বেসরকারি বিদ্যালয়

নিজস্ব প্রক্রিয়ায় ফাঁকা আসনে ভর্তির সুযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক

বেসরকারি বিদ্যালয়গুলো এ বছর অনলাইনের মাধ্যমে নিজস্ব ভর্তিপ্রক্রিয়ায় শিক্ষার্থী ভর্তি করতে পারবে। সরকারি ও বেসরকারি বিদ্যালয়ে লটারিতে বাদ পড়া এবং ভর্তিপ্রক্রিয়া থেকে বঞ্চিত শিক্ষার্থীরা এভাবে এসব বেসরকারি বিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাবে।

গতকাল সোমবার মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।

সারা দেশে ৫৪০টি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রথম থেকে নবম শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তিতে ডিজিটাল লটারি হয়েছে।

গতকাল থেকে টেলিটকের নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ফল জানতে পারছে শিক্ষার্থীরা।

এ বছর ৫৪০টি সরকারি মাধ্যমিকে মোট এক লাখ সাত হাজার ৮৯০টি শূন্য আসনের জন্য গ্রহণযোগ্য আবেদন পড়েছে ছয় লাখ ৩৮ হাজার ৫৯৩টি। অর্থাৎ পাঁচ লাখের বেশি শিক্ষার্থী সরকারি বিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ হারাবে।

বেসরকারি দুই হাজার ৮৫২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসনসংখ্যার তুলনায় আবেদন কম পড়ায় ছয় লাখের বেশি আসন ফাঁকা থেকে যাচ্ছে।

বেসরকারি মাধ্যমিকে ভর্তির জন্য ডিজিটাল লটারি হবে আজ মঙ্গলবার। ফলে ভর্তির বাইরে থাকা শিক্ষার্থীরা যেমন ভর্তি নিয়ে সংশয়ে থাকবে, তেমনি অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিপুলসংখ্যক আসন ফাঁকা থেকে যাবে।

এ বিষয়ে মাউশির উপপরিচালক মোহাম্মদ আজিজ উদ্দিন বলেন, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে যাতে আসন ফাঁকা না থাকে এবং শিক্ষার্থীরা যাতে ভর্তি হতে পারে, সে লক্ষ্যে নতুন সিদ্ধান্ত আসতে পারে। ক্লাস শুরু হওয়ার আগে আসন ফাঁকা থাকা সাপেক্ষে বিদ্যালয়গুলো অনলাইন ভর্তিপ্রক্রিয়া অনুসরণ করে শিক্ষার্থী ভর্তি করাতে পারবে। এ বিষয়ে দু-এক দিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হবে।

মাউশির মাধ্যমিক বিভাগের পরিচালক অধ্যাপক বেলাল আহমেদ বলেন, অনলাইনে ভর্তি নীতিমালা মেনে বেসরকারি বিদ্যালয়গুলো এ বছর ভর্তির সুযোগ পেলেও পরবর্তী বছর থেকে হয়তো তা থাকবে না।

যেসব স্কুলের শিক্ষার্থী ভর্তিতে আগ্রহ নেই, এমন প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হবে কি না, প্রশ্নে পরিচালক বলেন, এ কারণে প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা যায় না। নীতিমালা মেনে এসব প্রতিষ্ঠান পরিচালনা হচ্ছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে।

গতকাল বিকেল ৪টায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে সরকারি মাধ্যমিকে শিক্ষার্থী ভর্তির ডিজিটাল লটারি উদ্বোধন করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘অনেক বেসরকারি মাধ্যমিক প্রতিষ্ঠান অনলাইন ভর্তি কার্যক্রমে যুক্ত হয়নি। আশা করছি, পরবর্তী সময়ে তারাও যুক্ত হবে। এ ছাড়া আমাদের শিক্ষার্থীদের তুলনায় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে আসনসংখ্যা অনেক বেশি। ’

