অদম্য মেধাবী

সোহেল ও তার মায়ের গল্পটা একটু অন্যরকম

নিজস্ব প্রতিবেদক

সাতক্ষীরার তালা উপজেলার পাটকেলঘাটা আদর্শ বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থী শেখ সোহেল রানা ও তার মা রেহানা আক্তারছবি: প্রথম আলো

রেহানা আক্তার বলেন, বাবা গরিব। তারপরও বাবার বাড়িতে ছেলেকে নিয়ে ঠাঁই নিতে হয়। একপর্যায়ে বাবার বাড়ির একটি আধা পাকা ঘরে শুরু করেন বসবাস। খেতখামারে কাজ, অন্যের বাড়িতে কাজ, কাঁথা সেলাইয়ের কাজসহ কী করেননি তিনি। কিন্তু দমে যাননি। ছেলেকে ভর্তি করান গ্রামের খোর্দ্দ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। সেখানে পঞ্চম শ্রেণিতে জিপিএ-৫ পেয়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয় সোহেল। এরপর ভর্তি করা হয় তালার পাটকেলঘাটা আদর্শ বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়ে। সেখান থেকে এবার এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়েছে সোহেল।

রেহানা আক্তার আরও বলেন, তাঁর একার পক্ষে সোহেলকে লেখাপড়া করানো সম্ভব ছিল না। একপর্যায়ে তিন হাজার টাকা বেতনে একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ নেন তিনি। ছেলে যখন সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে নিজের লেখাপড়ার খরচ চালানো জন্য ছুটির দিন ও বিদ্যালয় শেষে শ্রমিকের কাজ করেছে সে। কখনো অন্যের ধানখেতে আবার কখনো সবজি খেতে কাজ করেছে। কোনো কোনো দিন সন্ধ্যার পর একটি চায়ের দোকানেও কাজ করেছে।

নিজের জীবনের গল্প বলতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন রেহানা। এত সবের মধ্যেও থেমে থাকেননি। ২০১৫ সালে এসএসসি ও ২০১৭ সালে এইচএসসি পাস করেন তিনি। বর্তমানে তিনি সাতক্ষীরা সরকারি মহিলা কলেজে কলা বিভাগের ডিগ্রিতে অধ্যয়নরত।
সোহেল রানা বলে, সে তার বাবাকে দেখেনি। মা তার বাবার অভাব পূরণ করেছে। লেখাপড়া শেখার জন্য মার অনুপ্রেরণায় ছুটিতে ও বিদ্যালয় শেষে অন্যের খেতে কাজ করেছে। চায়ের দোকানে কাজ করে নিজের লেখাপড়া চালানোর চেষ্টা করছে। সব বিষয় জিপিএ-৫ পেলেও কীভাবে ভবিষ্যতে লেখাপড়া করবে, তা নিয়ে তার মা ও তার ভাবনার শেষ নেই।

তালা উপজেলার পাটকেলঘাটা আদর্শ বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুল হাই বলেন, সোহেল রানা মেধাবী ছাত্র। বিদ্যালয়ে বেতনসহ অন্যান্য ফি তার কাছ থেকে নেওয়া হয়নি। শিক্ষকেরা তাকে নানাভাবে সহযোগিতা করেছেন। সুযোগ পেলে সে ভবিষ্যতে দেশের জন্য অবদান রাখতে পারবে বলে মনে করেন তিনি।

অদম্য মেধাবী

সোহেল ও তার মায়ের গল্পটা একটু অন্যরকম

নিজস্ব প্রতিবেদক

সাতক্ষীরার তালা উপজেলার পাটকেলঘাটা আদর্শ বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থী শেখ সোহেল রানা ও তার মা রেহানা আক্তারছবি: প্রথম আলো

রেহানা আক্তার বলেন, বাবা গরিব। তারপরও বাবার বাড়িতে ছেলেকে নিয়ে ঠাঁই নিতে হয়। একপর্যায়ে বাবার বাড়ির একটি আধা পাকা ঘরে শুরু করেন বসবাস। খেতখামারে কাজ, অন্যের বাড়িতে কাজ, কাঁথা সেলাইয়ের কাজসহ কী করেননি তিনি। কিন্তু দমে যাননি। ছেলেকে ভর্তি করান গ্রামের খোর্দ্দ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। সেখানে পঞ্চম শ্রেণিতে জিপিএ-৫ পেয়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয় সোহেল। এরপর ভর্তি করা হয় তালার পাটকেলঘাটা আদর্শ বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়ে। সেখান থেকে এবার এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়েছে সোহেল।

রেহানা আক্তার আরও বলেন, তাঁর একার পক্ষে সোহেলকে লেখাপড়া করানো সম্ভব ছিল না। একপর্যায়ে তিন হাজার টাকা বেতনে একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ নেন তিনি। ছেলে যখন সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে নিজের লেখাপড়ার খরচ চালানো জন্য ছুটির দিন ও বিদ্যালয় শেষে শ্রমিকের কাজ করেছে সে। কখনো অন্যের ধানখেতে আবার কখনো সবজি খেতে কাজ করেছে। কোনো কোনো দিন সন্ধ্যার পর একটি চায়ের দোকানেও কাজ করেছে।

নিজের জীবনের গল্প বলতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন রেহানা। এত সবের মধ্যেও থেমে থাকেননি। ২০১৫ সালে এসএসসি ও ২০১৭ সালে এইচএসসি পাস করেন তিনি। বর্তমানে তিনি সাতক্ষীরা সরকারি মহিলা কলেজে কলা বিভাগের ডিগ্রিতে অধ্যয়নরত।
সোহেল রানা বলে, সে তার বাবাকে দেখেনি। মা তার বাবার অভাব পূরণ করেছে। লেখাপড়া শেখার জন্য মার অনুপ্রেরণায় ছুটিতে ও বিদ্যালয় শেষে অন্যের খেতে কাজ করেছে। চায়ের দোকানে কাজ করে নিজের লেখাপড়া চালানোর চেষ্টা করছে। সব বিষয় জিপিএ-৫ পেলেও কীভাবে ভবিষ্যতে লেখাপড়া করবে, তা নিয়ে তার মা ও তার ভাবনার শেষ নেই।

তালা উপজেলার পাটকেলঘাটা আদর্শ বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুল হাই বলেন, সোহেল রানা মেধাবী ছাত্র। বিদ্যালয়ে বেতনসহ অন্যান্য ফি তার কাছ থেকে নেওয়া হয়নি। শিক্ষকেরা তাকে নানাভাবে সহযোগিতা করেছেন। সুযোগ পেলে সে ভবিষ্যতে দেশের জন্য অবদান রাখতে পারবে বলে মনে করেন তিনি।