পাবনা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে শিক্ষার্থীদের ভাবনা

নাজমুল হুদা
সাজ্জাদ মাহমুদ রাকিব (উপরের বায়ে), সুবর্ণা সরকার তিথি (উপরে ডানে), মো. সজীব হোসেন (নিচে বামে) এবং মোসা. তাজকেরাতুন আম্বিয়া (নিচে ডানে)।

পুন্ড্র বর্ধন ভূমি হতে পতিত; পাবনী ইছামতির পূর্বগামী ধারাত্রয় বিধৌত পাবনায়, জ্ঞান পিপাসুদের জন্য জ্ঞানের মশাল নিয়ে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। জৈষ্ঠ্যের ভোরে, জোড় বাংলোর আধিপত্য ও মহুয়া ভবনের বঙ্গীয় রেনেসাঁয়, হালকা শিশির ভেজা, কুয়াশায় সিক্ত হয় সকলের প্রিয় এই ৩০ একরের কাম্প্যাস। এখন ক্যাম্পাস সেঁজে উঠছে আলোকচ্ছটায়, মুক্তমঞ্চে কবিতার ছন্দ, মুক্তাঙ্গনের নাট্যঅভিনয় মুখরিত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি অঙ্গন। ৫টি অনুষদের অধীনে ২১টি বিভাগ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় এখন প্রাণবন্ত। বিশ্ববিদ্যালয় দিবসকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের ভাবনা তুলে ধরেছেন- নাজমুল হুদা

চাই শিক্ষার যথাযথ অবকাঠামো ও পরিবেশ: বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছে তাদের বিশ্ববিদ্যালয় একটি আবেগের জায়গা। ঠিক তেমনি প্রায় পাঁচ হাজার শিক্ষার্থীর আশা আর স্বপ্নের কেন্দ্রস্থল এই পাবিপ্রবি। প্রতিষ্ঠার পনের বছর পার হতে চললেও এখানে শিক্ষার যথাযথ পরিবেশ ও পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত হয়নি। আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা নিশ্চিত করতে বিভাগগুলোতে পর্যাপ্ত শিক্ষক নিয়োগ ও আধুনিক গবেষণাগার প্রতিষ্ঠা অত্যন্ত জরুরি। আবাসন ও ক্লাসরুম সংকট দূর করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান উন্নয়ন প্রকল্প দ্রততম সময়ের মধ্যে শেষ করে, সেগুলোর কার্যক্রম শুরু করা উচিত। এর পাশাপাশি শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের জন্য যুগোপযোগী প্রশিক্ষণের ব্যবস্থার মাধ্যমে শিক্ষার সঠিক পরিবেশ অনেকাংশেই নিশ্চিত হবে বলে মনে করি। সাজ্জাদ মাহমুদ রাকিব, শিক্ষার্থী, ফার্মেসি বিভাগ।

বিশ্ববিদ্যালয় হোক মুক্তচিন্তা ও গবেষণার প্রাণকেন্দ্র: বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে আমাদের প্রত্যাশার অন্ত নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যেন সংকীর্ণ মনমানসিকতা থেকে বের হয়ে মুক্তবুদ্ধির চর্চা করতে পারে, এটাই আমাদের কাম্য। পাশাপাশি শিক্ষক-শিক্ষার্থীর মধ্যে গড়ে উঠতে হবে পারস্পারিক সহযোগিতার মনোভাব। শুধুমাত্র দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি নয়, বিশ্ববিদ্যালয় হোক বিশ্বমানের গবেষণাকেন্দ্র। বিজ্ঞান, সংস্কৃতি, প্রযুক্তির মেলবন্ধন ঘটুক আমাদের এই তিরিশ একরে। এখানকার শিক্ষার্থীরা যেন পায় বিকাশের সর্বোচ্চ সুযোগ ও পরিবেশ। সুবর্ণা সরকার তিথি, ফার্মেসি বিভাগ।