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘কয়েকটি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সবচেয়ে মেধাবী শিক্ষার্থীদের বাছাই করে ভর্তি করে। সেখানেও দু-একজনের ফল খারাপ হয়। আমার প্রশ্ন, প্রতিষ্ঠান তাহলে কী করে এবং তাদের কৃতিত্ব কোথায়? আমরা চাই, সব স্কুলই ভালো হবে, সব মেধার শিক্ষার্থীরাই যেন সব স্কুলে ভর্তির সুযোগ পায়। সবাই পছন্দ অনুযায়ী বিদ্যালয় পাবে না। আমাদের এখানে অনেক বিদ্যালয় আছে, যেখানে অভিভাবকরা তাঁদের সন্তানদের সেখানে ভর্তি করাতে চাপের মধ্যে রাখেন। পরীক্ষা দিয়ে পাস করে নির্ধারিত স্কুলে ভর্তি হতে না পারলে তাকে দিয়ে আর কিছু হবে না—এমন ভয়ভীতি, শঙ্কা ও হতাশায় ফেলে দেওয়া হয়। ’

ভর্তিপ্রক্রিয়া নিয়ে আগে অনেক অভিযোগ পাওয়া যেত জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তিপ্রক্রিয়া অনেক স্বচ্ছ হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মেধার সমতা প্রতিষ্ঠা, ভর্তি কোচিং বাণিজ্য রোধ, অবৈধ শিক্ষার্থী ভর্তি রোধ, শিশুমনে অতিরিক্ত চাপ প্রশমন, সময় ও অর্থ সাশ্রয়, পছন্দের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির অসম প্রতিযোগিতা বন্ধ করা এবং যেকোনো প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের পড়ার অধিকার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয়েছে।

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ বলেন, অনলাইন লটারিতে ভর্তির মাধ্যমে ভর্তি বাণিজ্য বন্ধ করা সম্ভব হবে। আগে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি হতেও শিশুদের কোচিং সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হতো। প্রতিষ্ঠানে ভর্তির ক্ষেত্রে কঠিন সব প্রশ্ন করা হতো, যা কোচিংয়ে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের শিখিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে ভর্তি নিশ্চিত করত। এখন তা বন্ধ হবে এবং ভর্তিপ্রক্রিয়া স্বচ্ছ হবে।

 

বেসরকারি বিদ্যালয়

নিজস্ব প্রক্রিয়ায় ফাঁকা আসনে ভর্তির সুযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক

বেসরকারি বিদ্যালয়গুলো এ বছর অনলাইনের মাধ্যমে নিজস্ব ভর্তিপ্রক্রিয়ায় শিক্ষার্থী ভর্তি করতে পারবে। সরকারি ও বেসরকারি বিদ্যালয়ে লটারিতে বাদ পড়া এবং ভর্তিপ্রক্রিয়া থেকে বঞ্চিত শিক্ষার্থীরা এভাবে এসব বেসরকারি বিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাবে।

গতকাল সোমবার মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।

সারা দেশে ৫৪০টি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রথম থেকে নবম শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তিতে ডিজিটাল লটারি হয়েছে।

গতকাল থেকে টেলিটকের নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ফল জানতে পারছে শিক্ষার্থীরা।

এ বছর ৫৪০টি সরকারি মাধ্যমিকে মোট এক লাখ সাত হাজার ৮৯০টি শূন্য আসনের জন্য গ্রহণযোগ্য আবেদন পড়েছে ছয় লাখ ৩৮ হাজার ৫৯৩টি। অর্থাৎ পাঁচ লাখের বেশি শিক্ষার্থী সরকারি বিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ হারাবে।

বেসরকারি দুই হাজার ৮৫২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসনসংখ্যার তুলনায় আবেদন কম পড়ায় ছয় লাখের বেশি আসন ফাঁকা থেকে যাচ্ছে।

বেসরকারি মাধ্যমিকে ভর্তির জন্য ডিজিটাল লটারি হবে আজ মঙ্গলবার। ফলে ভর্তির বাইরে থাকা শিক্ষার্থীরা যেমন ভর্তি নিয়ে সংশয়ে থাকবে, তেমনি অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিপুলসংখ্যক আসন ফাঁকা থেকে যাবে।

