লিচুর পর ‘লংগান’ ফলে ঝুঁকছেন হাবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা

নাঈম ইসলাম সংগ্রাম

লিচুর পর ‘লংগান’ ফলে ঝুঁকছেন হাবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা।

দেখতে আকর্ষণীয় ও সুমিষ্ট হওয়ায় লিচুর পরেই লিচু পরিবারের ফল লংগানের দিকে ঝুঁকছেন হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ফলটি লিচু থেকে কিছুটা ছোট, তুলনামূলক শক্ত বাদামি খোসা দিয়ে পরিবেষ্টিত। কিন্তু ভেতরটা লিচুর মতোই, স্বাদও একই। এর নাম লংগান। অনেকে চিনে থাকবেন কাঠ লিচু বা আঁশফল হিসেবে।

খোসা ছাড়ালে চোখের মতো দেখতে, তাই চীনে লংগানকে ‘ড্রাগনস আই’ বলা হয়। গ্রীষ্মপ্রধান দেশগুলোতে এ ফল ব্যাপকভাবে লক্ষ্য করা যায়। থাই জাতের এই লংগান সুমিষ্ট ও দেখতেও আকর্ষণীয় হওয়ায় লিচুর পরেই লিচু পরিবারের এই ফলটিতে মজেছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক দিয়ে প্রবেশ করতেই হাতের ডানদিকে কৃষি অনুষদ ভবনের একাডেমিক ১ কোলঘেষে দাঁড়িয়ে আছে গাছটি। কেউ ঢিল ছুড়ছেন, কেউবা গাছে উঠে আকারে বড় সাইজের লংগান পারছেন। নিচ থেকে ব্যাগ হাতে নির্দেশনা দিতেও দেখা যায় অনেককে। স্বাদে-পুষ্টিতে ভরপুর উচ্চ মূল্যের অপ্রচলিত এই ফল চাষে বাণিজ্যিক চাষাবাদের অপার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছেন হাবিপ্রবির কৃষি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. বিধান চন্দ্র হালদার।

লংগান ফলের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘এই ফলে বিভিন্ন ধরনের খনিজ উপাদান, শর্করা ও প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি পাওয়া যায়। লংগান ফলের বেশ কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতাও রয়েছে, যেমন: অনিদ্রা দূর করতে বিশেষ প্রতিষেধক হিসেবে ব্যবহার হয়। এ ছাড়া এর পাতা এলার্জি, ক্যানসার, ডায়াবেটিস ও হৃদরোগ নিরাময়ে ব্যবহার করা যায়।’

শুধু তাই নয়, বাজারে লিচু শেষ হয়ে যাওয়ার এক মাস পর, অর্থাৎ জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে লংগান পাকতে শুরু করে। থাকে আগস্ট মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত। তাই শিক্ষার্থীদের অপরিপক্ক অবস্থায় ফলটি না পারতেও পরামর্শ দেন এই অধ্যাপক।

এই ফল চাষে লাভবান হওয়ার ভালো সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন অধ্যাপক বিধান চন্দ্র হালদার৷ তিনি বলেন, ‘বর্তমানে বিদেশ থেকে আমদানি করে দেশে আনা এই ফল ঢাকার বিভিন্ন সুপারশপ ও বড় ফলের দোকানে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। তবে এই ফল যেহেতু আমাদের দেশের আবহাওয়ায় ভালো ফলন উপযোগী, তাই কেউ চাইলে এর বাগান বা বাণিজ্যিক চাষে যেতে পারেন।’

লংগান হার্ভেস্টে ১২ খেকে ১৫ দিন পর্যন্ত স্বাভাবিকভাবে রাখা যায়, নষ্ট হয় না। আর একটি মধ্যবয়সী গাছে ৭০ থেকে ১০০ কেজি ফল পাওয়া যায়। অর্থাৎ মধ্যবয়সী একটি গাছ থেকে লাখ টাকার লংগান পাওয়া সম্ভব।

অধ্যাপক বিধান চন্দ্র বলেন, ‘জুনে যখন লিচু শেষ হয়ে যাবে, তখন বাজারে আসবে লংগান। আগস্ট পর্যন্ত এটি থাকবে। এর পর রাম্বুতান পাকতে শুরু করবে। এটি অক্টোবর পর্যন্ত পাওয়া যাবে। এতে করে দেশের মানুষ দীর্ঘ সময় লিচুজাতীয় ফল খেতে পারবে।’

এই ফলের কোনো বিষাক্ত পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই জানিয়ে অধ্যাপক বিধান চন্দ্র বলেন, ফলটি বেশি খেলে সমস্যা নেই। তবে কিছুদিন পর পাকলে আকার ও স্বাদে সুমিষ্ট হলে খাওয়ার পরামর্শ থাকবে সবার প্রতি।

