক্রম তদারকি এবং ৫ লাখেরও বেশি শিক্ষক-কর্মচারীর প্রশাসনিক বিষয়গুলো পরিচালনা করতে হয় এই অধিদপ্তর থেকে।

জেলা প্রশাসকের যে প্রস্তাব যাচ্ছে, সেখানে বলা হয়েছে, বর্তমানে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের সব কার্যক্রম (পাঠদান/পরীক্ষা/জনবল ব্যবস্থাপনা) মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক কর্তৃক সম্পাদিত হচ্ছে। এতে অধিদপ্তরের কাজের পরিমাণ অনেক বেশি হওয়ায় তা বাস্তবায়নে বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। অধিদপ্তরের সেবাগ্রহীতার সংখ্যা অধিক হওয়ায় দুটি পর্যায়ের জন্য দুটি পৃথক অধিদপ্তর হলে সেবা প্রদান ও মাঠ পর্যায়ের কার্যক্রম মনিটরিং সহজ হয়। এই প্রস্তাবে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের পক্ষ থেকে বলা হয়, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের জন্য দুটি পৃথক অধিদপ্তর স্থাপন করা যেতে পারে।

তথ্য অনুযায়ী, মাধ্যমিক উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের অধীন মোট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৮২ শতাংশই মাধ্যমিক শিক্ষা স্তরের প্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশ শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী দেশে প্রায় ২১ হাজার মাধ্যমিক পর্যায়ের স্কুল ও ৪ হাজার ৬৯৯টি কলেজ রয়েছে। এই বিপুলসংখ্যক প্রতিষ্ঠানের পরিদর্শন, পরীক্ষণ ও মূল্যায়নের দায়িত্ব পালন করে থাকে মাউশি। প্রতিটি জেলা-উপজেলা পর্যায়ে কর্মকর্তা রয়েছে এই সংস্থার। বর্তমানে মোট ২৫ হাজার প্রতিষ্ঠান নিয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর নানা সমস্যায় জর্জরিত হয়ে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে। এই বিপুলসংখ্যক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তদারকিসহ অন্যান্য কার্যক্রম চালাতে গিয়ে বর্তমান মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর হিমশিম খাচ্ছে। স্কুল-কলেজগুলো যাচ্ছেতাইভাবে চলছে। কোনো মনিটরিং নেই।

১ হাজার ২৬৪টি কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য আলাদা কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর, ৯ হাজার ৬৫৬টি মাদ্রাসার জন্য আলাদা মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর রয়েছে। জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০-এ বলা হয়েছে, শিক্ষা প্রশাসনে বর্তমানে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরকে দুটি পৃথক অধিদপ্তর যথাক্রমে মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর এবং উচ্চ শিক্ষা ও গবেষণা অধিদপ্তর গঠন করা হবে। কিন্তু মন্ত্রণালয়ের অনীহার কারণে এটি আটকে আছে।

তবে মাউশির বর্তমান মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ গতকাল ইত্তেফাককে বলেন, ‘আমার মনে হয় মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার জন্য পৃথক অধিদপ্তরের প্রয়োজন নেই। এতে কাজের সমন্বয়হীনতা বাড়বে। সমস্যা তৈরি হবে।’ এছাড়া আরো যে প্রস্তাব যাচ্ছে, তার মধ্যে বেসরকারি এমপিওভুক্ত মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরের শিক্ষক, কর্মচারীদের জন্য আচরণ বিধিমালা প্রণয়ন, মাধ্যমিক ও উচ্চ স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য পাঠ্যপুস্তকে ট্রাফিক আইন/সড়ক পরিবহনের আইনের ধারা যুক্ত করা, কক্সবাজারে মেরিন বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন, ২৪ ঘণ্টার জন্য শিক্ষা চ্যানেল চালু, হাওর এলাকা গ্রীষ্মকালীন ছুটির তারিখ পরিবর্তন উল্লেখযোগ্য।

মাধ্যমিক শিক্ষার জন্য পৃথক অধিদপ্তরের প্রস্তাব উঠছে ডিসি সম্মেলনে

নিজামুল হক

মাধ্যমিক শিক্ষাব্যবস্থায় গতি আনতে দীর্ঘদিন ধরেই এই স্তরের জন্য পৃথক অধিদপ্তরের দাবি ছিল শিক্ষকদের। এবার এই দাবি সংবলিত প্রস্তাব উঠছে জেলা প্রশাসক সম্মেলনে। আগামী ২৪ জানুয়ারি থেকে জেলা প্রশাসক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।

