জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়: গৌরব ও সাফল্যের ১৮ বছর

শাহীন আলম

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় পুরান ঢাকার সদরঘাটে অবস্থিত দেশের স্বনামধন্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। মুক্তিযুদ্ধ ও ইতিহাস-ঐতিহ্যে বিজড়িত বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠান হিসেবে ১৮৫৮ সালে যাত্রা শুরু করলেও ২০০৫ সালের ২০ অক্টোবর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইন’ পাস হলে কলেজ থেকে একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হয়। প্রতিষ্ঠালগ্নের ১৮ বছর পেরিয়ে ১৯ বছরে পদার্পণ করতে যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। আর এই প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে নেওয়া হয়েছে নানা উদ্যোগ। প্রতিষ্ঠার আঠারো বছর পরও অবকাঠামোগত সংকট ও সমস্যায় জর্জরিত থাকা সত্ত্বেও বিশ্ববিদ্যালয়টি একাডেমিক, বিজ্ঞান, গবেষণা ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে বেশ এগিয়ে গেছে বলে মনে করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। তবে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে আবাসিক সংকটের শীর্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। কেরানীগঞ্জ হতে যাওয়া নির্মাণাধীন ২য় ক্যাম্পাসের কাজ দ্রুত শেষ হলে শিক্ষার্থীদের কষ্ট লাঘব হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়টিতে বর্তমানে প্রায় ৭টি অনুষদ, ৩৮টি বিভাগ ও ২টি ইন্সটিটিউটে মোট ৬৯০ জন শিক্ষক অধ্যয়নরত আছেন।শিক্ষার্থীর সংখ্যা রয়েছে ১৮ হাজারের বেশি। এছাড়া এমফিল ২৪৫ জন ও পিএইচডি করছেন ১৪১ জন শিক্ষার্থী। এছাড়াও ৭৩৮ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছে প্রতিষ্ঠানটিতে।

বিগত আট বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন-অগ্রগতি নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান উপাচার্য (চলতি দায়িত্ব) ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কামালউদ্দিন আহমেদ জানান, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে আমি যখন প্রথম ইংরেজি বিভাগের চেয়ারম্যান হয়ে আসি; তখন দেখতাম এখানে অনেক সীমাবদ্ধতা। ছাত্ররাজনীতি নিয়ে মারামারি, অনেক বিভাগে রেগুলার ক্লাস না হওয়া ইত্যাদি। পরবর্তীতে আমি এখানকার প্রক্টরের দায়িত্ব পালন করি। ২০১৯ থেকে এখন পর্যন্ত এখানে কোষাধ্যক্ষ হিসেবে আছি। আমি যখন এখানে আসি, তখন ছাত্রী হলের কাজ অনেকাংশে বাকি। নতুন ভবনের উপর অংশের কাজ বন্ধ ছিল। এরপর কাজগুলো পর্যায়ক্রমে শেষ হয়।

তিনি জানান, নতুন ভবনে বিভাগগুলোর ক্লাসরুম বণ্টন নিয়েও অনেক কাজ করতে হয়েছে প্রশাসনকে। ছোট ক্যাম্পাস হওয়ায় এখানে অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তবে একাডেমিক কাজ চালিয়ে যেতে নতুন ভবন অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছিল।

গবেষণা খাতে বরাদ্দের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি, গবেষণা খাতে বরাদ্দ প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। আমরা তো প্রতিনিয়ত বাড়াতে চাই। বর্তমান আড়াই কোটি টাকা বরাদ্দ আছে। শিক্ষার্থীরা গবেষণা করতে চাইলেই আমরা বরাদ্দ দেব। চাকরির বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় আমাদের শিক্ষার্থীরা দারুণ সাফল্য নিয়ে আসছে।

এ সময় তিনি বিগত বছরগুলোতে প্রতিষ্ঠানটির অর্জনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। তার ভাষ্যমতে, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মাঝে আত্মহত্যার প্রবণতা, বিষণ্নতা, পরীক্ষাভীতি থেকে মুক্তির লক্ষ্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে প্রতিষ্ঠিত হয় কাউন্সেলিং সেন্টার। বঙ্গবন্ধুর জীবনদর্শন, মতাদর্শ, মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশসহ বিভিন্ন বিষয়ে গবেষণার জন্য জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে ‘বঙ্গবন্ধু চেয়ার’।

বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি (এপিএ) বাস্তবায়নে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) কর্তৃক মূল্যায়নে দেশের ৪৬টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২২ অর্থ বছরে ৯৩.৭৫ নম্বর পেয়ে তৃতীয় স্থান অর্জন করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।

বিদেশের একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে বিভিন্ন চুক্তি সম্পন্নকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য বিশেষ অর্জন বলে মনে করেন তিনি। সাংস্কৃতিক দিক থেকে জগন্নাথের অর্জন নিয়ে তিনি বলেন, সম্প্রতি আমাদের চারুকলা অনুষদে রূপান্তর হয়েছে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীতের দিকেও অনেক উন্নত। অনেক শিক্ষার্থী এখন সংগীত, নাট্যকলায় তাদের অর্জন নিয়ে আসছে। একটা বিশ্ববিদ্যালয় কতটা উন্নত তা বুঝা যায় সেখানকার সাংস্কৃতিক অগ্রগতি দিকে তাকালে। আর সেটা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে বেশ ভালো।

বিভাগগুলোর অগ্রগতি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি মাইলফলক হিসেবে মনে করেন তিনি। উদাহরণস্বরূপ তিনি বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগ এখন দেশ সেরা। নৃবিজ্ঞান ও বাংলা বিভাগ দ্রুত সেমিস্টার শেষ করছে। কোনো বিভাগেই কার্যত সেশনজট নেই। এছাড়া ফাইন্যান্সসহ আরও একাধিক বিভাগ খুব অল্প সময়ে অনেক উন্নতি হয়েছে বলে জানান তিনি।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে এগিয়ে নেওয়ার কাজ অনেকটা চ্যালেঞ্জিং বলে মত চলতি দায়িত্বে থাকা উপাচার্য (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. কামালউদ্দিন আহমদের। তিনি বলেন, আমাদের অন্যতম চ্যালেঞ্জ ছিল নতুন ক্যাম্পাসের কাজ শুরু করা। সেটা আমরা করতে সক্ষম হয়েছি। আশা করি, ২০২৪ সালের মধ্যে সেগুলো প্রায় শেষ হবে। এখন আমাদের লক্ষ্য প্রাথমিক কাজগুলো শেষ করে শিক্ষার্থীদের জন্য হল নির্মাণে কাজ করা। আমাদের ছেলে-মেয়েগুলো অনেক কষ্টে এখানে থাকে। আমরা চাই কিছু হল নির্মাণ করে আবাসন সংকট কমিয়ে আনা।

নতুন ক্যাম্পাসের কাজের অগ্রগতি নিয়ে তিনি বলেন, জগন্নাথে পরিকল্পনা ও প্রকৌশল দপ্তরে কাজ করার মতো লোকের সীমাবদ্ধতা ছিল। আগে সেখানে মন্ত্রণালয় থেকে চুক্তিভিত্তিক লোক নিয়োগ ছিল। এখন আমাদের নিজস্ব লোক আছে, তাই আশাকরি এবার কাজ ভালোই আগাবে। এছাড়া লেক নির্মাণ ও মাটি ভরাটে ভালোই বেগ পেতে হচ্ছে। নতুন মাটি হওয়ায় বৃষ্টিতে অনেক সময় ভেঙে যায়। এছাড়া দেয়াল নির্মাণের টেন্ডার পাওয়া লোক কাজে দক্ষ নয়, খুবই ধীর গতির কাজ করেন বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় অবকাঠামো হিসেবে অনেক ছোট ও এর সীমাবদ্ধতা রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে আমাদের প্রথম কাজ হচ্ছে শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করা। আমরা সেটি নিশ্চিতে কাজ করছি। দ্বিতীয় ক্যাম্পাস হলে আমাদের বাকি সমস্যাও কেটে যাবে। আমি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও শুভানুধ্যায়ীর কাছে আহ্বান জানাই, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে গিয়ে নিতে আমাদের একসাথে কাজ করার বিকল্প নেই।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়: গৌরব ও সাফল্যের ১৮ বছর