লিচুর পর ‘লংগান’ ফলে ঝুঁকছেন হাবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা

নাঈম ইসলাম সংগ্রাম

লিচুর পর ‘লংগান’ ফলে ঝুঁকছেন হাবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা।

দেখতে আকর্ষণীয় ও সুমিষ্ট হওয়ায় লিচুর পরেই লিচু পরিবারের ফল লংগানের দিকে ঝুঁকছেন হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ফলটি লিচু থেকে কিছুটা ছোট, তুলনামূলক শক্ত বাদামি খোসা দিয়ে পরিবেষ্টিত। কিন্তু ভেতরটা লিচুর মতোই, স্বাদও একই। এর নাম লংগান। অনেকে চিনে থাকবেন কাঠ লিচু বা আঁশফল হিসেবে।

খোসা ছাড়ালে চোখের মতো দেখতে, তাই চীনে লংগানকে ‘ড্রাগনস আই’ বলা হয়। গ্রীষ্মপ্রধান দেশগুলোতে এ ফল ব্যাপকভাবে লক্ষ্য করা যায়। থাই জাতের এই লংগান সুমিষ্ট ও দেখতেও আকর্ষণীয় হওয়ায় লিচুর পরেই লিচু পরিবারের এই ফলটিতে মজেছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক দিয়ে প্রবেশ করতেই হাতের ডানদিকে কৃষি অনুষদ ভবনের একাডেমিক ১ কোলঘেষে দাঁড়িয়ে আছে গাছটি। কেউ ঢিল ছুড়ছেন, কেউবা গাছে উঠে আকারে বড় সাইজের লংগান পারছেন। নিচ থেকে ব্যাগ হাতে নির্দেশনা দিতেও দেখা যায় অনেককে। স্বাদে-পুষ্টিতে ভরপুর উচ্চ মূল্যের অপ্রচলিত এই ফল চাষে বাণিজ্যিক চাষাবাদের অপার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছেন হাবিপ্রবির কৃষি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. বিধান চন্দ্র হালদার।

লংগান ফলের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘এই ফলে বিভিন্ন ধরনের খনিজ উপাদান, শর্করা ও প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি পাওয়া যায়। লংগান ফলের বেশ কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতাও রয়েছে, যেমন: অনিদ্রা দূর করতে বিশেষ প্রতিষেধক হিসেবে ব্যবহার হয়। এ ছাড়া এর পাতা এলার্জি, ক্যানসার, ডায়াবেটিস ও হৃদরোগ নিরাময়ে ব্যবহার করা যায়।’

শুধু তাই নয়, বাজারে লিচু শেষ হয়ে যাওয়ার এক মাস পর, অর্থাৎ জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে লংগান পাকতে শুরু করে। থাকে আগস্ট মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত। তাই শিক্ষার্থীদের অপরিপক্ক অবস্থায় ফলটি না পারতেও পরামর্শ দেন এই অধ্যাপক।

এই ফল চাষে লাভবান হওয়ার ভালো সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন অধ্যাপক বিধান চন্দ্র হালদার৷ তিনি বলেন, ‘বর্তমানে বিদেশ থেকে আমদানি করে দেশে আনা এই ফল ঢাকার বিভিন্ন সুপারশপ ও বড় ফলের দোকানে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। তবে এই ফল যেহেতু আমাদের দেশের আবহাওয়ায় ভালো ফলন উপযোগী, তাই কেউ চাইলে এর বাগান বা বাণিজ্যিক চাষে যেতে পারেন।’

লংগান হার্ভেস্টে ১২ খেকে ১৫ দিন পর্যন্ত স্বাভাবিকভাবে রাখা যায়, নষ্ট হয় না। আর একটি মধ্যবয়সী গাছে ৭০ থেকে ১০০ কেজি ফল পাওয়া যায়। অর্থাৎ মধ্যবয়সী একটি গাছ থেকে লাখ টাকার লংগান পাওয়া সম্ভব।

অধ্যাপক বিধান চন্দ্র বলেন, ‘জুনে যখন লিচু শেষ হয়ে যাবে, তখন বাজারে আসবে লংগান। আগস্ট পর্যন্ত এটি থাকবে। এর পর রাম্বুতান পাকতে শুরু করবে। এটি অক্টোবর পর্যন্ত পাওয়া যাবে। এতে করে দেশের মানুষ দীর্ঘ সময় লিচুজাতীয় ফল খেতে পারবে।’

এই ফলের কোনো বিষাক্ত পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই জানিয়ে অধ্যাপক বিধান চন্দ্র বলেন, ফলটি বেশি খেলে সমস্যা নেই। তবে কিছুদিন পর পাকলে আকার ও স্বাদে সুমিষ্ট হলে খাওয়ার পরামর্শ থাকবে সবার প্রতি।