বর্তমানে মাধ্যমিক ও কলেজ—এই দুই স্তরের জন্য একটি অধিদপ্তর রয়েছে, যেটি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি), যেখানে একজন মহাপরিচালক থাকেন। ২৫ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষা কার্যক্রম তদারকি এবং ৫ লাখেরও বেশি শিক্ষক-কর্মচারীর প্রশাসনিক বিষয়গুলো পরিচালনা করতে হয় এই অধিদপ্তর থেকে।

জেলা প্রশাসকের যে প্রস্তাব যাচ্ছে, সেখানে বলা হয়েছে, বর্তমানে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের সব কার্যক্রম (পাঠদান/পরীক্ষা/জনবল ব্যবস্থাপনা) মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক কর্তৃক সম্পাদিত হচ্ছে। এতে অধিদপ্তরের কাজের পরিমাণ অনেক বেশি হওয়ায় তা বাস্তবায়নে বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। অধিদপ্তরের সেবাগ্রহীতার সংখ্যা অধিক হওয়ায় দুটি পর্যায়ের জন্য দুটি পৃথক অধিদপ্তর হলে সেবা প্রদান ও মাঠ পর্যায়ের কার্যক্রম মনিটরিং সহজ হয়। এই প্রস্তাবে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের পক্ষ থেকে বলা হয়, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের জন্য দুটি পৃথক অধিদপ্তর স্থাপন করা যেতে পারে।

তথ্য অনুযায়ী, মাধ্যমিক উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের অধীন মোট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৮২ শতাংশই মাধ্যমিক শিক্ষা স্তরের প্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশ শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী দেশে প্রায় ২১ হাজার মাধ্যমিক পর্যায়ের স্কুল ও ৪ হাজার ৬৯৯টি কলেজ রয়েছে। এই বিপুলসংখ্যক প্রতিষ্ঠানের পরিদর্শন, পরীক্ষণ ও মূল্যায়নের দায়িত্ব পালন করে থাকে মাউশি। প্রতিটি জেলা-উপজেলা পর্যায়ে কর্মকর্তা রয়েছে এই সংস্থার। বর্তমানে মোট ২৫ হাজার প্রতিষ্ঠান নিয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর নানা সমস্যায় জর্জরিত হয়ে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে। এই বিপুলসংখ্যক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তদারকিসহ অন্যান্য কার্যক্রম চালাতে গিয়ে বর্তমান মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর হিমশিম খাচ্ছে। স্কুল-কলেজগুলো যাচ্ছেতাইভাবে চলছে। কোনো মনিটরিং নেই।

১ হাজার ২৬৪টি কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য আলাদা কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর, ৯ হাজার ৬৫৬টি মাদ্রাসার জন্য আলাদা মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর রয়েছে। জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০-এ বলা হয়েছে, শিক্ষা প্রশাসনে বর্তমানে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরকে দুটি পৃথক অধিদপ্তর যথাক্রমে মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর এবং উচ্চ শিক্ষা ও গবেষণা অধিদপ্তর গঠন করা হবে। কিন্তু মন্ত্রণালয়ের অনীহার কারণে এটি আটকে আছে।

তবে মাউশির বর্তমান মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ গতকাল ইত্তেফাককে বলেন, ‘আমার মনে হয় মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার জন্য পৃথক অধিদপ্তরের প্রয়োজন নেই। এতে কাজের সমন্বয়হীনতা বাড়বে। সমস্যা তৈরি হবে।’ এছাড়া আরো যে প্রস্তাব যাচ্ছে, তার মধ্যে বেসরকারি এমপিওভুক্ত মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরের শিক্ষক, কর্মচারীদের জন্য আচরণ বিধিমালা প্রণয়ন, মাধ্যমিক ও উচ্চ স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য পাঠ্যপুস্তকে ট্রাফিক আইন/সড়ক পরিবহনের আইনের ধারা যুক্ত করা, কক্সবাজারে মেরিন বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন, ২৪ ঘণ্টার জন্য শিক্ষা চ্যানেল চালু, হাওর এলাকা গ্রীষ্মকালীন ছুটির তারিখ পরিবর্তন উল্লেখযোগ্য।