স্বপ্ন যদি হয় আমেরিকায় উচ্চশিক্ষা

মৌমিতা চৌধুরী

মৌমিতা চৌধুরী

বাংলাদেশের মেয়ে মৌমিতা চৌধুরী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আন্ডার গ্র্যাজুয়েশন শেষ করার পর পেয়েছেন আমেরিকার মোট পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুল ফান্ডেড অফার লেটার। সেই সূত্রে কম্পিউটার সায়েন্স বিষয়ে ইউনিভার্সিটি অব ম্যাসাচুসেটস  এমাহাস্টে পিএইচডি করতে আমেরিকায় পাড়ি জমিয়েছেন মৌমিতা। নিজের অভিজ্ঞতার আলোকে এ দেশের শিক্ষার্থীদের জন্য আমেরিকায় উচ্চশিক্ষাবিষয়ক নানান তথ্য জানিয়েছেন তিনি।

কম্পিউটার সায়েন্স বিষয়ে পিএইচডি করার জন্য খুব ভালো একটি অপশন নর্থ আমেরিকা। পিএইচডির দরকারি ফান্ডিং পাওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি। পাশাপাশি কাজের ক্ষেত্রও বাকিদের তুলনায় এগিয়ে। সব মিলিয়ে আমি কেবল ইউএসএ ও কানাডায় আবেদন করেছিলাম।

উচ্চশিক্ষার প্রস্তুতি
কানাডা বা আমেরিকায় গ্র্যাজুয়েট লেভেলে আবেদন করার জন্য আইইএলটিএস, টোফেলের মতো ল্যাঙ্গুয়েজ টেস্ট দেওয়া যায়। আগে বেশির ভাগ স্কুলে ভর্তির যোগ্যতা হিসেবে জিআরই চাইত। তবে করোনাকাল ও তার পর থেকে অনেক স্কুলেই এ নিয়মটি বাধ্যতামূলক নয়। আমার প্রস্তুতি মূলত আন্ডারগ্র্যাড চতুর্থ বর্ষ থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় আন্ডারগ্র্যাডে আমাদের একটা থিসিস জমা দিতে হতো, যার অংশ হিসেবে ইন্টারন্যাশনাল টপ কনফারেন্সগুলোয় বেশ কিছু গবেষণাগ্রন্থ প্রকাশ করেছি; পরে বিদেশে উচ্চশিক্ষায় যোগ দেওয়ার আবেদন-প্রক্রিয়ায় খুব সহায়ক হয়েছিল এটি। ব্যক্তিগতভাবে আমি জিআরই ও টোফেল উভয় স্কোরসমেত আবেদন করেছি। আন্ডারগ্র্যাজুয়েশন শেষ হওয়ার পর সেই আবেদন পর্যন্ত বছরখানেক সময় ছিল হাতে। আগের অভিজ্ঞতায় সেই সময়টাও কাজে লাগাতে ভুল করিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েরই শিক্ষক ও নিজের থিসিস অ্যাডভাইজর ড. মোসাদ্দেক খানের সঙ্গে সহযোগী হিসেবে গবেষণাকাজ করেছি। রেকমেন্ডেশন লেটার পেতে সহায়তা করেছে সেসব কাজ।

আবেদনের প্রক্রিয়া
বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সচরাচর ভর্তির আবেদন নেয় দুই সেশনে। ফল এবং স্প্রিং। বেশির ভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে ফল সেশনে আবেদনের সময় বাঁধা থাকে ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারি মাস পর্যন্ত। এতে আবেদন করার পর ভর্তি কমিটির বাছাই এবং প্রফেসরদের সঙ্গে সাক্ষাৎকার শেষে ফেব্রুয়ারির মধ্যেই অফার লেটার চলে আসার কথা।

ফান্ডিং
কম্পিউটার সায়েন্স বিষয়ে পিএইচডি অ্যাডমিশন ফান্ডিং বিশ্ববিদ্যালয়ভেদে আলাদা কায়দায় দেওয়ার চল। তবে শিক্ষার্থীরা সচরাচর ফুল ফান্ডিং, মানে টিউশন ওয়েভার এবং টিচিং, রিসার্চ বা গ্র্যাজুয়েট অ্যাসিস্ট্যান্টশিপ পায়। ফেলোশিপ হিসেবে স্টাইপেন্ড পাওয়ার সুযোগও রয়েছে। আরও একটি স্কলারশিপের সুযোগ অনেক শিক্ষার্থীর চোখেই পড়ে না। ভর্তির সময় এককালীন এন্ট্রি স্কলারশিপও পেয়েছিলাম আমি। অ্যাপ্লিকেশন প্রোফাইলের ওপর ভিত্তি করে দেয়
ওরা এটি।

কাজের সুযোগ
আমেরিকায় এফ১ (F1) ভিসায় আসা শিক্ষার্থীদের কাজের সুযোগ সীমিত। একই সঙ্গে প্রক্রিয়াটি কারিকুলাম সহায়ক ও ইন্টার্নশিপ বাদে বেশ কঠিনও। ফুল ফান্ডেড পিএইচডি শিক্ষার্থীদের সামার ইন্টার্নশিপ বাদে কাজ করার সুযোগ নেই বললেই চলে।