শিক্ষা-সংস্কৃতির সকল অঙ্গনে থাকুক আমাদের পদচারণা: বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে আমার উন্মুক্ত চাওয়া হল; পাবিপ্রবি প্রাঙ্গণ হয়ে উঠুক শিক্ষা-সংস্কৃতির অন্যতম নিদর্শন। সকল শিক্ষার্থীর আবেগ ও অনুভূতির এই প্রাঙ্গণ আমাদের জীবন ও জীবিকার অন্যতম পথ প্রদর্শক। প্রতিযোগিতার এই বিশ্বায়নে মেধা ও শ্রম দিয়ে আমরা যেন যায়গা করে নিতে পারি, সেভাবে আমাদের প্রস্তুত করা হোক। সকল সংকট কাটিয়ে আমরা যেন সুশিক্ষা অর্জন করতে পারি, আমাদের মানুষিক শিক্ষা ও মূল্যবোধের সমন্বয়ক প্রাণের স্পন্দন এই ৩০একর কে জীবন-সন্ধিক্ষণে যেন সাফল্যের হাসিমুখে স্মরণ করতে পারি এ আশা ব্যক্ত করি। মো. সজীব হোসেন, রসায়ন বিভাগ।

চাই আধুনিক লাইব্রেরি: বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাসের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের অধিকাংশ সময় কাটে লাইব্রেরিতে। দক্ষ ও সুনাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে যখন লাইব্রেরির ভূমিকা প্রধান হয়, তখন আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরির উন্নয়নের বিষয়টিও অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। প্রাণের ক্যাম্পাসে একটি আধুনিক লাইব্রেরির স্বপ্ন প্রত্যেক শিক্ষার্থীর রয়েছে।লাইব্রেরির সংগ্রহশালায় পর্যাপ্ত ও প্রয়োজনীয় একাডেমিক বইয়ের সংকট থাকায় শিক্ষার্থীদের বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে। পাশাপাশি খবরের কাগজ পড়ার নির্দিষ্ট স্থান ও ডেস্ক না থাকায় প্রতিনিয়ত বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হচ্ছে। পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধার অভাব প্রায়ই দেখা যাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫তম জন্মদিনে আমার প্রথম প্রত্যাশা-কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির আধুনিকীকরণ।আধুনিক পরিবেশসম্পন্ন রিডিংরুমের ব্যবস্থা ও সংগ্রহশালায় বইয়ের সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি বইয়ের ধরনের আরও সংযোজন দরকার। সর্বোপরি, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়টিকে শিক্ষা, সংস্কৃতি, পরিবেশ সব ক্ষেত্রেই উন্নতির চরম শিখরে দেখতে চাই। মোসা. তাজকেরাতুন আম্বিয়া, ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগ।

লেখা: পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থী।

পাবনা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে শিক্ষার্থীদের ভাবনা

নাজমুল হুদা
সাজ্জাদ মাহমুদ রাকিব (উপরের বায়ে), সুবর্ণা সরকার তিথি (উপরে ডানে), মো. সজীব হোসেন (নিচে বামে) এবং মোসা. তাজকেরাতুন আম্বিয়া (নিচে ডানে)।

পুন্ড্র বর্ধন ভূমি হতে পতিত; পাবনী ইছামতির পূর্বগামী ধারাত্রয় বিধৌত পাবনায়, জ্ঞান পিপাসুদের জন্য জ্ঞানের মশাল নিয়ে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। জৈষ্ঠ্যের ভোরে, জোড় বাংলোর আধিপত্য ও মহুয়া ভবনের বঙ্গীয় রেনেসাঁয়, হালকা শিশির ভেজা, কুয়াশায় সিক্ত হয় সকলের প্রিয় এই ৩০ একরের কাম্প্যাস। এখন ক্যাম্পাস সেঁজে উঠছে আলোকচ্ছটায়, মুক্তমঞ্চে কবিতার ছন্দ, মুক্তাঙ্গনের নাট্যঅভিনয় মুখরিত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি অঙ্গন। ৫টি অনুষদের অধীনে ২১টি বিভাগ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় এখন প্রাণবন্ত। বিশ্ববিদ্যালয় দিবসকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের ভাবনা তুলে ধরেছেন- নাজমুল হুদা

চাই শিক্ষার যথাযথ অবকাঠামো ও পরিবেশ: বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছে তাদের বিশ্ববিদ্যালয় একটি আবেগের জায়গা। ঠিক তেমনি প্রায় পাঁচ হাজার শিক্ষার্থীর আশা আর স্বপ্নের কেন্দ্রস্থল এই পাবিপ্রবি। প্রতিষ্ঠার পনের বছর পার হতে চললেও এখানে শিক্ষার যথাযথ পরিবেশ ও পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত হয়নি। আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা নিশ্চিত করতে বিভাগগুলোতে পর্যাপ্ত শিক্ষক নিয়োগ ও আধুনিক গবেষণাগার প্রতিষ্ঠা অত্যন্ত জরুরি। আবাসন ও ক্লাসরুম সংকট দূর করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান উন্নয়ন প্রকল্প দ্রততম সময়ের মধ্যে শেষ করে, সেগুলোর কার্যক্রম শুরু করা উচিত। এর পাশাপাশি শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের জন্য যুগোপযোগী প্রশিক্ষণের ব্যবস্থার মাধ্যমে শিক্ষার সঠিক পরিবেশ অনেকাংশেই নিশ্চিত হবে বলে মনে করি। সাজ্জাদ মাহমুদ রাকিব, শিক্ষার্থী, ফার্মেসি বিভাগ।

