জটিলতায় ৩৪ কোটি পাঠ্যবই

শরীফুল আলম সুমন

প্রতি বছর সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর এই চার মাস পুরোদমে চলে বিনামূল্যের পাঠ্যবই মুদ্রণ। অক্টোবরের মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ বই উপজেলা পর্যায়ে পৌঁছে যায়। এ বছর দরপত্র জটিলতায় সবেমাত্র শুরু হয়েছে আগামী শিক্ষাবর্ষের বই মুদ্রণ। তবে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর মুদ্রাকরদের দাবি না মানায় প্রাথমিকের ১০ কোটি বইয়ের মুদ্রণ এখনো শুরু হয়নি। আবার কাজ শুরু হতে না হতেই লোডশেডিংয়ে বড় জটিলতায় পড়েছেন মুদ্রণকারীরা। কাগজের মিলগুলো যথাসময়ে পর্যাপ্ত কাগজ সরবরাহ করতে পারছে না। আর মুদ্রণকারীরা লোডশেডিংয়ে টার্গেট অনুয়ায়ী ছাপার কাজ শেষ করতে পারছেন না।

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি জানান, ‘পাঠ্যবই মুদ্রণে আমরা অন্যান্য বছরের তুলনায় পিছিয়ে আছি। তারপরও আশা করছি জানুয়ারির ১ তারিখেই শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দিতে পারব। প্রেসগুলোর সঙ্গেও আমাদের সেভাবেই চুক্তি হয়েছে। যদি বড় কোনো বিপর্যয় না ঘটে, তাহলে আমরা সময়মতো বই দিতে পারব।’

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) সূত্র জানায়, ২০২৩ শিক্ষাবর্ষের জন্য এবার প্রায় ৩৪ কোটি ৬১ লাখ ৬৩ হাজার কপি পাঠ্যবই ছাপা হচ্ছে। এর মধ্যে প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিক স্তরে ৯ কোটি ৯৮ লাখ ৫৩ হাজার কপি এবং মাধ্যমিক স্তরে ২৪ কোটি ৬৩ লাখ ১০ হাজার কপি পাঠ্যবই ছাপা হচ্ছে।

এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. ফরহাদুল ইসলাম দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘মাধ্যমিকের অষ্টম ও নবম শ্রেণির বইয়ের কাজ পুরোদমে চলছে। নতুন শিক্ষাক্রমের ষষ্ঠ শ্রেণির সিডিও সরবরাহ করা হচ্ছে। প্রাথমিকের কাজও শুরু হওয়ার পথে। আমরা এ বছর মুদ্রাকরদের সময় কমিয়ে দিয়েছি। যারা ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির বইয়ের কাজ করছে তারা অষ্টম ও নবম শ্রেণির বইয়ের কাজ করছে না। ফলে দ্রুত কাজ শেষ হয়ে যাবে। আর বিদ্যুতের সমস্যা সমাধানে আমরা বিদ্যুৎ সচিবকে চিঠি দিয়েছি। তারা আমাদের প্রেসের এলাকাগুলোতে দুই ঘণ্টা লোডশেডিং কমিয়ে দেবেন বলে জানিয়েছেন। আমরা এ বছরও জানুয়ারির ১ তারিখেই শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দিতে পারব।’

জানা যায়, ইতিমধ্যে মাধ্যমিকের অষ্টম ও নবম শ্রেণির বইয়ের কাজ শুরু হয়েছে। নতুন শিক্ষাক্রমের ষষ্ঠ ও প্রথম শ্রেণির পা-ুলিপিও প্রায় চূড়ান্ত। আর সপ্তম শ্রেণির পা-ুলিপি চূড়ান্ত হতে আরও কিছুদিন সময় লাগবে। তবে প্রাথমিকের দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণি বইয়ের সবকিছু তৈরি থাকলেও গত শনিবার সবেমাত্র চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করেছেন মুদ্রাকররা। নানা দরকষাকষিতে মুদ্রাকররা চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করলেও কোনোভাবেই তারা প্রাথমিকের বইয়ের কাজ শুরু করছেন না।