মৌমিতা চৌধুরী, শিক্ষার্থী, ইউনিভার্সিটি অব ম্যাসাচুসেটস

অনুলিখন: মুনতাসির সিয়াম

স্বপ্ন যদি হয় আমেরিকায় উচ্চশিক্ষা

মৌমিতা চৌধুরী

মৌমিতা চৌধুরী

বাংলাদেশের মেয়ে মৌমিতা চৌধুরী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আন্ডার গ্র্যাজুয়েশন শেষ করার পর পেয়েছেন আমেরিকার মোট পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুল ফান্ডেড অফার লেটার। সেই সূত্রে কম্পিউটার সায়েন্স বিষয়ে ইউনিভার্সিটি অব ম্যাসাচুসেটস  এমাহাস্টে পিএইচডি করতে আমেরিকায় পাড়ি জমিয়েছেন মৌমিতা। নিজের অভিজ্ঞতার আলোকে এ দেশের শিক্ষার্থীদের জন্য আমেরিকায় উচ্চশিক্ষাবিষয়ক নানান তথ্য জানিয়েছেন তিনি।

কম্পিউটার সায়েন্স বিষয়ে পিএইচডি করার জন্য খুব ভালো একটি অপশন নর্থ আমেরিকা। পিএইচডির দরকারি ফান্ডিং পাওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি। পাশাপাশি কাজের ক্ষেত্রও বাকিদের তুলনায় এগিয়ে। সব মিলিয়ে আমি কেবল ইউএসএ ও কানাডায় আবেদন করেছিলাম।

উচ্চশিক্ষার প্রস্তুতি
কানাডা বা আমেরিকায় গ্র্যাজুয়েট লেভেলে আবেদন করার জন্য আইইএলটিএস, টোফেলের মতো ল্যাঙ্গুয়েজ টেস্ট দেওয়া যায়। আগে বেশির ভাগ স্কুলে ভর্তির যোগ্যতা হিসেবে জিআরই চাইত। তবে করোনাকাল ও তার পর থেকে অনেক স্কুলেই এ নিয়মটি বাধ্যতামূলক নয়। আমার প্রস্তুতি মূলত আন্ডারগ্র্যাড চতুর্থ বর্ষ থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় আন্ডারগ্র্যাডে আমাদের একটা থিসিস জমা দিতে হতো, যার অংশ হিসেবে ইন্টারন্যাশনাল টপ কনফারেন্সগুলোয় বেশ কিছু গবেষণাগ্রন্থ প্রকাশ করেছি; পরে বিদেশে উচ্চশিক্ষায় যোগ দেওয়ার আবেদন-প্রক্রিয়ায় খুব সহায়ক হয়েছিল এটি। ব্যক্তিগতভাবে আমি জিআরই ও টোফেল উভয় স্কোরসমেত আবেদন করেছি। আন্ডারগ্র্যাজুয়েশন শেষ হওয়ার পর সেই আবেদন পর্যন্ত বছরখানেক সময় ছিল হাতে। আগের অভিজ্ঞতায় সেই সময়টাও কাজে লাগাতে ভুল করিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েরই শিক্ষক ও নিজের থিসিস অ্যাডভাইজর ড. মোসাদ্দেক খানের সঙ্গে সহযোগী হিসেবে গবেষণাকাজ করেছি। রেকমেন্ডেশন লেটার পেতে সহায়তা করেছে সেসব কাজ।

আবেদনের প্রক্রিয়া
বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সচরাচর ভর্তির আবেদন নেয় দুই সেশনে। ফল এবং স্প্রিং। বেশির ভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে ফল সেশনে আবেদনের সময় বাঁধা থাকে ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারি মাস পর্যন্ত। এতে আবেদন করার পর ভর্তি কমিটির বাছাই এবং প্রফেসরদের সঙ্গে সাক্ষাৎকার শেষে ফেব্রুয়ারির মধ্যেই অফার লেটার চলে আসার কথা।

ফান্ডিং
কম্পিউটার সায়েন্স বিষয়ে পিএইচডি অ্যাডমিশন ফান্ডিং বিশ্ববিদ্যালয়ভেদে আলাদা কায়দায় দেওয়ার চল। তবে শিক্ষার্থীরা সচরাচর ফুল ফান্ডিং, মানে টিউশন ওয়েভার এবং টিচিং, রিসার্চ বা গ্র্যাজুয়েট অ্যাসিস্ট্যান্টশিপ পায়। ফেলোশিপ হিসেবে স্টাইপেন্ড পাওয়ার সুযোগও রয়েছে। আরও একটি স্কলারশিপের সুযোগ অনেক শিক্ষার্থীর চোখেই পড়ে না। ভর্তির সময় এককালীন এন্ট্রি স্কলারশিপও পেয়েছিলাম আমি। অ্যাপ্লিকেশন প্রোফাইলের ওপর ভিত্তি করে দেয়
ওরা এটি।

কাজের সুযোগ
আমেরিকায় এফ১ (F1) ভিসায় আসা শিক্ষার্থীদের কাজের সুযোগ সীমিত। একই সঙ্গে প্রক্রিয়াটি কারিকুলাম সহায়ক ও ইন্টার্নশিপ বাদে বেশ কঠিনও। ফুল ফান্ডেড পিএইচডি শিক্ষার্থীদের সামার ইন্টার্নশিপ বাদে কাজ করার সুযোগ নেই বললেই চলে।

মৌমিতা চৌধুরী, শিক্ষার্থী, ইউনিভার্সিটি অব ম্যাসাচুসেটস

অনুলিখন: মুনতাসির সিয়াম