ভিয়েতনাম যুদ্ধ চলার সময় যুক্তরাষ্ট্রে ‘জটিল’ এক বিষয়ে পিএইচডি অধ্যয়ন শুরু করেছিলেন এক ব্যক্তি। ওই বিষয়ে তিনি ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেন। তবে এর মধ্যে কেটে গেছে ৫২ বছর। তাঁর নাম নিক অ্যাক্সটেন।
নিক অ্যাক্সটেন ১৯৭০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের পিটসবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘ম্যাথমেটিক্যাল সোসিওলজি’ নিয়ে পিএইচডির থিসিস শুরু করেছিলেন। কিন্তু শেষ না করেই ফিরে যান জন্মভূমি যুক্তরাজ্যের ওয়েলসে। এরপর কেটে যায় কয়েক দশক। সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাক্সটেনকে ডক্টরেট ডিগ্রি দিয়েছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৬ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত তিনি গবেষণা করেন। অ্যাক্সটেনের স্ত্রী ক্লেয়ার অ্যাক্সটেন এবং ১১ বছর বয়সী নাতনি ফ্রেয়াও উপস্থিতি ছিলেন ডিগ্রি নেওয়ার অনুষ্ঠানে।অ্যাক্সটেন বলেন, তরুণ বয়সে মর্যাদাপূর্ণ ফুলব্রাইট স্কলারশিপ পেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর গবেষণার বিষয়বস্তু ছিল ‘অসম্ভব কঠিন’। কিছু সমস্যা এত বড় হয় যে তা বুঝতে জীবনের অধিকাংশ সময় চলে গেছে।
ভিয়েতনাম যুদ্ধের সময়ে যুক্তরাষ্ট্রে ‘জটিল’ বিষয়ে পিএইচডি শুরু করেছিলেন নিক অ্যাক্সটেন। এর মাঝে কেটে গেছে ৫২ বছরছবি: ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট
নিক অ্যাক্সটেন আরও বলেন, ‘আমি যখন পিএইচডি শুরু করি, তখন মনোবিজ্ঞান ক্রমে জনপ্রিয় বিষয় হয়ে উঠছিল। ১৯৬৭ সালে আমার স্নাতক শেষ হয়। এ সময় দ্রুত বদলাতে থাকে বিশ্ব। আমি মানুষকে বুঝতে চেয়েছিলাম বলে মনোবিজ্ঞান পড়তে গিয়েছিলাম। শেষ বয়সে এসে আবারও ব্রিস্টল ইউনিভার্সিটির ছাত্র হতে পেরে আমি আনন্দিত। এখানে আমার সহপাঠীরা সবাই ২৩ বছরের কাছাকাছি ছিলেন। কিন্তু তারপরও তাঁরা আমাকে তাঁদের একজন করে নিয়েছিলেন।’
অ্যাক্সটেনের গবেষণায় রয়েছে মানুষের আচরণ বোঝার নতুন তত্ত্ব। প্রত্যেক মানুষের মধ্যে যে মূল্যবোধ রয়েছে, তার ওপর ভিত্তি করে তিনি গবেষণা করেন। আর গবেষণায় তিনি দেখিয়েছেন, এর ফলে মানুষের ‘বিহ্যাভেরিয়াল সাইকলোজির’ দিক পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে।
৭৬ বছর বয়সী অ্যাক্সটেনের দুই সন্তান ছাড়াও চার নাতি-নাতনি রয়েছেন। ভিয়েতনাম যুদ্ধের সময় ১৯৬৭ সালে ইংল্যান্ডের পশ্চিম ইয়র্কশায়ারের লিডসে স্নাতকে পড়ালেখা শুরু করেছিলেন তিনি।
ষাটের দশকের সেই সময়ের কথা স্মরণ করে অ্যাক্সটেন বলেন, ভিয়েতনাম যুদ্ধ, প্যারিস আর প্রাগে ছাত্রদের বিক্ষোভের কথাও মনে পড়ে।
ড. নিক অ্যাক্সটেন ২০১৬ সালে তাঁর পড়াশোনা আবার শুরু করেন। ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনশাস্ত্রে এমএ শেষ করে সেখানেই পিএইচডি শুরু করেন। ৭৬ বছর বয়সে তিনি তাঁর পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করলেন। কর্মজীবনে তিনি ছিলেন ‘অক্সফোর্ড প্রাইমারি সায়েন্সের’ স্কুল শিক্ষণ প্রোগ্রামের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান লেখক।