বিশ্ববিদ্যালয় হোক মুক্তচিন্তা ও গবেষণার প্রাণকেন্দ্র: বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে আমাদের প্রত্যাশার অন্ত নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যেন সংকীর্ণ মনমানসিকতা থেকে বের হয়ে মুক্তবুদ্ধির চর্চা করতে পারে, এটাই আমাদের কাম্য। পাশাপাশি শিক্ষক-শিক্ষার্থীর মধ্যে গড়ে উঠতে হবে পারস্পারিক সহযোগিতার মনোভাব। শুধুমাত্র দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি নয়, বিশ্ববিদ্যালয় হোক বিশ্বমানের গবেষণাকেন্দ্র। বিজ্ঞান, সংস্কৃতি, প্রযুক্তির মেলবন্ধন ঘটুক আমাদের এই তিরিশ একরে। এখানকার শিক্ষার্থীরা যেন পায় বিকাশের সর্বোচ্চ সুযোগ ও পরিবেশ। সুবর্ণা সরকার তিথি, ফার্মেসি বিভাগ।

শিক্ষা-সংস্কৃতির সকল অঙ্গনে থাকুক আমাদের পদচারণা: বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে আমার উন্মুক্ত চাওয়া হল; পাবিপ্রবি প্রাঙ্গণ হয়ে উঠুক শিক্ষা-সংস্কৃতির অন্যতম নিদর্শন। সকল শিক্ষার্থীর আবেগ ও অনুভূতির এই প্রাঙ্গণ আমাদের জীবন ও জীবিকার অন্যতম পথ প্রদর্শক। প্রতিযোগিতার এই বিশ্বায়নে মেধা ও শ্রম দিয়ে আমরা যেন যায়গা করে নিতে পারি, সেভাবে আমাদের প্রস্তুত করা হোক। সকল সংকট কাটিয়ে আমরা যেন সুশিক্ষা অর্জন করতে পারি, আমাদের মানুষিক শিক্ষা ও মূল্যবোধের সমন্বয়ক প্রাণের স্পন্দন এই ৩০একর কে জীবন-সন্ধিক্ষণে যেন সাফল্যের হাসিমুখে স্মরণ করতে পারি এ আশা ব্যক্ত করি। মো. সজীব হোসেন, রসায়ন বিভাগ।

চাই আধুনিক লাইব্রেরি: বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাসের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের অধিকাংশ সময় কাটে লাইব্রেরিতে। দক্ষ ও সুনাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে যখন লাইব্রেরির ভূমিকা প্রধান হয়, তখন আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরির উন্নয়নের বিষয়টিও অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। প্রাণের ক্যাম্পাসে একটি আধুনিক লাইব্রেরির স্বপ্ন প্রত্যেক শিক্ষার্থীর রয়েছে।লাইব্রেরির সংগ্রহশালায় পর্যাপ্ত ও প্রয়োজনীয় একাডেমিক বইয়ের সংকট থাকায় শিক্ষার্থীদের বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে। পাশাপাশি খবরের কাগজ পড়ার নির্দিষ্ট স্থান ও ডেস্ক না থাকায় প্রতিনিয়ত বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হচ্ছে। পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধার অভাব প্রায়ই দেখা যাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫তম জন্মদিনে আমার প্রথম প্রত্যাশা-কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির আধুনিকীকরণ।আধুনিক পরিবেশসম্পন্ন রিডিংরুমের ব্যবস্থা ও সংগ্রহশালায় বইয়ের সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি বইয়ের ধরনের আরও সংযোজন দরকার। সর্বোপরি, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়টিকে শিক্ষা, সংস্কৃতি, পরিবেশ সব ক্ষেত্রেই উন্নতির চরম শিখরে দেখতে চাই। মোসা. তাজকেরাতুন আম্বিয়া, ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগ।

লেখা: পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থী।