শাহীন আলম

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় পুরান ঢাকার সদরঘাটে অবস্থিত দেশের স্বনামধন্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। মুক্তিযুদ্ধ ও ইতিহাস-ঐতিহ্যে বিজড়িত বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠান হিসেবে ১৮৫৮ সালে যাত্রা শুরু করলেও ২০০৫ সালের ২০ অক্টোবর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইন’ পাস হলে কলেজ থেকে একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হয়। প্রতিষ্ঠালগ্নের ১৮ বছর পেরিয়ে ১৯ বছরে পদার্পণ করতে যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। আর এই প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে নেওয়া হয়েছে নানা উদ্যোগ। প্রতিষ্ঠার আঠারো বছর পরও অবকাঠামোগত সংকট ও সমস্যায় জর্জরিত থাকা সত্ত্বেও বিশ্ববিদ্যালয়টি একাডেমিক, বিজ্ঞান, গবেষণা ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে বেশ এগিয়ে গেছে বলে মনে করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। তবে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে আবাসিক সংকটের শীর্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। কেরানীগঞ্জ হতে যাওয়া নির্মাণাধীন ২য় ক্যাম্পাসের কাজ দ্রুত শেষ হলে শিক্ষার্থীদের কষ্ট লাঘব হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়টিতে বর্তমানে প্রায় ৭টি অনুষদ, ৩৮টি বিভাগ ও ২টি ইন্সটিটিউটে মোট ৬৯০ জন শিক্ষক অধ্যয়নরত আছেন।শিক্ষার্থীর সংখ্যা রয়েছে ১৮ হাজারের বেশি। এছাড়া এমফিল ২৪৫ জন ও পিএইচডি করছেন ১৪১ জন শিক্ষার্থী। এছাড়াও ৭৩৮ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছে প্রতিষ্ঠানটিতে।

বিগত আট বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন-অগ্রগতি নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান উপাচার্য (চলতি দায়িত্ব) ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কামালউদ্দিন আহমেদ জানান, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে আমি যখন প্রথম ইংরেজি বিভাগের চেয়ারম্যান হয়ে আসি; তখন দেখতাম এখানে অনেক সীমাবদ্ধতা। ছাত্ররাজনীতি নিয়ে মারামারি, অনেক বিভাগে রেগুলার ক্লাস না হওয়া ইত্যাদি। পরবর্তীতে আমি এখানকার প্রক্টরের দায়িত্ব পালন করি। ২০১৯ থেকে এখন পর্যন্ত এখানে কোষাধ্যক্ষ হিসেবে আছি। আমি যখন এখানে আসি, তখন ছাত্রী হলের কাজ অনেকাংশে বাকি। নতুন ভবনের উপর অংশের কাজ বন্ধ ছিল। এরপর কাজগুলো পর্যায়ক্রমে শেষ হয়।

তিনি জানান, নতুন ভবনে বিভাগগুলোর ক্লাসরুম বণ্টন নিয়েও অনেক কাজ করতে হয়েছে প্রশাসনকে। ছোট ক্যাম্পাস হওয়ায় এখানে অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তবে একাডেমিক কাজ চালিয়ে যেতে নতুন ভবন অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছিল।

গবেষণা খাতে বরাদ্দের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি, গবেষণা খাতে বরাদ্দ প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। আমরা তো প্রতিনিয়ত বাড়াতে চাই। বর্তমান আড়াই কোটি টাকা বরাদ্দ আছে। শিক্ষার্থীরা গবেষণা করতে চাইলেই আমরা বরাদ্দ দেব। চাকরির বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় আমাদের শিক্ষার্থীরা দারুণ সাফল্য নিয়ে আসছে।

এ সময় তিনি বিগত বছরগুলোতে প্রতিষ্ঠানটির অর্জনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। তার ভাষ্যমতে, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মাঝে আত্মহত্যার প্রবণতা, বিষণ্নতা, পরীক্ষাভীতি থেকে মুক্তির লক্ষ্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে প্রতিষ্ঠিত হয় কাউন্সেলিং সেন্টার। বঙ্গবন্ধুর জীবনদর্শন, মতাদর্শ, মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশসহ বিভিন্ন বিষয়ে গবেষণার জন্য জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে ‘বঙ্গবন্ধু চেয়ার’।

বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি (এপিএ) বাস্তবায়নে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) কর্তৃক মূল্যায়নে দেশের ৪৬টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২২ অর্থ বছরে ৯৩.৭৫ নম্বর পেয়ে তৃতীয় স্থান অর্জন করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।

বিদেশের একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে বিভিন্ন চুক্তি সম্পন্নকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য বিশেষ অর্জন বলে মনে করেন তিনি। সাংস্কৃতিক দিক থেকে জগন্নাথের অর্জন নিয়ে তিনি বলেন, সম্প্রতি আমাদের চারুকলা অনুষদে রূপান্তর হয়েছে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীতের দিকেও অনেক উন্নত। অনেক শিক্ষার্থী এখন সংগীত, নাট্যকলায় তাদের অর্জন নিয়ে আসছে। একটা বিশ্ববিদ্যালয় কতটা উন্নত তা বুঝা যায় সেখানকার সাংস্কৃতিক অগ্রগতি দিকে তাকালে। আর সেটা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে বেশ ভালো।

বিভাগগুলোর অগ্রগতি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি মাইলফলক হিসেবে মনে করেন তিনি। উদাহরণস্বরূপ তিনি বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগ এখন দেশ সেরা। নৃবিজ্ঞান ও বাংলা বিভাগ দ্রুত সেমিস্টার শেষ করছে। কোনো বিভাগেই কার্যত সেশনজট নেই। এছাড়া ফাইন্যান্সসহ আরও একাধিক বিভাগ খুব অল্প সময়ে অনেক উন্নতি হয়েছে বলে জানান তিনি।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে এগিয়ে নেওয়ার কাজ অনেকটা চ্যালেঞ্জিং বলে মত চলতি দায়িত্বে থাকা উপাচার্য (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. কামালউদ্দিন আহমদের। তিনি বলেন, আমাদের অন্যতম চ্যালেঞ্জ ছিল নতুন ক্যাম্পাসের কাজ শুরু করা। সেটা আমরা করতে সক্ষম হয়েছি। আশা করি, ২০২৪ সালের মধ্যে সেগুলো প্রায় শেষ হবে। এখন আমাদের লক্ষ্য প্রাথমিক কাজগুলো শেষ করে শিক্ষার্থীদের জন্য হল নির্মাণে কাজ করা। আমাদের ছেলে-মেয়েগুলো অনেক কষ্টে এখানে থাকে। আমরা চাই কিছু হল নির্মাণ করে আবাসন সংকট কমিয়ে আনা।

নতুন ক্যাম্পাসের কাজের অগ্রগতি নিয়ে তিনি বলেন, জগন্নাথে পরিকল্পনা ও প্রকৌশল দপ্তরে কাজ করার মতো লোকের সীমাবদ্ধতা ছিল। আগে সেখানে মন্ত্রণালয় থেকে চুক্তিভিত্তিক লোক নিয়োগ ছিল। এখন আমাদের নিজস্ব লোক আছে, তাই আশাকরি এবার কাজ ভালোই আগাবে। এছাড়া লেক নির্মাণ ও মাটি ভরাটে ভালোই বেগ পেতে হচ্ছে। নতুন মাটি হওয়ায় বৃষ্টিতে অনেক সময় ভেঙে যায়। এছাড়া দেয়াল নির্মাণের টেন্ডার পাওয়া লোক কাজে দক্ষ নয়, খুবই ধীর গতির কাজ করেন বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় অবকাঠামো হিসেবে অনেক ছোট ও এর সীমাবদ্ধতা রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে আমাদের প্রথম কাজ হচ্ছে শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করা। আমরা সেটি নিশ্চিতে কাজ করছি। দ্বিতীয় ক্যাম্পাস হলে আমাদের বাকি সমস্যাও কেটে যাবে। আমি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও শুভানুধ্যায়ীর কাছে আহ্বান জানাই, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে গিয়ে নিতে আমাদের একসাথে কাজ করার বিকল্প নেই।