প্রাথমিক বই মুদ্রণের ক্ষেত্রে এনসিটিবির চেয়ারম্যানের কাছে মুদ্রাকররা একাধিক দাবি জানিয়েছেন। সেগুলোর মধ্যে গত বছরের পারফরম্যান্স গ্যারান্টি দ্রুত ছাড় করা, বই ডেলিভারির ১০ দিনের মধ্যে ৮০ শতাংশ টাকা ছাড় করা ও বাকি টাকা ফেব্রুয়ারির মধ্যে পরিশোধ করা, বইয়ের সমস্যা হলে জরিমানা না করে রিপ্লেসমেন্টের ব্যবস্থা রাখা, বিদেশি পাল্প নয় দেশীয় মিল থেকে সংগ্রহ করা কাগজে বই ছাপা, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের বইয়ের দায়িত্বে থাকা মাহফুজা খাতুনকে সরিয়ে তার জায়গায় অন্য কোনো কর্মকর্তাকে পদায়ন দেওয়া অন্যতম। মুদ্রাকররা বলছেন, মাহফুজা খাতুন দীর্ঘদিন ধরে একই পদে রয়েছেন। তার দ্বারা প্রতিনিয়তই তাদের আর্থিকসহ নানা ব্যাপারে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আমরা যতদূর জানি, বছরের প্রথম দিনই আমরা সব শিক্ষার্থীর হাতে বই তুলে দিতে পারব। মূলত বইয়ের কাজ করে এনসিটিবি। আর এ ব্যাপারটি সমন্বয় করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। যদি মুদ্রাকরদের কোনো সমস্যা থাকে তাহলে তারা এনসিটিবির মাধ্যমে অধিদপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।’

মুদ্রণকারীরা জানিয়েছেন, ঢাকার প্রেসগুলোর বেশিরভাগই মাতুয়াইলে। এখানে দিনের প্রায় ১০ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে না। প্রতি এক থেকে দুই ঘণ্টা পরপরই বিদ্যুৎ চলে যায়। ফলে তেমনভাবে কাজই করা যাচ্ছে না। কারণ মেশিন চালু করতে প্রস্তুতির প্রয়োজন হয়, কিছুক্ষণ গরম করতে হয়। এসব প্রক্রিয়া শেষে মেশিন চালু করতে না করতেই আবার বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে। এছাড়া কাগজের মিলগুলোও ঠিকমতো কাগজ সরবরাহ করতে পারছে না।

সূত্র জানায়, এ বছরের ১০ মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো গত বছরের প্রাথমিকের বই মুদ্রণের পারফরম্যান্স গ্যারান্টির (পিজি) সব টাকা ফেরত পাননি মুদ্রাকররা। পিজি বাবদ প্রায় ২৫ কোটি টাকা ছাড় না হওয়া এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের (ডিপিই) ‘ক্লিয়ারেন্স লেটার’ না পাওয়ায় ব্যাংক থেকে ঋণ পাচ্ছেন না মুদ্রাকররা। ব্যাপারটি এনসিটিবি থেকে বারবার প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরকে বললেও তা সুরাহা হচ্ছে না।

মুদ্রাকররা জানান, বই ছাপার পর ওয়ারেন্টি পিরিয়ড ছয় মাস। এই ছয় মাসের মধ্যে কোনো বইয়ের ছাপা খারাপ বা ত্রুটি ধরা পড়লে তা নিয়মানুযায়ী পরিবর্তন করে দিতে হয়। আর তাতে ব্যর্থ হলে ত্রুটিপূর্ণ বইয়ের মূল্যের দ্বিগুণ অর্থ জরিমানার বিধান রয়েছে। কিন্তু চলতি শিক্ষাবর্ষের বইয়ের ওয়ারেন্টি শেষ হওয়ারও এক-দুই মাস পর ডিপিই চিঠি দিয়ে নানা সমস্যার কথা জানাচ্ছে।

জানতে চাইলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াত দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘পাঠ্যবইয়ের সম্পূর্ণ কাজই করে এনসিটিবি। আমরা শুধু বই বুঝে নিয়ে অর্থ ছাড় করি। তবে বইয়ের মান খারাপ হলে বা সমস্যা থাকলে আমরা নিয়মানুযায়ী ব্যবস্থা নিয়ে থাকি। যাদের বইয়ে সমস্যা নেই তাদের জামানতের অর্থ ছেড়ে দেওয়া হয়। আর যাদের সমস্যা আছে তাদের জামানত বা জরিমানার টাকা হয়তো আটকে রাখা হতে পারে। তারপরও এ ব্যাপারটি যেভাবে যত দ্রুত সমাধান করা যায়, তা আমরা করব।’

বইয়ের দায়িত্বে থাকা মাহফুজা খাতুনকে সরানোর দাবির ব্যাপারে মহাপরিচালক বলেন, ‘মাহফুজা খাতুন কিছুটা কড়া প্রকৃতির। তিনি কাজ বুঝে নিতে চান। এজন্যই হয়তো মুদ্রাকররা তাকে পছন্দ করেন না।’