এ বিষয়ে মাউশির উপপরিচালক মোহাম্মদ আজিজ উদ্দিন বলেন, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে যাতে আসন ফাঁকা না থাকে এবং শিক্ষার্থীরা যাতে ভর্তি হতে পারে, সে লক্ষ্যে নতুন সিদ্ধান্ত আসতে পারে। ক্লাস শুরু হওয়ার আগে আসন ফাঁকা থাকা সাপেক্ষে বিদ্যালয়গুলো অনলাইন ভর্তিপ্রক্রিয়া অনুসরণ করে শিক্ষার্থী ভর্তি করাতে পারবে। এ বিষয়ে দু-এক দিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হবে।

মাউশির মাধ্যমিক বিভাগের পরিচালক অধ্যাপক বেলাল আহমেদ বলেন, অনলাইনে ভর্তি নীতিমালা মেনে বেসরকারি বিদ্যালয়গুলো এ বছর ভর্তির সুযোগ পেলেও পরবর্তী বছর থেকে হয়তো তা থাকবে না।

যেসব স্কুলের শিক্ষার্থী ভর্তিতে আগ্রহ নেই, এমন প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হবে কি না, প্রশ্নে পরিচালক বলেন, এ কারণে প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা যায় না। নীতিমালা মেনে এসব প্রতিষ্ঠান পরিচালনা হচ্ছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে।

গতকাল বিকেল ৪টায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে সরকারি মাধ্যমিকে শিক্ষার্থী ভর্তির ডিজিটাল লটারি উদ্বোধন করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘অনেক বেসরকারি মাধ্যমিক প্রতিষ্ঠান অনলাইন ভর্তি কার্যক্রমে যুক্ত হয়নি। আশা করছি, পরবর্তী সময়ে তারাও যুক্ত হবে। এ ছাড়া আমাদের শিক্ষার্থীদের তুলনায় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে আসনসংখ্যা অনেক বেশি। ’

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘কয়েকটি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সবচেয়ে মেধাবী শিক্ষার্থীদের বাছাই করে ভর্তি করে। সেখানেও দু-একজনের ফল খারাপ হয়। আমার প্রশ্ন, প্রতিষ্ঠান তাহলে কী করে এবং তাদের কৃতিত্ব কোথায়? আমরা চাই, সব স্কুলই ভালো হবে, সব মেধার শিক্ষার্থীরাই যেন সব স্কুলে ভর্তির সুযোগ পায়। সবাই পছন্দ অনুযায়ী বিদ্যালয় পাবে না। আমাদের এখানে অনেক বিদ্যালয় আছে, যেখানে অভিভাবকরা তাঁদের সন্তানদের সেখানে ভর্তি করাতে চাপের মধ্যে রাখেন। পরীক্ষা দিয়ে পাস করে নির্ধারিত স্কুলে ভর্তি হতে না পারলে তাকে দিয়ে আর কিছু হবে না—এমন ভয়ভীতি, শঙ্কা ও হতাশায় ফেলে দেওয়া হয়। ’

ভর্তিপ্রক্রিয়া নিয়ে আগে অনেক অভিযোগ পাওয়া যেত জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তিপ্রক্রিয়া অনেক স্বচ্ছ হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মেধার সমতা প্রতিষ্ঠা, ভর্তি কোচিং বাণিজ্য রোধ, অবৈধ শিক্ষার্থী ভর্তি রোধ, শিশুমনে অতিরিক্ত চাপ প্রশমন, সময় ও অর্থ সাশ্রয়, পছন্দের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির অসম প্রতিযোগিতা বন্ধ করা এবং যেকোনো প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের পড়ার অধিকার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয়েছে।

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ বলেন, অনলাইন লটারিতে ভর্তির মাধ্যমে ভর্তি বাণিজ্য বন্ধ করা সম্ভব হবে। আগে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি হতেও শিশুদের কোচিং সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হতো। প্রতিষ্ঠানে ভর্তির ক্ষেত্রে কঠিন সব প্রশ্ন করা হতো, যা কোচিংয়ে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের শিখিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে ভর্তি নিশ্চিত করত। এখন তা বন্ধ হবে এবং ভর্তিপ্রক্রিয়া স্বচ্ছ হবে।