জটিলতায় ৩৪ কোটি পাঠ্যবই

শরীফুল আলম সুমন

প্রতি বছর সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর এই চার মাস পুরোদমে চলে বিনামূল্যের পাঠ্যবই মুদ্রণ। অক্টোবরের মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ বই উপজেলা পর্যায়ে পৌঁছে যায়। এ বছর দরপত্র জটিলতায় সবেমাত্র শুরু হয়েছে আগামী শিক্ষাবর্ষের বই মুদ্রণ। তবে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর মুদ্রাকরদের দাবি না মানায় প্রাথমিকের ১০ কোটি বইয়ের মুদ্রণ এখনো শুরু হয়নি। আবার কাজ শুরু হতে না হতেই লোডশেডিংয়ে বড় জটিলতায় পড়েছেন মুদ্রণকারীরা। কাগজের মিলগুলো যথাসময়ে পর্যাপ্ত কাগজ সরবরাহ করতে পারছে না। আর মুদ্রণকারীরা লোডশেডিংয়ে টার্গেট অনুয়ায়ী ছাপার কাজ শেষ করতে পারছেন না।

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি জানান, ‘পাঠ্যবই মুদ্রণে আমরা অন্যান্য বছরের তুলনায় পিছিয়ে আছি। তারপরও আশা করছি জানুয়ারির ১ তারিখেই শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দিতে পারব। প্রেসগুলোর সঙ্গেও আমাদের সেভাবেই চুক্তি হয়েছে। যদি বড় কোনো বিপর্যয় না ঘটে, তাহলে আমরা সময়মতো বই দিতে পারব।’

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) সূত্র জানায়, ২০২৩ শিক্ষাবর্ষের জন্য এবার প্রায় ৩৪ কোটি ৬১ লাখ ৬৩ হাজার কপি পাঠ্যবই ছাপা হচ্ছে। এর মধ্যে প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিক স্তরে ৯ কোটি ৯৮ লাখ ৫৩ হাজার কপি এবং মাধ্যমিক স্তরে ২৪ কোটি ৬৩ লাখ ১০ হাজার কপি পাঠ্যবই ছাপা হচ্ছে।

এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. ফরহাদুল ইসলাম দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘মাধ্যমিকের অষ্টম ও নবম শ্রেণির বইয়ের কাজ পুরোদমে চলছে। নতুন শিক্ষাক্রমের ষষ্ঠ শ্রেণির সিডিও সরবরাহ করা হচ্ছে। প্রাথমিকের কাজও শুরু হওয়ার পথে। আমরা এ বছর মুদ্রাকরদের সময় কমিয়ে দিয়েছি। যারা ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির বইয়ের কাজ করছে তারা অষ্টম ও নবম শ্রেণির বইয়ের কাজ করছে না। ফলে দ্রুত কাজ শেষ হয়ে যাবে। আর বিদ্যুতের সমস্যা সমাধানে আমরা বিদ্যুৎ সচিবকে চিঠি দিয়েছি। তারা আমাদের প্রেসের এলাকাগুলোতে দুই ঘণ্টা লোডশেডিং কমিয়ে দেবেন বলে জানিয়েছেন। আমরা এ বছরও জানুয়ারির ১ তারিখেই শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দিতে পারব।’

জানা যায়, ইতিমধ্যে মাধ্যমিকের অষ্টম ও নবম শ্রেণির বইয়ের কাজ শুরু হয়েছে। নতুন শিক্ষাক্রমের ষষ্ঠ ও প্রথম শ্রেণির পা-ুলিপিও প্রায় চূড়ান্ত। আর সপ্তম শ্রেণির পা-ুলিপি চূড়ান্ত হতে আরও কিছুদিন সময় লাগবে। তবে প্রাথমিকের দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণি বইয়ের সবকিছু তৈরি থাকলেও গত শনিবার সবেমাত্র চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করেছেন মুদ্রাকররা। নানা দরকষাকষিতে মুদ্রাকররা চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করলেও কোনোভাবেই তারা প্রাথমিকের বইয়ের কাজ শুরু করছেন না।

প্রাথমিক বই মুদ্রণের ক্ষেত্রে এনসিটিবির চেয়ারম্যানের কাছে মুদ্রাকররা একাধিক দাবি জানিয়েছেন। সেগুলোর মধ্যে গত বছরের পারফরম্যান্স গ্যারান্টি দ্রুত ছাড় করা, বই ডেলিভারির ১০ দিনের মধ্যে ৮০ শতাংশ টাকা ছাড় করা ও বাকি টাকা ফেব্রুয়ারির মধ্যে পরিশোধ করা, বইয়ের সমস্যা হলে জরিমানা না করে রিপ্লেসমেন্টের ব্যবস্থা রাখা, বিদেশি পাল্প নয় দেশীয় মিল থেকে সংগ্রহ করা কাগজে বই ছাপা, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের বইয়ের দায়িত্বে থাকা মাহফুজা খাতুনকে সরিয়ে তার জায়গায় অন্য কোনো কর্মকর্তাকে পদায়ন দেওয়া অন্যতম। মুদ্রাকররা বলছেন, মাহফুজা খাতুন দীর্ঘদিন ধরে একই পদে রয়েছেন। তার দ্বারা প্রতিনিয়তই তাদের আর্থিকসহ নানা ব্যাপারে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আমরা যতদূর জানি, বছরের প্রথম দিনই আমরা সব শিক্ষার্থীর হাতে বই তুলে দিতে পারব। মূলত বইয়ের কাজ করে এনসিটিবি। আর এ ব্যাপারটি সমন্বয় করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। যদি মুদ্রাকরদের কোনো সমস্যা থাকে তাহলে তারা এনসিটিবির মাধ্যমে অধিদপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।’

মুদ্রণকারীরা জানিয়েছেন, ঢাকার প্রেসগুলোর বেশিরভাগই মাতুয়াইলে। এখানে দিনের প্রায় ১০ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে না। প্রতি এক থেকে দুই ঘণ্টা পরপরই বিদ্যুৎ চলে যায়। ফলে তেমনভাবে কাজই করা যাচ্ছে না। কারণ মেশিন চালু করতে প্রস্তুতির প্রয়োজন হয়, কিছুক্ষণ গরম করতে হয়। এসব প্রক্রিয়া শেষে মেশিন চালু করতে না করতেই আবার বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে। এছাড়া কাগজের মিলগুলোও ঠিকমতো কাগজ সরবরাহ করতে পারছে না।

সূত্র জানায়, এ বছরের ১০ মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো গত বছরের প্রাথমিকের বই মুদ্রণের পারফরম্যান্স গ্যারান্টির (পিজি) সব টাকা ফেরত পাননি মুদ্রাকররা। পিজি বাবদ প্রায় ২৫ কোটি টাকা ছাড় না হওয়া এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের (ডিপিই) ‘ক্লিয়ারেন্স লেটার’ না পাওয়ায় ব্যাংক থেকে ঋণ পাচ্ছেন না মুদ্রাকররা। ব্যাপারটি এনসিটিবি থেকে বারবার প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরকে বললেও তা সুরাহা হচ্ছে না।

মুদ্রাকররা জানান, বই ছাপার পর ওয়ারেন্টি পিরিয়ড ছয় মাস। এই ছয় মাসের মধ্যে কোনো বইয়ের ছাপা খারাপ বা ত্রুটি ধরা পড়লে তা নিয়মানুযায়ী পরিবর্তন করে দিতে হয়। আর তাতে ব্যর্থ হলে ত্রুটিপূর্ণ বইয়ের মূল্যের দ্বিগুণ অর্থ জরিমানার বিধান রয়েছে। কিন্তু চলতি শিক্ষাবর্ষের বইয়ের ওয়ারেন্টি শেষ হওয়ারও এক-দুই মাস পর ডিপিই চিঠি দিয়ে নানা সমস্যার কথা জানাচ্ছে।

জানতে চাইলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াত দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘পাঠ্যবইয়ের সম্পূর্ণ কাজই করে এনসিটিবি। আমরা শুধু বই বুঝে নিয়ে অর্থ ছাড় করি। তবে বইয়ের মান খারাপ হলে বা সমস্যা থাকলে আমরা নিয়মানুযায়ী ব্যবস্থা নিয়ে থাকি। যাদের বইয়ে সমস্যা নেই তাদের জামানতের অর্থ ছেড়ে দেওয়া হয়। আর যাদের সমস্যা আছে তাদের জামানত বা জরিমানার টাকা হয়তো আটকে রাখা হতে পারে। তারপরও এ ব্যাপারটি যেভাবে যত দ্রুত সমাধান করা যায়, তা আমরা করব।’

বইয়ের দায়িত্বে থাকা মাহফুজা খাতুনকে সরানোর দাবির ব্যাপারে মহাপরিচালক বলেন, ‘মাহফুজা খাতুন কিছুটা কড়া প্রকৃতির। তিনি কাজ বুঝে নিতে চান। এজন্যই হয়তো মুদ্রাকররা তাকে পছন্দ করেন না।’